শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৩

চাঙমা র’/মাত: ইনজেব চাঙমা

 

. কঙাত্যা- মাথা নোয়ানো।

. কঙাত্যা নাদা- গণিত টিক চিহ্ন।

. কচ্যা- কৈশোর, পূর্ণ যৌবনের পূর্বাবস্থা (কচ্যে)

. কজ্যা - ঝগড়া, বিবাদ, খড়ের স্তুপ

. কজ্যাদাদাল(কাঙকাঙ্যে)- - ঝগড়াটে, ঝগড়াবাজ।

. কবাল্যা- ভাগ্যবান।

. কাক্কাবাচ্যা- কর্কশ শব্দ, রসহীন।

. কাজ্যা- ধানের গোলা।

. কাত্যা- সুতার ক্ষেত্রে কাটা

১০. কারাসত্যা- সহজে

১১.  কিইয়ে পিরে গরানা- গড়িমসি করা, অনিচ্ছা দেখানো।

১২.  কিরব্যা- আদর

১৩. কুত্যা- কাটা অবস্থা

১৪. কুপ্যে- প্রোথিত, তীক্ষè চাহনি

১৫. কুলুক মাজ্যা- শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।

১৬. কুল্যং- বেতের ঝুড়ি।

১৭. কেচ্যাবন- কাচবন।

১৮. খচখচ্যা- খসখসে, অমসৃন।

১৯. খাচ্যত- স্বভাব, চরিত্র

২০. খাইদ্যে মিধে- গুড়, আখের গুড়।

২১. খাদ্য- অনুনয় বিনয়

২২. কিল্যা- সমস্তরের আত্মীয়।

২৩. খুলখুল্যা- ফাঁপা।

২৪. খাক্খন্যা- স্বল্প সময়ে

২৫. খুল্যা ঝারা- সর্বশেষ, শেষ সম্বল।

২৬. খেল্যামেল্যা- ঠাট্টা, মস্করা

২৭. খেত্যালি- উৎসাহি কৃষক

২৮. গঙাত্য- একরোখা, একগুয়ে।

২৯. গচ্য/গজ্যা- করা হয়েছে।গচ্যানা- গড়াগড়ি করা,

৩০. গচ্যাপচ্যা- গড়িয়ে শুয়ে পড়া।

৩১.  গজ্যেনা- ভূপাতিত করা, কাটা।

৩২. গাথ্যা- বেপরোয়া

৩৩. গাদাগত্যা- ঠাসাঠাসি।

৩৪. গাহ্ রকখ্যে- নিরাপত্তা

৩৫. গাভিজ্যা- সহনীয়, কোনপ্রকার।

৩৬. গিস্যেক- সত্যি, বাস্তব।

৩৭. গিরগিচ্যা- কাঁপা

৩৮. গিল্যে গরানা- বদনাম গরানা, সমালোচনা করা

৩৯. গুঙুত্যা- টক জাতীয় ফল

৪০. গুত্যা- মগজ

৪১. ঘুত্যা- গাছের গোড়া

৪২. গ্যেন- জ্ঞান,

৪৩. ঘচ্যা- তিল

৪৪. ঘুকঘুচ্য- তীব্র, বেশীমাত্রা

৪৫. চদভত্য- অলস প্রকৃতির

৪৬. চনচন্যা- প্রাণবন্ত

৪৭. চপচপ্যা- বেশি পরিমাণ

৪৮. চাগত্যা- নোংরা

৪৯. চাঙচাঙ্যা- মেঘ মুক্ত আকাশ

৫০. চাত্যানা- নড়াচড়া করা

৫১. চিঙচিঙ্যা- তীক্ষè ধার

৫২. চিরাচির্য্যা- মৃদু ধারা, ঝির ঝিরে

৫৩. চুচ্যাং- সুচালো

৫৪.      চুচ্যেক বাচ- বয়ন কার্যে ব্যবহত বাশ

৫৫.     চোতচোত্য-  চঞ্চল

৫৬.     চুলুভুল্যা- চঞ্চল, পাগলাটে

৫৭.      ছারাল্যা- নিঃসঙ্গ, জামালে মুক্ত

৫৮.     ছেদ্যায়- সেই জন্য,

৫৯.     জনমত্যায়- চিরতরে

৬০.     ছ্যংসমা- সেেন্দহ, মানসিক অস্বস্তি

৬১.      ছনমরজ্যা- অনুভূতি হীন

৬২.     জঘাচ্যা- উপযুক্ত, যথাযথ

৬৩.     জাত্য- প্রকৃত, খাটি

৬৪.     জামাজাম্যা- জমাটবাধা

৬৫.     জাল্যে- জেলে

৬৬.     জিদাজিত্যা- প্রতিযোগীতা

৬৭.     ঝত্যেল- ঝুটি

৬৮.     ঝোকঝেক্যা- পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন

৬৯.     ঝোগেইয়্যা- তাড়ানো

৭০.      দকদক্যা- তীব্র বা গাঢ়

৭১.       ধেমাধেম্যা- অনৈক্য

৭২.      ধলধল্য- আলগা, নরম

৭৩.      ধাগাধাক্যা- পাশা-পাশি

৭৪. ধাক্যা পাধাজ্যা- এলোপাথারি।

৭৫. ধেবন্যা- বদ্ধ জলা¯্রােত

৭৬. ধেবল্যে- নিঃস্ব, সম্বলহীন

৭৭. তচ্যা- বিরক্ত

৭৮. তরাতাঙচ্য- দ্রæ, তাড়াতাড়ি

৭৯. তরপ্যা কামার- সিলেট থেকে সচরাচর শীতকালে যে কামার আসে।

৮০.      তলেয়্যা- পরিলক্ষিত, যাচাই করা।

৮১.      তাক্যা- নিশানা, তাক করা

৮২.     তাখ্যা- আচ্ছাদন

৮৩.     তালাতাল্যা- অনৈক্য, একতাহীন

৮৪.      তিদিক্যা- হালকা-পাতলা

৮৫.     তিক্যা- তামাকে আগুণ ধরা কয়লা

৮৬.     তিন্যা- লেংটি

৮৭.      তেগাতেক্যা- অতি বেকায়দা।

৮৮.     তেনেয়্যা- ভিজা ভিজা

৮৯.     তোকতোক্যা- কর্মত

৯০.      তোলপল্যা- বিশ্রামহীন

৯১.      দঙেয়্যা- দমনকারী

৯২.      দরজ্য- সমুদ্র

৯৩.     দামপজ্যে- মেদবহুল

৯৪.      দিবুজ্যা- দুপুর বেলা

৯৫.     দুক্যা- দুঃখি

৯৬.     দুক্যে- পেষা, গুরা করা, বদলে

৯৭.      দুক্যাবাপভেই- সাধরণ মানুষ

৯৮.     দুমদুম্যা- প্রবল

৯৯.      দেচ পেরেত্যা- দেশ প্রেমিক

১০০.    দুরদর্য্যা- অবিরাম প্রবল

১০১.     ধচদ্যা- সীমানা দেওয়া

১০২.    ধক্যান- অনুসারে

১০৩.    ধলস্যে- সাদাটে

১০৪.    ধরাধজ্যা- সম্মিলিত ভাবে

১০৫.    ধাকপাত্যা- আক্রমণাত্মক ভঙ্গি

১০৬.   ধল্যা ভূই- বালির জমি, মরুপ্রান্ত

১০৭.    নরুচ্যা- অনাগ্রহের ভাব

১০৮.    নিদিঙ্যা- জ্যোতিষী

১০৯.    নিরাতিত্যা- অনটন; অভাব

১১০.     নন্যাশীল- বেলে পাথর

১১১.     নাঙ বাজেয়্যা- বিখ্যাত, নামজাদা

১১২.    নাঙ ডুবেয়্যা- কুখ্যাত

১১৩.    নিরাতিত্যা- অনটন, অভাব

১১৪.     পরাকবাল্য- হতভাগা

১১৫.    পতপত্য- সতেজ, তাজা

১১৬.    পত্যানা- অনুশোচনা করা

১১৭.     পত্য- বিশ্বাস

১১৮.    পত্যছাড়া- বিশ্বাসহীন

১১৯.    পত্যা- ভোর বেলা

১২০.    পাচ্যাং- চরিত্র, স্বভাব

১২১.    পাগল্যা বাচ-

১২২.    পালাপাল্যা- ক্রমানুযায়ী

১২৩.   পুজ্যা বিগুন- সমস্ত দায়

১২৪.    পুচ্ছ্যা সম্মানীত, পুজিত

১২৫.   পুচপুচ্যা- নরম

১২৬.   পুল্যাং- মাঝারি ধরনে ঝুড়ি

১২৭.    প্রæরুং পারাং- দুবোর্ধ

১২৮.   পেগেয়্যে- সুপ্রস্তুত

১২৯.    পেগাথ্যা- বিতৃঞ্চা

১৩০.    পোজ্যান- প্রতিত্তোর, যে সুতা বয়নের সময় বুনন করা হয়

১৩১.    ফাকফাক্যা- বাচাল, দিল খোলা; গোপন না করিয়া

১৩২.   ফুত্যা- ফুতন্ত, বিকশিত

১৩৩.   ফোর ফোর্জ্যা- সদালাপি, শুকনা ঝরঝরে।

১৩৪.    বজচ্যা- সমসাময়ীক

১৩৫.   বত্যা- মোচরানো অবস্থা

১৩৬.   বলাবল্যা- পরস্পর সাহায্য

১৩৭.    বলেয়্যা- যে নিমন্ত্রণ দেয়

১৩৮.   বাঙেপিচ্যা- আড়াআড়িবাচ্যে- ঘনিষ্ঠ

১৩৯.   বাচ্যে থানা- অপেক্ষা করা

১৪০.    বাজন্য পানি- ঘা বা ক্ষত থেকে নিসৃত রস

১৪১.     বাজাবাচ্যে- সংশ্লিষ্ট, ঘনিষ্ঠ, অত্যন্ত কাছে

১৪২.    বাবাবাপ্যা- পরোক্ষ, সরাসরি নয়

১৪৩.    বাবত্যা- রকম

১৪৪.    বারা বার্য্যা- বাড়াবাড়ি

১৪৫.    বাল্যা- বাবুই পাখি

১৪৬.   বিদিল্যা- বখাটে

১৪৭.    বুক লাঙলাঙ্যা- হৃদয়ে শূন্যতা, বিরহ লাগা

১৪৮.    বেকচ্যা- অসুবিধা

১৪৯.    বিতিরিক্যে- অসুবিধা, অন্য রকম

১৫০.    বিরবিক্যা- চঞ্চল স্বভাব

১৫১.    বেবেরাদ্যে- প্রচুর, পর্যাপ্ত

১৫২.   ভরদ্যা- নির্ভরশীল

১৫৩.   ভর কারজ্যা- নির্ভরশীল

১৫৪.    ভাগ্য দুঝে-  দুভাগ্য জনক ভাবে

১৫৫.   ভাচ্যং ছারা- যোগ্যাতাহীন

১৫৬.   ভারাল্যা- পেটুক

১৫৭.    ভুল ভুল্যা- দ্রæ বর্ধনশীল

১৫৮.   ভেনভেন্যা- বাচাল, ভন ভন শব্দ

১৫৯.   ভেগেদাল্যা- অগোছালো

১৬০.   ভিরা বির্য্যা- ঘনিয়ে আসা

১৬১.    মুইজ্যাং- শ্রমন (অস্থায়ী)

১৬২.   মক্যা চঙর- ভুট্টা কেশ।

১৬৩.   মচ্যা- পরিবর্তে

১৬৪.   মত্যা- বাঘের দেবতা

১৬৫.   মদামত্যা- ষ্পষ্টবক্তা

১৬৬.   মইয়্যা- অবলম্বন কেন্দ্র

১৬৭.   মল্যা- মামা

১৬৮.   মাল্যেং- এক ফলের ঘাছ লতা

১৬৯.   মুখ্যা- দিকে

১৭০.    মুত ভিজ্যা- কৃপন

১৭১.     মরামর্য্যা- পরিশ্রম সহকারে

১৭২.    মুরোল্যা- পাহাড়বাসী

১৭৩.    মেইয়্যা দারি- মমতাবান

১৭৪.    মন গুর্য্যা- মনের ভাব(শোক; দুঃখ ঈর্ষা ইঃ) চাপিয়ে রাখা এমন

১৭৫.    যঘ্য- যক্ষ

১৭৬.   রাঙচ্যা- লালচে রং

১৭৭.    লাক্যা- মত, ন্যায়

১৭৮.    লাত্যে- লাতি দেওয়া

১৭৯.    লাঙলাঙ্যা- শূন্যতা, বিরহ

১৮০.    সন্য- সৈনিক

১৮১.    সন্য হরিন- চিত্রা হরিন

১৮২.   সন্যত্- এমনি, আরে

১৮৩.   সচঝ্য- সহ্য; ধর্য্য

১৮৪.    সয়সমাজ্যা- সঙ্গীসাথী

১৮৫.   সাক্যসলা- উচ্চরক্ত চাপে ব্যবহার করা হয় বনৌষধি

১৮৬.   সাগজ্যা- প্রচুরসাঙ্যা- যুবক, অবিবাহিতা, স্ত্রী

১৮৭.    সাচজ্যে- সেজেছে

১৮৮.   সাত ভেদাম্য মানুচ- নানা প্রকৃতির স্বভাবের মানুষ

১৮৯.   সাংসাঙ্যা- নির্মল; পরিচ্ছন্ন

১৯০.    সাজিক্যা- রক্ষাণাবেক্ষণ কারি

১৯১.    সিজ্যে অভিজ্ঞ, সিদ্ধ

১৯২.    সিজ্যে তাগল- অভিজ্ঞ ব্যক্তি

১৯৩.   সিমেয়্যে- কৃপন

১৯৪.    সুচ্যা- শোধ করা

১৯৫.   সুধ্যা- সুস্বাদু খাবার

১৯৬.   সুরআহত্যা- সারিবদ্ধ

১৯৭.    হ্জ্যো হ্জ্যো- এড়িয়ে এড়িয়ে চলা।

১৯৮.   খরান্যা বগা- প্রতীক্ষামান ব্যক্তি

১৯৯.    খেরখেত্যা- হালকা- পাতলাব্যক্তি

২০০.   অতিততিয়্যা- অগত্যা, নামেমাত্র,

২০১.    অনতিত্যা- অসুবিধা

২০২.   আউলত্যা- প্রথম, প্রথমে

২০৩.   অক্যা আক্যা- এড়িয়ে চলা

২০৪.   আত্যাবরাত্যা- অনিশ্চিত

২০৫.   আদাঙ্যা- সন্ত্রাসীআদাম্য- প্রতিবেশী

২০৬.   আদিক্যা- হঠাৎ

২০৭.   আনদাজ্যে- অনুমানে

২০৮.   আবাদাস্যে- অহেতুক

২০৯.   আভাত্যা- দরিদ্র, গরীব, নিঃস্ব

২১০.    আরাং বাস্যে- মান সম্মত

২১১.    আল্যাং- আবদার

২১২.    উঙুল্যা- একটু আগে

২১৩.   উঙুচ্যা- ভেপসা গরম

২১৪.    উত্যে- উন্মুক্ত, বাধাঁহীন

২১৫.   উমচাজ্যা- পেটে গ্যাস জমানো

২১৬.   উরঘুন্যা- বাতামহীন

২১৭.    রেনারেন্যা- পরস্পর শত্রæতা মনোভাবপন্ন অবস্থা।

২১৮.   লরখর্য্যা- দীর্ঘসূত্র

২১৯.    লকধক্যা- নড়েবড়ে

২২০.   লামালাম্যা- সমান নয়

২২১.    লাক্য- মত, ন্যায়

২২২.   সচঝ্য- সহ্য

২২৩.   বাভাবাপ্যা- সরাসরি নয়, পরোক্ষ

২২৪.   আথ্যা- অনর্থক

২২৫.   আদিক্যা- হঠাৎ

২২৬.  আল্যাং- আবদার

২২৭.   আমন্যা- শারীরিক বা ¯œায়বিক দুর্বলতা

২২৮.   ইত্যায়- কারনে

২২৯.   উদ্যা- উন্মক্ত, উদাস

২৩০.   উর উজ্যাঝর- মুষলধারে বৃষ্টি

২৩১.   এগাচাজ্যা- অসামাজিক

রা- দিলে(-ফলা) বানানা:

২৩২. ক্রেরেইং- হাতির ডাকার শব্দ।

২৩৩. খেত্রী- তেজি, ক্ষত্রিয়য়োচিত

আহ্- দিলে(-ফলা) বানানা:

২৩৪.   গরাহ্- মদ তৈরির পর পরিত্যাক্ত অংশ

২৩৫.  গরহ্- অবলম্বন

২৩৬.  গাহ্ মাজি- সহচর, দেহরক্ষী।

২৩৭.   গাহ্ক- ক্রেতা

২৩৮.  সারাহ্- সারহীন

২৩৯.   ছারাহ্- নির্জন, জনমানবহীন

২৪০.   বানাহ- ধা ধা

২৪১.    পারাহ্- সমান

২৪২.   বহ্ গরানা- চুরি করা

২৪৩.   বহ্- ভূতের বা দৈর কারণ

২৪৪.   বহ্ যানা- ব্যর্থ হওয়া

২৪৫.   বহ্নি- বহন

২৪৬.   বালাহ্- বংশ, অস্তিত্ব

২৪৭.   বেআহ্ল- দুরবস্তা; দুর্শশা গ্রস্থ

২৪৮.   মালাহ্- প্রজনন ক্ষমতাহীন শুকর।

২৪৯.   মেলাহ- প্রশস্থ

২৫০.   মেহ্ল- বিষ

২৫১.   মেহ্ত- গুপ্তধন

২৫২.   মেনাহ্- বাকানো

২৫৩.  মুহ্লুক- পরিপুষ্ট, প্রধান ব্যক্তিগণ

২৫৪.   রহ্ -থাক

২৫৫.  রাহ্- ব্যাবস্থা

২৫৬.  লিহ্ লেচ্যা- পেট খালী

২৫৭.   আহ্ল্যানা- রোপিত চারা সতেজ হওয়া

২৫৮.  রুহ্ং রাহ্ং- শিলাময়; বন্ধুর পার্বত্য ভূমি

২৫৯.   রাহ্দত- দুর্ভিক্ষে

২৬০.   রঘরুখ্যে- বিদ্বেষ ভাবাপন্ন

২৬১.   রেনারেন্যা- পরস্পর মুখোমুখি অবস্থা

২৬২.  লাহ্দিঘলী- দীর্ঘ সূত্র

২৬৩.  লুরহ্- মশাল

২৬৪.   লুংগুরুঙ্যা- অতিশয়

২৬৫.  আহ্দানা- অনুকরণ করা, হাাঁটা

২৬৬.  আত্তুব- ডগা ভাঙিয়া গিয়েছে

২৬৭.   আদিক- এমনিে

২৬৮.  আদেই- গুপ্তধন

২৬৯.  আধাগবা- সুসম্পন্ন নয়, অপরিপূর্ণ

২৭০.   আদারানা- সরিয়া যাওয়া, সরিয়ে ফেলা

২৭১.    আদালং ফাদালং- আজে বাঝে, অনভিজ্ঞতা

২৭২.   অনাল- দুরবস্থা, অসহায় অবস্থা,

২৭৩.   আনেঘানে- আকারে ইঙ্গিতে

২৭৪.   আপঝাপ- কাজের চাপ, বিপদ

২৭৫.   আবরখানা- আশ্রয় লওয়া

২৭৬.   আবেদি- অপরিপক্ষ, কচি বয়স

২৭৭.   আবিচজনে- পরোক্ষ,

২৭৮.   অবেলত- ভাল, সুন্দর

২৭৯.   আভাকবাক- অতি বড় ঘা

২৮০.   আমক- আশ্চার্য, বিস্ময়

২৮১.   আমন- নিজ

২৮২.   আমল- আসক্তি, সময় কাল

২৮৩.  আমত- ঘর

২৮৪.   আমাত- নির্বাক, বাকশক্তি হারা

২৮৫.  আমিজে- সবসময়

২৮৬.  আলজে দেনা- উস্কানি দেয়া

২৮৭.   আলাঝে- এমনিতে, সর্বমোট

২৮৮.  আলাঝালা- প্রচুর

২৮৯.   আলাম- চিত্র, সূত্র

২৯০.   আয়ছায়- প্রচুর

২৯১.    আরচাল্লো- শক্ত, রুক্ষ স্বভাবে

২৯২.   আরা- জঞ্জাল

২৯৩.   আরালা- অসমাপ্ত

২৯৪.   আরি- সুযোগ

২৯৫.   আলগে চানা- ওজন করা

২৯৬.  আরকানি- প্রস্তুতি, সূচনা

২৯৭.   আললো- অনর্থক

২৯৮.   ইগিলে- সময়ে

২৯৯.   ইলভিল- শৃঙাখলা

৩০০.   ইমে- শপথ, প্রতিজ্ঞা

৩০১.    উচ- সর্তক

৩০২.   উজ- এগিয়ে যাওয়া

৩০৩.   উঝোল- আদায়, বোঝা

৩০৪.   উদিচ- উদ্দেশ্য

৩০৫.   উদোর- ধার

৩০৬.  উদোত থুধোত পানি নেই- চরম ব্যস্ততা

৩০৭.   উন- তম

৩০৮.   উবলফাল- প্রচন্ড উৎসাহী

৩০৯.   উভনা- শেষ

৩১০.    উরজারা- নিঃস্ব

৩১১.    উলমত্ত- চঞ্চল চিক্ত

৩১২.   এওজি- প্রতিনিধি

৩১৩.   একছলা- এক সময়

৩১৪.    এক হ্রো- একই রক্ত সম্পর্ক

৩১৫.   এগজা- অবিরাম

৩১৬.   এগামার- একাগ্রতা

৩১৭.    এগেম- একাগ্রতা

৩১৮.   এগাবল- নিজবল

৩১৯.   এগোত গরি- হঠাৎ

৩২০.   এরাবেরা- জটিল, আকাবাকা

৩২১.   এতানে উতানে- সব কিছু মিলিইয়া

৩২২.   এত্থে- অতীতে

৩২৩.  এজাল- সাহায্য

৩২৪.   এরানা- ছড়ানা, পরিত্যাগ করা

৩২৫.  এদা জুরনা- ভয় পাওয়া

৩২৬.  ওচ- ইচ্ছা, আগ্রহ

৩২৭.   ওজে- ইচ্ছা করে

৩২৮.  ওজোদি- অযথা জেদ

৩২৯.   ওল- বিভ্রান্ত(পদত ওল উয়ং)

৩৩০.   ওলমত্ত- প্রচন্ড উৎসাহি

৩৩১.   ওলিপ- গাফলতি

৩৩২.  কক্কবেই ধরানা- আগলে ধরা

৩৩৩.  কচ কচ- অসন্তÍুষ্ট

৩৩৪.   কমত- কমপক্ষে

৩৩৫.  করকরা- অস্ত্রসস্ত্রসহ ন্দায়মান

৩৩৬.  করম- কাজ

৩৩৭.   কল নাড়ানা/লারানা- যড়যন্ত্র করা

৩৩৮.  কেলকালা- বোকা প্রকৃতির

৩৩৯.  কাঙকাঙ- ঝগড়াটে

৩৪০.   কদগী- রসযুক্ত কথায় পারদর্শী

৩৪১.    কানসুক- শ্রæতমধুর

৩৪২.   কান উভ উভ- সবসময় সর্তক

৩৪৩.   কাবুক- ফাঁদ

৩৪৪.   কাবিল- দক্ষ, পট

৩৪৫.   কামমো- যে কাজ করে, শ্রমজীবি

৩৪৬.  কারি- কাজ হওয়, কার্যকরি, ফলদায়ক

৩৪৭.   কালকাদা- দুঃসময়, দুর্বস্থা

৩৪৮.   কিদিঙ- হাত-পা কাঁপা

৩৪৯.   কাডাকাডা- বিপুল সংখ্যক, কন্টকাকীর্ণ

৩৫০.   কাত- পারদর্শী, চৌক

৩৫১.   কিদুক- কত (তমা ইদু কিদুক বের্যাম্মি)

৩৫২.  কিরিক কারাক- খামখেয়ালী, তামাশা

৩৫৩.  কিরিমিরি- ঝামেলা, খেয়ালিপন

৩৫৪.   কিয়েচ- অনুমান

৩৫৫.  কু- খারাপ

৩৫৬.  কুচ- নকশা

৩৫৭.   খুচ- পদক্ষেপ, চিহ্ন

৩৫৮.  কুজানা- বপন কর

৩৫৯.  কুজোলী- অনুনয়, বিনয়, অনুরোধ

৩৬০.  কুজোক- বাগ, ক্ষোভ

৩৬১.   কুৎ- সর্বশান্ত, নিঃশেষ

৩৬২.  করুক- জব্দ

৩৬৩.  কুলুক- ঘোলা

৩৬৪.  কচ্ছা- বাজে, তুচ্ছ

৩৬৫.  কেচ্ছা কুচ্ছ- নগণ্য/সামাণ্য

৩৬৬.  কেজানা- মাজা, ঘষা

৩৬৭.  কেধা কেধা- ছিন্ন ভিন্ন

৩৬৮.  কেধা পুরানা- সর্বনাশ করা, নিকাশ করা

৩৬৯.  কেবার- দরওয়াজা

৩৭০.   কেলচ- দুঃখ

৩৭১.    কোয়াচ- সুবিধা, সুযোগ(জুৎ)

৩৭২.   খম- ভয়(খম দেঘায়)

৩৭৩.   খরম- পাদুকা:(বাচ খরম)

৩৭৪.   খত্তাল- দজ্জাল, ঝগড়াতে

৩৭৫.   খদাত্তালাক- মহা বিপদ বা দুগর্তি

৩৭৬.  খরল্লুয়- ক্ষতি, ঝগড়াতে

৩৭৭.   খদা দেন- দোষারোপ করা;

৩৭৮.   খদার পাদারী- প্রচন্ড বিরোধী

৩৭৯.   খাউজ উরানা- ধরতে চেষ্টা করা

৩৮০.   খাপদেনা- ঘাপতি মেরে থাকা

৩৮১.   খামখানা- স্বীকার করা

৩৮২.  খিলখিলিনা- নিভয়ে বিচরণ করা

৩৮৩.  খুচখজানা- মনের অস্থিরতা

৩৮৪.   খুমও- নিষিদ্ধ কাজ

৩৮৫.  খুয়ানি- অনুপস্থিতি, কামাই

৩৮৬.  খেমানা- ক্ষান্ত হওয়া

৩৮৭.   খিরিচ- আলাদা

৩৮৮.  খিলা- অকর্ষিত জমি

৩৮৯.  খুন্ধ- শস্যদির মৌসুম

৩৯০.   গজক- অধীকারি

৩৯১.   গজেন- সৃষ্টি কর্তা

৩৯২.   গজাং গজাঙ- ক্ষিপ্রগতিতে

৩৯৩.  গধা- বাধ

৩৯৪.   গপগবেই- দপদপ করে

৩৯৫.  গধেল- অনেক

৩৯৬.  গর্বা- অতিথি

৩৯৭.   গরচ- প্রয়োজন

৩৯৮.  গধে গধে- জনে জনে

৩৯৯.   গবলা- বেনামি চিঠি

৪০০.    গভীন- গভীর, গহিন

৪০১.    গাঝিক- ফাকা

৪০২.   গাউলি- শারিরীক অবস্থা

৪০৩.   গাঅদামি- গোয়ারর্ত্তুমি

৪০৪.    গাপ্পেই- গড়িমসি ভাব

৪০৫.   গানে গানে- কোন রকমে

৪০৬.   গিগির গাগার- হাটার সময় কাপা

৪০৭.    গুলেক- কিছু, সমান্য কিছু

৪০৮.   গুঝি গুঝি- গুমরিয়া কাদা

৪০৯.   গুদি- অবস্থা

৪১০.    গুনঝেত- গুপ্ত বিষয়, গুপ্ত রহস্য

৪১১.     গুমেই যানা- অতিবাহিত করা

৪১২.    গুর্লেক- গুটি কয়েক

৪১৩.    গোর আহদা- নির্বেশেষে, বাছ-বিচার না করে

৪১৪.    ঘদমদ- জটিল, গোলমাল

৪১৫.    ঘজা খারাপ- অবস্থা খারাপ

৪১৬.   ঘাচ্ছারা- কথা প্রকৃতি,সুর

৪১৭.    ঘাদু ভাঙা- অনভিজ্ঞ

৪১৮.    ঘান্দা দোর- সীমানা, কাছে

৪১৯.    ঘাজানা- কাহাও, অনুরূপ

৪২০.   ঘিলাদাত- সাহসী

৪২১.    ঘিলা জবর- দুঃসাহসী

৪২২.   ঘুঞ্চিমুঞ্চি- ঘনিষ্ট ভাবে

৪২৩.   ঘুপ- নির্জন লোকান্তরাল

৪২৪.   ঘুর- গোলা, অস্বচ্ছ

৪২৫.   ঘেচগেজে- দ্বিধাহীন চিক্তে

৪২৬.   চাগলা চগলা- ভাসা ভাসা

৪২৭.   চিদাচজ্জা- ভাবনাচিন্তা

৪২৮.   চচজানা- পরচর্চা

৪২৯.   চত্তা পাগল- মানসিক বিকার গ্রস্থ

৪৩০.   চদু- অতবাক

৪৩১.    চাঘীচানা- পরীক্ষা করা

৪৩২.   চবা- ছিবড়া, অসার পদার্থ

৪৩৩.   চাগালা- এলাকা

৪৩৪.   চরামের- অজান্তে আঘাত

৪৩৫.   চর- কম গভীর, গোয়েন্দা, আরোহন

৪৩৬.  চাদি- বাতি

৪৩৭.   চিচিক্যা- তীব্র

৪৩৮.   চিগুত- ব্যাখ্যা

৪৩৯.   চিলেপিত্তে- ডিগবাজি

৪৪০.    চিতজুরানা- মনের আনন্দ লাভ, চমৎকার

৪৪১.    চিত পাগল- সহজে ভুলে যায়

৪৪২.   চিতমরা- ভগ্ন হৃদয়

৪৪৩.   চিবুঙ- ছায়া শীতল স্থান

৪৪৪.    চিতদিঘোল- প্রাণপণ

৪৪৫.   চিমোর- শক্ত, কঠিন

৪৪৬.   চিলিবিলি- অস্থির চাল চলন

৪৪৭.    চিয়োবলা- সাহসী(চো বলা)

৪৪৮.   চুদা চুদা- অনর্থক

৪৪৯.   চুনাভুনা- লজ্জায় মুখ লাল

৪৫০.   চেগেলেং- অনভ্যাস

৪৫১.    চেগে- উপদেষ্টা মন্ত্রী

৪৫২.   চেরে¯তা- চেষ্টা; পরিচর্যা

৪৫৩.   চোক খুলনা- মতেন হওয়া

৪৫৪.   চৈদাল- উচ্ছঙ্খল, ্উদ্দাম নৃত্য

৪৫৫.   চৌসামা- পটু

৪৫৬.  পু পু- সংখ্যা বৃদ্ধি

৪৫৭.   ছলা ছলা- বার বার

৪৫৮.   ছলং- ছন্মবেশছদক- অলোর ছটা

৪৫৯.   ছরবো- ভাসা ভাসা

৪৬০.   ছারানাধা- বিপর্যস্ত

৪৬১.   ছিরেকাবা- সম্পর্ক শেষকরা

৪৬২.   ছিনালি- নরনারি অবৈধ সম্পর্ক

৪৬৩.  ছেজা- পিটুনি

৪৬৪.   ছেম- অঙ্কুর

৪৬৫.  জঘা- পরিমাপ(জঘার)

৪৬৬.  জধন- বিাহ বন্ধন

৪৬৭.   জনমকাল- জীবনকাল

৪৬৮.  জবান- প্রতিশ্রæতি

৪৬৯.   জৎ- জটিল

৪৭০.    জাঙি- পাখি ধরার ফাঁদ

৪৭১.    জাত্যা- প্রকৃত

৪৭২.   জায় জুক্কল- প্রস্তুতি লওয়

৪৭৩.   জাঙার- মরিচিকা

৪৭৪.    জাবিন- জামিন

৪৭৫.   জিতবাত- প্রতিযোগীতা (জিদাজিত্যা)

৪৭৬.   জিতগিন- প্রতিযোগিতা মনোভাব

৪৭৭.    জুচ- আস্তে

৪৭৮.   দক- তেজ, তীব্র

৪৭৯.   ধক- চেহারা

৪৮০.   দঙল- অধিকারি

৪৮১.    দগুলা খের- দুর্বাঘাস

৪৮২.   দঙানা- দমন করা

৪৮৩.   দজামরা- অসম্পন্ন খাওয়া

৪৮৪.   দজর- পৃথক, আলাদা

৪৮৫.   দঝা- বিপদ, দমা

৪৮৬.  দথ্যা- খুব, অত্যন্ত, প্রকৃত

৪৮৭.   দরপ- দ্রব্য

৪৮৮.   দাঙা আগুন- দাবানল

৪৮৯.   দাঙর মু- আশাবাদিতা

৪৯০.   দায়খামারা- নিশ্চিত করা

৪৯১.    দারিত- দুষ্ট, দুরন্ত

৪৯২.   দাদন- অগ্রীম

৪৯৩.   দানা- ভাগ্য; সৌভাগ্য

৪৯৪.   দারখা- দূর্গতি

৪৯৫.   দীঘলি- দৈর্য্য বরাবর

৪৯৬.   দিককাবুল- দিশাহার

৪৯৭.   দিঝা- সুবিধা; উপায়; সুযোগ

৪৯৮.   দিতদেরি- অসুবিধা; বিরক্তি

৪৯৯.   দিন পানা- সুদিন, সুক্ষণ

৫০০.   দিন ভাক- দিনের বেলায়

৫০১.    দুঘুত- হৃদপিন্ডের জোরে কম্প

৫০২.   দিচতি- নজর

৫০৩.   ধের গরানা- অসম্পর্নকাজ সম্পর্ন করা

৫০৪.   দুক দরপ- দুঃখ, কষ্ট

৫০৫.   দুরত- দুরত্ব

৫০৬.  দেবংসী- দেবতার অংশ

৫০৭.   দেচ ফাত্তা- দেম ভ্রমণকারি

৫০৮.   দেম তলনা- কোনকিছু অজুহাতে তেজাল সৃষ্টি কারি

৫০৯.   ধগর- রকমে; প্রকারে

৫১০.    ধচ- সীমানা

৫১১.    ধাপ- আগ্রহ

৫১২.   ধারাদিঘলি- ক্রমান্বয়ে, ধীরে ধীরে

৫১৩.   ধারাচ- আকাঙ্খা

৫১৪.    ধারানে- তুলনা

৫১৫.   ধারামজিম- নিয়ম মাপিক

৫১৬.   ধুঝানা- লক্ষ্যে পৌছানো

৫১৭.    ধন্ধুক- অনুতাপ; দুঃখ

৫১৮.   ধুর- পথ

৫১৯.   ধেঞ্ঝাংমেঞ্ঝাং- আনাড়ি কাজ

৫২০.   ননেই- সোহাগ

৫২১.   নাক অজল- গর্বিত

৫২২.   নাখাচ- অবজ্ঞা; উপেক্ষা

৫২৩.  নাগ কুচকুচ- খিটখিটে

৫২৪.   নাদান- পেটুক

৫২৫.  নাধা- নিঃস্ব

৫২৬.  নানু- প্রভু; মালিক

৫২৭.   নাবুংনাবাং- নাবালক প্রকৃতির

৫২৮.  নাল- নালা; সুব্যবস্থা

৫২৯.   নিঝানি- নিশানা

৫৩০.   নাঙবাচ- চিহ্ন, ছায়া

৫৩১.   নাঙেচাঙে- নামেমাত্র

৫৩২.  নিত্তো- প্রতিদিন

৫৩৩.  নিত্তোকাল/ নিত্তো সমার- প্রতিদিনকার; পার্থিব; নিত্য সহচর

৫৩৪.   নিধুর- নিষ্ঠুর

৫৩৫.  নিম্মো- মৌন

৫৩৬.  নিচিদা- চিন্তাহীন

৫৩৭.   নিবিলি- রুদ্ধ; নিঃছিদ্র

৫৩৮.  নলোচ- তোষামোদ

৫৩৯.  নিধকতুক- একমাত্র; সর্বশেষ

৫৪০.   নিবির- চুপচাপ; শান্তশিষ্ট

৫৪১.    পত্থমে- বাস্তবে; প্রথমে

৫৪২.   পদর- জ্ঞান, বুদ্ধি

৫৪৩.   পদে ঘাদে- এখানে সেখানে

৫৪৪.   পরছাল্লুয়া- পরগাছা

৫৪৫.   পরং- পরিবর্তন; বাসস্থান ত্যাগ

৫৪৬.  পর্বোয়া পুনদিক- জ্ঞানি শিক্ষিত লোক

৫৪৭.   পরাক- স্পষ্ট ভাবে

৫৪৮.   পলিম- প্রথমে

৫৪৯.   পল্লা- স্তর; বার  (খেপ)

৫৫০.   পাংখা- দক্ষ; নিপুণ; পাকা

৫৫১.   পরোল্লো- মনোমানিন্য

৫৫২.  পাওনদি- প্রাপ্তি, পাওনা

৫৫৩.  পাকচক্কর- কলা কৌশল, বুদ্ধি

৫৫৪.   পাত্তলি- দাড়; হাল

৫৫৫.  পাত্তলি- মাঝি; চালক

৫৫৬.  পাত্তুরুতুরু- স্বাগতম

৫৫৭.   পাবা- এক চতুর্থাংশ, পোয়া

৫৫৮.  পার- তীর; সক্ষম; নামানো

৫৫৯.  পারজার- বিনিময়

৫৬০.  পারং চৌধুরি- বড়াই; আত্মম্ভিরিতা

৫৬১.   পালং- নেশা (আমল)

৫৬২.  পিচ্ছবারি- প্রতিক্রিয়া

৫৬৩.  পিতবাহোলী- পশ্চাদচরন

৫৬৪.  পুজুং পাজারাং- আজে বাজে খাদ্য

৫৬৫.  পুদি পুদি- পদে পদে; খুঁটি নাটি; পুংখানুপুংখ ভাবে

৫৬৬.  পুর- নির্ধারীত দিনক্ষণ

৫৬৭.  পেদেরা পেদেরি- সুপ্রচুর

৫৬৮.  পের পেরেই- দ্রæ

৫৬৯.  পুল, পোল দেনা- প্রতিস্থাপন

৫৭০.   পেজাল- জামেলা

৫৭১.    ফগদাং- প্রভাত

৫৭২.   ফদক- বাবুগিরি

৫৭৩.   ফাগত সমানা- অংশ নেয়া

৫৭৪.   ফাত্তুয়- ভব ঘুড়ে

৫৭৫.   ফির্তি- জলাশয়

৫৭৬.  ফুল ফুল চাং চাং- অত্যন্ত আদরে

৫৭৭.   ফেধা- বাজে; অপদার্থ

৫৭৮.   ফের্য্যা- বাক পটু, কথাবার্তায় স্বচ্ছন্দ

৫৭৯.   ফিবলক- পাশ কেটে যাওয়া

৫৮০.   ফালত পড়ানা- বিপদে পড়া

৫৮১.   ফিরি ফিরি- বার বার

৫৮২.  ফাবি- অসতী

৫৮৩.  ফুলু ফালা- আবোল; তাবোল

৫৮৪.   ফুরি উদনা- ভেদ করে উঠা

৫৮৫.  ফেচ- নিন্দা

৫৮৬.  ফেজেরা- অসুস্থতা; আগাছা পূর্ণ

৫৮৭.   ফো- ধন্যবাদ, প্রশংসা

৫৮৮.  বকলম- নিরক্ষর

৫৮৯.  বজং- বাজে; খারাপ

৫৯০.   বর্তা- বর; আর্শীবাদ

৫৯১.   বঙপাদার- বিস্তৃত ছড়িয়ে ছিটিয়ে

৫৯২.   বতনাঙ- দৃনার্ম

৫৯৩.  বাইনি প্রংশসা

৫৯৪.   বচঅনা- বশীভুত হওয়া

৫৯৫.  বল্লুয়া মুল্লুক- অনুন্নত; জোড়যার মুল্লুক তার

৫৯৬.  বরামত- অভিযোগ

৫৯৭.   বাক্কুয়া- শ্রমিক; শ্রমজীবি

৫৯৮.  বরগিরি- অভিজাত্য পরিবার

৫৯৯.   বাচ অনা- মনকষাকষি

৬০০.   বাচ পাদা খবর- ভিত্তিহীন কথা

৬০১.   বাজুক বাজাক- অসুবিধা

৬০২.   বানিমর- ক্ষণস্থায়ী

৬০৩.  বাবদে বাবদে- পদে পদে

৬০৪.   বাম- এলাকা

৬০৫.  বার- অহংকার

৬০৬.  বিজক- বংশ বৃত্তান্ত

৬০৭.   বিধু- প্রিয়া

৬০৮.  বিনোন- বিলাপ; অনুতাপ

৬০৯.   বিমু- অনিচ্ছুক

৬১০.   বিরিক বারাক- অদ্ভূত

৬১১.    বিনি আধা- নাছোড় বান্দা

৬১২.   বিরিযানা- এড়িয়ে  যাওয়া;

৬১৩.   বুগি- বোঝা

৬১৪.   বুত্থি- বর্তিকা

৬১৫.   বুক ভাঙানা- আশাহীন হওয়া

৬১৬.   বুক আঙানা- হৃদয় দগ্ধ হওয়া

৬১৭.   বুক ভরানা- আশান্বিত হওয়া

৬১৮.   বুগ পাাদা- সাহস

৬১৯.   বুদ্ধি দিপ- বুদ্ধিজীবি

৬২০.   বুর পারানা- নামে মাত্র কিছু দিয়ে দায় এড়ানো

৬২১.   বেকভাক- অধিকাংশ

৬২২.  বেদমা- বোকা

৬২৩.  বেবুলা- বিভ্রান্ত

৬২৪.   বেগেদো- অনেক; প্রচুর

৬২৫.  বেলক- পৃথক; বিধায়

৬২৬.  বেলে কধা- ভিত্তিহীন কথা

৬২৭.   -বুঝানা- অবস্থা ভাব বুঝা

৬২৮.  ভচ- নিভিয়া যাওয়া; ভম্ম হওয়া; বিলুপ্ত হওয়া

৬২৯.  ভজানা- প্রার্থনা

৬৩০.  ভাক যুক- ভাগা ভাগি

৬৩১.   ভঙচঙ- সৌন্দর্য

৬৩২.  ভজি পরানা- আত্মসমর্পন করা

৬৩৩.  ভারান- প্রতারণা

৬৩৪.  ভান্নেই- খারাপ

৬৩৫.  ভরন- পূর্ণ

৬৩৬.  ভরন গাভুর- পূর্ণ যৌবন

৬৩৭.  ভরন পুজোন- ভরণ পোষণ

৬৩৮.  ভরপু- পুরোদমে; পূর্ণ মাত্রায়

৬৩৯.  ভরি- এক তোল ব্যাপি; জনম জীংহানি

৬৪০.   ভাক্কা- রীতি নিয়ম; প্রথা

৬৪১.   ভরন পিরোন- ভরপুর; স্বাস্থ্যাবান

৬৪২.   ভাক ভাগেই- গপাগপ গোগ্রা¯েত; দ্বিধাহীন

৬৪৩.  ভাঙা কপাল- দৈবৎ; ভাগাচক্রে

৬৪৪.   ভগাজুক- আলাদা প্রকৃতি

৬৪৫.  ভনা- বড় আকারে

৬৪৬.  ভান্দাল- ভান্ডার

৬৪৭.   ভাপ উধে- মানসিক চিন্তে ভেসে উঠে

৬৪৮.  ভালেত- সফল; উন্নয়ন; ভাল

৬৪৯.   ভালেত দিন- সুদিন

৬৫০.  ভিধা উধানা- নির্মূল; ধ্বংস হওয়া

৬৫১.   ভিরুং ভিরুং- মানসিক অস্থিরতা; চঞ্চল

৬৫২.  ভিলি- জন্য; কারণে

৬৫৩.  ভুকলনা- ডুবে মরা

৬৫৪.  ভুজুত- হঠাৎ

৬৫৫.  ভুজুমো- খুব বড়

৬৫৬.  ভুক- ক্ষুধা; রুচি; ভোগ

৬৫৭.  ভুভুকছারা- প্রয়োজনাতিরিক্ত

৬৫৮.  ভেচ- বেশ; ছদ্মবেশ

৬৫৯.  ভেদ- খবর; তত্ত¡

৬৬০.  ভেদানা- সাক্ষাৎ করা

৬৬১.   ভেল দেনা- মানাইয়া চলা

৬৬২.  ভেদাম- সক্ষমতা

৬৬৩.  ভেদেলাম- তথ্য সয়বাদ তত্ত¡

৬৬৪.  মজিমমত; সুবিধা অনুযায়ী

৬৬৫.  মঙচা- বিমর্ষ; চিন্তা যুক্ত

৬৬৬. মচজাভাঙা- স্পষ্ট

৬৬৭.  মন মজিম- মনের মত

৬৬৮.  মত্তন- মাত্র; অমনি; পর্যন্ত

৬৬৯.  মধংমাধাং- হৃষ্ট; পুষ্ট

৬৭০.   মনগজা- মনের ইচ্ছা অনুসারে

৬৭১.   মন জকি- ইচ্ছা; অভিলাষ

৬৭২.   মধা- কৃপণ

৬৭৩.  মনজুর- মানসিক অবস্থা

৬৭৪.   মন কাদা কাদি- মনোমালিন্য

৬৭৫.  মন ভাঙা- হতাশ

৬৭৬.  মন জক্খা- ইচ্ছামত

৬৭৭.   মন বাঝি থানা- আকর্ষণীয়

৬৭৮.  মন কামারানা- মনে বেদনা বা আঘাত দেওয়া

৬৭৯.   মরা মরা- দুর্বল

৬৮০.  মাজারা- চিহ্ন

৬৮১.   মেলিক- সামাজিক

৬৮২.  মুঝুঙ- সামনে

৬৮৩.  মুর ধুজি- গভীর, মনযোড় বা আগ্রহের

৬৮৪.  মু তুলনা- উঠে দাড়াঁন

৬৮৫.  মহ্- সম্ভাব্য

৬৮৬.  মুধেমাধে- একত্রে, সর্বমোট

৬৮৭.  মোর ফিরিল- অবস্থা পরিবর্তন

৬৮৮.  যমসম- তীব্র; ভয়ঙ্কর

৬৮৯.  যাঙাল- পথ

৬৯০.  রনদুক- সংগ্রাম দুঃখ; শ্রম কষ্ট

৬৯১.  রিপরিপ- দূরত্ব: বশতঃ

৬৯২.  রন কাবানা- উত্তেজনা

৬৯৩.  রবা- মীমাংসা

৬৯৪.   রিনান- লক্ষ্য করা

৬৯৫.  রিবেং পঝা- অন্তসারহীন

৬৯৬.  রিবেং দর- কঠিন মূল বিশিষ্ট

৬৯৭.   রুখি থানা- প্রতিশোধ নেবার অপেক্ষা থাকা

৬৯৮.  রেপ- খাড়া পাহাড়ে সমান শিলাময় স্থান

৬৯৯.  রেচ- কোজের যোগসূত্র (জের)

৭০০.    রেনা রেনি- দৃষ্টি; চাওয়া

৭০১.    লকফক- সং¯্রব; সম্পর্ক

৭০২.   লঙগা পরা- ধূর্ত

৭০৩.   লজরফজর- গোলমাল

৭০৪.    লক্খ- প্রিয়

৭০৫.   লজ্ঝেই ধজ্ঝেই- দুর্বল বা আহত অবস্থার অত্যন্ত কষ্টে সৃষ্টে নড়াচড়া করিয়া।

৭০৬.   লবিয়ত- অভ্যর্থনা; অথিতি পরিচর্যা

৭০৭.    লত- যাত্রা

৭০৮.   ললচ- মেলা মেশা (ললচ ফলচ)

৭০৯.   লাক- যোগ্য; সমর্থ; উপযুক্ত

৭১০.    লাগর পোয়া- সামাথ্যবান; কর্মক্ষম

৭১১.     লাক্কুয়া- শর্তাধীন; লগ্নী

৭১২.    লাচ্ছার- বিনিময়ে; তবে(তা লাচ্ছার মুই এযঙর)

৭১৩.    লালচ- আগ্রহ

৭১৪.    লালা বাজি- অনর্থক কালক্ষেপ

৭১৫.    লিয়ং লিয়ং- উদ্দেশ্যহীন ভাবে বেড়ানো

৭১৬.   লুদুপুদু- জড়িত; মেলামেশা

৭১৭.    লুদু- ভাল স্বভাবের

৭১৮.    লুদু চাল চলন- সৌজন্য মূলক

৭১৯.    লুদুরুং ফুদুরুং- অপ্রয়োজনীয়

৭২০.   লেঙুর- শয়তান

৭২১.    লেদা- দুর্বল

৭২২.   লেবা- নাবালক

৭২৩.   লেম পেদানা- অজুহাত খোজা; সুযোগ খোজা

৭২৪.   লেদাপেদা- দৈহিক সংসগে; ঘনিষ্ঠতা

৭২৫.   লেম্বানা- লাগিেেয় থাকা; অনুসরন করা

৭২৬.   সচ দেনা- সুযোগ দেওয়া

৭২৭.   সচচদনা- ছটপট করা

৭২৮.   সচ্চরম- হালকা; দুঃখ লাঘব

৭২৯.   সজাক- সর্তক

৭৩০.   সত নেই- চেতনাহীন

৭৩১.    সপ্পানত- সবসময়; সব ব্যাপার

৭৩২.   সমত- সহ; প্রয়োজনে

৭৩৩.   সমানে- সব সময়

৭৩৪.   সলা সলা- থেমে থেমে

৭৩৫.   সয় সম্পত্তি- সহায় সম্বল

৭৩৬.  সলে সাত- সহজে; সল্প সময়ে পরিশ্রমে

৭৩৭.   সাতকাম- বহুবিধ গুরুত্বপূর্ণ কাজ

৭৩৮.   সাধা- ভাগ্য; সাধ

৭৩৯.   সাবাক- পরিষ্কার

৭৪০.    সাল্টিং- খাটি

৭৪১.    সাত বিলত উড়িনে এক বিলত দুঅ শুগানা- নানা অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ; ধূর্ত

৭৪২.   সাদত- প্রারম্ভে; শুরুতে

৭৪৩.   সাপসুপ- পরিষ্কার; দ্বিধাহীন ভাবে

৭৪৪.    সার গরানা- ত্যাগ করা; দৃঢ় প্রতিজ্ঞা হওয়া

৭৪৫.   সিউলি- বিয়েতে যে টাকা উপহার দেয়া হয়

৭৪৬.   সিদিম- কষ্ট; দুরবস্থা

৭৪৭.    সিঙোর কাবা- অকৃজ্ঞতার কাজ করা

৭৪৮.   সিচজোত-- দুযোর্গ; দুবস্থা

৭৪৯.   সিয়ং সামা- দুচিন্তা; সন্দেহ

৭৫০.   সিধুগা- তথাকার

৭৫১.    সুনজুক- সরঞ্জাম; আরাম

৭৫২.   সুল্লুক- শলা পরামর্শ

৭৫৩.   সেদাম- সাধ্য; সমর্থ্য

৭৫৪.   সুয়োল- তর্ক; প্রতিবাদ

৭৫৫.   সগার- প্রচুর

৭৫৬.  অহ্ভা অহ্ভা কবা কবা- অসহায় অবস্থা

৭৫৭.   আহ্ঙানা- জ্বলা

৭৫৮.   আহ্ঞ্জাম- নিয়ন্ত্রণাধীন

৭৫৯.   আহ্লি- মালা

বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩

তুমি আর আমি: ইনজেব চাঙমা

তুমি আর আমি
হিলর খবর দ’ আমি বেগে পেই। এক সময় দেচ, ভাচ, রিদিসুধোম, আল্যাক বেক থিক এল’। বেলান পুগেদি উদে পুজিমেদি ধুবি যায়। সে অক্তয়ান মানুঝর মন রিবেঙত কদ’ সুঘর নিঝেনি পেলাং বেই যায়! সে কধা কলে পচ্জন কনা ধক অয়।
সে সুক চাঙমাউনর কবালত বেচ ন’ সুয়ে। ১৮৬০ সালত বিট্রিশউনে হিল চাদিগাঙ ধঙল গরানা পর চাঙমাউনর দুঘ’ লামা আরগানি অল। এক লেজা পর এক লেজা কাল বোজেক ঝর এই বেক ছিত্রিং বাত্রাং গরি দিয়্যা। কাপ্তে গধা দিনেই রাজ ঘর ধুবে দিয়্যা। চাগালা থিয়্যা আদাম, ভূই বাগান ধুবি দিয়্যা শাসক গুত্তিয়্যা। ছিদি পচ্ছোন বার্মা, নেফা, ত্রিপুরা, মিজোরামসুমুত্ত যে যিন্দি চোঘ পহ্’র দেঘে তে সিন্দি ধেই যেলাক। নেগে-মোগে, বাবে-পুদে, মা-ঝিয়ে অলাক ফারক, বুগত এক বুক আহ্’ভিল্যাচ্চোই। সে কধা কলে কুদুউচ্যা বাবে ব নিঝেচ ইরি দিনেই কয়, “আমি সংসার ইয়েং। বানা যেই যেই কইয়ন পিত্তিমিত এলং কন’ কিচ্ছু ন’ আনি।”
ব্রিটিশ, পাকিস্তান আমল কাদে এলং। ইক্কে বাংলাদেচ আমল। আঝা এল বাংলাদেশ আমালত সুঘে কাদেবং, নিজ মান, সম্মান আ নিপরভা গরি। মাত্তর, সে আঝা বরগাঙ পানি সমারে ভাজি যাদে বেচ সময় ন’ লাগে।
চাঙমা জাত্তোর এক্কান গুন তারা পরর তলে থেবার ন’ চান। যুগে যুগে তারা সরান পেবার সান। সেনে তারা মোগল ব্রিটিশ বিরুদ্ধে যুদ্ধতও জয়র বিজক আঘে। কন কালে তারা ধঙে ন’ পারন। ইক্কে বাংলাদেশ আমাল। এ আঘে কোই অয়ে, সুক তারা কবালত বেচ ন’ সুয়ে। আঝানি বরগাঙ পানি সমারে ভাজি যিয়ে। এ বাংলাদেচ আমলত লাক লাক বাঙাল হিল চাদিগাঙত আনিনেই ইক্যে কুদুউচ্যা বাবে আর বেচ দুঘত। ইয়ে আহ্’রে তার ইত্তোকুদুম। ইক্কে আহ্’রেল তার ঘরপাদা জাগা, ভূই বাগান আ সয়সম্পত্তি। ন’ মিলে কাম। গাবুর গরি খেদ। হাজার মাধানত ১ দিন কাম মিলেরেও ১ আরি ধানর ১০/১২বো বালা দিয়্যা পরে। তারা গিরিবোত আঘন ৫ জন। তিন্নো পুঅ আ তারা নেগে মোগে। পুঅ/ছউন এয কাম গরিবার বচ ন’ অয়। নাবালক। সে এক আরি ধান বালা দেদে ইন্দি ভাত ন’ থানা জু পেলে আলু কুরি কুরি খাবায়।
একদিনে আলু কুর’ যেনেই শান্দি বাহিনী ব্রেগত লুম্যা গোই ওল অনেই। তিনদিন সং ভাত নেই তারা ঘরত। তারা ঘর কুরে এক গিরি আঘে, সিবেও সেধক নেই। তারপরও তারা চিত পুরায় ধারে উদোরে কিঝু চালে দ্যে। মাত্তর, কানা খুমোত পানি কধক ধালানা। তেয়্য তারা আরাং খরাবিত্তুন ভাক দিয়্যা।
ব্রেগত লুমিনেই শান্দি বাহিনীউনে ধচ্ছোন। দরে গিরগিরার। তারে দাঘি নি দোলে গরি ভাত খাবেলাক। ভাত খেই তাত্তুন পুজোর গরন, কেনে ইধু এলে? ওল উয়োং বাবু। ঘরত ভাত নেই। এই আলু কুরি কুরি কনবাবত্যা পরান তোরের।
কন’ কোই দিবেগোই নিনা? না না না বাবু। কারে কোই দিদুং, তুমি আর আমি; আমি আর তুমি। এত্তে চলাত চোল পাচ কিজি, গামছা কানি এক্কান আ সুলুম এক্কো দিনেই অর্ধেক পদত থিলি দিলাক কয়েক জনে। (থিলি দিলাক মানে বাহে দিলাক)
এ ঘদনান গদি যিয়ে ২৯ নং ছোট মেরুং মুউজ বাজেই ছড়া আদামত। সে আদাম আগারেদি এল শান্দি বাহিনী ব্রেক। সক্যে সিয়োত কমান্ডার এল “কনা” (সুভেন বাবু, বাদি দলর কাম গচ্ছে শান্তি বাহিনী ভাক অনেই)। কধা কধে কনত বাজে সেনে তারে কনা দাগন।

বুধবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৩

রাঙ্গামাটিতে মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পাহাড়ে শিক্ষিত বাঙালির পুনর্বাসন প্রকল্প। -রোবায়েত ফেরদৌস

 

রাঙ্গামাটিতে মেডিকেল কলেজ ও
বিশ্ববিদ্যালয় পাহাড়ে শিক্ষিত বাঙালির
পুনর্বাসন প্রকল্প।
-রোবায়েত ফেরদৌস
লেখা
প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি, ২০১৫ইং
এটা সবার জানা, ষাট-সত্তরের দশকে পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীরা তাদের অধিকার আদায়ে যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন তার অন্যতম হাতিয়ার ছিল শিক্ষা। আদিবাসী অধিকারের অবিসংবাদিত নেতা এম এন লারমা জন্মেছিলেন পশ্চাৎপদ ও ঘুণেধরা জুম্ম সমাজের সাধারণ একটি পরিবারে; কিন্তু এই পরিবারটি রক্ষণশীল, পরনির্ভরশীল ও সামন্ত নেতৃত্বের বিরোধিতা করে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের অধিকার রক্ষায় সাহসী ভূমিকা রাখেন; অধিকার আদায়ের সংগ্রাম ও জুম্ম যুবশক্তিকে সুশিক্ষায় উদ্বুদ্ধ ও প্রচারের আন্দোলন শুরু হয় তাদের নেতৃত্বেই; তিনি সে সময় জুম্ম ছাত্র- যুবসমাজের কাছে 'গ্রামে চল' স্লোগান তুলে ধরেন। শতাব্দী প্রাচীন শাসনে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা নিদ্রামগ্ন সমাজে ব্যাপক শিক্ষার প্রসার না ঘটলে জুম্ম জনগণকে  অধিকার সচেতন করা সম্ভব নয় বলে তিনি ঐতিহাসিক দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। গ্রামে গ্রামে গিয়ে স্কুল প্রতিষ্ঠা করে সাধারণের মাঝে শিক্ষার প্রসার ঘটানোর আহ্বান জানান তিনি। তার সেই যুগান্তকারী আহ্বানে সাড়া দিয়ে শিক্ষিত যুবসমাজের অনেকেই গ্রামের স্কুলে শিক্ষকতা পেশায় নিজেদের আ ত্মনিয়োগ করেন। তারা একাধারে শিক্ষকতা ও রাজনৈতিক সংগঠনের কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। আদিবাসী অধিকার আন্দোলনকে 'মাস্টার আন্দোলন' নামে চিহ্নিত করা হতো। এন লারমা নিজে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন; তার ভাই জনসংহতি সমিতির বর্তমান সভাপতি সন্তু লারমাও ছিলেন প্রধান শিক্ষক।
এ ছাড়া অন্যান্য নেতা যেমন- রামকিশোর চাকমা, ভবতোষ দেওয়ান, প্রীতিকুমার চাকমা, গৌতম  চাকমা, সুধাসিন্ধু খীসা, রূপায়ণ দেওয়ান, মঙ্গলকুমার চাকমা, জ্যোতিপ্রভা লারমা- এরাও শিক্ষকতা ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সমান্তরালে চালিয়ে গেছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, একসময়কার শিক্ষা আন্দোলন
যারা করেছেন তারা কিংবা তাদের উত্তরসূরিরা কেন এখন মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরোধিতা করছেন। তাদের এই অবস্থানকে বুঝতে হবে পাহাড়ের বিশেষ রাজনৈতিক
বাস্তবতার নিরিখে। কেননা চাপিয়ে দেওয়া সেটেলমেন্ট প্রক্রিয়ায় গেল ২৪-২৫ বছর ধরে জ্যামিতিক হারে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিদের বসতি স্থাপনের প্রকল্প চলছে; প্রধানত শিক্ষাবঞ্চিত প্রান্তিক বাঙালিদেরই পাহাড়ে পুনর্বাসন করা হতো; আর রাঙামাটিতে মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে এখন শিক্ষিত বাঙালিদের পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে।
তাদের বিরোধিতার আরও কারণ হলো, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সঙ্গে কোনোরূপ আলোচনা ও পরামর্শ ব্যতিরেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ স্থাপনেরও উদ্যোগ নেয়। তারা বলতে চেয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ স্থাপন নিঃসন্দেহে জনমুখী
উদ্যোগ কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, জুম্ম অধ্যুষিত একটি বিশেষ শাসিত অঞ্চলে এই বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে পার্বত্যাঞ্চলের স্বতন্ত্র বিশেষ প্রেক্ষাপট কতটুকু বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে? পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশেষ শাসনব্যবস্থা, স্বাতন্ত্র্যতা, জাতিবৈচিত্র্যতা, পশ্চাৎপদতা, ভূমি সমস্যা ইত্যাদি প্রেক্ষাপটের কথা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়-মেডিকেল কলেজ পরিচালনা বোর্ড গঠন, ছাত্রছাত্রী
ভর্তি, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ- এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আইনে বা নীতিমালায় কতটুকু আমলে নেওয়া হয়েছে? বিশ্ববিদ্যালয়-মেডিকেল কলেজ স্থাপন করার মতো পার্বত্যবাসীর রাজনৈতিক-সামাজিক- শিক্ষাগত অবস্থা অনুকূল কিনা তাও বিবেচ্য বিষয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে কোনো আইন
প্রণয়নের বেলায় আঞ্চলিক পরিষদ ও সংশ্লিষ্ট পার্বত্য জেলা পরিষদের সঙ্গে আলোচনা ও পরামর্শক্রমে প্রণয়নের যে সংবিধিবদ্ধ বাধ্যবাধকতা রয়েছে সরকার উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ স্থাপনের ক্ষেত্রে
উক্ত বিধানের কোনো তোয়াক্কাই করেনি; দেশে বিদ্যমান অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও একই ধরনের আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এই আইনের ৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, যে কোনো জাতি, ধর্ম, গোত্র এবং শ্রেণির পুরুষ ও নারীর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় উন্মুক্ত থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে আদিবাসী ও স্থানীয় ছাত্রছাত্রীদের জন্য আসন সংরক্ষণের কোনো বিধান বিশ্ববিদ্যালয় আইনে উল্লেখ করা হয়নি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্বাতন্ত্র্যমণ্ডিত বিশেষ অঞ্চলের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন স্থানীয় ছাত্রছাত্রীদের জন্য সংরক্ষিত থাকে। প্রস্তাবিত রাঙামটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইনে নির্বাহী পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থানীয়
অধিবাসীদের জন্য সংরক্ষণের কোনো বিধান উল্লেখ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী সংস্থা 'রিজেন্ট বোর্ড' গঠনেও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রতিনিধিত্ব তথা জুম্ম ও
স্থায়ী অধিবাসীদের থেকে সদস্য নিয়োগের সুনির্দিষ্ট কোনো বিধান রাখা হয়নি। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজের মতো সর্বোচ্চ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত শিক্ষার্থীর জোগান দেওয়ার মতো পার্বত্যবাসীর অর্থনৈতিক-সামাজিক-শিক্ষাগত ভিত্তি এখনো গড়ে ওঠেনি। এখানে ৯০ ভাগের অধিক আসনে অন্য জেলার বাঙালি ছাত্রছাত্রীরাই ভর্তি হয়ে থাকবে। তার উদাহরণ কাপ্তাই
সুইডেন পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট। পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা প্রসারে এটি স্থাপিত হলেও বর্তমানে ৯০ ভাগের অধিক ছাত্রছাত্রী বাইরের জেলার। এ ছাড়া শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে একই অবস্থাসৃষ্টি হবে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়-মেডিকেল কলেজ হয়ে দাঁড়াবে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ কেন্দ্র এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিতে স্বীকৃত পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি অধ্যুষিত অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদাকে
মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বহিরাগতদের ক্রমাগত অভিবাসন ও ভূমি বেদখল হওয়ার কারণে জুম্মদের জীবন-জীবিকা, পেশা ও ভূমি সংকট অত্যন্ত প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে
পার্বত্য অঞ্চলের অধিবাসীদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিরাজমান সমস্যাদি আরও জটিলতর হবে। এটা জুম্ম ও স্থানীয় অধিবাসীদের নিজস্ব জায়গা-জমি ও বসতবাটি থেকে উচ্ছেদকরণ ত্বরান্বিত করবে, যা সংবিধান ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিধানাবলির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিতে চাকরি ও উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সমপর্যায়ে না পেঁৗছা পর্যন্ত পাহাড়িদের জন্য সরকারি চাকরি ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোঠা ব্যবস্থা বহাল রাখা,
উপরোক্ত লক্ষ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠা নে পাহাড়ি ছাত্রছাত্রীদের জন্য অধিকসংখ্যক বৃত্তি প্রদান করা, বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ ও গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় বৃত্তি প্রদান করার বিধান রয়েছে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রসার ও উন্নয়নে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি-উত্তরকালেও উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নতি সাধিত হয়নি। তিন পার্বত্য জেলায় তিনটি সরকারি কলেজ রয়েছে এবং এসব কলেজে মাত্র কতিপয় বিষয়ে অনার্স পড়ার সুয়োগ রয়েছে। শিক্ষক সংখ্যা অত্যন্ত কম। সরকারি কলেজসমূহে শিক্ষার উপকরণসহ শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের আবাসনের সমস্যা প্রকটভাবে বিদ্যমান। এ ছাড়া তিন পার্বত্য
জেলার বেসরকারি কলেজসহ পার্বত্য অঞ্চলের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যাও রয়েছে। তাই এই মুহূর্তে বিদ্যমান বাস্তবতায় আদিবাসীদের অধিকার ও অস্তিত্বকে বিপন্ন করে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে অনিশ্চিত রেখে সরকারের এই উদ্যোগ অত্র এলাকার জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ও বাস্তবসম্মত হবে না বলেই পাহাড়িরা মনে করছেন। বরং দরকার তিন
পার্বত্য জেলায় বিদ্যমান তিনটি সরকারি কলেজে অধিকসংখ্যক বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু করা, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে আদিবাসী জুম্ম ছাত্রছাত্রীদের জন্য অধিকতর কোঠা বরাদ্দ করা, পার্বত্য চট্টগ্রামে প্যারা- মেডিকেল ইনস্টিটিউট স্থাপন, পার্বত্যাঞ্চলের শিক্ষা উন্নয়নে  অধিকতর অর্থ বরাদ্দ করা ইত্যাদি।
জানা তথ্য বলে, ১৯৪৭ সালেও পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী ও বাঙালি জনসংখ্যার অনুপাত ছিল ৯৩ ঃ ০৭; আর এখন এসে আদিবাসী ঃ বাঙালি অনুপাত দাঁড়িয়েছে ৫৫ ঃ ৪৫। এভাবে চললে আগামী ১০ বছরে আদিবাসীরা পাহাড়ে সংখ্যালঘু হয়ে যাবে আর ২০ বছর পরে হয়তো হয়ে যাবে সংখ্যাশূন্য। পার্বত্য চট্টগ্রামে পুনর্বাসিত বাঙালিদের প্রধানত সেনানিবাস ও শহরাঞ্চলের কাছাকাছি এলাকায় বসতির ব্যবস্থা করা হয়; এর ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার বিভিন্ন পৌরসভার মেয়র নির্বাচনে বাঙালিরাই নির্বাচিত হয়। এই ডেমোগ্র্যাফিক রাজনীতির কারণে আদিবাসীরা তাদের ভিতর থেকে নিজেদের মেয়র/নেতা নির্বাচনে ব্যর্থ হচ্ছে; বলা হয় যাদের জন্য উন্নয়ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণ থাকতে হবে কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে তা হচ্ছে না। খুব নীরবে আদিবাসীদের কোণঠাসা করার সব আয়োজন সেখানে চলছে। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। 
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক,
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
ই-মেইল: robaet.ferdous@gmail.com

শুক্রবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৩

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ১৯৯৭ এর সব ধারা সমূহঃ

 

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ১৯৯৭ এর সব ধারা সমূহঃ

===========================
পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘদিনের চলমান রাজনৈতিক সমস্যা সংকট ও অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানির অবসান ঘটিয়ে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে ১৯৯৭ সাথে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জেএসএস সন্তু লারমা মধ্যকার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সম্পাদিত হয়।
বাংলাদেশ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি (পিসিজেএসএস)-এর মধ্যে সম্পাদিত ১৯৯৭-২ রা ডিসেম্বরের সম্পাদিত চুক্তির সম্পূর্ণ ধারা সমূহ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তরফ হইতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার অধিবাসীদের পক্ষ হইতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি নিম্নে বর্ণিত চারি খন্ড (ক, খ, গ, ঘ) সম্বলিত চুক্তিতে উপনীত হইলেন:
(ক) সাধারণ
১) উভয়পক্ষ পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলকে উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চল হিসাবে বিবেচনা করিয়া এ অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ এবং এ অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন অর্জন করার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করিয়াছেন;
২) উভয়পক্ষ এ চুক্তির আওতায় যথাশিগগির ইহার বিভিন্ন ধারায় বিবৃত ঐক্যমত্য ও পালনীয় দায়িত্ব অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট আইন, বিধানাবলী, রীতিসমূহ প্রণয়ন, পরিবর্তন, সংশোধন ও সংযোজন আইন মোতাবেক করা হইবে বলিয়া স্থিরীকৃত করিয়াছেন;
৩) এই চুক্তির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া পরিবীক্ষণ করিবার লক্ষ্যে নিম্নে বর্ণীত সদস্য সমন্বয়ে একটি বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হইবে;
ক) প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত একজন সদস্য : আহ্বায়ক
খ) এই চুক্তির আওতায় গঠিত টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান : সদস্য
গ) পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি : সদস্য
৪) এই চুক্তি উভয়পক্ষের তরফ হইতে সম্পাদিত ও সহি করার তারিখ হইতে বলবৎ হইবে। বলবৎ হইবার তারিখ হইতে এই চুক্তি অনুযায়ী উভয় পক্ষ হইতে সম্পাদনীয় সকল পদক্ষেপ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এই চুক্তি বলবৎ থাকিবে।
(খ) পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ/পার্বত্য জেলা পরিষদ
উভয়পক্ষ এই চুক্তি বলবৎ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বিদ্যমান পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯ (রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯, বান্দরবন পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯) এবং-এর বিভিন্ন ধারাসমূহের নিম্নে বর্ণীত পরিবর্তন, সংশোধন, সংযোজন ও অবলোপন করার বিষয়ে ও লক্ষ্যে একমত হইয়াছেন:
১) পরিষদের আইনে বিভিন্ন ধারায় ব্যবহৃত ‘উপজাতি’ শব্দটি বলবৎ থাকিবে।
২) ‘পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ’ এর নাম সংশোধন করিয়া তদপরিবর্তে এই পরিষদ ‘পার্বত্য জেলা পরিষদ’ নামে অভিহিত হইবে।
৩) ‘অ-উপজাতীয় স্থায়ী বাসিন্দা’ বলিতে যিনি উপজাতীয় নহেন এবং যাহার পার্বত্য জেলায় বৈধ জায়গা-জমি আছে এবং যিনি পার্বত্য জেলায় সুনির্দিষ্ট ঠিকানায় সাধারণতঃ বসবাস করেন তাহাকে বুঝাইবে।
৪) (ক) প্রতিটি পার্বত্য জেলা পরিষদে মহিলাদের জন্যে ৩ (তিন) টি আসন থাকিবে। এসব আসনের এক-তৃতীয়াংশ (১/৩) অ-উপজাতীয়দের জন্যে হইবে।
(খ) ৪ নম্বর ধারার উপ-ধারা ১, ২, ৩ ও ৪ মূল আইন মোতাবেক বলবৎ থাকিবে।
(গ) ৪ নম্বর ধারার উপ-ধারা (৫)-এর দ্বিতীয় পংক্তিতে অবস্থিত ‘ডেপুটি কমিশনার’ এবং ‘ডেপুটি কমিশনারের’ শব্দগুলি পরিবর্তে যথাক্রমে ‘সার্কেল চীফ’ এবং ‘সার্কেল চীফের’ শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে।
(ঘ) ৪ নম্বর ধারার নিম্নোক্ত উপ-ধারা সংযোজন করা হইবে ‘কোন ব্যক্তি অ-উপজাতীয় কিনা এবং হইলে তিনি কোন সম্প্রদায়ের সদস্য তাহা সংশ্লিষ্ট মৌজার হেডম্যান/ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/পৌর সভার চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত সার্টিফিকেট দাখিল সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট সার্কেলের চীফ স্থির করিবেন এবং এতদসম্পর্কে সার্কেল চীফের নিকট হইতে প্রাপ্ত সার্টিফিকট ব্যতীত কোন ব্যক্তি অ-উপজাতীয় হিসাবে কোন অ-উপজাতীয় সদস্য পদের জন্যে প্রার্থী হইতে পারিবেন না।
৫) ৭ নম্বর ধারায় বর্ণীত আছে যে, চেয়ারম্যান বা কোন সদস্য পদে নির্বাচিত ব্যক্তি তাহার কার্যক্রম গ্রহণের পূর্বে চট্টগ্রাম বিভাগের কমিশনারের সম্মুখে শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা করিবেন। ইহা সংশোধন করিয়া ‘চট্টগ্রাম বিভাগের কমিশনার’-এর পরিবর্তে ‘হাই কোর্ট ডিভিশনের কোন বিচারপতি’ কর্তৃক সদস্যরা শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা করিবেন-অংশটুকু সন্নিবেশ করা হইবে।
৬) ৮ নম্বর ধারার চতুর্থ পংক্তিতে অবস্থিত ‘চট্টগ্রাম বিভাগের কমিশনারের নিকট’ শব্দগুলির পরিবর্তে ‘নির্বাচন বিধি অনুসারে’ শব্দগুলি প্রতিস্থাপন করা হইবে।
৭) ১০ নম্বর ধারার দ্বিতীয় পংক্তিতে অবস্থিত ‘তিন বৎসর’ শব্দগুলির পরিবর্তে ‘পাঁচ বৎসর’ শব্দগুলি প্রতিস্থাপন করা হইবে।
৮) ১৪ নম্বর ধারায় চেয়ারম্যানের পদ কোন কারণে শূন্য হইলে বা তাহার অনুপস্থিতিতে পরিষদের অন্যান্য সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত একজন উপজাতীয় সদস্য সভাপতিত্ব করিবেন এবং অন্যান্য দায়িত্ব পালন করিবেন বলিয়া বিধান থাকিবে।
৯) বিদ্যমান ১৭নং ধারা নিম্নে উল্লেখিত বাক্যগুলি দ্বারা প্রতিস্থাপিত হইবে: আইনের আওতায় কোন ব্যক্তি ভোটার তালিকাভুক্ত হওয়ার যোগ্য বলিয়া বিবেচিত হইতে পারিবেন, যদি তিনি- (১) বাংলাদেশের নাগরিক হন; (২) তাহার বয়স ১৮ বৎসরের কম না হয়; (৩) কোন উপযুক্ত আদালত তাহাকে মানসিকভাবে অসুস্থ ঘোষণা না করিয়া থাকেন; (৪) তিনি পার্বত্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হন।
১০) ২০ নম্বর ধারার (২) উপ-ধারায় ‘নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ’ শব্দগুলি স্বতন্ত্রভাবে সংযোজন করা হইবে।
১১) ২৫ নম্বর ধারার উপ-ধারা (২) এ পরিষদের সকল সভায় চেয়ারম্যান এবং তাহার অনুপস্থিতিতে অন্যান্য সদস্যগণ কর্তৃক নির্বাচিত একজন উপজাতীয় সদস্য সভাপতিত্ব করিবেন বলিয়া বিধান থাকিবে।
১২) যেহেতু খাগড়াছড়ি জেলার সমস্ত অঞ্চল মং সার্কেলের অন্তর্ভুক্ত নহে, সেহেতু খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার আইনে ২৬ নম্বর ধারায় বর্ণিত ‘খাগড়াছড়ি মং চীফ’-এর পরিবর্তে ‘মং সার্কেলের চীফ এবং চাকমা সার্কেলের চীফ’ শব্দগুলি প্রতিস্থাপন করা হইবে। অনুরূপভাবে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সভায় বোমাং সার্কেলের চীফেরও উপস্থিত থাকার সুযোগ রাখা হইবে। একইভাবে বান্দরবন জেলা পরিষদের সভায় বোমাং সার্কেলের চীফ ইচ্ছা করিলে বা আমন্ত্রিত হইলে পরিষদের সভায় যোগদান করিতে পারিবেন বলিয়া বিধান রাখা হইবে।
১৩) ৩১ নম্বর উপ-ধারা (১) ও উপ-ধারা (২) এ পরিষদে সরকারের উপ-সচিব সমতুল্য একজন মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সচিব হিসাবে থাকিবেন এবং এই পদে উপজাতীয় কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার প্রদান করা হইবে বলিয়া বিধান থাকিবে।
১৪) (ক) ৩২ নম্বর ধারার উপ-ধারা (১) এ পরিষদের কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের নিমিত্ত পরিষদ সরকারের অনুমোদনক্রমে, বিভিন্ন শ্রেণীর কর্মকর্তা ও কর্মচারির পদ সৃষ্টি করিতে পারিবে বলিয়া বিধান থাকিবে।
(খ) ৩২ নম্বর ধারার উপ-ধারা (২) সংশোধন করিয়া নিম্নোক্তভাবে প্রণয়ন করা হইবে ঃ ‘পরিষদ প্রবিধান অনুযায়ী তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর পদে কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবেন এবং তাহাদেরকে বদলি ও সাময়িক বরখাস্ত, বরখাস্ত, অপসারণ বা অন্য কোন প্রকার শাস্তি প্রদান করিতে পারিবে। তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলার উপজাতীয় বাসিন্দাদের অগ্রাধিকার বজায় রাখিতে হইবে’।
(গ) ৩২ নম্বর ধারার উপ-ধারা (৩) এ পরিষদের অন্যান্য পদে সরকার পরিষদের পরামর্শক্রমে বিধি অনুযায়ী কর্মকর্তা নিয়োগ করিতে পারিবে এবং এই সকল কর্মকর্তাকে সরকার অন্যত্র বদলি, সাময়িক বরখাস্ত, বরখাস্ত, অপসারণ অথবা অন্য কোন প্রকার শাস্তি প্রদান করিতে পারিবে বলিয়া বিধান থাকিবে।
১৫) ৩৩ নম্বর ধারার উপ-ধারা (৩) এ বিধি অনুযায়ী হইবে বলিয়া উল্লেখ থাকিবে।
১৬) ৩৬ নম্বর ধারার উপ-ধারা (১) এর তৃতীয় পংক্তিতে অবস্থিত ‘অথবা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অন্য কোন প্রকার’ শব্দগুলি বিলুপ্ত করা হইবে।
১৭) (ক) ৩৭ নম্বর ধারার (১) উপ-ধারার চতুর্থতঃ এর মূল আইন বলবৎ থাকিবে।
(খ) ৩৭ নম্বর ধারার (২) উপ-ধারা (ঘ)-তে বিধি অনুযায়ী হইবে বলিয়া উল্লেখিত হইবে।
১৮) ৩৮ নম্বর ধারার উপ-ধারা (৩) বাতিল করা হইবে এবং উপ-ধারা (৪) সংশোধন করিয়া নিম্নোক্তভাবে এই উপ-ধারা প্রণয়ন করা হইবে ঃ কোন অর্থ-বৎসর শেষ হইবার পূর্বে যে কোন সময় সেই অর্থ-বৎসরের জন্যে, প্রয়োজন হইলে, একটি বাজেট প্রণয়ন ও অনুমোদন করা যাইবে।
১৯) ৪২ নম্বর ধারার নিম্নোক্ত উপ-ধারা সংযোজন করা হইবে: পরিষদ সরকার হইতে প্রাপ্য অর্থে হস্তান্তরিত বিষয়সমূহের উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করিতে পারিবে, এবং জাতীয় পর্যায়ে গৃহীত সকল উন্নয়ন কার্যক্রম পরিষদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়ন করিবে।
২০) ৪৫ নম্বর ধারার উপ-ধারা (২) এর দ্বিতীয় পংক্তিতে অবস্থিত ‘সরকার’ শব্দটির পরিবর্তে ‘পরিষদ’ শব্দটি প্রতিস্থাপন করা হইবে।
২১) ৫০, ৫১ ও ৫২ নম্বর ধারাগুলি বাতিল করিয়া তদপরিবর্তে নিম্নোক্ত ধারা প্রণয়ন করা হইবে : এই আইনের উদ্দেশ্যের সহিত পরিষদের কার্যকলাপের সামঞ্জস্য সাধনের নিশ্চয়তা বিধানকল্পে সরকার প্রয়োজনে পরিষদকে পরামর্শ প্রদান বা অনুশাসন করিতে পারিবে। সরকার যদি নিশ্চিতভাবে এইরূপ প্রমাণ লাভ করিয়া থাকে যে, পরিষদ বা পরিষদের পক্ষে কৃত বা প্রস্তাবিত কোন কাজ-কর্ম আইনের সহিত সংগতিপূর্ণ নহে অথবা জনস্বার্থের পরিপন্থী তাহা হইলে সরকার লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পরিষদের নিকট হইতে তথ্য ও ব্যাখ্যা চাহিতে পারিবে এবং পরামর্শ বা নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।
২২) ৫৩ ধারার (৩) উপ-ধারার ‘বাতিল থাকার মেয়াদ শেষ হইলে’ শব্দগুলি বাতিল করিয়া তদপরিবর্তে ‘এই আইন’ শব্দটির পূর্বে ‘পরিষদ বাতিল হইলে নব্বই দিনের মধ্যে’ শব্দগুলি সন্নিবেশ করা হইবে।
২৩) ৬১ নম্বর ধারার তৃতীয় ও চতুর্থ পংক্তিতে অবস্থিত ‘সরকারের’ শব্দটির পরিবর্তে ‘মন্ত্রণালয়ের’ শব্দটি প্রতিস্থাপন করা হইবে।
২৪) (ক) ৬২ নম্বর ধারার উপ-ধারা (১) সংশোধন করিয়া নিম্নোক্তভাবে এই উপ-ধারাটি প্রণয়ন করা হইবে : আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, পার্বত্য জেলা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর ও তদনিম্ন স্তরের সকল সদস্য প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিষদ কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং পরিষদ তাহাদের বদলি ও প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে তাহাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে। তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলার উপজাতীয়দের অগ্রাধিকার বজায় রাখিতে হইবে।
(খ) ৬২ নম্বর ধারার উপ-ধারা (৩) এর দ্বিতীয় পংক্তিতে অবস্থিত আপাততঃ বলবৎ অন্য সকল আইনের বিধান সাপেক্ষে শব্দগুলি বাতিল করিয়া তদপরিবর্তে ‘যথা আইন ও বিধি অনুযায়ী’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপন করা হইবে।
২৫) ৬৩ নম্বর ধারার তৃতীয় পংক্তিতে অবস্থিত ‘সহায়তা দান করা’ শব্দগুলি বলবৎ থাকিবে।
২৬) ৬৪ নম্বর ধারা সংশোধন করিয়া নিম্নোক্তভাবে এই ধারাটি প্রণয়ন করা হইবে :
(ক) আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, পার্বত্য জেলার এলাকাধীন বন্দোবস্তযোগ্য খাসজমিসহ কোন জায়গা-জমি পরিষদের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে ইজারা প্রদানসহ বন্দোবস্ত, ক্রয়, বিক্রয় ও হস্তান্তর করা যাইবে না।
তবে শর্ত থাকে যে, রক্ষিত (Reserved বনাঞ্চল, কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকা, বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ এলাকা, রাষ্ট্রীয় শিল্প কারখানা ও সরকারের নামে রেকর্ডকৃত ভূমির ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য হইবে না।
(খ) আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, পার্বত্য জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণ ও আওতাধীন কোন প্রকারের জমি, পাহাড় ও বনাঞ্চল পরিষদের সাথে আলোচনা ও ইহার সম্মতি ব্যতিরেকে সরকার কর্তৃক অধিগ্রহণ ও হস্তান্তর করা যাইবে না।
(গ) পরিষদ হেডম্যান, চেইনম্যান, আমিন, সার্ভেয়ার, কানুনগো ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)দের কার্যাদি তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবে।
(ঘ) কাপ্তাই হ্রদের জলে ভাষা (Fringe Land) জমি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জমির মূল মালিকদেরকে বন্দোবস্ত দেয়া হইবে।
২৭) ৬৫ নম্বর ধারা সংশোধন করিয়া নিম্নোক্তভাবে এই ধারা প্রণয়ন করা হইবে। আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, জেলার ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের দায়িত্ব পরিষদের হস্তে ন্যস্ত থাকিবে এবং জেলায় আদায়কৃত উক্ত কর পরিষদের তহবিলে থাকিবে।
২৮) ৬৭ নম্বর ধারা সংশোধন করিয়া নিম্নোক্তভাবে এই ধারা প্রণয়ন করা হইবে : পরিষদে এবং সরকারী কর্তৃপক্ষের কার্যাবলীর মধ্যে সমন্বয়ের প্রয়োজন দেখা দিলে সরকার বা পরিষদ নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করিবে এবং পরিষদ ও সরকারের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগের মাধ্যমে কাজের সমন্বয় বিধান করা যাইবে।
২৯) ৬৮ নম্বর ধারার উপ-ধারা (১) সংশোধন করিয়া নিম্নোক্তভাবে এই উপ-ধারা প্রণয়ন করা হইবে : এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা পরিষদের সাথে আলোচনাক্রমে বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে এবং কোন বিধি প্রণীত হওয়ার পরেও উক্ত বিধি পুনর্বিবেচনার্থে পরিষদ কর্তৃক সরকারের নিকট আবেদন করিবার বিশেষ অধিকার থাকিবে।
৩০) (ক) ৬৯ ধারার উপ-ধারা (১) এর প্রথম ও দ্বিতীয় পংক্তিতে অবস্থিত ‘সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে’ শব্দগুলি বিলুপ্ত এবং তৃতীয় পংক্তিতে অবস্থিত ‘করিতে পারিবে’ এই শব্দগুলির পরে নিম্নোক্ত অংশটুকু সন্নিবেশ করা হইবে ঃ তবে শর্ত থাকে যে, প্রণীত প্রবিধানের কোন অংশ সম্পর্কে সরকার যদি মতভিন্নতা পোষণ করে তাহা হইলে সরকার উক্ত প্রবিধান সংশোধনের জন্য পরামর্শ দিতে বা অনুশাসন করিতে পারিবে।
(খ) ৬৯ নম্বর ধারার উপ-ধারা (২) এর (হ) এ উল্লেখিত ‘পরিষদের কোন কর্মকর্তাকে চেয়ারম্যানের ক্ষমতা অর্পণ’ এই শব্দগুলি বিলুপ্ত করা হইবে।
৩১) ৭০ নম্বর ধারা বিলুপ্ত করা হইবে।
৩২) ৭৯ নম্বর ধারা সংশোধন করিয়া নিম্নোক্তভাবে এই ধারা প্রণয়ন করা হইবে : পার্বত্য জেলায় প্রযোজ্য জাতীয় সংসদ বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ গৃহীত কোন আইন পরিষদের বিবেচনায় উক্ত জেলার জন্য কষ্টকর হইলে বা উপজাতীয়দের জন্যে আপত্তিকর হইলে পরিষদ উহা কষ্টকর বা আপত্তিকর হওয়ার কারণ ব্যক্ত করিয়া আইনটির সংশোধন বা প্রয়োগ শিথিল করিবার জন্যে সরকারের নিকট লিখিত আবেদন পেশ করিতে পারিবে এবং সরকার এই আবেদন অনুযায়ী প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে পারিবে।
৩৩) (ক) প্রথম তফসিল বর্ণীত পরিষদের কার্যাবলীর ১ নম্বরে ‘শৃঙ্খলা’ শব্দটির পরে ‘তত্ত্বাবধান’ শব্দটি সন্নিবেশ করা হইবে।
(খ) পরিষদের কার্যাবলীর ৩ নম্বরে নিম্নোক্ত বিষয়সমূহ সংযোজন করা হইবে: (১) বৃত্তিমূলক শিক্ষা, (২) মাতৃভাষার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা, (৩) মাধ্যমিক শিক্ষা।
(গ) প্রথম তফসিলে পরিষদের কার্যাবলীর ৬(খ) উপ-ধারায় ‘সংরক্ষিত বা’ শব্দগুলি বিলুপ্ত করা হইবে।
৩৪) পার্বত্য জেলা পরিষদের কার্য ও দায়িত্বাদির মধ্যে নিম্নে উল্লেখিত বিষয়াবলী অন্তর্ভুক্ত হইবে ঃ
ক) ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা;
খ) পুলিশ (স্থানীয়);
গ) উপজাতীয় আইন ও সামাজিক বিচার;
ঘ) যুব কল্যাণ;
ঙ) পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন;
চ) স্থানীয় পর্যটন;
ছ) পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ ব্যতীত ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাষ্ট ও অন্যান্য স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান;
জ) স্থানীয় শিল্প-বাণিজ্যের লাইসেন্স প্রদান;
ঝ) কাপ্তাই হ্রদের জলসম্পদ ব্যতীত অন্যান্য নদী-নালা, খাল-বিলের সুষ্ঠু ব্যবহার ও সেচ ব্যবস্থা;
ঞ) জন্ম-মৃত্যু ও অন্যান্য পরিসংখ্যান সংরক্ষণ;
ট) মহাজনী কারবার;
ঠ) জুম চাষ।
৩৫) দ্বিতীয় তফসীলে বিবৃত পরিষদ আরোপনীয় কর, রেইট, টোল এবং ফিস-এর মধ্যে নিম্নে বর্ণীত ক্ষেত্র ও উৎসাদি অন্তর্ভুক্ত হইবে:
ক) অযান্ত্রিক যানবাহনের রেজিষ্ট্রেশন ফি;
খ) পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের উপর কর;
গ) ভূমি ও দালান-কোঠার উপর হোল্ডিং কর;
ঘ) গৃহপালিত পশু বিক্রয়ের উপর কর;
ঙ) সামাজিক বিচারের ফিস;
চ) সরকারী ও বেসরকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের উপর হোল্ডিং কর;
ছ) বনজ সম্পদের উপর রয়্যালিটির অংশ বিশেষ;
জ) সিনো, যাত্রা, সার্কাস ইত্যাদির উপর সম্পূরক কর;
ঝ) খনিজ সম্পদ অন্বেষণ বা নিষ্কর্ষণের উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুজ্ঞা পত্র বা পাট্টাসমূহ সূত্রে প্রাপ্ত রয়্যালটির অংশ বিশেষ;
ঞ) ব্যবসার উপর কর;
ট) লটারীর উপর কর;
ঠ) মৎস্য ধরার উপর কর।
(গ) পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ
১) পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহ অধিকতর শক্তিশালী ও কার্যকর করিবার লক্ষ্যে পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯ ইং (১৯৮৯ সনের ১৯, ২০ ও ২১নং আইন)-এর বিভিন্ন ধারা সংশোধন ও সংযোজন সাপেক্ষে তিন পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদের সমন্বয়ে একটি আঞ্চলিক পরিষদ গঠন করা হইবে।
২) পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্যগণের দ্বারা পরোক্ষভাবে এই পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হইবেন যাহার পদমর্যাদা হইবে একজন প্রতিমন্ত্রীর সমকক্ষ এবং তিনি অবশ্যই উপজাতীয় হইবেন।
৩) চেয়ারম্যানসহ পরিষদ ২২ (বাইশ) জন সদস্য লইয়া গঠন করা হইবে। পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য উপজাতীয়দের মধ্য হইতে নির্বাচিত হইবে। পরিষদ ইহার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিবেন। পরিষদের গঠন নিম্নরূপ হইবে :
চেয়ারম্যান – ১ জন
সদস্য উপজাতীয় (পুরুষ)- ১২ জন
সদস্য উপজাতীয় মহিলা)- ২ জন
সদস্য অ-উপজাতীয় (পুরুষ)- ৬ জন
সদস্য অ-উপজাতীয় (মহিলা)- ১ জন
উপজাতীয় পুরুষ সদস্যদের মধ্যে ৫ জন নির্বাচিত হইবেন চাকমা উপজাতি হইতে, ৩ জন মার্মা উপজাতি হইতে, ২ জন ত্রিপুরা উপজাতি হইতে, ১ জন মুরং ও তনচৈঙ্গ্যা উপজাতি হইতে এবং ১ জন লুসাই, বোম, পাংখো, খুমী, চাক ও খিয়াং উপজাতি হইতে।
অ-উপজাতি পুরুষ সদস্যদের মধ্যে হইতে প্রত্যেক জেলা হইতে ২ জন করিয়া নির্বাচিত হইবেন।
উপজাতীয় মহিলা সদস্য নিয়োগের ক্ষেত্রে চাকমা উপজাতি হইতে ১ জন এবং অন্যান্য উপজাতি থেকে ১জন নির্বাচিত হইবেন।
৪) পরিষদের মহিলাদের জন্য ৩ (তিন) টি আসন সংরক্ষিত রাখা হইবে। এক-তৃতীয়াংশ (১/৩) অ-উপজাতীয় হইবে।
৫) পরিষদের সদস্যগণ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্যগণের দ্বারা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হইবেন। তিন পার্বত্য জেলার চেয়ারম্যানগণ পদাধিকারবলে পরিষদের সদস্য হইবেন এবং তাহাদের ভোটাধিকার থাকিবে। পরিষদের সদস্য প্রার্থীদের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্যদের যোগ্যতা ও অযোগ্যতার অনুরূপ হইবে।
৬) পরিষদের মেয়াদ ৫ (পাঁচ) বৎসর হইবে। পরিষদের বাজেট প্রণয়ন ও অনুমোদন, পরিষদ বাতিলকরণ, পরিষদের বিধি প্রণয়ন, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট বিষয় ও পদ্ধতি পার্বত্য জেলা পরিষদের অনুকূলে প্রদত্ত ও প্রযোজ্য বিষয় ও পদ্ধতির অনুরূপ হইবে।
৭) পরিষদে সরকারের যুগ্মসচিব সমতুল্য একজন মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা থাকিবেন এবং এই পদে নিযুক্তির জন্য উপজাতীয় প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হইবে।
৮) (ক) যদি পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হয় তাহা হইলে অন্তরবর্তীকালীন সময়ের জন্য পরিষদের অন্যান্য উপজাতীয় সদস্যগণের মধ্য হইতে একজন তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্যগণের দ্বারা পরোক্ষভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হইবেন।
(খ) পরিষদের কোন সদস্যপদ যদি কোন কারণে শূন্য হয় তবে উপ-নির্বাচনের মাধ্যমে তাহা পূরণ করা হইবে।
৯) (ক) পরিষদ তিনটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অধীনে পরিচালিত সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড সমন্বয় সাধন করাসহ তিনটি পার্বত্য জেলা পরিষদের আওতাধীন ও উহাদের উপর অর্পিত বিষয়াদি সার্বিক তত্ত্বাবধান ও সমন্বয় করিবে। ইহা ছাড়া অর্পিত বিষয়াদির দায়িত্ব পালনে তিন জেলা পরিষদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব কিংবা কোনরূপ অসংগতি পরিলক্ষিত হইলে আঞ্চলিক পরিষদের সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত বলিয়া পরিগণিত হইবে।
(খ) এই পরিষদ পৌরসভাসহ স্থানীয় পরিষদসমূহ তত্ত্বাবধান ও সমন্বয় করিবে।
(গ) তিন পার্বত্য জেলার সাধারণ প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা ও উন্নয়নের ব্যাপারে আঞ্চলিক পরিষদ সমন্বয় সাধন ও তত্ত্বাবধান করিতে পারিবে।
(ঘ) পরিষদ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনাসহ এনজিও’দের কার্যাবলী সমন্বয় সাধন করিতে পারিবে।
(ঙ) উপজাতীয় আইন ও সামাজিক বিচার আঞ্চলিক পরিষদের আওতাভুক্ত থাকিবে।
(চ) পরিষদ ভারী শিল্পের লাইসেন্স প্রদান করিতে পারিবে।
১০) পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, পরিষদের সাধারণ ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে অর্পিত দায়িত্ব পালন করিবে। উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার যোগ্য উপজাতীয় প্রার্থীকে অগ্রাধিকার প্রদান করিবেন।
১১) ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধি এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আইন, বিধি ও অধ্যাদেশের সাথে ১৯৮৯ সনের স্থানীয় সরকার পরিষদ আইনের যদি কোন অসংগতি পরিলক্ষিত হয় তবে আঞ্চলিক পরিষদের পরামর্শ ও সুপারিশক্রমে সেই অসংগতি আইনের মাধ্যমে দূর করা হইবে।
১২) পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ নির্বাচনের ভিত্তিতে আঞ্চলিক পরিষদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত সরকার অন্তরবর্তীকালীন আঞ্চলিক পরিষদ গঠন করিয়া তাহার উপর পরিষদের প্রদেয় দায়িত্ব দিতে পারিবেন।
১৩) সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে আইন প্রণয়ন করিতে গেলে আঞ্চলিক পরিষদের সাথে আলোচনাক্রমে ও ইহার পরামর্শক্রমে আইন প্রণয়ন করিবেন। তিনটি পার্বত্য জেলার উন্নয়ন ও উপজাতীয় জনগণের কল্যাণের পথে বিরূপ ফল হইতে পারে এইরূপ আইনের পরিবর্তন বা নতুন আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে পরিষদ সরকারের নিকট আবেদন অথবা সুপারিশমালা পেশ করিতে পারিবেন।
১৪) নিম্নোক্ত উৎস হইতে পরিষদের তহবিল গঠন হইবে:
(ক) জেলা পরিষদের তহবিল হইতে প্রাপ্ত অর্থ;
(খ) পরিষদের উপর ন্যস্ত এবং তৎকর্তৃক পরিচালিত সকল সম্পত্তি হইতে প্রাপ্ত অর্থ বা মুনাফা;
(গ) সরকার বা অন্যান্য কর্তৃৃপক্ষের ঋণ ও অনুদান;
(ঘ) কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
(ঙ) পরিষদের অর্থ বিনিয়োগ হইতে মুনাফা;
(চ) পরিষদ কর্তৃক প্রাপ্ত যে কোন অর্থ;
(ছ) সরকারের নির্দেশে পরিষদের উপর ন্যস্ত অন্যান্য আয়ের উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
(ঘ) পুনর্বাসন, সাধারণ ক্ষমা প্রদর্শন ও অন্যান্য বিষয়াবলী
পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় স্বাভাবিক অবস্থা পুনঃস্থাপন এবং এই লক্ষ্যে পুনর্বাসন, সাধারণ ক্ষমা প্রদর্শন ও সংশ্লিষ্ট কার্য এবং বিষয়াবলীর ক্ষেত্রে উভয় পক্ষ নিম্নে বর্ণীত অবস্থানে পৌঁছিয়াছেন এবং কার্যক্রম গ্রহণে একমত হইয়াছেন:
১) ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে অবস্থানরত উপজাতীয় শরণার্থীদের দেশে ফিরাইয়া আনার লক্ষ্যে সরকার ও উপজাতীয় শরণার্থী নেতৃবৃন্দের সাথে ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় ৯ মার্চ ’৯৭ ইং তারিখে এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী ২৮ মার্চ ’৯৭ ইং হইতে উপজাতীয় শরণার্থীগণ দেশে প্রত্যাবর্তন শুরু করেন। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকিবে এবং এই লক্ষ্যে জনসংহতি সমিতির পক্ষ হইতে সম্ভাব্য সব রকম সহযোগিতা প্রদান করা হইবে। তিন পার্বত্য জেলার আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুদের নির্দিষ্টকরণ করিয়া একটি টাস্কফোর্সের মাধ্যমে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে।
২) সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর ও বাস্তবায়ন এবং উপজাতীয় শরণার্থী ও আভ্যন্তরীণ উপজাতীয় উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের পর সরকার এই চুক্তি অনুযায়ী গঠিতব্য আঞ্চলিক পরিষদের সাথে আলোচনাক্রমে যথাশীঘ্র পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি জরিপ কাজ শুরু এবং যথাযথ যাচাইয়ের মাধ্যমে জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করতঃ উপজাতীয় জনগণের ভূমি মালিকানা চুড়ান্ত করিয়া তাহাদের ভূমি রেকর্ডভূক্ত ও ভূমির অধিকার নিশ্চিত করিবেন।
৩) সরকার ভূমিহীন বা দুই একরের কম জমির মালিক উপজাতীয় পরিবারের ভূমির মালিকানা নিশ্চিত করিতে পরিবার প্রতি দুই একর জমি স্থানীয় এলাকায় জমির লভ্যতা সাপেক্ষে বন্দোবস্ত দেওয়া নিশ্চিত করিবেন। যদি প্রয়োজন মত জমি পাওয়া না যায় তাহা হইলে সেই ক্ষেত্রে টিলা জমির (গ্রোভল্যান্ড) ব্যবস্থা করা হইবে।
৪) জায়গা-জমি বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তিকল্পে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি কমিশন (ল্যান্ড কমিশন) গঠিত হইবে। পুনর্বাসিত শরণার্থীদের জমি-জমা বিষয়ক বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তি করা ছাড়াও এ যাবৎ যেইসব জায়গা-জমি ও পাহাড় অবৈধভাবে বন্দোবস্ত ও বেদখল হইয়াছে সেই সমস্ত জমি ও পাহাড়ের মালিকানা স্বত্ব বাতিলকরণের পূর্ণ ক্ষমতা এই কমিশনের থাকিবে। এই কমিশনের রায়ের বিরুদ্ধে কোন আপিল চলিবে না এবং এই কমিশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া বিবেচিত হইবে। ফ্রীঞ্জল্যান্ড (জলে ভাসা জমি)-এর ক্ষেত্রে ইহা প্রযোজ্য হইবে।
৫) এই কমিশন নিম্নোক্ত সদস্যদের লইয়া গঠন করা হইবে :
(ক) অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি;
খ) সার্কেল চীফ (সংশ্লিষ্ট);
গ) আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান/প্রতিনিধি;
ঘ) বিভাগীয় কমিশনার/অতিরিক্ত কমিশনার;
ঙ) জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (সংশ্লিষ্ট)।
৬) (ক) কমিশনের মেয়াদ তিন বছর হইবে। তবে আঞ্চলিক পরিষদের সাথে পরামর্শক্রমে উহার মেয়াদ বৃদ্ধি করা যাইবে।
(খ) কমিশন পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচলিত আইন, রীতি ও পদ্ধতি অনুযায়ী বিরোধ নিষ্পত্তি করিবেন।
৭) যে উপজাতীয় শরণার্থীরা সরকারের সংস্থা হইতে ঋণ গ্রহণ করিয়াছেন অথচ বিবদমান পরিস্থিতির কারণে ঋণকৃত অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার করিতে পারেন নাই সেই ঋণ সুদসহ মওকুফ করা হইবে।
৮) রাবার চাষের ও অন্যান্য জমি বরাদ্ধ ঃ যে সকল অ-উপজাতীয় ও অ-স্থানীয় ব্যক্তিদের রাবার বা অন্যান্য প্লান্টেশনের জন্য জমি বরাদ্দ করা হইয়াছিল তাহাদের মধ্যে যাহারা গত দশ বছরের মধ্যে প্রকল্প গ্রহণ করেন নাই বা জমি সঠিক ব্যবহার করেন নাই সে সকল জমি বন্দোবস্ত বাতিল করা হইবে।
৯) সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নের লক্ষ্যে অধিক সংখ্যক প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ করিবেন। এলাকার উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি করার লক্ষ্যে নতুন প্রকল্প অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করিবেন। এবং সরকার এই উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন করিবেন। সরকার এই অঞ্চলের পরিবেশ বিবেচনায় রাখিয়া দেশী ও বিদেশী পর্যটকদের জন্য পর্যটন ব্যবস্থার উন্নয়নে উৎসাহ যোগাইবেন।
১০) কোটা সংরক্ষণ ও বৃত্তি প্রদান: চাকরি ও উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সমপর্যায়ে না পৌঁছা পর্যন্ত সরকার উপজাতীয়দের জন্যে সরকারী চাকরি ও উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোটা ব্যবস্থা বহাল রাখিবেন। উপরোক্ত লক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপজাতীয় ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য সরকার অধিক সংখ্যক বৃত্তি প্রদান করিবেন। বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ ও গবেষণার জন্য সরকার প্রয়োজনীয় বৃত্তি প্রদান করিবেন।
১১) উপজাতীয় কৃষ্টি ও সাংস্কৃতিক স্বতন্ত্রতা বজায় রাখার জন্য সরকার ও নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ সচেষ্ট থাকিবেন। সরকার উপজাতীয় সংস্কৃতির কর্মকান্ডকে জাতীয় পর্যায়ে বিকশিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও সহায়তা করিবেন।
১২) জনসংহতি সমিতি ইহার সশস্ত্র সদস্যসহ সকল সদস্যের তালিকা এবং ইহার আওতাধীন ও নিয়ন্ত্রণাধীন অস্ত্র ও গোলাবারুদের বিবরণী এই চুক্তি স্বাক্ষরের ৪৫ দিনের মধ্যে সরকারের নিকট দাখিল করিবেন।
১৩) সরকার ও জনসংহতি সমিতি যৌথভাবে এই চুক্তি স্বাক্ষরের ৪৫ দিনের মধ্যে অস্ত্র জমাদানের জন্য দিন, তারিখ ও স্থান নির্ধারণ করিবেন। জনসংহতি সমিতির তালিকাভুক্ত সদস্যদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমাদানের জন্য দিন তারিখ ও স্থান নির্ধারণ করার জন্য তালিকা অনুযায়ী জনসংহতি সমিতির সদস্য ও তাহাদের পরিবারবর্গের স্বাভাবিক জীবনে প্রত্যাবর্তনের জন্যে সব রকমের নিরাপত্তা প্রদান করা হইবে।
১৪) নির্ধারিত তারিখে যে সকল সদস্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিবেন সরকার তাহাদের প্রতি ক্ষমা ঘোষণা করিবেন। যাহাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা আছে সরকার ঐ সকল মামলা প্রত্যাহার করিয়া নিবেন।
১৫) নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে কেহ অস্ত্র জমা দিতে ব্যর্থ হইলে সরকার তাহার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন।
১৬) জনসংহতি সমিতির সকল সদস্য স্বাভাবিক জীবনে প্রত্যাবর্তনের পর তাহাদেরকে এবং জনসংহতি সমিতির কার্যকলাপের সাথে জড়িত স্থায়ী বাসিন্দাদেরকেও সাধারণ ক্ষমা প্রদর্শন করা হইবে।
(ক) জনসংহতি সমিতির প্রত্যাবর্তনকারী সকল সদস্যকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে পরিবার প্রতি এককালীন ৫০,০০০/- টাকা প্রদান করা হইবে।
(খ) জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র সদস্যসহ অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে যাহাদের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতারী পরোয়ানা, হুলিয়া জারি অথবা অনুপস্থিতিকালীন সময়ে বিচারে শাস্তি প্রদান করা হইয়াছে, অস্ত্রসমর্পন ও স্বাভাবিক জীবনে প্রত্যাবর্তনের পর যথাশীঘ্র সম্ভব তাহাদের বিরুদ্ধে সকল মামলা, গ্রেফতারী পরোয়ানা, হুলিয়া প্রত্যাহার করা হইবে এবং অনুপস্থিতকালীন সময়ে প্রদত্ত সাজা মওকুফ করা হইবে। জনসংহতি সমিতির কোন সদস্য জেলে আটক থাকিলে তাহাকেও মুক্তি দেওয়া হইবে।
(গ) অনুরূপভাবে অস্ত্র সমর্পণ ও স্বাভাবিক জীবনে প্রত্যাবর্তনের পর কেবলমাত্র জনসংহতি সমিতির সদস্য ছিলেন কারণে কাহারো বিরুদ্ধে মামলা দায়ের বা শাস্তি প্রদান বা গ্রেফতার করা যাইবে না।
(ঘ) জনসংহতি সমিতির যে সকল সদস্য সরকারের বিভিন্ন ব্যাংক ও সংস্থা হইতে ঋণ গ্রহণ করিয়াছেন কিন্তু বিবদমান পরিস্থিতির জন্য গৃহীত ঋণ সঠিকভাবে ব্যবহার করিতে পারেন নাই তাহাদের উক্ত ঋণ সুদসহ মওকুফ করা হইবে।
(ঙ) প্রত্যাগত জনসংহতি সমিতির সদস্যদের মধ্যে যাহারা পূর্বে সরকার বা সরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত ছিলেন তাহাদেরকে স্ব-স্ব পদে পুনর্বহাল করা হইবে এবং জনসংহতি সমিতির সদস্য ও তাহাদের পরিবারের সদস্যদের যোগ্যতা অনুসারে চাকরিতে নিয়োগ করা হইবে। এইক্ষেত্রে তাহাদের বয়স শিথিল সংক্রান্ত সরকারী নীতিমালা অনুসরণ করা হইবে।
(চ) জনসংহতি সমিতির সদস্যদের কুটির শিল্প ও ফলের বাগান প্রভৃতি আত্মকর্মসংস্থানমূলক কাজের সহায়তার জন্যে সহজশর্তে ব্যাংক ঋণ গ্রহণের অগ্রাধিকার প্রদান করা হইবে।
(ছ) জনসংহতি সমিতির সদস্যগণের ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনার সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হইবে এবং তাহাদের বৈদেশিক বোর্ড ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হইতে প্রাপ্ত সার্টিফিকেট বৈধ বলিয়া গণ্য করা হইবে।
১৭) (ক) সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে চুক্তি সই ও সম্পাদনের পর এবং জনসংহতি সমিতির সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরত আসার সাথে সাথে সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিডিআর) ও স্থায়ী সেনানিবাস (তিন জেলা সদরে তিনটি এবং আলী কদম, রুমা ও দীঘিনালা) ব্যতীত সামরিক বাহিনী, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সকল অস্থায়ী ক্যাম্প পার্বত্য চট্টগ্রাম হইতে পর্যায়ক্রমে স্থায়ী নিবাসে ফেরত নেওয়া হইবে এবং এই লক্ষ্যে সময়সীমা নির্ধারণ করা হইবে। আইন-শৃঙ্খলা অবনতির ক্ষেত্রে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে এবং এই জাতীয় অন্যান্য কাজে দেশের সকল এলাকার ন্যায় প্রয়োজনীয় যথাযথ আইন ও বিধি অনুসরণে বেসামরিক প্রশাসনের কর্তৃত্বাধীনে সেনাবাহিনীকে নিয়োগ করা যাইবে। এই ক্ষেত্রে প্রয়োজন বা সময় অনুযায়ী সহায়তা লাভের উদ্দেশ্যে আঞ্চলিক পরিষদ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করিতে পারিবেন।
(খ) সামরিক ও আধা-সামারিক বাহিনীর ক্যাম্প ও সেনানিবাস কর্তৃক পরিত্যক্ত জায়গা-জমি প্রকৃত মালিকের নিকট অথবা পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট হস্তান্তর করা হইবে।
১৮) পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল সরকারী, আধা-সরকারী, পরিষদীয় ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সকল স্তরের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন শ্রেণীর কর্মচারী পদে উপজাতীয়দের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী অধিবাসীদের নিয়োগ করা হইবে। তবে কোন পদে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী অধিবাসীদের মধ্যে যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি না থাকিলে সরকার হইতে প্রেষণে অথবা নির্দিষ্ট সময় মেয়াদে উক্ত পদে নিয়োগ করা যাইবে।
১৯) উপজাতীয়দের মধ্য হইতে একজন মন্ত্রী নিয়োগ করিয়া পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক একটি মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হইবে। এই মন্ত্রণালয়কে সহায়তা করিবার জন্য নিম্নে বর্ণিত উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হইবে।
(ক) পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী
(খ) চেয়ারম্যান/প্রতিনিধি, আঞ্চলিক পরিষদ
(গ) চেয়ারম্যান/প্রতিনিধি, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ
(ঘ) চেয়ারম্যান/প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ
(ঙ) চেয়ারম্যান/প্রতিনিধি, বান্দরবন পার্বত্য জেলা পরিষদ
(চ) সাংসদ, রাঙ্গামাটি
(ছ) সাংসদ, খাগড়াছড়ি
(জ) সাংসদ, বান্দরবন
(ঝ) চাকমা রাজা
(ঞ) বোমাং রাজা
(ট) মং রাজা
(ঠ) তিন পার্বত্য জেলা হইতে সরকার কর্তৃক মনোনীত পার্বত্য এলাকার স্থায়ী অধিবাসী তিনজন অ-উপজাতীয় সদস্য।
এই চুক্তি উপরোক্তভাবে বাংলা ভাষায় প্রণীত এবং ঢাকায় ১৮ই অগ্রহায়ণ ১৪০৪ সাল মোতাবেক ২রা ডিসেম্বর ১৯৯৭ইং তারিখে সম্পাদিত ও সইকৃত।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসিদের পক্ষে
(আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্)
আহ্বায়ক
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটি বাংলাদেশ সরকার।
(জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা)
সভাপতি
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি।

বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৩

আজ নৃশংস নানিয়াচর গণহত্যা

 


রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার নানিয়াচর একটি উপজেলা। উপজেলা সদরেই নানিয়াচর বাজারটি গড়ে উঠে। ১৯৯৩ সালে ২রা নভেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্মদের বিষাদময় ইতিহাসে নানিয়াচর গণহত্যার ঘটনা এই বিংশ শতাব্দীর অন্যতম নৃশংস সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক হত্যাকান্ডগুলোর এক নতুন সংযোজন বলা চলে। রাঙ্গামাটি থেকে ২০ মাইল উত্তরে হ্রদ বেষ্টিত নানিয়াচরের একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম হচ্ছে পানির পথে নৌযান। লঞ্চঘাটের একমাত্র যাত্রীছাউনিতে দীর্ঘদিন ধরে ৪০ ইবিআর, রাষ্ট্রীয়বাহিনী চেকপোস্ট বসিয়ে পাহাড়ী বৌদ্ধ যাত্রীদের নিয়মিত তল্লাশি নামে হয়রানি-নির্যাতন চালানো হতো। এখানে কর্তব্যরত রাষ্ট্রীয়বাহিনীর সদস্যরা পাহাড়ি বৌদ্ধ নারীদের উত্যক্ত করতো দীর্ঘ দিন ধরে। ২৭শে অক্টোবর খাগড়াছড়ি গামী পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের নেতৃবৃন্দকে আটকে রেখে হয়রানি, নির্যাতন চালানো ও নেতৃবৃন্দকে খাগড়াাছড়ি পায়ে হেটে যেতে বাধ্য করা হয়। তাই পাহাড়ি বৌদ্ধ ছাত্র সমাজ হয়রানি আটকের প্রতিবাদ এবং গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকারের দাবীতে সোচ্ছার হয় এবং বিভিন্ন স্থানে শান্তিপূর্নভাবে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। ১৭ নভেম্বর সংঘটিত এই বর্বর গণহত্যায় ২৯ জন জুম্ম ছাত্র-জনতা-নারী-শিশু-বৃদ্ধ, আহত হয় শতাধিক।

ঘটনার সূত্রপাত : নির্ভযোগ্য সূত্রে জানা যায় যে, ২রা নভেম্বর ১৯৯৩ সালে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ যাত্রী ছাউনি থেকে রাষ্ট্রীয়বাহিনীর চেকপোস্ট প্রত্যাহারের সময় বেঁধে দেয় ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত। দিনটি ছিল বুধবার, নানিয়ারচর (নান্যেচর) এর সাপ্তাহিক বাজার দিন। তাই স্বাভাবিকভাবে দুর-দূরান্ত থেকে বাজারে এসেছিল শত শত জুম্ম শিশু, বৃদ্ধ, নারী, পুরুষ নির্বিশেষে। ১৭ নভেম্বর যেহেতু ছাত্রদের বেঁধে দেয়া শেষ সময়, তাই ছাত্ররা সেই দিন বেলা ১২ টায় মিছিলের প্রস্তুতি নিতে থাকে। ছাত্রদের সাথে যোগ হয় জনতাও। ঠিক বেলা ১২ টায় পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের নেতৃত্বে মিছিলটি স্থানীয় লাইব্রেরী প্রাঙ্গন থেকে শুরু হয়। যাদের প্রধান দাবীগুলো ছিল, যাত্রী ছাউনি থেকে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর চেকপোস্ট প্রত্যাহার, পিসিপি’র (পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ) ৫দফা দাবী মানাসহ গণধিকৃত জেলা পরিষদ বাতিলের দাবী। কয়েক হাজার পাহাড়ী বৌদ্ধ ছাত্র-জনতার মিছিলে স্লোগানে উজ্জীবিত। মিছিল থেকে গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক অধিকারের দাবী উচ্চকন্ঠে জানানো হচ্ছিল। মিছিলটি শান্তিপূর্ণভাবে শহরের রাস্তা প্রদক্ষিণ শেষে কৃষি ব্যাংক এর সামনে সমাবেশ করে। অন্যদিকে বাঙ্গালী অনুপ্রবেশকারীদের সংগঠন পার্বত্য গণপরিষদও একটি জঙ্গী মিছিল বের করে। তারা মিছিল থেকে সাম্প্রদায়িক স্লোগান তুলতে থাকে। এক পর্যায়ে সেটেলার গণপরিষদের মিছিল থেকে হামলা করে এক বৃদ্ধ পাহাড়ী বৌদ্ধকে আহত করা হয়। এতে করে জুম্মদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। এক পর্যায়ে পাহাড়ী বৌদ্ধ ছাত্র জনতার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে রাষ্ট্রীয়বাহিনী ও সেটেলাররা। ফলে ঘটে যায় বিংশ শতাব্দীর নৃশংসতম সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক হত্যাকান্ড।


ঘটনার ক্ষয়ক্ষতি : ১৭ নভেম্বর ১৯৯৩ সালে সংঘটিত এই বর্বর গণহত্যায় ২৯ জন নিহত হয় এবং জুম্ম ছাত্র-জনতা-নারী-শিশু-বৃদ্ধ, আহত হয় শতাধিক। এই জঘন্য বর্বর গণহত্যায় রাষ্ট্রীয়বাহিনীর বন্দুক গর্জে উঠেছিল নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার মিছিলে,রাষ্ট্রীয়বাহিনীর পরিকল্পিত ইশারায় সেদিন ধারালো দা, বর্শা, বল্লম নিয়ে নানিয়াচর বাজারে আগত নিরিহ পাহাড়ী বৌদ্ধদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বগাছড়ি, বুড়িঘাট থেকে আগত সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী সেটেলাররা। জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছিল পাহাড়ী বৌদ্ধদের ২৭টি বসত বাড়ি। নানিয়াাচর বাজারে পাহাড়ী বৌদ্ধ ছাত্র, জনতার শান্তিপুর্ন মিছিলে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে বাঙ্গালি সেটেলার ও রাষ্ট্রীয়বাহিনী হত্যা যজ্ঞ চালায়। এই বর্বর গণত্যায় নেতৃত্ব দিয়েছিল সেটেলারদের সংগঠন পার্বত্য গণপরিষদের নেতা মোঃ আয়ুব হোসাইন, প্রাক্তন চেয়ারম্যান বুড়িঘাট, তৎকালীন বুড়িঘাট ইউ,পি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ, নানিয়াচর জোনের জোন কমান্ডার মেজর সালাউদ্দিন। এতে নিহত হয় ২৯ জন পাহাড়ী বৌদ্ধ নাগরিক আহত হয় শতাধিক। এতে জুম্ম ছাত্ররা যখন প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে তখন সেনা ক্যাম্প হতে জুম্ম ছাত্রদের উপর এলোপাথারি গুলি বর্ষণ করা হয়। এক পর্যায়ে অনুপ্রবেশকারী বাঙ্গালীদের মিছিল থেকে দা, বল্লম ইত্যাদি দিয়ে হামলা হলে জুম্ম ছাত্র সমাজ জনতাকে নিয়ে প্রবল প্রতিরোধ করে। এতে সেটেলার বাঙ্গালীরা পিছু হটলে কর্তব্যরত আর.পি ল্যান্স নায়ক জুম্ম জনতার উপর ব্রাশ ফায়ার করেন। এতে মূর্হুতের মধ্য ৮জন জুম্ম ছাত্র শহীদ হন। গুলিতে আহত হন অনেকে। এতে জুম্মদের প্রতিরোধ ভেঙ্গে পড়ে। বিচ্ছিন্ন হওয়া জুম্মদের উপর ঝাপিয়ে পরে সশস্ত্র রাষ্ট্রীয়বাহিনী ও বাঙ্গালী সেটেলাররা। সেনাবাহিনীর বন্দুকের আঘাতে মূর্মুষ করার পর কাপুরুষেরা অনেককে পশুর মত জবাই করেছে। অনেকে কাপ্তাই লেকের পানিতে ঝাঁপিয়েও প্রাণ বাচাঁতে পারেনি। জেট বোট ও নৌকার উপর থেকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে অনেককে। যারা পাহাড়িদের বাড়িতে লুকিয়ে ছিল তাদেরকে টেনে হিচড়ে বের করে হত্যা করা হয়েছে অথবা পুড়িয়ে মারা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পাশের জুম্ম গ্রামগুলি লুটপাট করে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই সময় রাঙ্গামাটি থেকে আসা লঞ্চ পৌঁছালে সেখানেও হামলা করে অনেককে হতাহত করা হয়। এতে ভদ্রিয় নামক এক বৌদ্ধ ভিক্ষুকে আক্রমণ করে গুরুতর আহত করেন। এভাবে প্রায় দু’ঘন্টা ধরে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয় জুম্মদের উপর।


বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ঢাকায় মিছিল: নানিয়াচর হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে পার্বত্য ভিক্ষুসংঘ ঢাকায় মৌন মিছিল করেন। এটি ছিল পার্বত্য ভিক্ষুসংঘের রাজধানী বুকে প্রথম মৌন মিছিল। এ মৌনমিছিলে অংগ্রহকারী এক বৌদ্ধ ভিক্ষু বলেন, এ হত্যাকান্ডে শ্রীমৎ ভদ্রিয় মহাথের নামে এক বৌদ্ধ ভিক্ষু গুরুতর আহত হন। তখন পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সভাপতি পদে ছিলেন শ্রীমৎ তিলোকানন্দ মহাথের। এ মৌন মিছিলে প্রায় তিনশত জন বৌদ্ধ ভিক্ষু অংশগ্রহন করেন। জাতীয় শহীদ মিনার হতে প্রেসক্লাবে গিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত সভার মাধ্যমে শেষ হয়। এ সংক্ষিপ্ত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে ভিক্ষুসংঘ হতে শ্রীমৎ প্রিয়তিষ্য ভিক্ষু ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে দোষী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করে বক্তব্য প্রদান করেন। তিন পার্বত্য জেলা হতে ঢাকার বুকে গিয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষু এ মিছিলে অংশ গ্রহন করে। শান্তপ্রিয় বৌদ্ধদের উপর অথ্যাচার, অনাচারের বিরুদ্ধে রাজ পথে নামতে বাধ্য হয়। পরিশেষে বলা যায় যে, এই গণহত্যার হতাহতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি থাকলেও সরকারে পক্ষ থেকে নিহতের ২০ জন বলে জানানো হয়েছিল। সেই সময়ের পত্রিকা মারফত এই সংখাকে ২৭ বা তারও বেশী বলে দাবী করা হয়েছে। তবে ভুক্তভোগী জুম্মরা এই সংখ্যা শতাধিক বলে জানিয়েছেন। যেহেতু ঘটনার পর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি ছিল, তাই প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ বার বার উঁকি মারে। গণহত্যা, নির্যাতন, ধর্ষন এই সব মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগ বার বার প্রশ্ন বিদ্ধ করেছে পার্বত্য অঞ্চলে সামরিক, বেসামরিক, প্রশাসক ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা।


তথ্যসূত্র: (১) জুম্ম সংবাদ বুলেটিন, বুলেটিন ১৫,৩য় বর্ষ, শুক্রবার, ৩১শে ডিসেম্বর,১৯৯৩ ইং। (২) সিএউটিবিডি ডটকমনেট, “পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত গণহত্যা” ০৯ নভেম্বর, ২০১১ইং। (৩) জনকন্ঠ, ১৮ নভেম্বর ১৯৯৩ইং । (৪) প্রথম আলো, ১৮ নভেম্বর ১৯৯৩ইং। (৫) দৈনিক পূর্বকোণ, ১৮ নভেম্বর ১৯৯৩ইং। (৬) দৈনিক আজাদী, ১৮ নভেম্বর ১৯৯৩ইং ।

কেন আঞ্চলিক স্বায়ত্ব শাসন?

বাংলাদেশ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের শাসনতান্ত্রিক অধিকার দাবীর- আবেদন পত্র গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবী ...