বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

বাংলা‌দে‌শের স্বাধীনতা যু‌দ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল বীর পাহাড়ী

 

বীর মু‌ক্তি‌যোদ্ধা ‌লেঃ ক‌র্ণেল (অবঃ) ম‌নিষ দেওয়ান।

আজ ১৬ই ডি‌সেম্বর ২০২২ ইং মহান বিজয় দিবসে ১৯৭১ সা‌লে বাংলা‌দে‌শের স্বাধীনতা যু‌দ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল বীর পাহাড়ী মু‌ক্তি‌যোদ্ধা‌কে শ্রদ্ধা‌চি‌ত্তে স্মরন কর‌ছি।

আদিবাসী পাহাড়িদের ১৯৭১ সা‌লে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়কালীন কতটা অবদান রয়েছে তা আপনি এই পোস্টি পড়লে জানতে পারবেন____
১৯৭১ সালে সারা দেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পার্বত্য অঞ্চলেও এর উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। সারা দেশে যখন হাজার হাজার মানুষ দল-মত-বর্ণ নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধে অংশ্রগ্রহণ করছে তখন পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত আদিবাসীরাও অসীম সাহসে সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।মুক্তিযুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল বীরত্বপূর্ণ ইতিহাস।পাহাড়ি আদিবাসীরা অসীম বীরত্ব দেখিয়েছে অনেক সম্মুখ সমরে।মুক্তিযুদ্ধের সময় সম্মুখ সমরে নিহত হয়েছেন অনেক অকুতোভয় আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিবাহিনীকে সহযোগিতা করতে গিয়ে নির্মম নির্যাতন ও নৃশংস হত্যার শিকার হয়েছেন অনেক পাহাড়ি আদিবাসী।
মু্ক্তিযুদ্ধের সময় তখনকার চাকমা রাজা ত্রিদিব রায় পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করেন বটে কিন্তু মং রাজা মংফ্রু সাইন সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মং রাজার তৎকালীন রাজপ্রসাদে প্রতিদিন চট্টগ্রাম হতে ভারতে যাওয়া হাজার হাজার শরণার্থী আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন। মুক্তিবাহিনীকেও পার্বত্য এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি মূল্যবান পরামর্শ ও অন্যান্য সহযোগিতা প্রদান করেন। তিনি সর্বপ্রথম বিপ্লবী সরকারের হাতে বৈদেশিক মুদ্রা তুলে দেন।
তৎকালীন ইপিআর (বর্তমানে বিজিবি) বাহিনীতে পাহাড়ি আদিবাসী অনেকজন ছিলেন। তারা সবাই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তারমধ্যে সিপাহী অ্যামি মারমা যুদ্ধে বগুড়ায় নিহত হয়েছিলেন। সিপাহী রমণী রঞ্জনও রামগড়ে নিহত হন। সিপাহী হেমরঞ্জন যুদ্ধে নিখোঁজ হয়েছিলেন। পুলিশ কর্মকর্তা খগেন্দ্র লাল চাকমা মুক্তিবাহিনীকে সহযোগিতা করেছেন বিধায় তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
১নং সেক্টরের আওতায় সর্বপ্রথম ৫ মে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট পার্বত্য চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা দল গঠন করা হয়।এই দলের নেতৃত্ব দেন হেমদা রঞ্জন ত্রিপুরা। পরে এই দলটি কোম্পানিতে পরিণত করলে তিনি কোম্পানি কমান্ডার হন।
পাক বাহিনীরা পার্বত্য জেলা সদর রাঙ্গামাটি ও মহকুমা সদর রামগড় এবং বান্দরবান দখল করার পর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে ঘাঁটি স্থাপন করে এবং ঘাঁটিসমূহ সুদৃঢ় করে নেয়। তারা বিভিন্ন এলাকায় শাখা কমিটি গঠন করে তাদের মাধ্যমে পার্বত্য এলাকায় রাজাকার বাহিনী গঠন করে এবং বিভিন্ন এলাকায় হানা দিয়ে বর্বর অত্যাচার চালায় ও ঘরবাড়ী জ্বালিয়ে দেয়।পাকবাহিনী রামগড়, গুইমারা, মানিকছড়িসহ বিভিন্ন ক্যাম্পে পাহাড়ী রমনীদের জোর পূর্বক ধরে নিয়ে অমানুষিকভাবে ধর্ষণ করে এবং ক্যাম্পে উলঙ্গ অবস্থায় বন্দী করে রাখে।
বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত বীর মু‌ক্তি‌যোদ্ধা প্রয়াত উক্য চিং মারমা।

অনেক পাহাড়ি অাদিবাসী মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় পরে অনেকে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকের কাজ করেন। তাদের মধ্যে তৎকালীন ছাত্রনেতা গৌতম দেওয়ান, এমএন লারমা, রাজা ত্রিদিব রায়ের আপন কাকা কে কে রায়, সুবোধ বিকাশ ত্রিপুরা মুক্তিযুদ্ধে সংগঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন।
এ কথা অনস্বীকার্য যে, মুক্তিযুদ্ধে স্থানীয় পাহাড়ি আদিবাসীদের সহযোগিতা ছাড়া দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের জয় সম্ভব হতো না। পাহাড়ি আদিবাসীদের অনেকে মুক্তিযুদ্ধে এবং মুক্তিযোদ্ধা‌দের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেন।
পার্বত্য এলাকায় অবস্থানের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের চলাচলের সুবিধা, শত্রুপক্ষের ঘাঁটি আক্রমণ এবং পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনার সুবিধার্থে বর্তমান খাগড়াছড়ি জেলার অন্তর্গত নাকাপা, কুমারীপাড়া, পাগলা পাড়া, মানিকছড়ি, ডাইনছড়ি, যোগ্যাছলাও গাড়ীটানা এলাকার গহীন অরণ্যে মুক্তিবাহিনীর গোপন ক্যাম্প বা আশ্রয়স্থল করা হয়। এই সমস্ত গোপন গেরিলা ক্যাম্পে ঐ এলাকার হেডম্যান কার্বারীসহ সকল স্তরের জনগণ খাদ্যশস্য সরবরাহ করত এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন ঐ সমস্ত এলাকার জনগণ মুক্তিযোদ্ধাদেরকে পাকবাহিনীর গতিবিধি এবং তাদের অবস্থান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে সাহায্য করত।
রাজা ত্রিদিব রায়ের এক আত্মীয় লংগদু হতে তিন-চারটি ইঞ্জিন চালিত নৌকায় শ-খানেক খাসি রাংগামাটি পাঠিয়েছিন মুক্তিযোদ্ধা‌দের জন্য। আর সে সময়ে রাংগামাটিতে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধা‌দের স্থানীয় লোকজন বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম হতে যেসব পাহাড়ি আদিবাসী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তাদের তালিকা নিচে
হেমদা রঞ্জন ত্রিপুরা।

দেওয়া হলো—
বেসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ছাত্র-যুবকদের মধ্যে যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন তারা হলেন—
১. মং রাজা মংপ্রু সাইন
২. প্রকৌশলী অমলেন্দু বিকাশ চাকমা
৩. ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট চিত্তরঞ্জন চাকমা
৪. পূর্ব পাকিস্তান ফুটবল টিমের অধিনায়ক চিংহলা মং চৌধুরী মারী
৫. পুলিশ কর্মকর্তা ত্রিপুরা কান্তি চাকমা
৬. পুলিশ কর্মকর্তা বিমলেশ্বর দেওয়ান
৭. পুলিশ কর্মকর্তা খগেন্দ্র লাল চাকমা
৮. উক্য জেন মারমা
৯. ক‌র্নেল মনীষ দেওয়ান
১০. রণ বিক্রম ত্রিপুরা
১১. অশোক মিত্র কারবারী
১২. রাস বিহারী চাকমা
১৩. সুশীল দেওয়ান
১৪. নীলোৎপল ত্রিপুরা
১৫. ক্যাচিং মারমা
১৬. সুবোধ বিকাশ ত্রিপুরা
১৭. গোপালকৃষ্ণ দেওয়ান
১৮. মনীন্দ্র কিশোর ত্রিপুরা
১৯. বরেন ত্রিপুরা
২০. কৃপা সুখ চাকমা
২১. আনন্দ বাশী চাকমা
২২. সুবিলাশ চাকমা
২৩. রঞ্জিত দেব বর্মন
২৪. কং জয় মারমা
২৫. অাক্য মগ
২৬. প্রীতি কুমার ত্রিপুরা
২৭. প্রভুধন চাকমা
২৮. ইউ কে চিং বিবি
২৯. মাংশৈ প্রু মারমা
৩০. মংশৈহ্লা মারমা
৩১. ধুংছাই মারমা
৩২. হেমদা রঞ্জন ত্রিপুরা
৩৩. করুনা মোহন চাকমা
৩৪. গুলসেন চাকমা
৩৫. বিজয় কুমার চাকমা
৩৬. সাইপ্রু মগ
৩৭. বিজয় কুমার ত্রিপুরা
৩৮. চিত্ত রঞ্জন চাকমা
৩৯. সাথোয়াই মারমা
৪০. ম্নাসাথোয়াই মগ
৪১. মংমং মারমা
৪২. ফিলিপ ‌ত্রিপুরা বিজয়
৪৩. রুইপ্রু মারমা
৪৪. কংচাই মারমা
৪৫. থোয়াইঅং মগ
৪৬. আদুং মগ
৪৭. মংসাথোয়াই মগ
৪৮. থোয়াইঅংরী মগ
৪৯. মংশোয়ে অং মগ
৫০. অাথুইঅং মগ
৫১. মংমংচিং মগ
৫২. মং আফ্রুশী মগ
৫৩. রবি রশ্মি চাকমা
৫৬. নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা
৫৭. সাথোয়াই মারমা
৫৮. করুণা মোহন চাকমা
ইপিআর সদস্যদের মধ্যে যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তাদের তালিকা—
১. হাবিলদার নলিনী রঞ্জন চাকমা
২. হাবিলদার অমৃত লাল চাকমা
৩. ল্যান্স নায়েক সঞ্জয় কেতন চাকমা
৪. ল্যান্স নায়েক স্নেহ কুমার চাকমা
৫. সিপাহি চিংমা মারমা
৬. ল্যান্স নায়েক মতিলাল চাকমা
৭. সিপাহী চাই থোয়াই প্রু মারমা
৮. সিপাহী থুই প্রু মারমা
৯. সিপাহী কংজা মারমা
১০. সিপাহী মংহলা প্রু মারমা
১১. সিপাহী অ্যামি মারমা
১২. সিপাহী কুল্লিয়ান বম
১৩. সিপাহী জিংপারে বম
১৪. সিপাহী হেম রঞ্জন চাকমা
১৫. সিপাহী মংচিনু মারমা
১৬. সিপাহী বুদ্ধিমান ছেত্রী
১৭. সিপাহী রমণীরঞ্জন চাকমা
১৮. সিপাহী উক্যজিং মারমা ( বীর বিক্রম)
১৯. সিপাহী লাল পুম বম
২০. নায়েব চিংড়ু মগ
২১. ল্যান্স নায়েক অরুন মগ
২২. ল্যান্স নায়েক অরিন্দ্রা ত্রিপুরা😢😢
উল্লেখিত ৮০ জন ছাড়াও আরও অনেক মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, যাদের নাম সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। কিছু আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধাকে সরকার এখনো মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়ায় এবং দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অনেক মুক্তিযোদ্ধা তৎকালীন নব গঠিত শান্তিবাহিনীতে যোগদান করে স্বায়ত্বশাসন আন্দোলনের সময় নিহত হয়, ফলে অনেক আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধার নাম সংগ্রহ করা অসম্ভব হয়।
মুক্তিযুদ্ধে পাহাড়ি আদিবাসীদের এই চরম আত্মত্যাগের যথাযথ স্বীকৃতি দেয়ার পরিবর্তে তাদের নিয়ে তৈরি করা হয় বিভ্রান্তি। এমনি তাদের বীরত্বপূর্ণ ইতিহাসকে অস্বীকার করে তাদের আত্মত্যাগকে খাটো করে দেখা হয়। এখনো অনেক আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি। "মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসী" বইয়ের তথ্য মতে পার্বত্য চট্টগ্রামের অনেক আদিবাসী যুদ্ধে শহীদ হয়। কিন্তু তাদের অনেকেই তাদের প্রাপ্য সম্মান পাওয়া তো দূরের কথা শহীদের তালিকায় তাদের নাম পর্যন্ত আসেনি।😢😢
মু্ক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বাঙ্গালি জাতির জন্য এটা চরম লজ্জাও বটে।
»কালেক্ট ফ্রম--- পাহাড়ী রেডওয়াইন।

সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

নির্যাতনের অপরাধে স্ত্রীকে ৩৩ লাখ টাকা ক্ষতিপুরণ; চাকমা রাজার রায়

 


চাকমা রাজ কার্যালয়ে এক স্ত্রীর করা অভিযোগের ভিত্তিতে বিবাদী (স্বামীকে) দোষী সাব্যস্ত করে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ক্ষতিপুরণ প্রদানের আদেশ দিয়েছে রাজ কার্যালয়ের চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়।

বনরূপার ত্রিদিব নগর নিবাসী সোমেশ তালুকদারের পুত্র সুদীপ তালুকদার (জিতু)  তার সাবেক স্ত্রী বিথী চাকমাকে এ ক্ষতিপুরণ   প্রদান করতে হবে।

জিতুর সাবেক স্ত্রী রাজবাড়ির বাসিন্দা বিথী চাকমা ২০২২ সালের ১ জুন রাজ কার্যালয়ে এ অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের ভিত্তিতে তিনটি শুনানীর পর সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩) দুপুরে এ রায় দেন রাজা দেবাশীষ রায়। রাজার পক্ষ হয়ে রাজ দরবারে এ রায় পড়েন রাজ কার্যালয়ের সচিব সুব্রত চাকমা।

রায় ঘোষণার সময় দরবারে বাদী বিথী চাকমা ও তার স্বজন এবং বিবাদী (সুপ্রদীপ চাকমা (জিতু), তার মাতা নমিতা চাকমা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জিতু ও বিথীর ১৪ বছর প্রেম করে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু  বিবাহের ২ মাস পর সম্পর্কের অবনতি হয়।

জিতু এক নারীর সাথে পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে বিথীকে অপমান, অসন্মান, অবহেলা, মানসিক নির্যাতন করেন। পরে ঘরে একা ফেলে কক্সবাজারে টেকনাফে চলে যান। বিষয়টি জিতুর মা নমিতা জানার পরও ছেলের পক্ষে অবস্থান নেন। ফলে এদের দাম্পত্যের জোড়া লাগেনি। জিতু সম্পর্ক বন্ধনে রাজী না হওয়ায় বিথী ক্ষতিপুরণ ও বিবাহ বিচ্ছেদ চেয়ে রাজার কাছে আবেদন করেন।

অভিযোগের সতত্য মিলায় রাজা জিতুকে  সমাজ বিরোধী নিষ্ঠুর অমানবিক আচরণের জন্য ৫০ টাকা জরিমানা করেন।

এ ছাড়া লাজভার মনস্তাত্ত্বিক নির্যাতনের অপরাধে ১৫ লাখ টাকা।  বাদীকে সামাজিক ও পারিবারিক মর্যাদা হানির অপরাধে ১০ লাখ টাকা। বিবাহ আনুষ্ঠানিকতার খরচ ৫ লাখ টাকা। বাদীর গৃহত্যাগ হতে এ পর্যন্ত মাসিক ২০ হাজার করে মোট ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ক্ষতিপুরণ প্রদানের নির্দেশ দেন। এ টাকা আগামী ৬ মাসের মধ্যে এ ক্ষতিপুরণ প্রদান করতে হবে জিতুকে।

এছাড়া বিবাহ প্রদত্ত সকল সোনা গহনা প্রদান। বাদীর অন্যত্র বিবাহ বা আমৃত্যু পর্যন্ত মাসিক ২৫ হাজার টাকা স্বামীকে প্রদানের আদেশ দেন। এ টাকা ব্যাংক অথবা আদালতের মাধ্যমে জিতুকে প্রদান করতে হবে।

রায় শুনে বিবাদীর মা নমিতা চাকমা রায়ের অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বলেন, আমাদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে।

ঋণের টাকা ছিনতাই নিয়ে পানছড়িতে বিজিবি-এলাকাবাসীর সংঘর্ষ, ১ জন গুলিবিদ্ধ

২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার পুজগাঙ এলাকায় এক পাহাড়ি কর্তৃক ঋণের টাকা পরিশোধ করতে যাওয়ার সময় বিজিবি কর্তৃক টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিজিবি ও এলাকাবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে এক বিজিবি সদস্য কর্তৃক জনতার উপর গুলি করলে একজন আহত হন। এছাড়া বিজিবি কর্তৃক আরেকজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, গতকাল রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩) বিকাল ৪ ঘটিকার সময় বিজিবি কর্তৃক এক ব্যবসায়ীর ঋণ পরিশোধের জন্য পাঠানো ১২ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে এক ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা করলে এ ঘটনা সংঘটিত হয়।
জানা যায়, পানছড়ির ধুধুকছড়া এলাকার সীমানা পাড়া বাসিন্দা ইলা চাকমা, পিতা অনিল চন্দ্র চাকমা নামে এক ব্যবসায়ী কয়েক মাস আগে ব্যবসার জন্য ১২ লক্ষ টাকা ঋণ নেন। তিনি ওই ঋণের ১২ লক্ষ টাকা পরিশোধের জন্য তার ভাইয়ের ছেলে রিন্টু চাকমার মাধ্যমে পানছড়ি বাজারে পাঠাচ্ছিলেন।
রিন্টু চাকমা টাকাগুলো নিয়ে ধূধুকছড়া থেকে পানছড়ি বাজারে যাওয়ার সময় লোগাং বিজিবি জোনের চেকপোস্টে রিন্টু চাকমাকে আটকানো হয় এবং তাকে তল্লাশি করে একটি ব্যাগে ওই ১২ লক্ষ টাকা খুঁজে পায় এবং টাকাগুলো কেড়ে নেয়।
এসময় বিজিবি সদস্যরা রিন্টু চাকমার কাছ থেকে এই টাকাগুলো কার জানতে চান। এতে রিন্টু চাকমা টাকাগুলো ব্যবসায়ের জন্য নেয়া ঋণ পরিশোধের টাকা বলে উত্তর দিলে বিজিবি সদস্যরা তা মেনে না নিয়ে টাকাসহ তাকে আটক করে পানছড়ি থানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
এ সময় ভুক্তভোগী রিন্টু চাকমার পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান চন্দ্রদেব চাকমা, লোগাং ইউপি চেয়ারম্যান জয় কুমার চাকমা ও চেঙ্গী ইউপি চেয়ারম্যান আনন্দ জয় চাকমাকে জানানো হলে তারা বিজিবির সাথে ফয়সালা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিজিবি সদস্যরা তাতে রাজী না হয়ে রিন্টু চাকমাকে আটক করে গাড়িতে তুলে পানছড়ি থানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
পরে খবর পেয়ে এলাকাবাসী পুজগাং ব্রিজে বিজিবি সদস্যদের বহনকারী গাড়িটি আটকিয়ে দেন। এসময় বিজিবি সদস্যদের সাথে এলাকাবাসীর কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হট্টগোল শুরু হলে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ চলার এক পর্যায়ে এলাকাবাসী বিজিবির কাছ থেকে ওই ১২ লাখ টাকা ও রিন্টু চাকমাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় বলে জানা যায়।

এসময় বিজিবি সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে গুলি চালালে মিকেল চাকমা (২৪) নামে একজন আদিবাসী যুবক পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। মিকেল চাকমা পানছড়ির লোগাঙ ইউনিয়নের বাবুরো পাড়ার লক্ষ্মী চাকমার ছেলে বলে জানা যায়।
এছাড়া পানছড়ির পুজগাঙ ইউনিয়নের দুর্গামনি পাড়ার অমিয় চাকমা ছেলে পুর্ণ রতন চাকমা (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে বিজিবি।
বর্তমানে পুজগাং এলাকায় যৌথ বাহিনী অবস্থান করছে বলে এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে। এতে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
কপি: হিল ভয়েস

 

কেন আঞ্চলিক স্বায়ত্ব শাসন?

বাংলাদেশ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের শাসনতান্ত্রিক অধিকার দাবীর- আবেদন পত্র গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবী ...