বৃহস্পতিবার, ২৫ মে, ২০১৭

একটি বাস্তব কথা লিখেছে দাঙগু তুগুন চাঙমা

ক্যাপশন যোগ করুন
আসুন আমাদের নিজস্ব মাতৃভাষাকে শিখে নিই।
সময়ের প্রয়োজনে আমরা কতই কি না করছি কিন্তু কখনো কি খেয়াল করেছি আমাদের নিজস্ব মাতৃভাষার প্রতি!!!
আমরা সবাই জানি যে, একটি জাতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে সেই জাতির ভাষা, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যগুলো সংরক্ষণ তথা বাচিঁয়ে রাখতে হয়।
এখানে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, শুধু সংরক্ষন করে রাখলে কি একটি জাতির ভাষা বেঁচে থাকবে?
এখানে বলতে চাই, প্র্যাকটিক্যালি চর্চা ছাড়া কোনো জাতির ভাষা বেঁচে থাকা সম্ভম নয়। আপনারা জানেন, আমাদের "চাকমা ভাষার" অনেক বই আছে কিন্তু বাস্তবে আমরা কতজন চাকমা ভাষায় লিখতে ও পড়তে পারি? গুটিকয়েক জন আছে মাত্র যা বর্তমান সময়ের প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বিশেষ করে যাদের জানার কথা, লিখতে ও পড়তে পারার কথা সেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত জুম্ম শিক্ষার্থীরাই পারি না। যাদেরকে নিয়ে জাতি স্বপ্ন দেখছে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ইত্যাদি দিক দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার আজ তারা অধিকাংশই নিজস্ব মাতৃভাষা লিখতে ও পড়তে জানে না।
আমরা যতই উচ্চ শিক্ষিত হই না কেন, আমাদের নিজস্ব মাতৃভাষা শেখার ছাড়া কোন বিকল্প নেই।
আমাদের আগে নিজ মাতৃভাষাকে রক্ষা করতে হবে তারপর অন্যকিছু।
হঠাৎ আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর এক কবিতার লাইন মনে পড়ল-
আর্য্য ঋদ্ধি মানব জ্যোতি নিজ বর্ণমালা লিরখছে।
' মাগো, ওরা বলে,
সবার কথা কেড়ে নেবে
তোমার কোলে শুয়ে
গল্প শুনতে দেবে না।
বলো, মা, তাই কি হয়?
এই থেকে বুঝতে পারি, বাংলাদেশর স্বাধীনতার আগে নিজস্ব ভাষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।
শুধু "চাকমা" ভাষা কেন বন্ধু?
আমাদের দেখতে হবে চাকমা ছাড়াও অপরাপর যে আদিবাসী জনগোষ্ঠী রয়েছে তারাও যেন তাদের নিজস্ব মাতৃভাষা শিক্ষা গ্রহণ থেকে বন্ঞিত না হয়।
বলতে দ্বিধা নেই যে, এই শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠে এসে আমরা অনেক কিছু শিখতেছি, জানতেছি। যেমন- রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ইত্যাদি। এই প্রতিষ্ঠানে "আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউট" থাকায় আরও বিভিন্ন দেশের ভাষা শিখে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছি এবং শিখতেছিও। প্রতিবছর যখন "আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউট" থেকে বিভিন্ন ভাষার ভর্তির যে আবেদন চাওয়া হয় তখন দেখতে পাই আমাদের জুম্ম শিক্ষার্থীরা অধিকাংশই ৫০০ টাকা করে ফরম কিনে নেই এবং অনেকেই ২/৩ টা ভাষা থেকে কিনেও নেই। আমি এটাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। বর্তমান সময়ে এটা খুুবই প্রয়োজন রয়েছে।
এখানে প্রশ্ন রাখতে চাই, আপনী কখনো ভাবছেন কি আপনার নিজস্ব ভাষার প্রতি? আপনার যে আগে নিজের মাতৃভাষাকে শিখতে হবে? আপনী তো কত বাংলা, ইংরেজিতে অনর্গল কথা বলে যেতে পারেন কিন্তু আপনী কি নিজের মাতৃভাষাতেই লিখতে, পড়তে জানেন?
কোন বন্ধু বা যে কেউ জিজ্ঞেস করলে, ভাই তোমাদের কি নিজস্ব ভাষা আছে? হ্যাঁ আছে। একটু লিখে দেখাবেন কি? ভাই আমাদের চাকমা ভাষা খুবই কঠিন, তাই পারি না যে। এই হলো আমাদের বাস্তবতা।
যাহোক চাকমা ভাষার এই বইগুলো আমার হাতে ৫০ কপি পৌঁছেছে।
চাইলে যে কেউ সংগ্রহ করে নিতে পারো।
দাম মাত্র ২০ টাকা।
এত অল্প খরচে নিজস্ব মাতৃভাষা লিখার ও পড়ার সুবিধা পাচ্ছি এটাই আমাদের যথেষ্ট বলে মনে করি।
আর এই চাকমা ভাষা বইটি প্রকাশে যারা ত্যাগ ও শ্রম দিয়েছেন তাদের সবাইকে জাতির পক্ষ থেকে শশ্রদ্ধা জানাচ্ছি কারন এই মানুষগুলো আমাদের প্রয়োজন পড়বেই। একদিন এই হাল আমাদেরকে ধরতেই হবে।
এটা ব্যবসা নয়। সময় বলে দিচ্ছে আমাদের নিজস্ব মাতৃভাষাকে আয়ত্ব করা উচিত।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কেন আঞ্চলিক স্বায়ত্ব শাসন?

বাংলাদেশ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের শাসনতান্ত্রিক অধিকার দাবীর- আবেদন পত্র গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবী ...