চঞ্চল কান্তি চাকমা
গ্রাম: কামুক্কো ছড়া, ইউনিয়ন: বোয়ালখালী, উপজেলা: দিঘীনালা, জেলা: খাগড়াছড়ি, পার্বত্য জেলা।
পিতা: মৃত নিরতা রঞ্জন চাঙমা, মা: সুনীতি বালা চাঙমা। ১৯৭৫ সালে এসএসসি পাশ করে দরিদ্র পরিবার পক্ষে পড়া-লেখা চালানো সম্ভব না হওয়াতে ১৯৭৬ সালে ০১ জানুয়ারি কেপিএম চাকুরিতে যোগদান করেন। এর পর ১৯৭৯, ২০ ডিসেম্বর মহিলা অধিদপ্ত (রাঙ্গামটি) যোগদান করে সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৮ ইংরেজিতে অবসর গ্রহণ করেন।
প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজ অবস্থান থেকে অন্যের মঙ্গলের জন্য চাইলেই কিছু করতে পারেন, এক্ষেত্রে ব্যক্তির সদিচ্ছাই যথেষ্ট। এই কথাটি আরেকবার প্রমাণ করেছেন খাগঢ়াছড়ি পার্বত্য জেলার দিঘীনালা উপজেলার উত্তর কামুক্কোছড়া গ্রামের ৬১ বছর বয়সী চঞ্চল কান্তি চাকমা। সম্প্রতি হিসাবরক্ষক হিসেবে রাঙ্গামাটি জেলার মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে অবসর নিয়েছেন।
চাকুরীজীবন থেকেই একটা ইচ্ছা ছিল অসহায় মানুষের জন্য কিছু করার। চাকুরীর ব্যস্ততায় সবসময় সুযোগ করে ইঠতে পারেন নাই কিন্ত স্বপ্নকে লালন করেছেন সযত্নে। অবসর জীবনে প্রথমে শুরু করলেন বাবা-মাকে সেবা দিয়ে। তাদের জন্য গড়ে তুললেন ‘অবসর ভবন’। কাজ করতে গিয়ে উপলব্ধি করলেন বয়স্ক ব্যক্তিদের শারীরিক এবং আর্থিক দুর্দশার কথা। তিনি দেখলেন, এই অসহায় মানুষদের চিকিৎসা করানোর সঙ্গতি নেই বা কোনো একটা প্রয়োজনীয় জিনিসও কেনার সামর্থ্য নেই।বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য কিছু করার ভাবনা থেকেই তিনি গড়ে তুললেন ‘পেনশন’ নামে একটি সংগঠন এবং নিজের অবসর ভাতা থেকে চালু করেন বয়স্ক ভাতা। ১ অক্টোবর ২০১৯ সালে দিঘীনালা উপজেলা ভবনে বিশ^ প্রবীণ দিবসে অংশগ্রহণ করে জনসক্ষে তার এই বয়স্ক ভাতা দেয়ার ঘোষণা দেন। চঞ্চল কান্তি চাকমা অন্যরাও যাতে উদ্ধুদ্ধ হন এবং প্রবীণদের সহায়তায় এগিয়ে আসেন। বর্তমানে প্রতিমাসে নিজের অবসর ভাতা বাবদ পাওয়া অর্থ থেকে ৫ জন প্রবীবণকে প্রতিমাসে ৫০০ টাকা করে (মোট ২৫০০ টাকা) তিনি প্রদান করছেন।
চঞ্চল কান্তি চাঙমা মনে করেন মানুষের জীবন মান উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি হলো “পরিশ্রম ও সদাচারন”। চঞ্চল কান্তি চাঙমার এই মহতী প্রচেষ্টা ইতোমধ্যেই দশব্যাপী বহুল প্রশংসিত হয়েছে। বিভিন্ন দৈনিক প্রত্রিকা তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশের জনপ্রিয় টিভি অনুষ্ঠান “ইত্যাদি” তাদের অনুষ্ঠানে চাঞ্চল কান্তি চাঙমাকে বিশেষ সম্মাননা ও ১ লাখ টাকা পুরস্কার প্রদান করেছেন এবং গত জানুয়ারি ১৪, ২০২০ ইংরেজি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট- ঢাকা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন “মানবাধিকার পদক” প্রদান করেন।
সরকারী চাকুরী জীবন শেষে পেনশনের টাকার শুধুমাত্র নিজের সুখের কথা চিন্তা না করে পেনশনের টাকা নিয়ে প্রবীণ অসহায় মানুয়ের পাশে দাঁড়ানোর এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি মহৎ প্রচেষ্টা।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কেন আঞ্চলিক স্বায়ত্ব শাসন?
বাংলাদেশ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের শাসনতান্ত্রিক অধিকার দাবীর- আবেদন পত্র গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবী ...
-
"পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন-১৯০০" চিটাগং হিল ট্র্যাক্ট (পার্বত্য চট্টগ্রাম) রেগুলেশন ১৯০০ এখনো কার্যকর একটি আইন। এ রেগুলেশনটির ...
-
১ বাবুছড়া ক্যাম্পের অপরিসর আঙিনায় সৈনিকরা জলপাই রঙের ম্যাট বিছিয়ে রাইফেল পরিষ্কারে ব্যস্ত। প্রতিমাসে একবার গোটা ক্যাম্প জুড়ে চলে পরিষ্কার ঘষ...
-
বাংলাদেশ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের শাসনতান্ত্রিক অধিকার দাবীর- আবেদন পত্র গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবী ...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন