রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৪

বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ৮ দফা দাবীনামা পূরণের দাবিতে মাননীয় উপদেষ্টার সমীপে স্মারকলিপি

 
বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ৮ দফা দাবীনামা পূরণের দাবিতে মাননীয় উপদেষ্টার সমীপে স্মারকলিপি


তারিখ: ২৪ আগস্ট, ২০২৪

মাননীয় উপদেষ্টা,

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, বাংলাদেশ।

বিষয়: পার্বত্য চট্টগ্রামের নির্দলীয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের "সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন" -এর পক্ষ হতে ৮ দফা দাবীনামা উল্লেখপূর্বক উপদেষ্টা মহোদয়ের বরাবর স্মারকলিপি প্রদান।

সম্মানিত মহোদয়,

প্রারম্ভে "সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন" -এর পক্ষ থেকে আপনাকে শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা জানাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। সেই সাথে কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে সাধারণ ছাত্র সমাজের গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে এক বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের সূচনা ঘটাতে গিয়ে যে সকল বীর ছাত্র-জনতা আত্মাহুতি দিয়েছেন, তাদের সকলকে বিনম্রচিত্তে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।

ছাত্র জনতার এই আন্দোলন ছিল নবদিগন্তের এক বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মানের গণ-বিপ্লব। আমরা "সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন" -এর সমন্বয়কবৃন্দ পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী ছাত্র- জনতার পক্ষ হতে ঘটে যাওয়া আন্দোলনকে সম্মান ও একাত্মতা জানিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে অংশীদার হতে চাই।

ফ্যাসিবাদের কালো থাবা থেকে দেশকে মুক্ত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। আমাদের বিশ্বাস দেশে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আরও বিশ্বাস করি যে, পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করে রেখে দেশে "বৈষম্যহীন, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামজিক ন্যায়বিচার" প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তাই আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে আপনার মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট নিম্নলিখিত দাবিসমূহ পূরণের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি-

১। বাংলাদেশের ১ম ও ২য় শ্রেণির সরকারি চাকরিসহ সকল গ্রেডের চাকরিতে ৫% আদিবাসী কোটা পুনর্বহাল করতে হবে।

২। আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে এবং এনসিটিবি' পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসীদের সঠিক ইতিহাস, কৃষ্টি-সংস্কৃতি সাহিত্য ইত্যাদি বিষয়বস্তু অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

৩। "সংঘাত বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন" -এর সমন্বয়কদের সাথে আলোচনা করে নির্দলীয়, সৎ গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান সদস্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা এবং গত বিশ বছরের জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সদস্যদের দুর্নীতি তদন্তপূর্বক যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

৪। অবিলম্বে পাহাড়ের ভুমি সমস্যার সমাধান করতে হবে এবং ১৯০০ রেগুলেশন বহাল রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

৫। পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি পূর্বক আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং জেলা পরিষদের সকল অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

৬। ক্রীড়াঙ্গনে দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা মাদকমুক্ত যুব সমাজ গড়তে ক্রীড়া খাতে সরকারি অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।

৭। পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক সংকট নিরসনের লক্ষ্যে যোগ্য দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ প্রদান এবং প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে স্ব স্ব মাতৃভাষায় শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার মানবন্টনে মাতৃভাষা পারদর্শীতা যাচাই করার জন্য একটি অংশ যুক্ত করতে হবে।

৮। পার্বত্য চট্টগ্রামকে সরকারি বা বেসরকারি কোন কর্মকর্তা/কর্মচারীর "পানিশমেন্ট জোন" হিসেবে

ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং চাকরির ক্ষেত্রে পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থানীয়দের পদায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

নিবেদক

সমন্বয়কবৃন্দ

সংঘাত বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন

পার্বত্য চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কেন আঞ্চলিক স্বায়ত্ব শাসন?

বাংলাদেশ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের শাসনতান্ত্রিক অধিকার দাবীর- আবেদন পত্র গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবী ...