সোমবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২১

“আমি সে দিনর আঝায়- সুনানু ইনজেব চাঙমা

 

 
 “আমি সে দিনর আঝায়-
যে দিনত মোন-মুড়ত পেইকউনেয়্য
সুর তুলি চুচ্যাঙ্যা কা, গুজঙ্যা খা, ...........
সুর তুলি গেই যেবাক আমনর মন’ কধা”

বাক-শ্রবণ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়েও কিংবদন্তি হেলেন কেলার - তানিয়া তুষ্টি সাইফ ইমন

 


বাক-শ্রবণ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়েও কিংবদন্তি হেলেন কেলার

বিভিন্ন মঞ্চে বক্তৃতার আয়োজন করতেন। দলে দলে লোক ভিড় করত সেসব অনুষ্ঠানে। তার বক্তৃতায় সূক্ষ্মতা ও চিন্তার গভীরতা দেখে মুগ্ধ হন শ্রোতারা।

কিছুদিনের মধ্যেই হেলেনের অসংখ্য অনুরাগী-ভক্ত তৈরি হলো। প্রচ- রাজনীতি সচেতন ছিলেন তিনি। নারীদের অধিকার আদায়ের ব্যাপারে তিনি ছিলেন সোচ্চার। লিঙ্গগত বৈষম্য দূর করার আহ্বান জানাতেন সবাইকে। মাত্র দুই বছর বয়সে বাক-শ্রবণ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিত্ব বরণ করতে বাধ্য হলেও সংগীত উপভোগ করার এক আশ্চর্য ক্ষমতা ছিল তার। আত্মজীবনীমূলক বই ‘The story of my life’ এ নিজের জীবনের বিপর্যয়, লড়াই ও ভালোবাসার জীবনচিত্র তুলে ধরেন তার অপূর্ব লেখনীতে। লোকের মুখে মুখে উচ্চারিত হতে থাকে তার নাম। তিনি কিংবদন্তি হেলেন কেলার।

 

নিরাশা থেকেও জন্ম নিতে পারেন হেলেন কেলাররা

শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সম্পর্কে আমাদের একটি সাধারণ ধারণা হলো, তারা আর দশজন স্বাভাবিক মানুষের মতো চলাফেরা করতে পারে না। জীবনের অর্জন বলতে কিছুই থাকে না। শুধু পরিবারের সবার ওপর তারা কেবলই বোঝা। কিন্তু এ ধরনের কিছু প্রচলিত ধারণাকে পাল্টে দিয়েছেন হেলেন কেলার। এক গভীর নিরাশা থেকেও জন্ম নিতে পারে তাদের মতো কিংবদন্তি। অন্ধ-বধির হয়েও কীভাবে মানুষ তার দেখা ও বোঝার ক্ষমতা দিয়ে আকাশ স্পর্শ করতে পারে, তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন হেলেন কেলার। তার পুরো নাম হেলেন অ্যাডামস কেলার। হেলেন কেলার ১৮৮০ সালের ২৭ জুন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামায় জন্মগ্রহণ করেন। মৃত্যুবরণ করেন ১ জুন, ১৯৬৮ সালে। বাক-শ্রবণ ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধিত্ব নিয়েও মাত্র ২৪ বছর বয়সে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি ডক্টরেট ডিগ্রি পর্যন্ত অর্জন করেন। তিনি প্রতিবন্ধী শিশুদের অধিকারের জন্য আজীবন লড়াই করে গেছেন। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন একজন গুরুত্বপূর্ণ লেখক ও রাজনৈতিক কর্মী। তার বাবার নাম আর্থার কেলার এবং মায়ের নাম কেইট অ্যাডামস। মাত্র ১৯ মাস বয়সে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাবা-মা আদরের মেয়ের জীবনের আশা ছাড়তে পারেননি। চিকিৎসা করা শুরু করেন। বহু চিকিৎসার পর হেলেনের জীবন হয়তো রক্ষা পায়, কিন্তু তার কথা বলা, শোনা এবং দেখার শক্তি চিরদিনের জন্য হারিয়ে যায়। শিশুকাল থেকেই হেলেন কেলার একাধারে বাক-শ্রবণ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিত্বের শিকার হয়ে বহুমুখী প্রতিবন্ধিত্ব নিয়েই বড় হতে থাকেন। তার বয়স যখন মাত্র ছয় বছর তখন বাবা-মা তাকে ওয়াশিংটনের প্রসিদ্ধ বিজ্ঞানী, টেলিফোন আবিষ্কারক আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেলের কাছে পরামর্শ গ্রহণের জন্য নিয়ে যান। হেলেন কেলারকে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তিনি বলেন, হেলেন আর কোনো দিন চোখে দেখতে পাবে না এবং কানেও শুনতে পাবে না। তবে গ্রাহাম বেল হেলেন কেলারের তীক্ষè বুদ্ধিমত্তা দেখে অনুধাবন করেন পরিকল্পনা অনুযায়ী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে স্বাভাবিক জীবনের কাছাকাছি একটি সুন্দর জীবন ফিরে পাওয়া সম্ভব।

 

সমাজসেবা

নিজে বাক-শ্রবণ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়েও সমাজের এই ধরনের মানুষের জন্য সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করেছেন। তার জীবদ্দশায় যুক্তরাষ্ট্রের সব প্রেসিডেন্টের এবং আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল, মার্ক টোয়েন, চার্লি চ্যাপলিনের মতো বিখ্যাত ব্যক্তিদের সহায়তা পান। হেলেন ১৯১৫ সালে জর্জ কেসলারকে সঙ্গে নিয়ে হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। সংস্থাটি এখনো বাক-শ্রবণ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ১৯৪১ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের অনুরোধে হেলেন কেলার বিভিন্ন হাসপাতালে যুদ্ধাহত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নাবিক ও সৈনিকদের দেখতে যেতেন এবং শান্তি ও আশার বাণী শোনাতেন।

 

রাজনৈতিক জীবন

রাজনৈতিক বিষয়েও অভিজ্ঞ ছিলেন হেলেন কেলার। এই বিষয় নিয়ে তিনি লেখালেখি করেছেন। তিনি ছিলেন আমেরিকান সোশ্যালিস্ট পার্টির সমর্থক। হেলেন সেখানে ১৯০৯ সালে যোগদান করেন। তিনি আয়ের সুষম বণ্টন দেখতে চাইতেন। ধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার অসমতার শেষ দেখাই ছিল তার ইচ্ছা। তার বই ‘Out of The Dark’-এ এই বিষয়ে বিস্তারিত রচনা লিখেছেন। ১৯১২ সালে তিনি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স অব দ্য ওয়ার্ল্ডে যোগদান করেন। হেলেন ছিলেন একজন শান্তিবাদী এবং তিনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকার জড়িত থাকার বিরুদ্ধে ছিলেন।

 

সাহিত্যেও ছিল দখল

সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে তিনি যেমন সমাজের জন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তেমনি সাহিত্যাঙ্গনেও রেখেছিলেন দক্ষতার ছাপ। হেলেনের রচিত বইয়ের সংখ্যা ১১টি। প্রধান বই হচ্ছে দি স্টোরি অব মাই লাইফ (১৯০৩), লেট আস হ্যাভ ফেইথ, দি ওয়ার্ল্ড আই লিভ ইন (১৯০৮), ওপেন ডোর ইত্যাদি। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে হেলেনের খুবই সুসম্পর্ক ছিল। হেলেনের সুখ্যাতি সম্পর্কেও রবীন্দ্রনাথ জ্ঞাত ছিলেন। এ ছাড়াও তিনি বাক-শ্রবণ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অভিশপ্ত বিড়ম্বনা জীবনের বিষাদের ওপর একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। চলচ্চিত্রে তার নিজের ভূমিকায় তিনি নিজেই অভিনয় করেছেন। হেলেনর লেখা একটি কবিতা-

‘আমার দৃষ্টিদ্বয় তারা সরিয়ে নিল যেখানে যা হওয়া উচিত ছিল কিন্তু আমি স্মরণ করি মিল্টনের স্বর্গখনি,

আমার শ্রবণদ্বয় তারা সরিয়ে নিল যেখানে যা হওয়া উচিত ছিল বিথোভেন এসে মুছালো আমার চোখের পানি।

আমার জিহ্বা তারা সরিয়ে নিল যেখানে যা হওয়া উচিত ছিল যখন আমি ছোট ছিলাম ঈশ্বরের সাথে কত কথা,

সম্পূর্ণ পোষণ করি তিনি তাদের অনুমতি দেবেন না সরিয়ে নিতে আমার আত্মা।’

 

স্পর্শের অনুভূতি ছিল সূক্ষ্ম

হেলেন কেলারের অসামান্য কিছু প্রতিভা ছিল। যেমন- তিনি বাদ্যযন্ত্রের ওপর হাত রেখেই তাতে কী সুর বাজছে তা বলতে পারতেন। অথচ তিনি কিছুই শুনতে পেতেন না। বাদ্যযন্ত্রের তরঙ্গের সঙ্গে স্থাপিত হয় হেলেনের নিবিড় যোগাযোগ। ১০ বছর বয়সে নরওয়েতে উদ্ভাবিত পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে কথা বলা  শেখেন হেলেন। এমনকি দীর্ঘদিন পরও কারও সঙ্গে হাত  মেলালে বলে দিতে পারতেন লোকটি কে। তার স্পর্শের অনুভূতি ছিল অত্যন্ত সূক্ষ্ম। নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হেলেনের হাত স্পর্শ করে তাকে কবিতা পড়ে শোনাতেন। হেলেন বিশ্বকবির হাতের স্পর্শে অনুভব করতেন কবিতার শব্দমালা। এমনকি হেলেন কেলার নৌকাও চালাতে পারতেন। শুধু তাই নয়, নকশিকাঁথা সেলাই করতে পারতেন হেলেন। আর একজন স্বাভাবিক মানুষের মতোই তিনি দাবা, তাস খেলতে পারতেন। বরং তার সঙ্গে বিপরীতে খেলাটা মোটেই খুব সহজ ছিল না। এই হেলেন অন্ধদের জন্য তহবিল সংগ্রহ করে গড়ে তোলেন নতুন নতুন সমিতি ও স্কুল। সমাজের বাক-শ্রবণ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মানুষের জন্য সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি ও গণমানুষের সহায়তা অর্জনে আজীবন প্রচেষ্টা চালান। ‘হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল’ নামে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি এখনো কাজ করে যাচ্ছে। তার অসামান্য কৃতিত্বের জন্য ১৯৭৭ সালে ‘আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দি ওভারসিজ ব্লাইন্ড’ গঠিত হয়। হেলেন এই প্রতিষ্ঠান ছাড়াও পৃথিবীর বহু দেশের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন সভা-সমিতিতে বক্তৃতা দিয়ে যা অর্থ পাওয়া যেত তা দিয়ে বিভিন্ন দেশে অন্ধদের কল্যাণার্থে ৫০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন হেলেন। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে সাহায্য পেয়ে হাজার হাজার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মানুষ শিক্ষালাভ করেছে। নিজেকে সফলভাবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেছে। একজন সুস্থ সবল মানুষের জন্যও হেলেন একজন অনুপ্রেরণীয় ব্যক্তিত্ব।

 

কর্মযজ্ঞে অবিস্মরণীয়

প্রাথমিকভাবে সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর যখন জানা গেল হেলেন আর কোনোদিন চোখে দেখতে এবং কানে শুনতে পারবেন না। কিন্তু গ্রাহাম বেল হেলেনের তীক্ষè বুদ্ধিমত্তা দেখে বাবা আর্থারকে বলেন বোস্টনের পার্কিনস ইনস্টিটিউশনে হেলেনকে ভর্তি করে দেওয়ার জন্য। ডাক্তার হোর এই প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ ছিল অন্ধদের শিক্ষাদান। ডাক্তার নিজেই হেলেনকে স্নেহ দিয়ে লেখাপড়া শেখাতে শুরু করেন। কিন্তু হঠাৎ ডাক্তার হো মারা গেলে অ্যানি সুলিভ্যান ম্যানসফিল্ড নামের এক শিক্ষিকার হাতে যায় হেলেনের দায়িত্ব। অ্যানি অন্ধ এই শিশুকে স্পর্শের মাধ্যমে জগৎ চেনাতে লাগলেন। আলোর ছোঁয়া এবং অন্ধকারের অনুভূতির তফাৎ বোঝালেন। কল চালিয়ে হাতের ওপর বয়ে যাওয়া তরলকে চেনালেন ‘জল’ বলে। একে একে পরিচয় ঘটল তার সঙ্গে বাড়ির বিভিন্ন আসবাবপত্র, টেবিল, চেয়ার, বিছানা ইত্যাদির সঙ্গে। আস্তে আস্তে হেলেন অবিশ্বাস্য দ্রুততায় সব শিখে নিতে থাকেন। লুই ব্রেইল আবিষ্কৃত ব্রেইল পদ্ধতির মাধ্যমে হেলেন লেখাপড়া শিখতে শুরু করেন। কয়েক বছরেই হেলেন ইংরেজি, ল্যাটিন, গ্রিক, ফরাসি এবং জার্মান ভাষায় পারদর্শী হয়ে ওঠেন। পরবর্তীতে তিনি ব্রেইল টাইপ রাইটারে লিখতে শেখেন। হেলেন ১১ বছর বয়সে এক বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করে কথা বলার চর্চা করতে থাকেন। ধীরে ধীরে চিকিৎসার মাধ্যমে তার বাকশক্তি অনেকটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। ২০ বছর বয়সে হেলেন সাহিত্য, দর্শন, ধর্ম, ইতিহাসে নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন, ভর্তি হন র‌্যাডক্লিফ কলেজে। কলেজে পড়াকালীন তিনি লেখেন তার প্রথম আত্মজীবনীমূলক রচনা ‘Optimism’। চার বছর পর তিনি সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে বিএ পাস করেন। কলেজে স্নাতক হওয়ার পর তিনি লেখেন তার জীবনের নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সাংবাদিক পেশায় তার কর্মজীবন শুরুর কথা। ১৯২২ সালে ডাক্তার বেলের মৃত্যুর পর তারই শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী হেলেন বেলের প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। অন্ধ শিশুদের নিয়ে কাজ করতে প্রায়ই হেলেন অন্ধদের জন্য নির্মিত বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শনে যেতেন। ১৯৩৫ সালে হেলেনের শিক্ষয়িত্রী ও সহযোগী অ্যানি সুলিভ্যান মৃত্যুবরণ করেন। অ্যানির এই মৃত্যুকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না হেলেন। জীবনের চলার পথের সঙ্গীকে হারিয়ে তার প্রায় পাগল পাগল অবস্থা। এর মধ্যেই শুরু হয় বিশ্বযুদ্ধ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের অনুরোধে হেলেন কেলার বিভিন্ন হাসপাতালে যুদ্ধাহত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নাবিক ও সৈনিকদের দেখতে যেতেন। তাদের শান্তি ও আশার বাণী শোনাতেন। যুদ্ধ শেষ হলে বাক-শ্রবণ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিশ্বব্যাপী এক আন্দোলন গড়ে তুলতে সচেষ্ট হন। ১৯৫০ সালে হেলেনের ৫০ বছরের কর্মময় জীবনকে সম্মান জানাতে প্যারিসে এক বিরাট সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়। তখন তার বয়স পৌঁছে গেছে সত্তর এর কোঠায়। ১৯৫৯ সালে হেলেন জাতিসংঘ কর্তৃক বিশেষ সম্মানে ভূষিত হন। ১৯৬৮ সালের ১ জুলাই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ১১টি বই রচনা করেছেন তিনি। হেলেন কেলার এমনই এক নাম যা অন্ধ, বিকলাঙ্গ, প্রতিবন্ধী মানুষের কাছে আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। যুগে যুগে এই মহীয়সী নারীর রেখে যাওয়া দৃষ্টান্তই হোক সবার পথচলার মন্ত্র। প্রচ- ইচ্ছাশক্তি মানুষকে যে কোথায় নিয়ে যেতে পারে, তার জ্বলন্ত উদাহরণ হেলেন কেলার। শারীরিক সব অক্ষমতাকে প্রচ- মানসিক শক্তি দিয়ে জয় করে হেলেন হয়ে উঠেছিলেন একজন চিন্তাশীল-সৃষ্টিশীল মানুষ।

 

দ্য মিরাকল ওয়ার্কার

১৪ বছর বয়সে হেলেন কেলার ‘রাইট হামসন’ স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর বিশ্ববিখ্যাত লেখক মার্ক টোয়েনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। মার্ক টোয়েন তার বর্ণনায় হেলেন কেলারকে উল্লেখ করেছিলেন মিরাকল ওয়ার্কার হিসেবে। সারা বিশ্বের জন্য অনুপ্রেরণীয় এই মহীয়সী নারীকে নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরি হয় ১৯৬২ সালে। যেখানে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন  পেটি ডিউক। চলচ্চিত্রটির নামকরণ করা হয় মার্ক টোয়েনের সেই রচনা থেকে ‘দ্য মিরাকল ওয়ার্কার’। এই চলচ্চিত্রটি বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তোলে। যার ফলে পরবর্তীতে দুইবার ছবি নির্মাণ করা হয় ১৯৭৯ ও ২০০০ সালে। যেগুলো ভিন্ন ভিন্ন সময়ে টেলিভিশনেও রিলিজ পায়। হেলেন কেলারের জীবনের সবচেয়ে কঠিন দিকগুলো অবলোকন করেছেন এবং নিজের মেধা আর অধ্যবসায় দিয়ে জয়ও করে নিয়েছিলেন। সেটাই চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয় চলচ্চিত্রে। হেলেনের শিক্ষয়িত্রী ও সহযোগী অ্যানি সুলিভ্যান চরিত্রটি পরবর্তীতে চিত্রায়ণ করেন পেটি ডিউক। প্রথম চলচ্চিত্রে এই চরিত্রে কাজ করেছিলেন অ্যানি বেনক্র্যাফট। সব চলচ্চিত্রই দর্শক এবং সমালোচকদের হৃদয় জয় করে নিয়েছে।

রাঙা বেলান- সুনানু ইনজেব চাঙমা

 


রাঙা বেলান উত্তে কালা মেঘ সেরে

আঝা আ সবন বাজি থোক নিশুলি বুগ’ ভিদিরে।

রবিবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২১

ইধোত উদে তরে- সুনানু ইনজেব চাঙমা


পজিম মোনত রাঙা গরি পহ্’র ছিদিলে

ইধোত উদে তরে,

কুধু আঘচ কেঝান আগচ 

সবন দেঘেচ মরে।

ও ও আওজোর কোচপানাবি

কুধু ফেলে যেলে মরে।

 

ঝুপঝুপ্যা দেবা ঝরত সাজি নালত

তুই মুই দ্বিজনে গাদিলং কধক

দেবাবো ঝর দিলে

সাজি পানি আহ্’দিলে

ইধোত উদে তরে। 

ও ও আওজোর কোচপানাবি

কুধু ফেলে যেলে মরে।


 

চিকচিক্যা রাঙা বেলান

পজিম মোনত এলান দিলে

বুগত আঝা বানে 

কাল্লো বুগি ফিরি এভে তুই।

ফাওনর আভা ফিরিলে বিঝু কায় এলে,

শুনং ত’ মিধে র’বো 

পাজন তোন তগা যেবার 

কুজোলী গরর মরে।

 

মোহিনী বান- সুনানু ইনজেব চাঙমা

 

ও বাপ-ভেই, মা-বোন লক

মুরত পরি অমাল গরি ভাবি চ’,

আগে কধক সুক এল’ 

ইক্যে সে সুক কধু আহ্’জি যেল’?

চোগে রিনি ন’ পাচ্যে ভূইয়ো মাদ

চাদিগাং ফেলে এই পেলং,

আন্দার ঝার মুরুল্যা দেঝত

কধক দুগে বাহ্ বানি নিলং।

সে সাগিনর বাহ্ ভাঙি দিল কাপ্তে গদা পানি,

ছিদি পরলং মিজোরাম, নেপা আ তিবিরি।

ইক্যে!

মারা অহ্’ল’ মোহিনী বান

শত্রু মিত্রু ন’ চিনি

ভেইয়ে ভেইয়ে গরির মারা-মারি। 

 


শনিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২১

আমাহ্ জাত্তোরে পিত্তিমী বুগত বাজে রাঘেবাত্তেই আ পোতপোত্তে গরি ফুদি রাঘেবাত্তেই, জাদ' গরা আন দর'মর' গরিবাত্যাই- আমাহ্ মা ভাচ্চান খামাক্কাই শিঘি রাঘানা গরচ আঘে- সুনানু মুনিয়া চাঙমা। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ত্ ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগত্ পর্বোয়া।

মুই মুনিয়া চাঙমা। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ত্ ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগত্ পর্বোয়া। মুই যক্কে কলেজত এলুঙ সক্কে ম' সমাজ্জে কয়েক জনরে তারা নাঙানি আমাহ্ চাঙমা লেঘাদি লিঘদে দিঘিনেই মত্তনু আমাহ্ মা-ভাচ শিঘিবার ভজমান আওচ উয়ে। মাত্তর দুঘর কধা, মুই সে সময়ত আমাহ্ চাঙমা অহ্'রক্কুন শিঘিবার জু ন' পাঙ। দংগা পিরেহ্ করোনাত্যাই ঘরত ফিরি এ পেইনেই ম' আওচ্চান পূরণ গরিবার জু অহ্'য়। আর এ জু'আন গরি দিয়্যা সুনানু লিটন চাঙমা আ সুনানু কিংশুক চাঙমা দা দাঘি। তে গেলদে ২০২০ সালর নভেম্বর মাঝত 'চাঙমা সাহিত্য বাহ্' তপ্পেত্তুন আমাহ্ 'কুকিছড়া' আদামত্ 'কুকিছড়া দ্যা হিলম্যান যুব ক্লাব'ত ১২ দিনর চাঙমা লেঘা সার্টিফিকেট কোর্স ফাং গরা অহ্'য়। তে মুই সে কোর্সত চাঙমা লেঘা শিঘিবার আওচ্চান পূরণ গরি পাজ্জুং। ইক্যে মুই আমাহ্ মা-ভাচ্, আমাহ্ চাঙমা অহ্'রক্কুন চিনং, লেঘি জানং, পরিহ্ পারং। সিত্যাই মুই 'চাঙমা সাহিত্য বাহ্' আ 'কুকিছড়া দ্যা হিলম্যান ক্লাব' রে জু জু আহ্ ভালেদি জানাঙর। চাঙমা লেঘা শিঘিনেই, ম' আওচ্চান পূরণ গরি পারিনেই মর' ভজমান গম' লাগিল’ যিয়ান মুই লিঘিনেই বা কোইনেই ফগদাং গরি ন' পারিম। মুই ইক্কু কোই পারিম, "মুই চাঙমা। তজিমপুর জাত। আমার আঘে নিজ' ভাচ্, নিজ' লেঘা, নিজ' রিদিসুধোম, নিজ' উরন-পিনন." জাদর ভাচ্ অহ্'লদে এক্কো জাদর নিঝেনী। যে জাদর নিঝেনী থেব', সে জাত্তু কন' দিন ন' লুগেব'। মাত্তর, দুগর অলহ্'দে এচ্যে আমাহ্ সেই ভাচ্, ওক্কোর, রিধিসুধোম আনি লুগে যাল্লোই। ইক্কু যনি আমি আমাহ্ ভাচ্চান্ শিঘি ন' রাঘেই, রিধিসুধোম আনি ধরি ন'রাঘেই, আমাহ্ পরেন্দি যে পিরিহ্'উন্ এবাক্ তারায়ু ন' পারিবাক। আমাহ্ জাত্তোর পিত্তিমীত্তুন লুগে যেবার দরআন থেব’। সিনাত্যাই, আমাহ্ জাত্তোরে পিত্তিমী বুগত বাজে রাঘেবাত্তেই আ পোতপোত্তে গরি ফুদি রাঘেবাত্তেই, জাদ' গরা আন দর'মর' গরিবাত্তেই- আমাহ্ মা ভাচ্চান খামাক্কাই শিঘি রাঘানা গরচ আঘে। 


সে লগে কুজোলি থেব' আমাহ্ জাদর চিগোন-দাঙর বেগ ইদু, "আমাহ্ চাঙমা অঝাপাত্ শিঘানা আন সাতকাম ধরিনেই বেগে শিঘি রাঘেই আহ্ আমাহ্ পরেন্দি উদন্দি পিরিহ্ উনরেয়্য শিঘিবাত্তেই জিত তুলি দি।"

ইক্কে মুই কোই পারং দাঙর মু গরি, ম’ নিজ' মা ভাচ মাদে পারং লিঘি পারং- সুনানু টন্নী তালুকদার মাষ্টার্স ১ম বর্ষ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, রাঙামাত্যা সরকারি কলেজ ।

সুনানু টন্নী তালুকদার মাষ্টার্স ১ম বর্ষ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, রাঙামাত্যা সরকারি কলেজত পরেহ্। গেল্লে ডিসেম্বর ২০২০ইং চাঙমা লেঘা শিঘি নিজরে চাঙমা আ শিক্ষিত ভিলেন দাবি গরে। যারা মা- ভাচ আ নিজ’ ওক্কোরলোই দুরত আঘন তারারে শিক্ষিত মনে ন’ গরে।

তাত্তুন (চাঙমা সাহিত্য বাহ্ জধানানু, সুনানু ইনজেব চাঙমাদাঘি) পুজোর গরা অইয়ে- কি ভাপ উদি এধক দেরি গরি চাঙমা লেঘা শিঘিল? চাঙমা লেঘা শেঘি নিজরে কেঝান লাঘে? আ চাঙমা লেঘা শিঘানা পোইদ্যানে কাররে কি কবার আঘে?  

তে কল’- “মুই পল্যে ঝু জানাং চাঙমা সাহিত্য বাহ্ রে। দোল চেহারায়ান আমারে একদিন সারি যেব, মাত্তর, জ্ঞান আমারে সারি যেদ’ নয়। মর খুপ আওচ এল’ চাঙমা লেগা সিগানা ম’ মা ভাচ শিগানা । নিজ মা ভাচ্ছোই কারর মা ভাচ তুলনা গরা ন’ যায় । এক্কো তজিমপুর জাত ইজেবে আমার ওক্কোর, ভাচ আ এক্কো জাদর যে দরপ্পানি থায় আমার কন’ উন’ নেই। সেনে আমি  চাঙমা  কোলেই, চাঙমা নাঙ দিই কেনেই চাঙমা লেঘা শিঘিবং, সে চদনাত্তুন মর দেরি অলেয়্য চাঙমা লেঘা শিঘানা। মা-ভাচ যে কন’ জাদর  দাঙর আহ্ত্যার, একজনলোই আর’ একজনে মাদামাদি গত্তে, সুক, দুগর কধা ফগদাং গত্তে যিয়ান সাতকাম সিয়ান অলদে মা-ভাচ। 

মুই একদিন শুননং মহালছড়ি কলেজত নায়ি চাঙমা লেঘা শিঘান। করোনা এনেই মর শিঘানা নঅয়, গেলদে ২০২০ সালর ডিসেম্বর মাঝত কায়াংঘাট আদামত কায়াংঘাট করুনাদয় বৌদ্ধ বিহারত দাঙর চিগোন ভেই বোনসুমুত্ত এক সমারে মর চাঙমা লেঘা শিঘানা জু অইয়ে। গুর ভেই-ভোনদোই এক সমারে লেঘা শিঘানা ইয়ান আর এক্কান দাঙর খুজি। 

চাঙমা লেঘা শিঘানার জু গুরিদি শুক্রমনি তালুকদার। তারে মুই এ্যাংকুর জানাঙর। আরো জু জানাঙর চাঙমা সাহিত্য বাহ্ মানুচ্ছূনরে। আ সুনানু ইনজেব দা দাঘি আ সুনানু সুপায়ন দা দাঘিরে। তারার এজালে মুই নিজো মা ভাচ্চান শিঘি পাজ্জুং। আগে মুই চাঙমা লেগা অহ্’রক্কুন ন’ চিনিদুং, ইক্কে মুই মাদে জানং লিঘি জানং। ইক্কে মুই কোই পারং দাঙর মু গরি ম’ নিজ মা ভাচ মাদে পারং লিঘি পারং। 

যারা নুও উদন্দি ভেই-বোন আঘন তারা ইদু চাঙমা লেঘা চিনপচ্যা গরিদি পারিবং আ চাঙমা জাত্তরে বাজেই রাঘে পারিবং। সেনত্তে চাঙমা লেঘা শিঘানা। আমার বেক্কুনর দায়িত্ব নিজো মা ভাচ্চান ধরি রাঘেবার নিজো জাত্তুরে বাজেবার, চাঙমা ভাচ্চান শিঘোদে লিঘোদে বেক্কুনে ন’ লাজেবং, ন’ দরে বং, বেক্কনে উজেয় যেবং আদাম্মে পারাল্লে আজু নানু, মা বাপ,ভেই বোন লক।”

বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২১

"ন' লাজেবং ন' দরেবং, উযেই এজ ভেই বোনলক। আমি বেগে চাঙমা লেঘা শিঘিবং, চাঙমা মা-ভাচ্চানরে মুজুঙেন্দি- আক্কোই নেজেবং- সুনানু পরেশ চাঙমা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

মা-ভাচ আ চাঙমা লেঘা আমা চাঙমা জাদর দাঙর আহ্ত্যার। মর ভজমান গরচ এল চাঙমা লেঘা শিঘিবার। আর এ পোইদ্যানে গেলদে ২০২০ সালর নভেম্বর মাঝত কুকিছড়া আদামত 'কুকিছড়া দ্যা হিলম্যান ক্লাবত' চিগোন দাঙর বেগে সমারলোই মর চাঙমা লেঘা শিঘানার জু অইয়ে আর এ চাঙমা লেঘা শিঘিবাত্যাই মরে জু গরি দিয়্যা সুনানু লিটন চাঙমা দা দাঘি। তারে ম' তরপত্তুন কোচপানা আ এ্যাংকুর জানাঙর। সে সমারে "চাঙমা সাহিত্য বাহ'র" জধানানু, সুনানু ইনজেব চাঙমা দা, সুনানু লব্ধ চাঙমা দা, সুনানু সুপায়ন চাঙমা দা দাঘিরেও এ্যাঙ্কুর জানঙর। তারার এজালে মুই চাঙমা লেঘা শিঘানার জু পিয়োং। আ চাঙমা লেঘা শিঘিবার আগে চাঙমা অহরক কারে কয় সিয়ান মুই খবর ন' পেদুং। ইক্কে মুই অঝাপাত কারে কয় খবর পাং। অঝাপাত পরিহ্ জানং, লিঘি জানং। ইক্কে মুই কোই পারং নাক অজল গরি, বুক দাঙর গরি মুই চাঙমা লেঘা পারং; লিঘি পারং। আ সেনত্তে চাঙমা লেঘা সমারে আমা বেগর চাঙমা মা-ভাচ আ জাত্তোরে কোচপাহ্ পরিহবো। জাত্তোরে কোচপেনেয়, জাদর চাঙমা লেঘানর চিনপচ্যা গরিবাত্যাই আমা বেগর চিগোন-দাঙর ভেই বোনুনরে উজে এনেই চাঙমা লেঘা শিঘা পরিহ্বো। চাঙমা লেঘা শিঘিবাত্যা যেনেই আমার জাদর মুজুং দি পরিবো। জাদর নিঝেনী অইনেই চাঙমা লেঘানরে পিত্তিমির মুজুঙোত আক্কোই নেযা পরিহ্’ব। কিত্যাই, একদিন আমি আমা মা-ভাচর অহরক্কুন জাদর উধন্দি ভেই বোনুন' ইধু চিনপচ্যা গরি দি পারিবং, জাত্তোরে বাজেই রাঘে পারিবং। সেনত্তে বেগর চাঙমা লেঘা শিঘা পরিহবো। আ এ পোইদ্যানে মর চাঙমা লেঘা শিঘানা। "ন' লাজেবং ন' দরেবং, উযেই এজ ভেই বোনলক। আমি বেগে চাঙমা লেঘা শিঘিবং, চাঙমা মা-ভাচ্চানরে মুজুঙেন্দি- আক্কোই নেজেবং।

মঙ্গলবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২১

মুই চাঙমা লেঘা লিঘি জানঙ, চাঙমা অহ্’রক্কুন মাদে জানঙ। ম’ ইধু ইক্যে চুচ্যাঙ্যা- কা, গুজঙ্যা- খা অহ্’রক্কুন খুব সদর সদর লাগদন- সুনানু ইলি চাঙমা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়,বাংলা বিভাগ।

সুনানু ইলি চাঙমা
সুনানু ইলি চাঙমা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পর্বোয়া । তে চাঙমা সাহিত্য বাহ্’রে কল’ - “চাঙমা লেঘা আহ্ চাঙমা ভাচ ম’ ইদু খুব কোচপানার এক্কান জাগা জুরিহ্ থায়।মুই যক্যে কলেজত পরিহ্’দুং সক্কেত্তুন ধরি তে মর ম' জাত আ ম’ ভাঝর অহ্’রক নিনেই ধারণা অয়।শিগিবার মন চেলেয়্য শিগানা জু ন’ পাঙ।রাজশাহী পড়ানার সুবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়'র বড় ভেই বোনুনর জাত নিনেই দোল দোল চিদেচয্যার কধা শুনিবার জু ওয়ে মর।সিত্তুন ধরিই মর ম’ নিজর মা ভাচ আ অহ্’রক্কুন শিগিবার আওচ্চান যদবদে গরি মাধাত সোমে রয়ে। সক্কে মনে গত্তুং বিশ্ববিদ্যালয়ত পড়িলে তে চাঙমা ভাচ শিগিবার জু অভ’। মুই সে জু আন বাজ্যা  রয়োং। বিশ্ববিদ্যালয়ত পড়ানা আরগানি গরলে ম সমাজ্জ্যে কয়েকজন চাঙমা ভাচ পারন শুনি তারাত্তুন শিগিবার চেলেয়্য করোনা ভাইরাস আন এই যেয়েগোই। শিগানা ন’ অয় আর। মাত্তর, ঘরত দংগা পিরেহ্ এ করোনা ভাইরাস সময়ানত এম্বা বর এক্কান আওচ পুরেব মুই ভাবি ন’ পারঙ। "চাঙমা সাহিত্য বাহ্" আহ্ ইনজেব চাঙমা দা, সুপায়ন চাঙমা দা সুমুত্ত আর’ যারা যারা আমা চাঙমা জাদত চাঙমা লেঘা শিগানার জু গরি দেদন তারারে ম’ তপ্পেত্তুন এ্যাঙ্কুর দিনেই চিগোন ন’ গুরিম।  ম’ মন সুন্দুগত্তুন কোচপানা আ অদেল ধোয্য বর মাগি দেনা থেহল বেক্কুনত্তেই। ম’ চাঙমা লেঘা শিগানার আওচ মর জাদ’ ইদু ম’ কোচপানাত্তুন। চাঙমা এক্কো জাত ইজেবে ভাচ, অহ্’রক্কুন আগন। সিগুনরে শিগিনেই পিত্তিমীর মানেই লগ’ ইদু দোলেদালে চিনপুচ্যে গরি দিবাত্তেই আমার নিজর আগে শিগানা গরচ আঘে। মুই আর’ ভাবঙ মুই পারিলে মর পরেন্দি যে পিরিহ্’উন এবাক সিগুনও পারিবাক। সিগুন পারিলে তারার পরেন্দি ইগুনো পারিবাক। 

সক্কে, আমা মা ভাচ আ আমা জাত্তো যুক যুক ধরি বাজি থেব’ মাধা উজু গরি। ইক্কু মুই চাঙমা লেঘা লিঘি জানঙ, চাঙমা অহ্’রক্কুন মাদে জানঙ। ম ইধু ইক্যে চুচ্যাঙ্যা- কা, গুজঙ্যা- খা অহ্’রক্কুন খুব সদর সদর লাগদন। ম’ ইদু ইক্যে মা মানে বুগত পদলা মা আ বা মানে উবরমুয়া বা। এক্কো সাহিত্য নিনেই পড়িয়ে ইজেবে ইক্যে মুই মনে অলে চাঙমা লেঘালোই কবিদে লিাঘ পারঙর, পজ্জন লিঘি পারঙর। মন’ সুন্দুগত্তুন এক্কান কোই ন’ পাজ্জে গম লাগানা কাম গরের মর। অনতিত্যে শিঙোর লোই যিনিক্যা গরি গাচ্ছুন এক ঝলগা বোয়েরত আলগে উগুরে পড়ন, ঠিক সেধক্যে আমিও অনতিত্যে গরি বানা চাঙমা নাঙ দিনেই এ বাঙালাদেঝত আ গদা পিত্তিমিত থিগি থেই ন’ পারিবং। 



এ দেঝত, আমার আঘেদে জাগানিত বুক ফুলে বাজি থেবাত্তেই আমার চাঙমা জাত্তোরে আরো শক্ত গরা পুরিবো। এক্কো জাদর নিজ’ ভাচ, নিজ’ ওক্কোর, নিজ’ রিদিসুদুম শক্ত মক্ত গরি ধরি রাঘেবার আমার বেক্কুনর গরচ আঘে। আমি নিজ উরোন পিনোন আনি চর্চা গরলেও আমার নিজ’ ভাচ্ছান এয’ দোলে দরমর গরি ন’ পারি। নিজ’ ওক্কোরুন লিঘদে আহ্ত বেঙা কঙা অহ্’য়, নিজ’ ভাচ পড়দে দাত ভাঙি যান, দিাঘলে দলামজা লাগে। সেনত্যেই আমার গাবুজ্যা গাবুরী, চিগোন চিজি দাঘি লগরে আ আমার সমাজর মুরুব্বি আ বর মানুচ্চুনরে কুজোলি গরিম-  “চাঙমা ভাচআন দোলে শিগা পুরিবো আ সাতকাম মনে গরা পরিবো। সমাজর গম চিদে গরিয়্যা মুরুব্বিগুন জাদর সুদো আন শক্ত গরিলে আমার মুজুঙেদি যে পিড়িবো এবাক, চিজিদাগি আমা জাদ’ আ ভাচআনোরে দোলে চিনি পারিবাক আ কোচপেবাক। আমিও যিগুন শিগিলোয়েই আমা ভাচ আন, আমি বানা আমা ভিদিরে  ন’ রাঘেই ছিদি দিবং যে যিদু পারি, যে যিধু থেই, যে যিয়োত জু পেই সিয়ত। 

"চাঙমা সাহিত্য বাহ্" আমারে দরমর চাঙমা বানেয়্যা ,যিদ্দুর পারি আমি তার স্ববন আন পুরে দিবার পদত আহ্’দি। একদিন মোন’ ঘরে ঘরে আমা ভাচ আ অ্হ্’রক্কুন জ্বলি জ্বলি থেবাক। "মোন-মুরহ্’ত পহ্’র ছিদিবো একদিন" এ স্ববন ওক আমার বেক্কুনর এক্কান স্ববন।”

আমাত্তুন খামাক্কাই খামাক্কাই চাঙমা ভাচ, অঝাপাত শিগানা দরগার- মিঠুন চাঙমা, থিয়েটার এণ্ড পারফরম্যান্স, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়

মিঠুন চাঙামা
ম’ নামান মিঠুন চাকমা। মুই জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ত থিয়েটার এণ্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ অত পরংঅর। ২০২০সালত অক্টোবর মাঝত " চাঙমা সাহিত্য বাহ্, পানছড়ি ধেলা তপ্পেত্তুন শান্তিপুর সরকারি প্রাইমারি ইক্কুলত চাঙমা লেঘা সার্টিফিকেট কোর্স জুগল গরলে মরয়্য সে কোর্সত চাঙমা লেঘা শিগিবার জু অহ্’য়। ইক্যে মুই চাঙমা লেঘা লেঘি পরিহ্ পারং। সিত্যাই মুই চাঙমা সাহিত্য বাহ্’রে ঝু ঝু আ পাত্তুরুতুরু ন’ জানেই থেই ন’ পারঙর আ সমারে চাঙমা সাহিত্য বাহ্’বোর ভালেদি তবনা গরঙর। এ মাধানত ইধোত তুলঙর- যারা নিআলচি গরি আমারে চাঙামা লেঘা শেঘেলাক তারাদাঘিরে। চাঙমা লেঘা বা চাঙমা অহ্’রক্কুন শিঘিনে মত্তুন খুপ গম লাক্যা। চাঙমা অহ্’রক ন’ পারিবার আগেদি বাঙালুনে বেচ কধাক তমার ওক্কোর, ভাচ নেই তুমি উপজাতি । এ ধক্যে কধানি শুনা পত্ত। ইক্যে মুই বুক পুলে কোই পারিম আমার  ভাচ আঘে, ওক্কোর আঘন, সংস্কৃতি তারাত্তুন ভিন্ন আ বুঝদে উচ্চো অভ’। আর আমি যনি আমা ভাচ এ লিঘি পড়ি ন’ জানি আমা জাত্তু লুগি যেব’ দিন দিন কন’ চিন ন’ থেব’। 

চাঙমা সাহিত্য বাহ্ জধানানু সুনানু ইনজেব চাঙমা সমারে

সেনে বানা মুই নয় আমার জাত ভেই-বোনুনরে কোম- আমাত্তুন খামাক্কাই খামাক্কাই চাঙমা ভাচ, অঝাপাত শিগানা দরগার। ইরুক সময় অঝাপত শিঘানা গরচ অই পচ্যে।  সিগোন দাঙর বেগে আগে পিজে বেগত্তুন চাঙমা লেঘা পড়ি জানা পরিবো। আগদিন নেই উজেই জের, উজেই যেবং সঙসমারে।

সোমবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২১

দরত্তুন, লজাত্তুন মরয়্য চাঙমা লেঘা শিঘানা - সুনানু সুস্মিতা চাঙমা

 

সুনানু সুস্মিতা চাঙমা
সুনানু সুস্মিতা চাঙমা চট্টগ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয়ত পালি ৩য় বর্ষ পর্বোয়া। দংগা পিড়ে করোনাত্যাই ঘরত এলে চাঙমা লেঘা শিঘিবার জু অহ্’য়। তে গেল্লে অক্টোবর মাঝত চাঙমা সাহিত্য বাহ্, বাঘাইছড়ি উপজেলা ধেলা উদ্যোগে উগলছড়ি নবজ্যোতি মনোরম বৌদ্ধ বিহারত (শিজক বটতলা) চাঙমা লেঘা সার্টিফিকেট কোর্স ফাংগরা অহ্’লে সুনানু সুস্মিতা চাঙমারয়্য চাঙমা লেঘা শিঘিবার জু পিয়্যা। এধক ভিলন বানা ছটফদে ছটফদে এল’ চাঙমা লেঘা শিঘিবার। মাত্তর জু ন’ পানার শিঘানা ন’ অহ্’য়। 

তে কল’- মুই, খবর পাং আমি বার বাঙানে মা-ভাচ্ছোই লেঘা শিঘিবার জু পানার পরয়্য আ নেতাদাঘি অলিপ গরানার এচ্যে চাঙমা জাত্তো লেহ্ম পরি আঘি। আজি যার, মা-ভাচ, আল্যাক আ রিদিসুধোমানি। যেন কোই পারি ১৮৬০ সালত ব্রিটিশে পার্বত্য চট্টগ্রাম দঙলে নেযা সমারে চাঙমা, মারমা ভাচ্ছো লেঘা শিঘিবার জু দিয়্যা। এর পর ১৯৩৭-৩৮ সালতয়্য জু গরি দিয়্যা। সুনানু কামিনী মোহন দেবানদাঘি সিয়ান গজি ন’ লনার মা-ভাচ্ছোই লেঘা শিঘানা আর ন’ অহ্’য়। তা পর ১৯৩৯ সালত ইন্দুস্তান - পাকিস্তান ভাক অলে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাকিস্তানর ভাগে পরিলে পাকিস্তান সরকারস্যা আমারে চাঙমা লেঘা শিঘিবার জু গরি দিল’ ১৯৫৯ সালত। সক্যে দেবানদাঘি ন’ চানার আমি বারবাঙানে মা-ভাচ্চোই লেঘা শিঘিনা লেহ্ম পরির। 


১৯৯৭ সালত পার্বত্য চুক্তি অহ্’য়। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিত ৩৩ নং ধারাত (B) অনুচ্ছেদে পার্বত্য চাগালত মা-ভাচ্ছোই লেঘা শিঘিবার পোতপোত্য গরি লেঘা থানা পরয়্য ২০১৭ সালত এনেই প্রাক প্রাথমিকত বই পেনেই কন’ লাভ নেই।  মাষ্টরুনর পড়েবার যেমনি গরচ মনে ন’ গরন তেমনি সরকার কন’ শিক্ষা কারিকলাম নেই মা-ভাঝর পোইদ্যানে।

আ বেগত্তুন বেচ দাঙর কধা অলদে- মর রুমমেট শাহীনা এক দিনে মত্তুন পুজোর গরের এক্কো চাঙমা জাত ইজেবে আমার ওক্কোর আঘননি নেই। মর মনত সক্যে দর সম্যে কন’ লেঘা বাজে দ্যে নিনা। মাত্তর, মুই আঘন কনা সমারে সমারে আর কিচ্ছু পুজোর ন’ গরিল’। মুই বাজি গেলুং দর আ লাজত্তুন। ত্যুঅ দর থায় বাঙাল সমাজ্যালোই কধা কলে। কন’ আ অঝাপাদর পোইদ্যানে কিঝু পুজোন গরন নিনা। এ দরত্তুন, এ লজাত্তুন মরয়্যা চাঙমা লেঘা শিঘানা। 

মুই নিজরে চাঙমা ভাবঙর, মুই চাঙমা লেঘা পারং- অন্বেশন চাঙমা (দর্শন ১ম বর্ষ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ)।

মুই পত্তমে চাঙমা লেঘা শিঘিবার জু পানার পরয়্য চাঙমা লেঘা শিঘিবার এধক গরচ মনে ন’ গরং। ম’ বর ভেইদাঘি এধক কুজোলী গরিদাক ত্যুঅ ম’ মানাত
ধারচ ন’ জন্মেল’ । মনে মনে ভাবং চাঙমা লেঘা শিঘিনেই কী গরিম। সক্যে চাঙমা লেঘা ন’ শিঘি ইংরেজি শিঘিদুং।

পরেদি যক্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ত ভর্তি ওলুং সিধু ম’ সমাজ্যাদাঘি (বাঙাল) পুজোর গরন, চাঙমা লেঘা পারং নিনা? কিথ্যা তারা খবর পান চাঙমাদাঘির বেক আঘে, ভাচ, ওক্কোর, আল্যাক (সাহিত্য), রিদিসুধোম আ চাঙমাদাঘি বাংলাদেঝত জনসংখ্যাদি দ্বি’ নম্বরত। শিক্ষে-দিক্ষেদিয়্য বেগত্তুন বেচ আক্কোয়ে আঘন। সিত্যাই তারা পুজোর লদন। 

মাত্তর! মুই ন’ জানঙ আমা অঝাপাত। বানা অন্য জনত্তুন শুনিনেই আদালং-পাদালং গরি কোই দিলুং চুচ্যাঙ্যা- কা, গুজঙ্যা- খা, চান্দ্যা- গা এ তিন্নো ওক্কোর। সিয়োত নিজরে নিজে কত্তমান লাজেলুং মুই বাদে কন’ জনে বুঝি ন’ পারিবাক। লাজে ধচ্যে। সে লাজত্তুন ইমে গরিলুং চাঙমা লেঘা খামাক্কাই খামাক্কাই শিঘিম।  

সুনানু ইনজেব চাঙমা আ সুনানু অন্বেশন চাঙমা

মুই ইয়ান কোইম- “আজলে মুই দাঙর কবাল্যা। করোনাত্যাই রাজশাহীত্তুন ঘরত ফিরি এই পেলং, সরকারে ইক্কুল কলেচ বন্ধ গরানা সমারে সমারে। ঘরত এনেই পুজ্য জ্ঞান কীর্তি ভান্তেদাঘি আমা আদামত চাঙমা সাহিত্য বাহ্ তপ্পেত্তুন চাঙমা লেঘা কোর্স জুগল গচ্ছে। আর দেরি ন’ গরি চাঙমা লেঘা শিঘিলুং। কারণ, মুই খবর পাঙর এক্কো জাত অদ’ যেনেই আমাত্তুন বেক্কানি লাগিবো। ভাচ, ওক্কোর, আল্যাক (সাহিত্য), রিদিসুধোম বাজি থেলে এক্কো জাত বাজি থায়। এধক্যে চিদেত্তুন চাঙমা লেঘা শিঘি নিজরে নিজে চাঙমা ভাবঙর, এর আগেদি এলুং মুই কজ্জর।  

রবিবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২১

চাঙমা সাহিত্য বাহ্ তপ্পেত্তুন ১৬৪ জনরে সার্টিফিকেট দিয়্যা অহ্’য়


২০৫০ ভিশন ভালেদি ওক-

"ত্রিশতিন জাদির ভাচ পারানা এক্কান দাঙর গুন মাত্তর, তার আগে নিজ 'ভাচ, নিজ লেঘা পারানা সাতকাম" 
এ মুলুক কধায়ান মুজুঙে রাঘেই চাঙমা সাহিত্য বাহ্ বাঘেইছড়ি উপজেলা আ কাচালং সরকারি কলেজ ধেলার তপ্পেত্তুন ৩২নং বাঘেইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদর উদোনত চাঙমা পর্বোয়াউনোরে সার্টিফিকেট ভাক গরি দেনা পৈদ্যানে দোল এক্কো দাঙর তেম্মাংখলা অই যেল।
এ তেম্মাং খলাবোত নকবাচ্য গরবা ইজেবে আহ্’জিল অইয়ে ৩২ নং বাঘেইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদর চেয়ারম্যান সুনানু সুনীল বিহারী চাঙমাদাঘি, মুলুক গর্বা ইজেবে আহ্জিল এলাক কাচালং সরকারি কলেজর মুল খুদো (অধ্যক্ষ) সুনানু দেব প্রসাদ দেবানদাঘি, কাচালং সরকারি কলেজর এজাল সাত্থু, কবি লেঘিয়্যা সুনানু লালন কান্তি চাঙমাদাঘি, সুনানু শান্তিময় চাঙমাদাঘি (বিদি যিয়্যা সাত্থু), সুনানু প্রীতিময় চাঙমা দাঘি(কার্বারী), সুনানু বীর কুমার চাঙমা (এজাল সাত্থু, উগলছড়ি হাই ইক্কুল), চাঙমা সাহিত্য বাহ্ গরা কমিতির জধানানু, সুনানু ইনজেব চাঙমাদাঘি, চাঙমা সাহিত্য বাহ্ বাঘাইছড়ি উপজেলা ধেলার জধানানু, সুনানু স্বর্ণা চাঙমা, চাঙমা সাহিত্য বাহ্ গরা কমিতির ভান্ডালি কাবিদ্যাং, সুনানু রিমি চাঙমাদাঘি, চাঙমা সাহিত্য বাহ্ গরা কমিতির সাবাঙাগী সুনানু চিত্তি চাঙমা, চাঙমা সাহিত্য বাহ্ বাঘাইছড়ি উপজেলা ধেলা, এজাল জধানানু পূজ্য শ্রীমৎ জ্ঞান কীর্তি ভান্তেদাঘী আ চাঙমা সাহিত্য বাহ্ দিঘীনালা উপজেলা ধেলার বা কাবিদ্যাং সুনানু সূচনা চাঙমাদাঘি।
কধগীদাঘি কলাক, “এধক্যে দাঙর দংগা পিরেহ্ সেরে সেরে চাঙমা সাহিত্য বাহ্ যে কামানি গরি যিয়্যা সিয়ানি জুম্ম জাত্তো খামাক্কাই ইধোত রাঘেব। এ কামানি গরি যানার তারাদাঘি দোল দোল সল্লা দিলাক।
ফাংশান আরকানিত “চেদনর আগাজত এক্কান নাঙ..........” গীত্তো খলাবো ফাংগরা অহ্’য়।
এ খলাবোত খলা পজ্জনীগিরি গরিলাক- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়র পর্বোয়া সুনানু সুস্মিতা চাঙমাদাঘি আ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়র পর্বোয়া সুনানু অন্বেশন চাঙমাদাঘি।
এ ফাংশানানত ১৬৪ জনরে সার্টিফিকেট দিয়্যা অহ্’য়। সমারে যারা পজিশন ১-৩ তারাদাঘিরে বই বুকশিচ দিয়্যা অয়। আ খলাবো শেজে চিত জুরনি তামাজা গরা অহ্’য়।

মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২০

পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে এ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনালের আহ্বান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: এ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির মানবাধিকারের বিধানাবলী পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে।
ডিসেম্বর ২০২০ পার্বত্য চুক্তি সম্পাদনের ২৩ বছর হওয়ায়, আজ ১১ ডিসেম্বর ২০২০ এ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল প্রকাশিত এক গণবিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়।
এ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনালের গণবিবৃতির পুরো অংশটি নিম্নে দেয়া হল:
বাংলাদেশ: পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির অধিকারের বিধানাবলী পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়িত করুন
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পর থেকে ডিসেম্বর ২০২০-এ ২৩ বছর হলো। এ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল ইহার মানবাধিকারের বিধানাবলী পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের নিকট আহ্বান জানাই।
প্রায় দুই দশকের সশস্ত্র সংঘাত, যাতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয় এবং আরো অনেকেই বাস্তুচ্যুত হয়, এর প্রেক্ষাপটের বিপরীতে আলাপ-আলোচনা করে, ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ সরকার ও পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস)-র শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলটি ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। ইহা তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি নিয়ে গঠিত, যার মোট আয়তন ১৩,২৯৪ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা আনুমানিক ১.৬ মিলিয়ন (১৬ লক্ষ)। জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর, অপরদিকে বাকী অংশ হচ্ছে প্রধানত বাঙালি জাতিগাষ্ঠীর লোক। অঞ্চলটি ভারতে ব্রিটিশ শাসনের সময় থেকে বিশেষ প্রশাসনিক এলাকার মর্যাদা ভোগ করেছিল। ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি, ১৯১৯ সালের ভারত শাসন আইন, ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন, এবং ১৯৫৬ ও ১৯৬২ সালের পাকিস্তানের সংবিধান এই অঞ্চলকে একটি বিশেষভাবে শাসিত অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছিল। ১৯৬১ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার ১৯০০ সালের শাসনবিধির ৩৪নং ধারা সংশোধন করে প্রথমবারের মত আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্যগত ভূমির অধিকার কাটছাঁট করে। ১৯৬২ সালে পাকিস্তান সরকার এই অঞ্চলের মর্যাদাকে ‘ট্রাইবাল এলাকায়’ পরিবর্তিত করে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর, নতুন সংবিধান ভারতে ব্রিটিশ শাসনের সময় থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল ঐতিহাসিকভাবে যে বিশেষ মর্যাদা ভোগ করত তা সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়। এরপর ১৯৭৫ পরবর্তী সরকার বাঙালি জনগণকে বসতি প্রদান করে অঞ্চলটির জনমিতিগত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করার চেষ্টা করে। ১৯৭৯ ও ১৯৮৫ সালের মধ্যে প্রায় চার লক্ষ বাঙালি জনগণকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসতি প্রদান করা হয়, যা জাতিগত সংঘাতকে উস্কে দেয়, যাতে হাজার হাজার আদিবাসী নিহত ও বাস্তুচ্যুত হয়, যাদের মধ্যে অনেকেই প্রতিবেশী ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করে।
১৯৯৭ সালে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকে, এ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল ইহার বাস্তবায়নের অগ্রগতি পরিবীক্ষণ করে আসছে। ২০০০ সালে চুক্তি বাস্তবায়নের ধীর গতির বিষয়ে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলাম। ২০১৩ সালে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন সংক্রান্ত অবাস্তবায়িত সংস্কারসমূহ এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত অবাস্তবায়িত অঙ্গীকারসমূহ ব্যাপারে আমরা বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরি।
পার্বত্য চুক্তির বাস্তবায়নের অবস্থা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে মানবাধিকার পরিস্থিতি হতাশাজনকভাবে ২০১৩ সালের মতই রয়ে গেছে। জনসংহতি সমিতির মতে, শান্তি চুক্তিতে বর্ণিত বিধানাবলীর মাত্র ১৫ শতাংশই সরকার কর্তৃক পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে, অপরদিকে ৫০ শতাংশের অধিক বিধানাবলীই অবাস্তবায়িত রয়েছে, এবং এক চতুর্থাংশ হয় আংশিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে অথবা কিছু অগ্রগতি হয়েছে। এই পরিস্থিতির উপর সরকারের রয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন অভিমত, সরকার দাবি করছে যে, কোন মূলধারাই অবাস্তবায়িত রাখা হয়নি, তারা ৫৬ শতাংশ ধারাই পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করেছে, এবং অবশিষ্ট ৪৪ শতাংশ ধারা হয় আংশিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে, অথবা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল এই বর্ষপূর্তি উপলক্ষে প্রাসঙ্গিক ধারাগুলোর পর্যালোচনা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে কাজ করছেন এমন চার বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার কর্মীর সাথে সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে মূলধারাগুলোর অবস্থা তুলে ধরছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি ১৯৯৭-এ সাধারণভাবে তিনটি দিক রয়েছে: (ক) আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণকরণ; (খ) পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকার সংস্থাসমূহ ক্ষমতায়ণ; এবং (খ) পুনর্বাসন। নিম্নের অনুচ্ছেদসমূহে চুক্তির মানবাধিকারের কিছু দিক পর্যালোচনা, এবং সেগুলোর বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিরূপণ করা হল।
(ক) উপজাতীয় অধ্যুষিত অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণকরণ
শান্তি চুক্তির খন্ড ১ চুক্তির ভিত্তিকে গড়ে তুলেছে। এতে রয়েছে চারটি ধারা। ১নং ধারায় উপজাতীয় অধ্যুষিত অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব প্রদান করা হয়। ২নং ধারায় নতুন আইন, বিধি ও প্রবিধান প্রণয়ন এবং বিদ্যমান আইনসমূহ সংশোধন করে এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য পক্ষগুলোর দায়িত্বসমূহের রূপরেখা প্রদান করা হয়। ৩নং ধারায় পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ কমিটি গঠনের মাধ্যমে একটি বাস্তবায়ন সংক্রান্তকর্মব্যবস্থা প্রদান করা হয়, অপরদিকে ৪র্থ ধারায় বাস্তবায়নের জন্য সময়সীমা প্রদান করা হয়।
খন্ড ১-এ মানবাধিকারের প্রধান বিষয় হচ্ছে আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অধিকার, যাতে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে, অঞ্চলটির আদিবাসী বৈশিষ্ট্যের সংরক্ষণ। অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি, যাতে বাংলাদেশ একটি পক্ষ – উভয়ের ধারা ১-এ শর্ত উল্লেখ রয়েছে যে, সকল জাতিগোষ্ঠীর ‘তাদের রাজনৈতিক মর্যাদা স্বাধীনভাবে নির্ধারণ করা এবং স্বাধীনভাবে তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশ সাধন করার’ অধিকার রয়েছে।
সরকার যখন আইন প্রণয়ন ও সংশোধন করে এবং পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ কমিটি গঠন করে, তখন অঞ্চলটির বিশেষ মর্যাদা স্বীকার করে একটি সাংবিধানিক কাঠামো, সংশোধিত আইনসমূহের জন্য কার্যবিধিমালা প্রণয়ন, এবং পুলিশ আইন ১৮৬১ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিধিমালা ১৯০০ এর সংশোধন এর অনুপস্থিতির কারণে বাস্তব ক্ষেত্রে এই পরিবর্তনের প্রভাব পড়ে সামান্য।
শান্তি চুক্তি আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামের বৈশিষ্ট্যাবলী সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকৃতি প্রদান করে। ১৯৭০ দশকের শেষ থেকে একের পর এক বাংলাদেশ সরকারসমূহ কর্তৃক ধারাবাহিক পুনবসতিপ্রদানের কার্যক্রম অঞ্চলটির জনমিতিগত বৈশিষ্ট্য মৌলিকভাবে বদলে দেয় এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে পরিণত করে সংখ্যালঘুতে। চুক্তিটি প্রয়োজনীয় আইনগত পরিবর্তন আনয়নের জন্য স্বাক্ষরকারী পক্ষগুলোর দৃঢ়সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করে, যেমন ১৯৮৯ সালের তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ও ১৯৯৮ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন সংশোধন; ভূমি বিরোধের জন্য এবং পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ কমিটি গঠনের জন্য নতুন আইনী কাঠামো সৃষ্টি।
শান্তি চুক্তি অনুযায়ী অন্তত পাঁচটি সংশ্লিষ্ট আইনগত ও সাংবিধানিক সংশোধনী বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ২০১১ সালে গৃহীত সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে (ধার ২৩ক), সরকার আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও বিকাশের জন্য বিধানাবলী অন্তর্ভুক্ত করেছে। তবে পিসিজেএসএস ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলো পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর সুনির্দিষ্ট উল্লেখ করে ধারা ২৮(৪) এর সংশোধন দাবি করেছে। এই ধারা বৈষম্যহীনতার সাংবিধানিক মূলনীতিকে লংঘন ব্যতিরেকে ‘নাগরিকদের অনগ্রসর অংশ’কে লক্ষ্যভুক্ত করে বিশেষ আইন প্রণয়নের জন্য আইনগত জানালা খুলে দেয়। বাংলাদেশ সংবিধানের ধারা ২৮ ‘কেবল ধর্ম, জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ অথবা জন্মস্থানের ভিত্তিতে কোন নাগরিকের বিরুদ্ধে বৈষম্য না করতে’ রাষ্ট্রকে আইনগতভাবে বাধ্য করে, কিন্তু ধারা ২৮(৪) উল্লেখ করে যে, ‘এই ধারার কোনোকিছুই নারী বা শিশুর অনুকূলে অথবা নাগরিকদের যেকোনো অনগ্রসর অংশের অগ্রগতির জন্য বিশেষ বিধান প্রণয়ন থেকে রাষ্ট্রকে বিরত করবে না।’ আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী দীর্ঘ সময় একটি সুনির্দিষ্ট রেফারেন্স ‘অথবা পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণ’ যুক্ত করার জন্য দাবি করে আসছে। এ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনালের বিবেচনায় এই প্রস্তাবিত সংশোধনীটি হবে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের জন্য বিশেষ মর্যাদা বাস্তবায়নের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। শান্তি চুক্তির ধারাসমূহের বাস্তবায়ন যেমন পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ১৯০০, পুলিশ আইন ১৮৬১ এর সংশোধন, সংশোধিত পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন ১৯৯৮, এবং পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮ হল সংবিধানে এরূপ ধারার সাপেক্ষে।নয়তো, অঞ্চলটির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ যেকোনো বিশেষ মর্যাদা আইনগত চ্যালেঞ্জের কাছে অরক্ষিত।
সরকার কয়েকটি আইনগত উদ্যোগও গ্রহণ করেছে, যেমন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন ১৯৯৮, পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ (সংশোধন) আইন ১৯৯৮, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন ২০০১ (২০১৬ সালে সংশোধিত), এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিধিমালা (সংশোধন) আইন ২০০৩ প্রণয়ন। তবে এইসব আইনসমূহ প্রবিধান প্রণীত না হওয়ার কারণে কার্যকর হতে পারে না। কার্যবিধিমালা ব্যতিরেকে, ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ কমিটি অকার্যকর হয়ে পড়ে রয়েছে।
(খ) পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকার সংস্থাসমূহের ক্ষমতায়ন
তিন পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন ১৯৮৯ (১৯৮৯ সালের ১৯, ২০ ও ২১ নং আইন) এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন ১৯৯৮ এই চারটি আইন সংশোধন/প্রণয়নের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদসমূহ ক্ষমতায়িতকরণ হচ্ছে শান্তি চুক্তির সর্ববৃহৎ অংশ। ইহা স্বাক্ষরিত হওয়ার পূর্বে, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলটি ১৯৮৯ এর আইনের মাধ্যমে শাসিত হয়েছিল, এবং সমঝোতা চলাকালে আদিবাসী নেতারা এইসব আইনসমূহের পুঙ্খানুপুঙ্খ পুনর্বিবেচনার দাবি করেছিল। শান্তি চুক্তির খন্ড ৩ এর লক্ষ্য হচ্ছে তিন পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদসমূহের একটি স্বাধীন সমন্বয়কারী সংস্থা হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদকে ক্ষমতায়িত করা, অপরদিকে খন্ড ২ তিন পার্বত্য জেলায় স্বতন্ত্র স্থানীয় সরকার সংস্থার ব্যবস্থা করে।
খন্ড ২-এ ৩৫টি অনুচ্ছেদ রয়েছে যেগুলো ১৯৮৯ সালের আইনে করা পরিবর্তনসমূহের বিস্তারিত রূপরেখা প্রদান করে। সরকার যেখানে দাবি করে যে, ২৪টি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে, এবং ১১টি হয় আংশিকভাবে বাস্তবায়িত, অথবা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে, সেখানে পিসিজেএসএস’এর যুক্তি হচ্ছে যে, ৩৫টির মধ্যে মাত্র ১৬টি বাস্তবায়িত হয়েছে।
খন্ড ২ ও ৩ আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার, তাদেরকে প্রভাবিত করে এমন শাসনব্যবস্থায় ও সিদ্ধান্তে অংশগ্রহণের অধিকার, এবং নিজেদের ঐতিহ্যগত ভূমির উপর আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর অধিকারকে সম্মান, সুরক্ষা ও পরিপূর্ণ করার সরকারের অঙ্গীকারের সাথে সম্পর্কযুক্ত। অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি উভয়ের ধারা ১(১), যাতে বাংলাদেশ একটি রাষ্ট্রপক্ষ, সকল জাতিগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের শর্ত উল্লেখ করে, এবং উল্লেখ করে যে, ‘এই অধিকার বলে তারা তাদের রাজনৈতিক মর্যাদা স্বাধীনভাবে নির্ধারণ করে এবং স্বাধীনভাবে তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশ সাধন করে।’ নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তির ধারা ২৫(ক) অনুসারে, প্রত্যেক নাগরিকের ‘প্রত্যক্ষভাবে অথবা স্বাধীনভাবে বাছাইকৃত প্রতিনিধির মাধ্যমে লোক/সরকারি বিষয় পরিচালনায় অংশগ্রহণ করা’র অধিকার রয়েছে। আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে তাদের ঐতিহ্যগত ভূমির উপর আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর অধিকার স্বীকার করা হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে যে, সরকারসমূহ ‘তাদের ভূমি বা ভূখন্ড এবং অন্যান্য সম্পদকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন যেকোনো প্রকল্প অনুমোদনের পূর্বে তাদের স্বাধীন ও অবহিত সম্মতি অর্জনের উদ্দেশ্যে’ তাদের সাথে পরামর্শ করবে।
শান্তি চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এইসব অধিকারের জন্য সুত্র এবং ক্ষমতা প্রদানকারী বিধানাবলী। খন্ড ২ এর অনুচ্ছেদ ৩ ‘অউপজাতীয় স্থায়ী বাসিন্দা’কে এমন একজনকে সংজ্ঞায়িত করে, যিনি আদিবাসী সম্প্রদায়ের নয়, যিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে বৈধভাবে ভূমির মালিক, এবং সাধারণত পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে একটি সুনির্দিষ্ট ঠিকানায় বসবাস করেন। বিধানটি অ-আদিবাসী স্থায়ী আবাসস্থলের সুযোগকে সংজ্ঞায়িত করেছে এবং এই নির্ধারণের ক্ষমতা নির্বাচিত আদিবাসী নেতাদের কাছে অর্পণ করেছে। একজন অধিকারকর্মীর মতে, বিধানটি পার্বত্য চট্টগ্রামের মধ্যে স্থানীয় ব্যাপারে এবং আরও পুনবসতিদানের কার্যক্রম সীমিত করতে আদিবাসী নেতাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠাকরণ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
তবে ডেপুটি কমিশনারকে ‘স্থায়ী বাসিন্দা সনদ’ প্রদানের অনুমতি প্রদান করে ২০০০ সালের একটি সরকারি আদেশ এই বিধানকে দূর্বল করেছিল। ইহা খন্ড ২ এর অনুচ্ছেদ ৪(ঘ) অনুযায়ী – এক আদিবাসী প্রশাসক – সার্কেল চীফের উপর প্রদত্ত কর্তৃত্বকে অস্বীকার করে। তদুপরি, ডিসি কর্তৃক প্রদত্ত সনদসমূহ (খন্ড ২ এর অনুচ্ছেদ ৯ অনুযায়ী) ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অথবা আদিবাসী ও স্থায়ী বাসিন্দাদের জন্য প্রযোজ্য অন্যান্য সুফল ভোগ করার অধিকার প্রদান করবে, তদনুযায়ী স্থানীয় পরিষদসমূহের কর্তৃত্ব দূর্বল করে দেবে। এই কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘ দিন ধরে সার্কেল চীফের নিকট স্থায়ী বাসিন্দার সনদ প্রদানের ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার দাবি করে আসছে। সরকার আইনটি সংশোধনের অঙ্গীকার করেছিল, কিন্তু কোন পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
খন্ড ২ এর ৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে, সরকার প্রত্যেক পার্বত্য জেলা পরিষদে নারীদের জন্য তিনটি আসন এবং অ-আদিবাসীদের জন্য অন্তত একটি আসনসংরক্ষণ করবে। সেই অনুসারে আইনটি সংশোধন করা হলেও, সরকার শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন নির্বাচন আয়োজন করেনি, তাই কার্যক্ষেত্রে বিধানটি অপরিপূর্ণ রয়ে গেছে।
খন্ড ২ এর অনুচ্ছেদ ২৬ পার্বত্য জেলা পরিষদের পূর্ব অনুমতি ব্যতিরেকে আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্যগত ভূমির সাথে সংশ্লিষ্ট লেনদেন সীমিত করে দেয়। অনুচ্ছেদ ২৬(খ) শর্ত উল্লেখ করে যে, ‘আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, পার্বত্য জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণ ও আওতাধীন কোন প্রকারের জমি, পাহাড় ও বনাঞ্চল পরিষদের সাথে আলোচনা ও ইহার সম্মতি ব্যতিরেকে সরকার কর্তৃক অধিগ্রহণ ও হস্তান্তর করা যাইবে না।’ অধিকন্তু, খন্ড ২ এর অনুচ্ছেদ ৩৪(ক) পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহকে ‘ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনার ক্ষমতা’ প্রদান করেছে, পক্ষান্তরে অনুচ্ছেদ ২৭ পরিষদসমূহে ভূমি উন্নয়ন কর সংগ্রহের ক্ষমতা প্রদান করে। এইসব বিধানাবলী নিজেদের ঐতিহ্যগত ভূমির উপর আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর অধিকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি। শান্তি চুক্তির প্রয়োজন অনুসারে, সরকার এইসব বিধানাবলী অন্তর্ভুক্ত করে পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ১৯৮৯ সংশোধন করেছে। তবে, যেহেতু সরকার আইন কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় বিধিমালা ও প্রবিধান প্রণয়ন করেনি, তাই ডিসিগণ পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহের সাথে পরামর্শ ব্যতিরেকে ভূমি হস্তান্তর প্রক্রিয়াকরণ, অধিগ্রহণ, লীজ, ও বন্দোবস্তি এবং ভূমি উন্নয়ন কর সংগ্রহকরণ সহ ভূমি ব্যবস্থাপনার ক্ষমতা অব্যাহতভাবে প্রয়োগ করে চলেছে।
খন্ড ২ এর অনুচ্ছেদ ১৯ অনুযায়ী, সংশোধিত ১৯৮৯ সালের আইনসমূহ পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়ন প্রকল্প ‘প্রণয়ন, প্রবর্তন ও বাস্তবায়ন করতে’ পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহকে ক্ষমতায়িত করেছে। তবে, বাস্তবে যেকোনো উন্নয়ন কার্যক্রমের উপর চূড়ান্ত ক্ষমতা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হাতেই রয়ে গেছে, যা কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়। সরকার একটি সমান্তরাল উন্নয়ন এজেন্সিও সৃষ্টি করেছে – পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড – যা পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহকে পাশ কাটাতে সক্ষম। এই পদক্ষেপসমূহ অনুচ্ছেদ ১৯ এর উদ্দেশ্যকে নিষ্ফল করে দিয়েছে।
খন্ড ২ এর অনুচ্ছেদ ৩৪ ও ১৯৮৯ সালের সংশোধিত আইনসমূহ অনুযায়ী পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহকে ক্ষমতায়নের উদ্দেশ্যে, সরকারের অন্যান্যের মধ্যে ভূমি ব্যবস্থাপনা, পুলিশ, আদিবাসী আইন, যুব কল্যাণ, পরিবেশগত সংরক্ষণ ব্যবস্থা, ও স্থানীয় পর্যটনসহ ৩৩টি কর্ম/বিষয় এর উপর ক্ষমতা জেলা পরিষদসমূহে হস্তান্তর করার কথা। পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা, ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশ সংরক্ষণ এর মত গুরুত্বপূর্ণ কর্মগুলো বাদ দিয়ে এখন পর্যন্ত মাত্র ১৭টি কর্ম হস্তান্তর করা হয়েছে।
খন্ড ৩-এ ১৪টি অনুচ্ছেদ রয়েছে যেগুলো পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন ১৯৯৮ এর আওতায় প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সংশোধনের রূপরেখা প্রদান করে। ১৯৯৮ সালে সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইনের বিভিন্ন বিধানাবলী সংশোধন করেছে। অন্যান্য অনুচ্ছেদের ন্যায়, সরকার ও পিসিজেএসএস এর খন্ড ৩ এর বিধানাবলীর বাস্তবায়নের উপর ভিন্ন ব্যাখ্যা রয়েছে। সরকারের মতে, ৬টি অনুচ্ছেদ সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে, অপরদিকে বাকীগুলো হয় আংশিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে অথবা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। অপরদিকে পিসিজেএসএস’এর যুক্তি হচ্ছে যে, শুধু ৪টি অনুচ্ছেদ বাস্তবায়িত হয়েছে, ৬টি আংশিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং অবশিষ্ট ৪টি বাস্তবায়িত হয়নি। খন্ড ২ এর ন্যায় খন্ড ৩ এর প্রধান মানবাধিকারের বিষয় হচ্ছে আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার – অনেকাংশে স্বশাসন ও স্বায়ত্তশাসনের রূপে, যার জন্য শান্তি চুক্তি সাধারণ রূপরেখা প্রদান করে।
উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সমন্বয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিধিমালা ১৯০০ এর সংশোধন, এবং এই অঞ্চলের সাথে সংশ্লিষ্ট যেকোনো নতুন কোনো আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সাথে পরামর্শ করার বিধানবিষয়ে শান্তি চুক্তি এবং পরবর্তী সময়েআইনের সংশোধনীসমূহপার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদকে ক্ষমতা অর্পণ করে। খন্ড ৩ এর অনুচ্ছেদ ৯ শর্ত উল্লেখ করে যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহ কর্তৃক পরিচালিত সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড সমন্বয় সাধন করবে, এবং অন্যান্যের মধ্যে আইন ও শৃঙ্খলা। তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ‘নিয়োজিত দায়িত্ববলী’ পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদকে প্রদানের পরিবর্তে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬ সংশোধন করে, সরকার বরং নতুন আইন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আইন ২০১৪ প্রণয়ন করেছে, যা পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডকে স্থানীয় সরকার সংস্থাসমূহকে পাশ কাটিয়ে তার কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমোদন দেয়।
(গ) পুনর্বাসন
শান্তি চুক্তির খন্ড ৪ এর লক্ষ্য হচ্ছে সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত জনগণকে পুনর্বাসন করার মাধ্যমে, ভূমি নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করে, এবং সংঘাতে যারা জড়িত ছিল তাদেরকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে স্বাভাবিক পরিস্থিতি পুনস্থাপন করা। সেখানে রয়েছে ১৯টি অনুচ্ছেদ যাতে এইসব উদ্দেশ্যসমূহ অর্জনের জন্য কার্যপদ্ধতিসমূহ বিন্যস্ত রয়েছে। সরকার দাবি করে, ১২টি অনুচ্ছেদ পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে, অপরদিকে বাকী অনুচ্ছেদসমূহ হয় আংশিকভাবে বাস্তবায়িত অথবা কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। পিসিজেএসএস’এর দৃষ্টিতে ১৯টি অনুচ্ছেদের মধ্যে ৮টি অবাস্তবায়িত রয়ে গেছে, ৭টি বাস্তবায়িত এবং বাকী ৪টি আংশিকভাবে বাস্তবায়িত। খন্ড ৪ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি এবং চাকরি ও উচ্চ শিক্ষা কোটা সংরক্ষণ করে আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর জন্য ইতিবাচক বৈষম্যের বিধান।
খন্ড ৪ এর অনুচ্ছেদ ৪ অ-আদিবাসী ও অস্থানীয় জনগণের নিকট প্রদত্ত ভূমির লীজ বাতিল করার ক্ষমতাসহ, ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির ম্যান্ডেট দিয়ে একটি ভূমি কমিশন প্রতিষ্ঠার শর্ত উল্লেখ করে। চুক্তির খন্ড ৪ এর অনুচ্ছেদ ৫ অনুযায়ী, প্রথম ভূমি কমিশন গঠন করা হয় ১৯৯৯ সালে (এখন পর্যন্ত পাঁচ বার গঠন করা হয়েছে)। সরকার ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন পাস করে ২০০১ সালে, সংশোধন করে ২০১৬ সালে। তবে, কমিশন আইনের অনুচ্ছেদ ১৮ অনুযায়ী, সরকার কমিশনকে কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় কার্যবিধিমালা এখনও প্রণয়ন করেনি। কমিশন তিন পার্বত্য জেলায় ইহার দপ্তরসমূহও স্থাপন করেনি এবং এখনও কোন কর্মচারী নিয়োগ করেনি। এখন পর্যন্ত ভূমি বিরোধ বিষয়ক ২২,৮৬৬টি আবেদনপত্র যাচাই করা হয়নি এবং একটি মামলাও নিষ্পত্তি করা হয়নি। বিধিমালার অভাবে কমিশন এখনও পর্যন্ত কোন বিরোধের শুনানি শুরু করেনি।
চুক্তির খন্ড ৪ এর অনুচ্ছেদ ১০ চাকরি ও উচ্চ শিক্ষা বৃত্তিতে আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর জন্য কোটা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে। সরকার সেই অনুসারে সরকারি চাকরির ১ম থেকে ৪র্থ শ্রেণি পর্যন্ত এবং উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানমূহে বিধানের ব্যবস্থা করেছে। তবে, ২০১৮ সালে, সরকার ১ম ও ২য় শ্রেণির সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দকৃত কোটা বাতিল করে দেয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনসমূহ অসুবিধাগ্রস্ত গোষ্ঠীগুলোর অনুকূলে এরূপ ইতিবাচক পদক্ষেপের ব্যবস্থা করে। জাতিগত বৈষম্য দূরীকরণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি, যাতে বাংলাদেশ একটি রাষ্ট্রপক্ষ, ‘কার্যকর সমতা’ অগ্রগতিসাধনের জন্য এবং ‘অসুবিধাগ্রস্ত গোষ্ঠীকে মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার পূর্ণাঙ্গ ও সমান উপভোগ নিশ্চিত করার জন্য’ অস্থায়ী ‘বিশেষ পদক্ষেপ’ গ্রহণে রাষ্ট্রসমূহকে অনুমোদন দেয়।
সুপারিশমালা
শান্তি চুক্তির মানবাধিকারের বিধানাবলী বাস্তবায়নের দিকে অর্থপূর্ণ অগ্রগতির উদ্দেশ্যে, এ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ সরকারকে নিম্নোক্ত আহ্বান জানায়:
১. আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর অধিকার বাস্তবায়নের জন্য সুনির্দিষ্ট আইন পাস করতে পারার লক্ষে বাংলাদেশ সংবিধানের ধারা ২৮(৪) এর সংশোধনী প্রস্তাব করুন।
২. পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বসবাসকারী আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অধিকার সংরক্ষণ ও রক্ষা করুন।
৩. নিজেদের ঐতিহ্যগত ভূমির উপর আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষা করুন।
৪. জনজীবনে এবং তাদেরকে প্রভাবিত করে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণের অধিকারকে সম্মান, রক্ষা ও প্রতিপালন করুন।
৫. ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য দ্রুত ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করুন এবং দশকের পর দশক ধরে ন্যায়বিচারকামী আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীকে প্রতিকারের ব্যবস্থা করুন।
৬. কার্যকর সমতা অর্জন এবং তাদের মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার পূর্ণ ও সমান উপভোগ নিশ্চিত করার লক্ষে আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর জন্য চাকরি ও উচ্চতর শিক্ষা বৃত্তিতে কোটা পুনর্বহালসহ বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

 

কেন আঞ্চলিক স্বায়ত্ব শাসন?

বাংলাদেশ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের শাসনতান্ত্রিক অধিকার দাবীর- আবেদন পত্র গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবী ...