শনিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২০

শ্রীমৎ চন্দ্র কীর্তি ভান্তে দাঘিরে চাঙমা সাহিত্য বাহ্ তপ্পেত্তুন মান গজানা

চাঙমা সাহিত্য বাহ্ এক্কো সাহিত্য সাংস্কৃতি আ চাঙমা ভাচ-ওক্কোর নিনেই লাম্বা কুরিবো বঝর কাম গরি যার। ২০৫০ ভিশন ভালেদি আঝা বুগত বানি নিঝেত আভাচ নেই গরি নানান জাগাত চাঙমা লেঘা শেঘানা সমারে জাদর রিদিসুধোম পোইদ্যানে সচেদন গরের। চাঙমা সাহিত্য বাহ্ ফাউন্ডেশন জুগল গরি এযেত্তে বঝরত্তুন ধরি শিবচরণ শিক্ষা বৃত্তির কাম আরগারি গরিদ’ যার, চাঙমা সাহিত্য বাহ্ পাবলিশার্স বানেই বেগত্তুন বেচ কম দামে বই পর্বোয়াউনর আহ্’দত তুলি দি দ’ চার। সমারে চাঙমা সাহিত্য বাহ্ শিল্পী গোষ্ঠী আ পত্তিক ইউনিয়নত ধেলা জুগল গরি লাইব্রেরী থিদ গরিবার আঝা গরের আ চাঙমা সাত্যি সংস্কৃতিয়ান বিশ্বদরবার থিদ’ গরিদ চার।

এধক্যে চেদনত্তুন এচ্যে অনুত্তর পূর্ণ্যক্ষেত্র মহান পার্বত্য ভিক্ষু সংঘর মিঙিনি চাগালা জধানানু অনার পোইদ্যানে শ্রীমৎ চন্দ্রকীর্তি ভান্তেদাঘিরে মান গাজেয়্যা। এচ্যে এল’ সিদ্ধানন্দ বৌদ্ধ বিহারত দানত্তম শুভ কঠিন চীবর দান। সে ফাংশান’ সেরেদি ভান্তেদাঘিরে মান গজা অইয়ে।


চাঙমা সাহিত্য বাহ্ বিশ্চেস গরের- বেক তরেহ্ তরেহ্ নানান সমাজ ভালেদি কাম্মোউন জাদর, দেঝর কধা ভাবি কাম গত্তন। ভান্তেদাঘিয়্য নানান ধক্যে গরি কামা গরি যাদন। যেধক্যে গরি বুদ্ধ আমলত বুদ্ধ জাদর কধা ভাবি দপদভা বৈদিক আ সংস্কৃতি ভাচ্ছোই ধর্ম ফগদাঙ ন’ গরি পালি আ মগদি ভাচ্চোই তা ধর্ময়ান ফগদাঙ গচ্ছে আ দ্বি দ্বিবার তা জ্ঞাতিউনরে বাজেয়্যা। 

 

শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০

অপহরণে শিকার সুজিৎ চাকমা

 


আজ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ইং রাঙ্গামাটি জেলার লংগুদু উপজেলা বাজারের সাপ্তাহিক হাট বার।

প্রতি সপ্তাহের ন্যায় মানুষ স্হল ও জলপথে বাজারে করার জন্য আছে,ঠিক মি: সুজিৎ চাকমা(২৯) ও এসেছিল বাজারে, । পিতা:- মঙ্গল মোহন চাকমা। সাং:- ভাইবোন ছড়া, গোলাছড়ি। ৭ নং লংগুদু ইউ পির ৫নং ওয়ার্ডের স্হায়ী বাসিন্দা কে বাজার ঘাট থেকে সকাল আনুমানিক সাড়ে আট ঘটিকার সময়ে, সেনাসৃষ্ট নব্য মুখোশ বাহিনীর সর্দার কনক চাকমা কতৃক অপহরন করে নিয়ে যায়।
অপহরনের পর কোথায় এবং কি কারনে আটক রাখা হয়েছে তা বিস্তারিত জানা যায়নি।

বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০

মাত্র ২৩ দিন ব্যবধানে আবারও দলবেধে ধর্ষণের শিকার আদিবাসী নারী (৩৬)

 গত ৩১ আগস্ট ২০২০ ইং সোমবার খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়িতে চার বাঙালি সেটেলার যুবক কর্তৃক রাতভর অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী এক মারমা কিশোরী (১৪) গণধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মাত্র ২৩ দিন ব্যবধানে আবারও নিজ বাড়িতে ধর্ষণের শিকার হন খাগড়াছড়ি বলপিয়্যা আদামের এক প্রতিবন্ধি আদিবাসী নারী (৩৬)। 

আজ ২৪/০৯/২০২০ ইং রোজ বৃহষ্পতিবার খাগড়াছড়ি সদরস্হ "বলপিয়ে আদাম" গ্রামে নিজ বাড়ীতে সেতলার বাঙালী কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হওয়া ভিক্টিমের (৩৬) সাথে সরাসরি সাক্ষাতে কথা বলে জানা গেল, অদ্য রাত ২.২৬ মিনিটে ৯ জন সেতলার বাঙালী বাড়ীর মেইন গেইটের উপরের দিকে বেয়ে উঠে ঘরের দরজা ভেঙে ঘরের ভিতর প্রবেশ করে ঘটনা ঘটান এবং চলে যাবার সময় নগদ ৮,০০০ টাকা ও কয়েক ভরি সোনা গহনা লুট করে নিয়ে যান। সেতলার বাঙালীদের হাতে ছিল দা, ছুঁড়ি ও পোড়াবাড়ি।
ভিক্টিমের আরও বয়ানমতে, দুষ্কৃতিকারী সেতলারদের কারোর নাম জানা না থাকলেও কিন্তু তাদের সকলের চেহারা পরিচিত এবং তাদের প্রত্যেকের বাড়ী হলো খাগড়াছড়ি সদরস্হ গঞ্জপাড়ার বাঙাল হাটি মৌজা গ্রামে। তাদের ৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়।

এ দিকে সাধারণ জনগণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন যে, নিজ বাড়িতে  যখন নিরাপত্তা নাই , দেশের আইন বলে কিছু নাই।

সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০

“ঘিলে ফুল” ছড়া বইটি কেন পড়ব? - ইনজেব চাঙমা


“ঘিলে ফুল” সুনানু রনজিত চাঙমা (ব্যাংকার), চাঙমা সাহিত্য বাহ্ পাবলিশার্স হতে প্রথম প্রকাশিত বই (২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ইং)

Reading is to the mind what exercise is to the body ”

– Joseph Addison

এই কথাটি বলে গিয়েছেন ৩০০ বছর পূর্বে । আর বর্তমান মডার্ন সায়েন্স গবেষণার দ্বারা এই কথাটির সত্যতা প্রমাণ করেছে । ব্যায়াম যেমন আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখে তেমনি বই পড়ার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের মনকে সুস্থ ও আনন্দিত রাখতে পারি । একটি ভালো বই মানুষের মনশ্চক্ষু যেমন খুলে দেয় তেমনি জ্ঞান ও বুদ্ধিকে প্রসারিত ও বিকশিত করে মনের ভিতরে আলো জ্বালাতে সাহায্য করে ।

বই-ই হচ্ছে মানুষের শ্রেষ্ঠ সম্পদ । যার সাথে পার্থিব কোনো সম্পদের তুলনা হতে পারে না । একদিন হয়তো পার্থিব সব সম্পদ বিনষ্ট হয়ে যাবে , কিন্তু একটি ভালো বই থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান কখনও নিঃশেষ হবে না , তা চিরকাল হৃদয়ে জ্ঞানের প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখবে । 

যাক, এখন আছি ঘিলেফুল ছড়া বইটি কেন পড়ব। আপনারা শুনে থাকবেন “ঘিলেফুল” দেবংশী মানে সাধারণ চোখে দেখা যায় না। জনশ্রুতি আছে ঘিলেফুল দেখলে নাকি সেই ব্যক্তি অবশ্যই সুনাম অর্জিত হয়। 

এমনই চিন্তা চেতনা নিয়ে লেখক ঘিলেফুল নামক ছড়া বইটি লিখেছেন। বইটিতে চাঙমা জাতির সাহিত্য সংস্কৃতি, ভাষা এবং একটি শিশু মেধা বিকাশের বড়ই ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস রাখি। 

   
ঘিলে ফুল ঘিলে ফুল



         মরে দেনা তুই দেঘা,
কিত্তে তুই লুগি থাচ?
         মনর ভুলান ভাঙি দেনা।

তরে দেলে রাজা অহ্ন
         নয় দ’ ভিলে যান মরি,
সেনত্তেই তুই লুগি থাচ
          অইনে ভিলে দেবংশি ?

তুই কি নয় ফুল সালে?
         সেনত্তেই তুই থাচ লুগি?
কধক দিন আর বেলাপ দিবে
         দেনা মরে ভুল ভাঙি।

বই পড়া থেকে আনন্দ, বুদ্ধি ও সক্ষমতা অর্জিত হয়। বই পড়তে হয় একাকী এবং তাতে অবসর ভরে ওঠে নির্মল আনন্দে, বুদ্ধি আসে বইয়ের কথামালা থেকে, আর সক্ষমতা আসে গ্রন্থগত বিদ্যার সঙ্গে বিষয়বুদ্ধির সংশ্লেষে।

১) জ্ঞান বৃদ্ধি করে

২) মানসিক উদ্দীপনা তৈরি করে

৩) মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে

৪) অন্যের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ

৫) কল্পনা শক্তি বৃদ্ধি করে  

৬) স্মরণ শক্তির বৃদ্ধি ঘটে

৭) শব্দভাণ্ডার বৃদ্ধি

৮) লেখনী শক্তি বৃদ্ধি

৯) Critical thinking বৃদ্ধি করে

১০) একাগ্রতা বৃদ্ধি করে ও মানসিক প্রশান্তি দান করে

১১) সহানুভূতি বোধ

১২) আত্মসম্মান বোধ তৈরি করে

১৩) সংলাপ দক্ষতা
১৪) ভালো ঘুমাতে সাহায্য করে

তাহলে এসো বন্ধুরা , আমরা এবার কিছু বই সংগ্রহ করে জীবনের সঙ্গে জুড়ে নিয়ে একটা বড়সড় বদল আনি ।

* পানছড়িত পা যার
উদ’ ল’- 01537430172- সুনানু পিংকি চাঙমা, 01517113664- বিভাস চাঙমা আ চাঙমা সাহিত্য বাহ্ সাবাঙ্গীউনত্তুন।
* বাঘাইছড়িত পেব: সুনানু স্বর্ণ চাঙমাদাঘিদু/ চাঙমা সাহিত্য বাহ্ সাবাঙ্গিউনর আহ্’দত। 01554792700
* মহালছড়িত পেব: সুনানু টুটুল চাঙমাদাঘিদু/চাঙমা সাহিত্য বাহ্ সাবাঙ্গীউনর আহ্’দত। - 01517185352
* সাজেক: সুনানু প্রকৃতি চাঙমা আ চাঙমা সাহিত্য বাহ্ সাজেক ইউপি ধেলা সাবাঙ্গীদাঘিদু।- 01869963852
লংগদু: শ্লোক চাঙমা আ চাঙমা সাহিত্য বাহ্ সাবাঙ্গীদাঘিদু।- 01551987188
এজাল দর/দাম: বানা ১০০ তেঙা।
ঘিলেফুল চেবার অলে যাদি যাদি লবার কুজোলী থেল।

 

সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০

এবার বাসন্তী রেমার কলাবাগান উজাড় মধুপুরে জমি উদ্ধারের নামে গারোদের সর্বস্বান্ত করা হচ্ছে প্রকাশ: মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

 

টাঙ্গাইলের মধুপুরে কয়েক দিন ধরেই জমি উদ্ধারের নামে স্থানীয় গারোদের মাঠের ফসল ট্রাক্টর দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার অভিযান চালাচ্ছে বন বিভাগ। উপজেলার আরণখোলা ইউনিয়নের আমতলী গ্রামে এরই মধ্যে ১০ গারো পরিবারের পাঁচ একর জমির আনারস, পেঁপে, আদা, হলুদ, কলা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার শোলাকুড়ি ইউনিয়নের পেগামারীতে দরিদ্র বাসন্তী রেমার জীবিকার একমাত্র অবলম্বন কলাবাগানটিও কেটে উজাড় করে দিয়েছে বন বিভাগ। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ গারো সম্প্রদায়ের লোকজন বন বিভাগের রেঞ্জ অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।

স্থানীয় গারোদের অভিযোগ- বন বিভাগের জমি দাবি করে কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই গত ২৪ আগস্ট পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে ট্রাক্টর দিয়ে তাদের জমির ফসল মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে। ওই সময় তাদের পাঁচ একর জমির ফসল এভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। করোনা মহামারির এই সময়ে বন বিভাগের এমন 'অমানবিক আচরণে' তারা এখন পথে বসার উপক্রম। গারোরা জানান, যুগ যুগ ধরে দখলি সত্ত্বেও এই জমিতে চাষ করে আসছেন তারা। কেউ উত্তরাধিকার, আবার কেউ 'বাংলা দলিল' (রেজিস্ট্রিবিহীন) মূলে এই জমির মালিক।

অবশ্য বন বিভাগের বক্তব্য, সিএস ১০৪ দাগের বনভূমির জবরদখল হওয়া জায়গা তারা উদ্ধার করছে। এই ধারাবাহিকতায় গতকাল সকালে শোলাকুড়ি ইউনিয়নের পেগামারীতে বাসন্তী রেমার কলাবাগানটি কেটে ধ্বংস করে দেওয়া হয়। গেতিস জেত্রার স্ত্রী বাসন্তী রেমা জানান, তার পূর্বপুরুষ এক শতাব্দী ধরে এ জমি চাষ করে আসছে। উত্তরাধিকার সূত্রে ভোগদখলকারী হিসেবে দেড় বিঘা জমিতে ঋণ করে তিনি পাঁচশ' সবরি কলার চারা রোপণ করেছেন। সদ্য সমাপ্ত বনরক্ষা সংশ্নিষ্ট প্রকল্পের কর্মী বাহিনীর সদস্য (সিএফডব্লিউ) হিসেবে তিনি বন বিভাগের কর্মকর্তাদের বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। কিন্তু বন বিভাগ দখলমুক্ত করার নামে হঠাৎ তার বাগানের কলাগাছ কেটে সাবাড় করে ফেলেছে। আর্থিক সংকটের এ সময়ে এমন আচমকা ঘটনায় তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

স্থানীয় মান্দি (গারো) নেতা উইলিয়াম দাজেল জানান, বিনা নোটিশে বন বিভাগের এমন ধ্বংসাত্মক পদক্ষেপ দুঃখজনক। বন বিভাগের সঙ্গে কাজ করা লোকজন যদি এমন অবস্থার শিকার হন, তবে বন রক্ষায় বন বিভাগের পাশে কেউ থাকতে চাইবে না।

এদিকে, কলাবাগান কাটার খবরে স্থানীয় গারোরা বন বিভাগের কর্মীদের ধাওয়া দেন। ধাওয়া খেয়ে তারা দোখলা রেঞ্জ কার্যালয়ের কাছে ডাকবাংলোতে আশ্রয় নেন। সেখানে রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুল আহাদসহ একাধিক কর্মকর্তা অবস্থান করছিলেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ গারোরা সেখানে গিয়ে ফসল কাটার প্রতিবাদে কার্যালয় অবরোধসহ বিক্ষোভ করেন। তারা নানা স্লোগান দিয়ে রেঞ্জ কর্মকর্তার পদত্যাগ দাবি করেন।

রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুল আহাদ বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা তাদের এক শ্রমিককে মারধর করেছে। তার বাসাসহ গার্ড রফিকের বাসায় ভাঙচুর চালিয়েছে। রেঞ্জ কার্যালয়ের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। পরে পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করে। সহকারী বন সংরক্ষক জামাল উদ্দিন তালুকদারও ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। পরে গারো নেতাদের মধ্যস্থতায় বুধবার (আগামীকাল) বিষয়টি নিয়ে মীমাংসা বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়। এমন প্রতিশ্রুতি পেয়ে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেন।

সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. জামাল উদ্দিন তালুকদার বলেন, 'বন বিভাগের নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জবরদখল হওয়া বনভূমি দখলমুক্ত করার কাজ চলছে। দখলমুক্ত করতে গিয়ে আজ এমন ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। ডিএফওর উপস্থিতিতে গারোদের পরিস্থিতির কথা জানানোর দাবিতে বুধবারের বিষয়টি উঠে এসেছে। তবে পরিস্থিতি এখন অনেকটা স্বাভাবিক। মীমাংসা অনেকটাই হয়ে গেছে।'

স্থানীয় কৃষক সুরুজ আলী বলেন, 'এই জমির পাশে বন বিভাগের ২০০৭-০৮ সালের দিকে আগর চাষের প্রকল্প ছিল। ওই প্রকল্পের বাইরে থাকা আমাদের এ জমিতে তখনও ফসল ছিল। তখন আগর চাষ ব্যর্থ হয়। আগের ব্যর্থ প্রকল্পের জমির সঙ্গে আমাদের জমি দেখিয়ে বন বিভাগ এখন নতুন করে কাজুবাদাম চাষের প্রকল্প নিয়েছে। এ কারণে আমাদের ক্ষতি করছে তারা।'

মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ও বোডোল্যান্ড চুক্তি: একটি তুলনামূলক পর্যালোচনা - শক্তিপদ ত্রিপুরা

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যেকার ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়। অপরদিকে ২০০৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারী ভারত সরকার ও বোডোল্যান্ড লিবারেশন টাইগার্স এর মধ্যে ‘বোডোল্যান্ড চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ও বোডোল্যান্ড লিবারেশন টাইগার্স উভয়ই সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত ছিল এবং সশস্ত্র সংগ্রামরত অবস্থায় সরকারের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। বোডোল্যান্ড লিবারেশন টাইগার্স (বিএলটি)- এর অন্যতম একটি দাবী ছিল- বোডো অধ্যুষিত অঞ্চল ৪টি জেলা- কোকরাজার, বাকসা, উদলগুরি ও চিরাঙকে ‘বোডোল্যান্ড’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। বিএলটির দাবী অনুসারে ভারত সরকার আসামের ৪টি জেলাকে ‘বোডোল্যান্ড’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। অপরদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জনসংহতি সমিতি) তিন পার্বত্য জেলা নিয়ে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রামকে ‘জুম্মল্যান্ড’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের দাবী জানিয়েছিল। কিš‘ বাংলাদেশ সরকার জনসংহতি সমিতির এই দাবীকে প্রত্যাখান করে। বিএলটির দাবী অনুসারে বিটিসির নিকট আইন প্রণয়নের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে; কিন্তু জনসংহতি সমিতি আইন পরিষদ সম্বলিত আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবী জানালেও বাংলাদেশ সরকার জনসংহতি সমিতির এই দাবী মেনে নেয়নি। বাংলাদেশ সরকার চুক্তিতে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা আঞ্চলিক পরিষদের নিকট রেখে দেয়নি। বোডোল্যান্ড চুক্তি ভারতের সংবিধানের স্বীকৃতি লাভ করেছে কিন্তু বাংলাদেশ সরকার আজ অবধি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ও চুক্তির আলোকে স্থাপিত পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের আইনকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করেনি। ১৯৯৭ সালে যখন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সম্পাদিত হয়, তখন এই চুক্তিকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানের জন্য জাতীয় সংসদে শেখ হাসিনা সরকারের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য ছিল না। তখন শেখ হাসিনা সরকার অঙ্গীকার করেছিলেন- ভবিষ্যতে জাতীয় সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য নিয়ে সরকার গঠন করতে পারলে পার্বত্য চুক্তিকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হবে। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের জাতীয় সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা এখনই উপযুক্ত সময়। সরকারের মেয়াদ একেবারেই শেষ প্রান্তে। এখনই যদি পার্বত্য চুক্তির সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা না হয় তাহলে পার্বত্য চুক্তির সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ বা জোট সরকার জাতীয় সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য পেয়ে সরকার গঠন করা যাবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। সরকার চুক্তি বাস্তবায়ন কিংবা চুক্তিকে স্থায়ী ও শক্তিশালী করার বিষয়ে আন্তরিক নয় বিধায় ‘পার্বত্য চুক্তি’কে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানের- এই সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হতে চলেছে। চুক্তি অনুসারে ভারত সরকার বোডোল্যান্ডে ‘বোডোল্যান্ড টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল’ গঠন করে সেই কাউন্সিলের নিকট ৪০টি বিষয় হস্তান্তর করে। এই ৪০টি বিষয়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল- বন, ভূমি ও রাজস্ব, শিক্ষা (প্রাইমারী, হাইস্কুল, কলেজ ও টেকনিক্যাল), সংস্কৃতি, মৎস্য, প্রাণী সম্পদ, পিডব্লিউডি, সড়ক ও জনপথ, পর্যটন, পৌরসভা ও জেলা বোর্ডসহ সকল স্থানীয় সংস্থা, শহর ও গ্রাম উন্নয়ন, নাটক ও সিনেমা, পরিসংখ্যান, বাজার ও মেলা, শহর ও গ্রাম উন্নয়ন, পরিবহন, ট্রাইবেল গবেষণা ইনস্টিটিউট, মিউজিয়াম, ক্রীড়া ও যুব উন্নয়ন, ত্রাণ ও পুনর্বাসন, জম্ম-মৃত্যু রেজিস্ট্রেশন ইত্যাদি। উল্লেখ্য যে, বিটিসির আইন পরিষদ রয়েছে যেখানে তারা আইন প্রণয়ন করতে পারে। তারা সেটাকে বলছে-Bodoland Territorial Council Legislative Assembly . বোডোল্যান্ড চুক্তির ৫ বছর আগে পার্বত্য চুক্তি সম্পাদিত হলেও আজ অবধি বাংলাদেশ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট সকল বিষয় (৩৩টি বিষয়), ক্ষমতা ও দায়িত্ব হস্তান্তর করেনি। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক কিছু বিষয় হস্তান্তর করা হলেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেমন- ভূমি ও ভূমি ব্যব¯’াপনা, আইন-শৃংখলা, স্থায়ী পুলিশ, উন্নয়ন(সকল), বন ও পরিবেশ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নিকট হস্তান্তর করা হয়নি। যেসব বিষয় হস্তান্তর করা হয়েছে তাও যথাযথভাবে হস্তান্তর করা হয়নি। এছাড়া চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য বিষয়, যেমন- এক ধরণের সামরিক কর্তৃত্ব ‘অপারেশন উত্তরণ’ ও অস্থায়ী সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার, স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে ভোটার তালিকা প্রণয়ন পূর্বক তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা, জুম্ম শরনার্থী ও আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু পুনর্বাসন, জুম্মদের বেদখলকৃত ভূমি ফেরত প্রদান ও ভূমি অধিকার প্রতিষ্ঠা, সেটেলারদের পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে পুনর্বাসন করা, পার্বত্য চট্টগ্রামে আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য জেলা পরিষদের অধীনে বেসামরিক প্রশাসন ও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, পার্বত্য জেলা পরিষদের মাধ্যমে সকল উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা ও জুম্মবান্ধব উন্নয়ন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম অধ্যুষিত অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ ইত্যাদি কার্যকর করা হয়নি। অপরদিকে চুক্তি অনুসারে বোডোল্যান্ডে ৪০টি বিষয় হস্তান্তরসহ বিটিসির নিকট সকল ক্ষমতা ও দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিটিসির অফিস ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের অফিস, স্টাফ কোয়ার্টার ইত্যাদি আজ অবধি নির্মাণ করা হয়নি। এসব অফিস নির্মাণ করার জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজটিও সরকার আজ অবধি সম্পন্ন করতে পারেনি। বোডোল্যান্ডের সকল উন্নয়ন কার্যক্রম বিটিসির পরিকল্পনা অনুসারে বাস্তবায়িত হচ্ছে। শিক্ষা ও সংস্কৃতি উন্নয়নে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। বিটিসি প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বোডোল্যান্ডে বোডো জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব সুরক্ষা নিশ্চিত হয়েছে। ভূমি অধিকার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। শিক্ষা-সংস্কৃতিসহ সকল প্রকার উন্নয়ন দ্রুত গতিতে এগুচ্ছে এবং এসব উন্নয়ন বিটিসির মাধ্যমে ও বিটিসির পরিকল্পনা মাফিক পরিচালিত হচ্ছে। ভারত সরকারের আন্তরিক সহযোগিতার কারণে ভারত সরকারের প্রতি বোডো জনগোষ্ঠীর আস্থা তৈরী হয়েছে। বিটিসি প্রতিষ্ঠার পর বোডো জনগোষ্ঠী মনে করছে- বোডোল্যান্ডে তাদের অস্তিত্ব সুরক্ষিত হয়েছে এবং শিক্ষা, সংস্কৃতি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভিত রচিত হয়েছে। চুক্তির পর বিটিসি বোডোল্যান্ডে ব্যাপক উন্নয়নের কাজ হাতে নিয়েছে। ১টি বিশ্বিবদ্যালয় ও ২টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, সাংস্কৃতিক একাডেমী, জিমনেসিয়াম, রাস্তাঘাট উন্নয়নসহ অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ হয়েছে। মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার কাজ জোরে সোরে চলছে। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, সরকারী হাসপাতাল ও সাংস্কৃতিক একাডেমীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম বোডো নেতাদের নামে নামকরণ করা হয়েছে যা বাংলাদেশে একেবারে ভাবাই যায় না। বোরো নেতা বিনেশ্বর ব্রম্ম- এর নামে বিনেশ্বর ব্রম্ম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বোডোফার নামে বোডোফা কালচারাল কমপ্লেকস, ড. রবি বরো- এর নামে ড. রবি বোরো মেমোরিয়াল সিভিল হাসপাতাল করা হয়েছে। এধরণের আরো অনেক প্রতিষ্ঠানের নাম বোডো নেতাদের নামে নামকরণ করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামেও সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট, হাসপাতাল ও কলেজ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের নাম জুম্ম নেতা এম এন লারমা, বি কে রোয়াজা, কৃষ্ণ কিশোর চাকমা প্রমূখদের নামে হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে রাষ্ট্র যারা পরিচালনা করেন তাদের গণতান্ত্রিক চেতনা খুব বেশী উন্নত নয়। ভারতের রাজনীতিকদের মত বাংলাদেশের রাজনীতিকদের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক চেতনা উন্নত নয় বিধায় বাংলাদেশে সরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম আদিবাসী নেতাদের নামে নামকরণ হতে পারছে না। বোডোল্যান্ড চুক্তি হবার পর দিল্লী, কলকাতা, গোহাটিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে বোডোল্যান্ড হাউস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ২০ বছর পেরোলেও বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর ঢাকা ও চট্টগ্রামে পার্বত্য ভবন প্রতিষ্ঠা হতে পারলো না (তবে রাজধানী ঢাকার পার্বত্য ভবনের কাজ শুরু হয়েছে)। ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে যে দু’টি পাহাড়ী হোস্টেল রয়েছে সেই দু’টি হোস্টেলও আজ অবধি অবহেলা অবস্থায় রয়ে গেছে। এই দু’টি হোস্টেল ভবন যে কোন মুহুর্তে ভেঙ্গে পড়তে পারে। তথাপি সরকারের পক্ষ থেকে ভবন সংস্কার কিংবা নূতন ভবন নির্মাণের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি আজ অবধি। এমন কি হোস্টেল দু’টির জায়গা এখনো পর্যন্ত পাহাড়ী হোস্টেলের নামে নামজারী হতে পারেনি। যার কারণে বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাবান বিত্তবান অ-আদিবাসী ব্যক্তিরা এই দু’টি হোস্টেলের জায়গা বেদখল করার অপচেষ্টা চালিয়ে যেতে লক্ষ্য করা গেছে। পার্বত্য চুক্তির বহু পরে বোডোল্যান্ড চুক্তি সম্পাদিত হলেও ইতোমধ্যে বিটিসির দু’বার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বোডোল্যান্ডের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও আর্থ-সামাজিক উন্নযনের ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। অপরদিকে চুক্তি সম্পাদনের ২০ বছর পার হলেও চুক্তির আলোকে স্থাপিত তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন আজ অবধি অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। স্পষ্ট করে বললে সরকার দলীয় লোকদের দিয়ে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদকে পরিচালনা করার হীন উদ্দেশ্য থেকে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন না দিয়ে দলীয় দুর্ণীতিবাজ লোকদের দিয়ে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পরিচালনা করছে। তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন দিলে নিশ্চিতভাবে সরকারী দল নির্বাচনে হেরে যাবে সে কারণে সরকার তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচনের ব্যবস্থা করছে না। তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন না হবার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হতে পারছে না। কারণ আঞ্চলিক পরিষদ আইনে বলা হয়েছে- তিন পার্বত্য জেরা পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের ভোটে আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বার নির্বাচিত হবে। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তি সম্পাদিত হলেও চুক্তির আলোকে গঠিত আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য জেলা পরিষদ- এর নিকট সকল ক্ষমতা ও দায়িত্ব হস্তান্তরিত না হবার কারণে এবং সরকারের আন্তরিক সহযোগিতার বিপরীতে জুম্ম জাতিসমূহের অস্তিত্ব বিপন্ন হয় এমন কার্যকলাপে লিপ্ত হবার কারণে জুম্ম জনগণ বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আ¯’াশীল হতে পারেনি। বাংলাদেশ সরকার চুক্তি বাস্তবায়নের বিপরীতে চুক্তি লংঘন করার মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্মদের ভূমি বেদখল ও সাম্প্রদায়িক হামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে চলেছে। পার্বত্য চুক্তির পরও আদিবাসীদের হাজার হাজার একর জমি বেদখল হয়েছে। সরকার চুক্তির আলোকে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার বিপরীতে জুম্ম জাতিসমূহের অস্তিত্ব বিপন্ন হয় এমন উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছে। নারী ধর্ষণ ও হত্যাসহ নিরীহ জুম্ম জনগণের ওপর নিপীড়ন নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। এসময়ে জুম্ম জনগণ ও চুক্তি স্বাক্ষরকারী সংগঠন জনসংহতি সমিতি নেতা-কর্মীদের ওপর হয়রানী ও নির্যাতন অধিকতরভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চুক্তি অনুসারে পার্বত্য চট্টগ্রামকে একটি জুম্ম অধ্যুষিত অঞ্চল ও তার বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ করার প্রয়োজনীয় ব্যব¯’া গ্রহণ করার বিপরীতে চুক্তির বিধান লংঘন করে পার্বত্য চট্টগ্রামকে একটি মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে পরিণত করার যাবতীয় আয়োজন সম্পন্ন করতে চলেছে। শাসকগোষ্ঠীর এহেন কার্যকলাপ পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি পরিবেশকে বিনষ্ট করছে। চুক্তি বাস্তবায়নের সম্ভাবনাকে অনিশ্চিত করে তুলছে। এসব কারণে বাংলাদেশ সরকার জুম্ম জনগণের আস্থা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে। অপরদিকে ভারত সরকার বোডো বা বোরো জনগোষ্ঠীর আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকার বা শাসকগোষ্ঠী নিজেই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে। চুক্তি যাতে বাস্তবায়িত হতে না পারে সরকারের ভেতরের একটি অংশ সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। সরকারের এই অংশ এতই শক্তিশালী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে তাদের প্রস্তাবের বিপক্ষে যেয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারছে না। সর্ষের ভেতরে ভূত থাকার কারণে ভূত তাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। আজ বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা, উগ্র জাতীয়তাবাদী ও মৌলবাদী চিন্তাধারা ব্যাপক হারে বিস্তার লাভ করেছে এবং তা রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে। যার কারণে আজ বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক চিন্তাধারা বিকশিত হতে পারছে না। যদিও বা মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও আকাঙা ছিল- একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও শোষনহীন সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা; কিš‘ সে লক্ষ্য ও আকাঙা আজ স্বপ্ন মাত্র, যে স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল। যে সাম্প্রদায়িক, স্বৈরচারী ও অগণতান্ত্রিক চিন্তাধারার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে বাংলার জনগণ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে সেই দেশে আজ সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী, অগণতান্ত্রিক চিন্তাধারা ও সামরিক কর্তৃত্বে রাষ্ট্র চলছে। এ অবিশ্বাস্য হলেও সত্য। সুতরাং যে দেশে সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী, অগণতান্ত্রিক-স্বৈরতান্ত্রিক ও সামরিক কর্তৃত্বে রাষ্ট্র চলে সে দেশে যেমনি গণতন্ত্র ও প্রগতিশীল চিন্তাধারা বিকশিত হতে পারে না, তেমনি জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা পেতে পারে না। এধরণের রাষ্ট্রে নারী সমাজের অধিকারও প্রতিষ্ঠা পেতে পারে না। যার কারণে আজ সারাদেশে নারী ধর্ষণ, নারী হত্যা এবং নারীর ওপর নানা ধরণের নির্যাতন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এধরণের পরিবেশে সংখ্যালঘু নারীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। এহেন পরিস্থিতিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন কোনভাবে হতে পারে না। এই পরিস্থিতি ও অবস্থার পরিবর্তন না হলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে না এবং পার্বত্য চুক্তি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হতে পারে না। কেবল মাত্র নিরন্তর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এধরণের পরিস্থিতি ও অবস্থার পরিবর্তন করা সম্ভব। রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের অংশ প্রশাসনের দায়িত্ব হল- ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নিয়ে দেশ ও জনগণের সেবা করা। কিš‘ পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রশাসনের সাথে যুক্ত কর্মকর্তাদের বেশীরভাগ সাম্প্রদায়িক ও অগণতান্ত্রিক। সুতরাং অগণতান্ত্রিক ও সাম্প্রদায়িক কর্মকর্তা দ্বারা ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নিয়ে দেশ ও জনগণের সেবা করা বিশেষত: জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা কিংবা সমুন্নত রাখা কোনভাবেই সম্ভব নয়। স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা সাম্প্রদায়িক বলেই সেটেলার বাঙালীরা ২০১৭ সালে লংগদুতে ২৫০টি পাহাড়ী ঘর পুড়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল। লংগদুতে সেটেলার বাঙালীরা পাহাড়ী গ্রাম পুড়ে ফেলার সময় সেনা জওয়ান ও পুলিশ সেখানে উপস্থিত ছিল। তাদের উপস্থিতিতে পাহাড়ী ঘর পুড়ে ফেলা হয়েছিল। এহেন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে আঁচ করতে পেরে পাহাড়ী নেতারা পূর্বাহ্নে স্থানীয় সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের অবহিত করেছিলেন। কিন্তু কর্মকর্তারা পাহাড়ী নেতাদের অভিযোগের প্রতি কোন কর্ণপাতই করেননি। যার কারণে ২০১৭ সালের জুনের ২ তারিখে সেটেলার বাঙালী, সেনা ও পুলিশের উপস্থিতিতে লংগদু উপজেলার ৩টি গ্রামের ২৫০টি ঘর পুড়ে ফেলে দিতে সক্ষম হয়েছিল। এভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় বহু পাহাড়ী গ্রাম পুড়ে ছাই করে দেওয়া হয়েছিল,বহু গ্রামে সাম্প্রদায়িক হামলা চালিয়ে শত শত পাহাড়ীকে মেরে ফেলা হয়েছিল। সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন এহেন সাম্প্রদায়িক ও জাতিসত্ত্বা নির্মূলীকরণমূলক কার্যকলাপের মধ্য দিয়ে কিভাবে তারা জুম্ম জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবে? সরকারের ভেতরের চুক্তি বিরোধী অংশের পৃষ্ঠপোষকতায় পাহাড়ে নূতন করে নানা ষড়যন্ত্র ও অপকর্ম শুরু হয়েছে। সরকারের এই গোষ্ঠীর উস্কানী ও পৃষ্ঠপোষকতায় পাহাড়ে নূতন করে অস্ত্রের ঝনঝনানি, হত্যা, সন্ত্রাস ও অপহরণ বানিজ্য শুরু হয়েছে। নূতন করে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত রক্ত ঝরছে, সাধারণ জনগণের ওপর অত্যাচার ও নির্যাতন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পা”েছ। জোর জবরদস্তি করে নির্বাচনের ফলাফল ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, ভূমি বেদখল, ধর্ষণ ও হত্যাসহ নারীর ওপর নিপীড়ন বৃদ্ধি পেয়েছে। এক কথায় পার্বত্য চট্টগ্রামে আবার নূতন করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। এসব করানো হ”েছ একারণে যে, যাতে পাহাড়ী সংগঠন ও জনগণ ঐক্যবদ্ধ হতে না পারে, চুক্তি বাস্তবায়নের সংগ্রাম জোরদার হতে পারে এবং পাহাড়ে সেনা কর্তৃত্ব বজায় রাখার অজুহাত ও পরি¯ি’তি তৈরী করা যেতে পারে। বিগত তিন বছর ধরে পাহাড়ে সশস্ত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে কোন ধরণের সশস্ত্র সংঘাত ছিল না। যার কারণে পাহাড়ীরা স্বস্তি ফিরে পেয়েছিল। কিন্তু শাসকগোষ্ঠীর একটি অংশ পাহাড়ে অশান্তি সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। যার কারণে শাসকগোষ্ঠীর সেই অংশের পৃষ্ঠপোষকতায় পাহাড়ে অস্ত্রের ঝনঝনানি, হত্যা, গুম, অপহরণ ইত্যাদি আবার শুরু হয়েছে। এহেন কার্যকলাপের কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি নূতন করে অশান্ত হয়ে উঠছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে পার্বত্য চট্টগ্রাম আবার চুক্তির পূর্বাপর অবস্থায় ফিরে যাবে নিসন্দেহে। পরিস্থিতি যদি সেরূপ ধারণ করে তাহলে চুক্তির সব অর্জন নস্যাৎ হয়ে যাবে। অনেকের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে চুক্তির যে অর্জন সে অর্জনকে কোনভাবে নস্যাৎ হতে দেওয়া যায় না। তবে চুক্তির যে অর্জন সে অর্জনকে অব্যাহত রাখতে হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নূতন উদ্যমে এগিয়ে আসতে হবে। চুক্তির সময়কালে যে সাহস ও আন্তরিক মানসিকতা নিয়ে তিনি এই চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন, সেই চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অধিকতর সাহসী হয়ে আন্তরিক সহকারে এগিয়ে আসতে হবে। নইলে এই চুক্তিকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যে সুনাম ও সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন, তা একেবারে ধুলোয় মিছে যাবে আর পার্বত্য চট্টগ্রামের পরি¯ি’তি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। সাধারণভাবে মনে করা যেতে পারে- পার্বত্য চট্টগ্রামের আন্দোলন আর জোরদার হতে পারবেনা; কিন্তু এ কথা মনে রাখা দরকার- `Necessity is mother of invention’ । পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক বাস্তবতা জুম্ম যুবসমাজকে প্রস্তুত করবে। ১৯৪৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশের মানুষ কি ভেবেছিল- ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ নামে পৃথিবীর বুকে একটি স্বাধীন স্বার্বভৌম রাষ্ট্রের জম্ম নেবে? কেউ ভাবেনি। কিন্তু সেটি হয়েছে। পূর্ব পাকিস্তান নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী যে ভূল করেছে, বাংলাদেশ সরকারও যদি পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে সে ধরণের ভূলের পুনরাবৃত্তি করে তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূখন্ডটিও আগামীতে কি হবে তা কেউ বলে দিতে পারবে না। কারণ পৃথিবীর মানচিত্র সময়ে সময়ে পরিবর্তন লাভ করে। বিশ শতকে ভারতবর্ষের মানচিত্রের পরিবর্তন ঘটেছে। বৃটিশকে ভারতবর্ষ থেকে চলে যেতে হয়েছে। ভারতবর্ষে ভারত ও পাকিস্তান দু’টি রাষ্ট্রের জম্ম নিয়েছে। পরিবর্তন ঘটেছে রাশিয়ার মানচিত্র। ইতোমধ্যে গত এক শতকে বেশ কয়েকটি নূতন রাষ্ট্রের জম্ম নিয়েছে। সুতরাং জনসংখ্যা কম বলে, ছোট বলে কাউকে অবহেলা করা ঠিক নয়। পৃথিবীতে ইহুদীদের জনসংখ্যা কয়েক লক্ষ মাত্র। কিন্তু তারা আমেরিকাসহ সারা পৃথিবীকে শাসন করছে। সুতরাং ছোট বলে কাউকে অবহেলা করা উচিত নয়। তাই সার্বিক বিচারে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিকে অবহেলা করা সমুচিত হবে না, বরং এই চুক্তি বাস্তবায়ন করা হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণ, সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালী জনগণ এবং দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ ও সুনাম বয়ে আনবে- দেশে এবং বিদেশে। এই সুনামের অধিকাংশ ভাগীদার হবে শেখ হাসিনা সরকারের। সরকারের প্রধান হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও সুনাম বাড়বে, খ্যাতি ছড়িয়ে পড়বে দেশে বিদেশে। একারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাবারও একটি প্রেক্ষিত তৈরী হবে, যা শেখ হাসিনার শুভাকাংখীরা প্রত্যাশা করে আসছে। কিন্তু পার্বত্য চুক্তি যদি বাস্তবায়ন করা না হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে যদি শান্তি প্রতিষ্ঠা না পায় তাহলে শান্তি, শান্তি পুরস্কার, সুনাম-সুখ্যাতি সব উবে যাবে। পরিণামে পার্বত্য চট্টগ্রাম আবার চুক্তির পূর্বাপর অবস্থায় ফিরে যাবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে এধরণের পরি¯ি’তি আবার উদ্ভব হোক জুম্ম জনগণ ও শান্তিকামী মানুষ তা আর কামনা করে না। তাই অতি দ্রুততার সহিত পার্বত্য চুক্তি সম্পূর্ণরূপে ও যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হওয়া অতীব জরুরী। এক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই বোডোল্যান্ড চুক্তি স্বাক্ষর ও চুক্তি বাস্তবায়নে ভারত সরকারের যে দৃষ্টান্ত , যে আন্তরিকতা ও অভিজ্ঞতা তা থেকে বাংলাদেশ সরকার শিক্ষা নিতে পারে। জুম্ম জনগণ ও বোডো জনগণের আন্দোলনের লক্ষ্য এক। উভয় জনগোষ্ঠীর লক্ষ্য- স্বকীয় ভাষা ও সংস্কৃতি সুরক্ষা পূর্বক জাতীয় অস্তিত্ব সুরক্ষা, স্বকীয় ঐতিহ্য ও পিতৃভূমি সুরক্ষা এবং শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা। বোডোল্যান্ড চুক্তির মধ্য দিয়ে বোডো জাতি যে রাজনৈতিক অধিকার অর্জন করেছে, তার মধ্য দিয়ে বোডোল্যান্ডে বোডোদের জাতীয় অস্তিত্ব সুরক্ষিত হয়েছে। জাতীয় অস্তিত্ব সুরক্ষা এবং শিক্ষা, সংস্কৃতি ও অর্থনীতি উন্নয়নের জন্য যে রাজনৈতিক. অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক অধিকার প্রয়োজন ছিল তা চুক্তি ও চুক্তি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হয়েছে। কিš‘ পার্বত্য চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও অধিকার, যে অধিকার ও বিষয়সমূহ জুম্ম জাতিসমূহের অস্তিত্ব সুরক্ষা, ভূমি ও সংস্কৃতি সুরক্ষা এবং শিক্ষা , সংস্কৃতি ও অর্থনীতি উন্নয়নের সাথে সম্পর্কিত, সেসব অধিকার আজ অবধি প্রতিষ্ঠা পায়নি। সেকারণে জুম্ম জাতিসমূহের জাতীয় অস্তিত্ব সুরক্ষার নিশ্চয়তা নিশ্চিত হয়নি, তাদের ঐতিহ্য ও পিতৃভূমি সুরক্ষার নিশ্চয়তা নিশ্চিত হয়নি এবং তাদের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও অর্থনীতি উন্নয়নের জন্য যে রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন সে অধিকার প্রতিষ্ঠা না পাবার কারণে জুম্মবান্ধব উন্নয়নের নিশ্চয়তাও সুনিশ্চিত লাভ করেনি। এসব কারণে জুম্ম জনগণ বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আস্থাশীল হতে পারেনি। ভারত সরকার চুক্তি বাস্তবায়ন করে যেভাবে বোডো জনগোষ্ঠীর আস্থার জায়গা তৈরী করেছে, সেখানে বাংলাদেশ সরকার জনসংহতি সমিতি তথা জুম্ম জনগণের আস্থা অর্জনের সহায়ক পরিবেশ তৈরী করতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার চুক্তি বাস্তবায়নের বিপরীতে চুক্তি লংঘন করে জুম্ম জনগণের অস্তিত্ব ধ্বংস হয় এম কার্যকলাপে লিপ্ত রয়েছে। শাসকগোষ্ঠীর সহায়তায় জুম্ম জনগণের জুমভূমি-লাঙ্গল চাষের জমিসহ বাগান বাগিচা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জমি ইত্যাদি বেদখল করা হয়েছে, সাম্প্রদায়িক হামলা, গ্রাম জ¦ালাও পোড়াও, নারী ধর্ষণসহ হত্যা, নিরীহ জনগণের ওপর নিপীড়ন নির্যাতন বৃদ্ধি পেয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরকারী রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ওপর হয়রানী ও নিপীড়ন নির্যাতন ও জেল-জুলুম চলছে। পার্বত্য চট্টগ্রামকে মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে পরিণত করার কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। রোহিঙ্গাসহ সেটেলার বসতি অব্যাাহত রয়েছে। জুম্ম জাতিসমূহের অস্তিত্ব বিপন্ন হয় এমন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন অব্যাহত রয়েছে। শাসকগোষ্ঠীর সমস্ত কার্যকলাপকে বিশ্লেষন করলে এটি পরিস্কার যে, চুক্তি বাস্তবায়ন এখন আর সরকারের কর্মপরিকল্পনার মধ্যে নেই; বরং পার্বত্য চট্টগ্রামকে মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে পরিণত করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের মুসলিম বসতিকারীদের হাতে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা হস্তান্তর ও নিশ্চিত করাটাই সরকারের মূল লক্ষ্য, তা সরকারের কার্যকলাপে সুস্পষ্টরূপে ফুটে উঠেছে। এখানেই ভারত সরকার ও বাংলাদেশ বা পাকিস্তান সরকারের মধ্যে পার্থক্য। গণতন্ত্র চর্চা আছে বলে আজ ভারত টিকে আছে, অপরদিকে পাকিস্তান গণতন্ত্র চর্চা করে না, বরং সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদিতা, উগ্র জাতীয়তাবাদী চিন্তাধারার আলোকে রাষ্ট্র পরিচালনা করে বিধায় আজ পাকিস্তান দ্বিখন্ডিত হয়েছে। বাংলাদেশেও আজ গণতন্ত্র সংকোচিত, বিপরীতে সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদিতা, দুর্ণীতি, দুর্বৃত্তায়ন, সেনা কর্তত্ব জোরদার হয়েছে। যে দেশে সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদিতা, দুর্ণীতি, দুর্বৃত্তায়ন, সেনা কর্তৃত্ব ও উগ্র জাতীয় চিন্তাধারার সম্প্রসারণ ঘটে সে দেশে জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু, নারীসমাজ ও সাধারণ জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা পেতে পারে না; বরং তারা নিপীড়ন নির্যাতন ও বঞ্চণার শিকার হয়। তারা প্রান্তিক থেকে অধিকতর প্রান্তিক অবস্থানে নিক্ষিপ্ত হয়। দেশের সংখ্যালঘু জাতির অস্তিত্ব ধ্বংসের দিকে ধাবিত হয়। উপসংহার: পরিশেষে বলতে চাই- এটি ঠিক যে, পার্বত্য চুক্তি যদি বাস্তবায়ন না হয় তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা সমাধান ও পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাবে। পার্বত্য চুক্তির কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেসব অর্জন তা ধুলোয় মিছে যাবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পূর্বাপর অবস্থায় ফিরে যাবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম আবার অশান্ত হয়ে উঠবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা বহুমাত্রিক রূপ লাভ করবে। পূর্বের তুলনায় পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক পরি¯ি’তি আরো কঠিন ও জটিল আকার ধারণ করবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণ বুঝতে পেরেছে তাদের অস্তিত্ব বিপন্ন। জীবন বিপন্ন। সুতরাং তারা মরিয়া হয়ে উঠবে। যে কোন মানুষের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। আত্মরক্ষার জন্য প্রতিটি জুম্ম জীবন দিতে প্রস্তুত হয়ে উঠবে। আত্মরক্ষার অধিকার মানবাধিকার। আত্মরক্ষার জন্য, জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার জন্য জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে জুম্ম জনগণ সংগ্রাম করে যাবে। কোন সংগ্রামই বৃথা যায় না। জুম্ম জনগণের সংগ্রাম বৃথা যেতে পারে না। সংগ্রামের মধ্য দিয়ে একদিন জুম্ম জনগণ তাদের আত্মনিয়ন্ত্রনাধিকার ছিনিয়ে আনবে। জুম্ম জনগণের সংগ্রাম দীর্ঘজীবী হোক।

রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০

চাঙমা সাহিত্য বাহ্ ফাউন্ডেশন শিবচরণ শিক্ষা বৃত্তি- ২০২১: উদ’ ল’ 015 16 19 53 66


 আঙু/সুধী,
চাঙমা সাহিত্য বাহ্ ফাউন্ডেশন শিবচরণ শিক্ষা বৃত্তি- ২০২১ এ তপ্পেত্তুন আহ্’জার আহ্’জার ঝু ঝু আ পাত্তুরুতুর জানাঙর।
“জীবন, সবন, কোচপানা আ লারেহ্’’ এ মুলুক কধায়ান মুজুঙে রাঘেই “চাঙমা সাহিত্য বাহ্ ফাউন্ডেশন” এপ্রিল ৬, ২০২০ ইং পদ লর দেনা আরগানি গচ্ছে। আ মঞ্জুক গরের এযেত্তে ২০২১ সালত্তুন ধরি “চাঙমা সাহিত্য বাহ্ ফাউন্ডেশন শিবচরণ শিক্ষা বৃত্তি- ২০২১” চালু গরিবার। এ শিক্ষা বৃত্তি পল্লেদি প্রাইমারি লেভেরত- ২৫০+, হাই ইক্কুল লেভেলত ২৫০+ কলেজ(পাবলিক) লেভেরত- ৫০ আ বিশ্ব বিদ্যালয়(পাবলিক) লেভেরত- ২৫ জন পর্বোয়ারে “চাঙমা সাহিত্য বাহ্ ফাউন্ডেশন শিবচরণ শিক্ষা বৃত্তি- ২০২১” দিয়্যা অভ’।

তে, চাঙমা সাহিত্য বাহ্ বেক ধেলা সাবাঙ্গী, চাঙমা সাহিত্য পত্রিকা এওজি/প্রতিনিধিদাঘিরে কো কর যে, তলেদি লেঘা সুধোমানি মানি “কোণা-কুনি সেরেত্তুন তগে আন’ সে সোততারাউন/ধ্রুবতারাগুলো”।

* সুধোম:
১. চাঙমা পর্বোয়াত্যাই চাঙমা ওক্কোর(অঝাপাত) আ চাঙমা ভাঝর ওলি ওলি/ছড়া, গল্প লিঘি পড়ি আ বুঝি পারা পরিব(হাই ইক্কুল/কলেজ/বিশ্ব বিদ্যালয় পর্বোয়াউনত্যাই) বা ৬ মাজর ভিদিরে খামাক্কাই শিঘা পরিব, প্রাইমারি পর্বোয়ানত্যাই সিয়ান ন’ লাগিব।
২. মারমা/মগ পর্বোয়াত্যাই মারমা ওক্কোর আ মারমা ভাঝর ছড়া, গল্প লিঘি পড়ি আ বুঝি পারা পরিব(হাই ইক্কুল/কলেজ/বিশ্ব বিদ্যালয় পর্বোয়াউনত্যাই) বা ৬ মাজর ভিদিরে খামাক্কাই শিঘা পরিব, প্রাইমারি পর্বোয়ানত্যাই সিয়ান ন’ লাগিব।
৩. ত্রিপুরা পর্বোয়াত্যাই ককবরকবর্ণমালায় আ ককবরক ভাঝর ছড়া, গল্প লিঘি পড়ি আ বুঝি পারা পরিব(হাই ইক্কুল/কলেজ/বিশ্ব বিদ্যালয় পর্বোয়াউনত্যাই) বা ৬ মাজর ভিদিরে খামাক্কাই শিঘা পরিব, প্রাইমারি পর্বোয়ানত্যাই সিয়ান ন’ লাগিব।
৪. তঞ্চঙ্গ্যা, লুসাই, পাংখো, মরুং(ম্রো), খিয়াং, বম, খুমি, চাক, গোর্খা, অসমীয়া, আমনর ওক্কোর (যনি থান) ভাঝর ছড়া, গল্প লিঘি পড়ি আ বুঝি পারা পরিব(হাই ইক্কুল/কলেজ/বিশ্ব বিদ্যালয় পর্বোয়াউনত্যাই) বা ৬ মাজর ভিদিরে খামাক্কাই শিঘা পরিব, প্রাইমারি পর্বোয়ানত্যাই সিয়ান ন’ লাগিব।
৫. নাদা/গরীব মেধাবী, ভিদিরে চাগালা পর্বোয়া আ মা-বাপ নেই পর্বোয়াউনরে খামাক্কাই দিয়্যা অভ।
৬. ইক্কুলত ৮০% আহ্’জিল তা পরিব।
৭. কলেজ/বিশ^ বিদ্যালয় পর্বোয়াউনত্যাই কমেদি তলেদি লেঘা লাক/যোগ্যতা তা পরিব:
বিভাগ                                                                     জিপিএ
বিজ্ঞান বিভাগ                                                   ৩.৫০ কমেদি
মানবিক বিভাগ                                                 ৩.০০ কমেদি
ব্যবসায়শিক্ষা বিভাগ                                         ৩.০০ কমেদি

বিশ^ বিদ্যালয় শিক্কে বৃত্তিঃ যে কন পাবলিক কলেজ/বিশ্ব বিদ্যালয় কলেজ/বিশ্ব বিদ্যালয় পর্বোয়া ওই পরিব। মডিকেল কলেজ আ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ পর্বোয়াউন এ ভিদিরে পরিবাক।

যে চাগালা পর্বোউনরে শিক্কে বৃত্তি দিয়্যা অভ’ বা তুদি/আবেদন গরি পারিবাক* ঃ
* খাগাড়াছড়ি (বেক উপজেলাত্তুন)
* রাঙামাত্যা (লংগদু, বাঘাইছড়ি আ নান্যাচর নানিয়ারচর উপজেলাত্তুন)
* বান্দরবান (সদর আ থানচি উপজেলাত্তুন)।
*কলেজ/বিশ্ব বিদ্যালয়ত্যাই তিন পার্বত্য জেলাত্তুন।
* পরেদি তিন পার্বত্য জেলারে(প্রাইমারি/হাই ইক্কুল লেভেলর) এ শিক্কে বৃত্তি ভিদিরে আনা অভ।

# এযেত্তে অক্টোবর ২০২০ ইং ভিদিরে সার্ভে থুম গরি চাঙমা সাহিত্য বাহ্ ফাউন্ডেশন শিবচরণ শিক্ষা বৃত্তি- ২০২১ এ কমিতি ইধু শিক্ষা বৃত্তি তথ্যয়ানি পাদেবার কুজোলী থেল। আ অবিভাবক বা শিক্ষার্থীউন সরাসরি ফুরমারি(যোগাযোগ) উদ’ লবার কুজোলী থেল।

ঝু ঝু
থুমেদি

সুনানু ইনজেব চাঙমা
জধানানু
“চাঙমা সাহিত্য বাহ্ ফাউন্ডেশন শিবচরণ শিক্ষা বৃত্তি- ২০২১”
লারমা স্কয়ার, দিঘীনালা, খাগারাছড়ি পার্বত্য জেলা।
মোবা: ০১৫ ১৬ ১৯ ৫৩ ৬৬

*   যারারে এ পোইদ্যানে সার্ভে গরিবার  হুম দিয়্যা অহ্’ল-
১.    চাঙমা সাহিত্য বাহ্, দিঘীনালা উপজেলা ধেলা।
২.    চাঙমা সাহিত্য বাহ্, দিঘীনালা কলেজ ধেলা।
৩.    চাঙমা সাহিত্য বাহ্, মহালছড়ি কলেজ ধেলা।
৪.    চাঙমা সাহিত্য বাহ্, মহালছড়ি উপজেলা ধেলা।
৫.    চাঙমা সাহিত্য বাহ্, নান্যাচর কলেজ ধেলা।
৬.    চাঙমা সাহিত্য বাহ্, পানছড়ি উপজেলা ধেলা
৭.    চাঙমা সাহিত্য বাহ্, বান্দরবান জেলা ধেলা।
৮.    চাঙমা সাহিত্য বাহ্, খাগাড়াছড়ি জেলা ধেলা।
৯.    চাঙমা সাহিত্য বাহ্, লংগদু উপজেলা জেলা।
১০.    চাঙমা সাহিত্য বাহ্, বাঘাইছড়ি উপজেলা ধেলা।
১১.     চাঙমা সাহিত্য বাহ্, কাচালং কলেজ ধেলা।
১২.     চাঙমা সাহিত্য বাহ্, সাজেক ইউনিয়ন ধেলা।
১৩.    চাঙমা সাহিত্য বাহ্, ঢাকা ধেলা।
১৪.    চাঙমা সাহিত্য বাহ্, বাবুছড়া কলেজ ধেলা।
১৫.    চাঙমা সাহিত্য বাহ্ শিল্পী গোষ্ঠী, দিঘীনালা।
১৬.     চাঙমা সাহিত্য বাহ্ পাবলিশার্স, দিঘীনালা।
১৭.    চাঙমা সাহিত্য পত্রিকা বেক এওজিদাঘি। 


বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০

দিনাজপুরের বাক প্রতিবন্ধী এক আদিবাসী সান্তাল কিশোরীকে ধর্ষণ, ধর্ষক গ্রেফতার

২০২০,দিনাজপুর: দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলা পল্লীতে বাকপ্রতিবন্ধী এক আদিবাসী সান্তাল কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৩১ আগস্ট ২০২০, সোমবার বিকাল ৩:৩০ টায় দিকে উপজেলার পল্লীতে এ ঘটনা ঘটে।
পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে ভুক্তভোগীর মা বাক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে বাড়িতে একা রেখে বড় মেয়ের চিকিৎসার জন্য পাশ্ববর্তী ফুলবাড়ি উপজেলায় যায়। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বাকপ্রতিবন্ধী মেয়েকে একা পেয়ে পাশ্ববর্তী পরিত্যাক্ত একটি বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে শামিম হোসেন নামের এক যুবক। পরে তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে ধর্ষক পালিয়ে যায়।
এদিকে ন্যায় বিচার চেয়ে কিশোরীর মা বাদী হয়ে ওই যুবকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে নবাবগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শামিম হোসেনকে আটক করে। আটক শামিম হোসেন উপজেলার পুলবান্ধা গ্রামের শমভু হোসেনের ছেলে।
নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অশোক কুমার চৌহান বলেন, বাকপ্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়েরের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত যুবককে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়েছে। তাকে দিনাজপুর জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

* হিল ভয়েস, ২ সেপ্টেম্বর 

জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সংগ্রাম ও গৌরবের ২৭ বছর


জাতীয় আদিবাসী পরিষদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে আজ ৩১ আগষ্ট ২০২০ তারিখ সকাল ১১.০০ টায় বর্তমানে আদিবাসীদের জীবনের সংকট এবং তাদের মানবাধিকার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে রাজশাহীর মহানগরীর আলুপট্টির মুক্তযুদ্ধ পাঠাগারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

বর্তমানে আদিবাসীদের জীবনের সংকট এবং তাদের মানবাধিকার পরিস্থিতি উপর মুল প্রবন্ধ পাঠ করেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক বিমল চন্দ্র রাজোয়াড়, দপ্তর সম্পাদক সূভাষ চন্দ্র হেমব্রম, রাজশাহী মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আন্দ্রিয়াস বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় সদস্য রাজকুমার শাও, আদিবাসী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নকুল পাহান, সাধারণ সম্পাদক তরুন মুন্ডা, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক দিলিপ পাহান।

সম্মেলনে মুল প্রবন্ধের বক্তব্যে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন বলেন, বর্তমানে আদিবাসীদের জীবন সংকটাপুর্ন হয়ে পড়েছে এবং তাদের মানবাধিকার পরিস্থিতি ক্রমাগতভাবে চরম অবনতি ঘটছে। আদিবাসীদের ভূমি সমস্যা দিনদিন প্রকট আকার ধারণ করেছে। এক শ্রেণীর ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন সময় আদিবাসীদের অত্যাচার, ভূমি থেকে উচ্ছেদ, জাল দলিল, হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, অগ্নিসংযোগ, মিথ্যা মামলা, লুটপাট জবর দখল, দেশ ত্যাগে বাধ্য করা সহ নানা নির্যাতন নিপিড়নের শিকার হয়ে আজ তারা সর্বশান্ত ও ভূমিহীনে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থা বারবার ঘটছে। আদিবাসীরা এখন নিজ দেশে পরবাসীর ন্যায় জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। আদিবাসীদের উপর নিপিড়ন, ভূমি দখল, উচ্ছেদ, ধর্ষণ, হত্যার মামলায় থানা পুলিশ, স্থানীয় অসৎ জনপ্রতিনিধি ও ভূমি অফিসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীদের পক্ষাবলম্বন করে সহায়তা করে আসছে। ফলে আদিবাসীরা আরও অসহায় হয়ে পড়ছেএ প্রসঙ্গে অতীতে ঘটে যাওয়া এবং সম্প্রতিক সময়ের কিছু মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তুলে ধরেন।

জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক বিমল চন্দ্র রাজোয়াড় বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ সকল প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল আদিবাসীদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষে তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে। তাদের নির্বাচনী ইশতেহার দেখে আদিবাসী জনগন আসস্ত ও বিশ্বাস করেছিল যে, এবার তাদের জীবনমানের উন্নয়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয় নি। একই সাথে তিনি বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর নাচোল উপজেলায় টংপাড়া আদিবাসী পল্লিতে ক্রমাগত ভাবে এলাকার ভূমি সন্ত্রাসী তরিকুল ইসলাম আদিবাসী নির্যাতন, ভূমি দখল ও বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে আসছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং তার শাস্তির দাবি করি।

দপ্তর সম্পাদক সূভাষ চন্দ্র হেমব্রম তার বক্তব্যে বলেন, সমতল আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনের মাধ্যমে জাতীয় বাজেটে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্ধ দিতে হবে। আদিবাসী অধ্যুষিত জেলাগুলোতে আদিবাসী সাংস্কৃতিক একাডেমী প্রতিষ্ঠা, রাজশাহী বিভাগীয় আদিবাসী সাংস্কৃতিক একাডেমীতে উপ-পরিচালক পদে নিয়োগসহ, দিনাজপুর, নওগাঁর আদিবাসী সাংস্কৃতিক একাডেমীতে দ্রুত জনবল নিয়োগ করতে হবে।

আদিবাসী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নকুল পাহান বলেন, সকল আদিবাসী জাতিসত্তার শিশুদের জন্য নিজ মাতৃভাষায় প্রাথমিক স্তরে শিক্ষাদানের ব্যবস্থাসহ পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন এবং আদিবাসী শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। সকল উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিও বিশেষ সুযোগ, ১ম ও ২য় শ্রেণীসহ সকল সরকারি চাকুরীর ক্ষেত্রে কোটা কার্যকর করতে হবে।

কর্মসূচি: জাতীয় আদিবাসী পরিষদ রাজশাহী জেলা কমিটির আয়োজনে ৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের প্রতিটি জেলায় একযোগে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের ৯ দফা দাবিতে জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সমাবেশ, মানববন্ধন, মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম সেটলার ধর্ষকদের অভয়রণ্য হওয়ায়.... মহালছড়িতে বাঙালি সেটেলার কর্তৃক এক মারমা কিশোরী গণধর্ষণের শিকার, দশ হাজারে মিটমাট!!!

গত ৩১ আগস্ট ২০২০ ইং সোমবার খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়িতে চার বাঙালি সেটেলার যুবক কর্তৃক রাতভর অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী এক মারমা কিশোরী (১৪) গণধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এরপর স্থানীয় আওয়ামীলীগের এক ইউনিয়ন সভাপতির নেতৃত্বে ও মধ্যস্থতায় আয়োজিত এক সালিশে ভিকটিমের পরিবারকে মাত্র ১০ হাজার টাকা দিয়ে জঘন্য ঘটনাটি মিটমাট করা হয় বলে জানা যায়। এছাড়া ঘটনার বিষয়ে কোথাও কাউকে না জানাতে এবং মামলা না করতে সালিশে নেতৃত্বদানকারীদের পক্ষ থেকে কড়া নির্দেশ দেয়া হয়। ফলে ঘটনাটি প্রায় ধামাচাপা পড়ে যায়।

জানা গেছে, ধর্ষণের শিকার মেয়েটি মহালছড়ি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। তার নিজের বাড়ি পার্শ্ববর্তী মাইসছড়ি গ্রামে। বর্তমানে পড়ালেখার কারণে মারমা অধ্যুষিত থলিপাড়া গ্রামে অবস্থান করছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ আগস্ট ২০২০ বিকাল আনুমানিক ৫:০০ টার দিকে মহালছড়ি উপজেলার মহালছড়ি সদর ইউনিয়নের টিলাপাড়া নিবাসী আল আমিন (২৪) এর নেতৃত্বে ৪ সেটেলার যুবক মেয়েটিকে একা পেয়ে পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে অনেকটা জোর করে মোটর সাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। এরপর তারা টিলাপাড়া সংলগ্ন মহেন্দ্র যানবাহন স্টেশনের নিকটবর্তী গোপন স্থানে নিয়ে গিয়ে প্রায় রাতভর পর্যায়ক্রমে গণধর্ষণ করে মেয়েটিকে ছেড়ে চলে যায়। পরে ১ সেপ্টেম্বর ২০২০ দিবাগত রাত প্রায় ৩:০০ টার দিকে মেয়েটি কোনমতে টিলাপাড়ায় তার এক শিক্ষকের বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করে।

এরপর ঘটনাটি জানাজানি হলে, ১ সেপ্টেম্বর ২০২০ স্থানীয় সেটেলারদের নেতা ও আওয়ামীলীগের মহালছড়ি ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি রতন কুমার শীল এর নেতৃত্বে থলিপাড়া গ্রামস্থ হেডম্যান কালাচান চৌধুরীর বাড়িতে এক সালিশ বসানো হয়। সালিশে রতন কুমার শীল ধর্ষকদের পক্ষ থেকে ধর্ষিতাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করার রায় দিয়ে বিচার সম্পন্ন করেন এবং এ বিষয়ে কোন মামলা না দেয়া ও কাউকে না জানানোর নির্দেশ প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, রতন কুমার শীল ২০০৩ সালে সংঘটিত মহালছড়ি সাম্প্রদায়িক হামলার অন্যতম হোতা এবং সেটেলারদের মধ্যে প্রভাবশালী ব্যক্তি বলে জানা যায়।

জানা গেছে, ধর্ষণের সময় মেয়েটির শরীরে জখমের চিহ্ন সৃষ্টি হয়। বিচারের সময় সে সবার সামনে আঘাতের চিহ্ন প্রদর্শন করে।

হিল ভয়েস, ২ সেপ্টেম্বর ২০২০,

রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০২০

মানবিক এজাল: হিলচাগিদাঙত শিক্কে পহ্’র আর’ বেচ দোল গরি ছিদি পরের


এওজি, খাগাড়াছড়ি: চাঙমা সাহিত্য পত্রিকা: তোমার মা-বাপ নেই, নেই তেঙা তে কি অইয়ে একঝাক মানুচ দ’ আঘন তোমা কায়। ইক্যে তমার বানা একনিমোন গরি লেঘা-পারাহ্ গরিবার অক্ত, নয় পাবজি, ফ্রী ফাইয়ার আ নানান খেলেবার। শিক্কে এক্কান নিধুকতুক/একমাত্র আহ্’ত্যার যে কন’ জিংকানি দোল গরি সাজে দে।  

এচ্যে গদা সংসারত এক্কান দরগরে পা বিধি দংগা পিরেহ্ কোভিড- ১৯ লাই মানুজোর আয় ইনকাম নেই। সিত্যাই একঝাক নুঅ ফুদন্দি ফুল ফাগোন মিলি ন’ পাত্তন। সিয়ান বাদেয়্য হিলত “পার্বত্য চুক্তি” বাস্তবায়ন ন’ অনার দাঙর এক্কো শ্রেণী দিককাভুল অই দিনমাধান গঙে দেদন। আঝা-সবন নেই অলে সুয়াই।

এধক্যে খেনত  প্রিয়দর্শী_শিক্ষা_কল্যাণ_তহবিল, পাহাড়ী_উদ্দোক্তা_হাট মানবিক কল্যাণ সংঘ  এ তিন্নো জধা উজে এলাক।

গেল্লে ২৮ আগস্ট ২০২০ ইং শুক্করবার বেন্যা মাধান ১০ টা গরি ৫নং পেরাছড়া ইউনিয়ন হল রুমত এক্কো তেম্মাং খলাত জুগল গরি ২৮ জন গরিব, মা-বাপ নেই, মেধাবি পর্বোয়ারে এ তিন্নো জধা তারা আহ্’দত তেঙা তুলি দিল।

তেম্মাং খলাবোত সুনানু প্রিয়দর্শী চাঙমা  খলানানুয়্যা নকবাচ্যা গরবা ইজেবে সরিত অইয়ে,  খাগাড়াছড়ি সরকারি কলেজর এজাল সাত্থুয়া সুনানু মধুমঙ্গল চাঙমা আ মুলুক গরাবা ইজেবে সরিল এলাক ভেই-বোনছড়া মিলিনিয়াম হাই ইক্কুলর দাঙর সাত্থুয়া সুনানু তাতু মণি চাঙমা, সমাচ ভালেদি কাম্মো সুনানু ধীমান খীসা, হিলত দাঙর উদ্দোক্তা, বাংলাদেঝর রাষ্টপতিত্তুন দাঙর মান পিয়্যা আ চাঙমা সাহিত্য বাহ্ সল্লাদার সুনানু সুজন চাঙমা আ টিউফা ইক্কুলর এজাল সাত্থুয়া সুনানু দর্শন চাঙমা দাঘি।

তারা সরিত অইয়ে পর্বোয়াদাঘিরে দিককাবুল ন’ ওই এগামনে এগাচিত্তে নিপরভা গরি লেঘা – পরাহ্ গরিবার কুজোলী গরি কলাক- “তুমি দেঝর জাদর এক্কো এক্কো চেরাক/নক্ষত্র। তমাত্তুন বেক পোইদ্যানে চোক রাঘেই মুজুঙে আক্কোই য’। তমা কায় আমি আঘি।

আ এধক্যে কাম বাঙিনি গরি কলাক- ইআনদোই আমি এধক খুজি নয়, আমাত্তুন বেগে উজে এই এচ্যা যারা তেঙা পয়জে দুক্কে লেঘা-পড়া গরি ন’ পাত্তন তারা তগে তগে লেঘা পড়া সমারে যা যিয়ান লাক সে পোইদ্যানে, সে নালে গাইড লাইন অই বেক পর্বোয়াউনর শিক্কে নিপরভা গরি দেনা ওক আমার ইমে।

বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২০

“তুমি বানা কন’ এক্কো বন্দা/ব্যক্তি নয় আ বানা এক্কান আদাম-চাগালার এওজি/প্রতিনিধি নয়, নয় তুমি গোদা হিলচাদিগাঙর এওজি/প্রতিনিধি, তুমি লক্ক, লক্ক/লাখো, লাখো পর্বোয়ার/শিক্ষার্থীর অঝা-সবনর এওজি”


এওজি দিঘীনালা: “চাঙমা সাহিত্য বাহ্ ফাউন্ডেশন শিবচরণ শিক্ষা বৃত্তি- ২০২১:  চাঙমা সাহিত্য বাহ্ এক্কো অরাজনৈতিক, অলাভজনক, সাহিত্য ও সংস্কৃতি ভালেদি স্বেচ্ছাসেবী জধা। যা ২০০০ সালত ১ জানুয়ারি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসত থিদ অয়্যা। থিদ’ অনার সমারে সমারে তারা দেচ-জাত সাহিত্য আ সংস্কৃতি ভালেদি বহুত কাম গরি এচ্চোন আ গরদন।
১.    ১০০০ চাঙমা লেঘার কীবোর্ড বানানা অইয়ে।
২.    ৭৮৮৩ জন মানজোরে চাঙমা লেঘা শেঘানা অইয়ে (২০০৪-২০১৯)।
১.    চাঙমা সাহিত্য পত্রিকা ১৯ সংখ্যা সং, জুম- ২ সংখ্যা, হিল চাদিগাং- ২ সংখ্যা, মেদিনী, বিজক নাঙে সাহিত্য ম্যাগাজিন ছাবা অইয়ে আ ৩০০আন চাঙমা লেঘা চার্ট বানা অইয়ে।
২.    দাঘকধা ১৪০০, ছড়া ৭০ বো, বানা ৫০ আন, পালা ২ বে থুবানা অইয়ে।
৩.    আর কিজু মানজো ইদু----আমা সবনান পার গত্তে দেনা। ইক্কে কিজু মানুচ আমা সান চাঙমা লেঘার উজন্দি সবন দেঘন।
৪.    চাঙমা লেঘার নীতি নির্ধারন গত্তে আর সরকারর নানান কামত যেমন: ল্যাংগুয়েজ ব্রিজিং) অবদান রাঘানা।
৫.    পিএইচডি ক্যান্ডিডেটরে পিএইচডি গবেষণাত এজাল দেনা
এচ্যে সং ১০ আজার পর্বোয়ারে চাঙমা লেঘা শেঘানা সমারে এচ্যে ২০ বঝর সং তারা নানান জাগাত কাম গরিনেই বুঝি পাচ্ছোন বহুত গম গম, দোল দোল মেধাবি পুর্বোয়া তেঙা অভাবে লেঘা-পড়া গরি ন’ পারন বা উচ্চ শিক্ষা লোই ন’ পারন। এধক্যে চিদে-চেদনত্তুন গেল্লে  এপ্রিল ৬, ২০২০ ইং সালত চাঙমা সাহিত্য বাহ্ ফাউন্ডেশন ফগদাঙ গরা অয়। যার উদ্দেশ্য পত্তিক পর্বোয়ার (শিক্ষার্থী) নিরাপত্তা, সুরক্ষা আ শিক্কে নিশ্চিত গরি দোল এক্কান পিত্তিমী থিদ গরানা। ইরুক পর্বোয়াউনর পিত্তিমীআন ফুলে-ফলে সাজি তুলিবার শক্তি আঘে, আঘে আদর্শ আ মুজুঙ দিনর দোল  আঝা-সবন/সম্ভাবনা। এ শক্তি আ আদর্শআনরে কামত লাগে ন’ পারি, সালেন তারা লুদুংমরা, পিত্তোমরা আ দিক কাভুল ওই সহিংস অই উদিবাক। এধক্যে চিদেত্তুন “চাঙমা সাহিত্য বাহ্ ফাউন্ডেশন শিবচরণ শিক্ষা বৃত্তি- ২০২১” ফগদাঙ গরা অহ্’ল।

হিলচাদিগাঙত আ দেজ’ বিদেজর যারা গম-দোল চিদে গরন, শিক্ষানুরাগী বিদ্যোৎসাহী, মানবতাবাদী যারা গায় গায় অতালিয়ে ধারাজে আওজিমনে/স্বেচ্ছায় স্বতস্ফূর্তভাবে এ মানবিক কামত মুজুঙে উজে এবাক; তারার দিয়্যা তেঙা এজাল অভ’ “চাঙমা সাহিত্য বাহ্ ফাউন্ডেশন শিবচরণ শিক্ষা বৃত্তি- ২০২১” এর নিধুকতুক্যা/একমাত্র উৎস। এই শিক্ষা বৃত্তি চাঙমা সাহিত্য বাহ্ ফাউন্ডেশন কতৃর্ক বাস্তবায়ন করা হবে। ২০২১-২০২২ এ অর্থ বঝরত্তুন ধরি “চাঙমা সাহিত্য বাহ্ ফাউন্ডেশন শিবচরণ শিক্ষা বৃত্তি- ২০২১” চালু গরা অভ’ ভিলে চাঙমা সাহিত্য বাহ্ গরা কমিতি জধানানু সুনানু ইনজেব চাঙমা জানেয়ে। 
তে আর’ বেক্কুনরে কুজোলী গচ্ছে, “তুমি বানা কন’ এক্কো বন্দা/ব্যক্তি নয় আ বানা এক্কান আদাম-চাগালার এওজি/প্রতিনিধি নয়, নয় তুমি গোদা হিলচাদিগাঙর এওজি/প্রতিনিধি, তুমি লক্ক/লাখো পর্বোয়ার/শিক্ষার্থীর অঝা-সবনর এওজি। এ কামান দোলে দোলে উভে পারানা  বেক্কনরে সরিত অভার  তুদি/আবেদন গচ্ছে।
খরব নিনেই জানি পাচ্ছেই “চাঙমা সাহিত্য বাহ্ ফাউন্ডেশন শিবচরণ শিক্ষা বৃত্তি- ২০২১” পল্লেদি ৫০০ + প্রাইমারি আ হাই ইক্কুল, কলেজ- ৫০, বিশ্ব বিদ্যালয়- ২৫ জন পর্বোয়ারে বৃত্তি দিবার আওচ গরের।

বুধবার, ২৬ আগস্ট, ২০২০

পানছড়িতে বিজিবি কর্তৃক অস্থায়ী বাজারের দোকানপাট ভাংচুর

 

২৬ আগস্ট ২০২০, খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার ২নং চেঙ্গী ইউনিয়নের তারাবন গীর্জা এলাকায় একটি অস্থায়ী বাজারের দোকানপাট ভাংচুর করেছে বিজিবি সদস্যরা। করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে এলাকাবাসী অস্থায়ীভাবে এ বাজারটি স্থাপন করেছে।

এ সময় বিজিবি সদস্যরা বাজারে আসা লোকজনকে তাড়িয়ে দেয় এবং সেখানে বাজার বসানো যাবে না হুমকি প্রদান করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ ২৬ আগস্ট ২০২০ বুধবার সকাল ৮ টার সময় বিজিবি পানছড়ি জোনের লে. কর্নেল মোঃ রুবায়েস আলম-এর নেতৃত্বে একদল বিজিবি সদস্য উক্ত অস্থায়ী বাজারে হানা দেয় এবং ১৫-২০টি দোকান ভাংচুর করে।

পানছড়ি বাজার ও লোগাং বাজার ব্যতীত অন্য কোথাও কোন বাজার বসানো যাবে না বলে বিজিবি সদস্যরা হুমকি প্রদান করে। তারা লাঠিসোটা হাতে মারমুখি হয়ে বাজারে আসা লোকজনকে তাড়িয়ে দেয় এবং জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। ফলে বাজারে আসা লোকজন যার যার বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হন।

বিজিবি’র এমন অমানবিক আচারণে এলাকার জনগণ অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

লংগদুতে সেটেলার কর্তৃক প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জমির মালিকের বিরুদ্ধে মামলা


হিল ভয়েস, ২৬ আগস্ট ২০২০, রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি জেলার লংগদুর বগাচতর এলাকায় দুই ভূমিদস্যু মুসলিম সেটেলার উপজেলা ভূমি প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে উল্টো জমির মালিক দুই জুম্মর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

তবে এর পরপরই উপজেলা প্রশাসন উক্ত দুই ভূমিদস্যু মোঃ আবদুল্লাহ ও মোঃ আল আমিনকে গ্রেফতার করে এবং নবীনচান চাকমার মালিকানাধী জায়গার উপর অবৈধভাবে তাদের নির্মিত বাড়িটি অপসারণ করে দেয়।

পরে উপজেলা প্রশাসন মোঃ আবদুল্লাহ ও মোঃ আল আমিনের কাছ থেকে লিখিত মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা সত্তেও সম্প্রতি রাঙ্গীপাড়ার মুসলিম সেটেলার মজনু সরকারের দুই ছেলে মো: আবদুল্লাহ ও মো: আল আমিন নবীনচান চাকমার জায়গার উপর অবৈধভাবে বাড়ি নির্মাণ করে।

নবীনচান চাকমার পক্ষ থেকে বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করা হলে, প্রশাসন অবৈধভাবে নির্মিত বাড়িটি ২০ আগস্ট ২০২০ তারিখের মধ্যে অপসারণের নির্দেশ প্রদান করে। কিন্তু সেটেলার বাঙালিরা বাড়িটি অপসারণ না করে তারা উল্টো জায়গার মালিক নবীন চান চাকমা ও তার উত্তরাধিকারী দেবেন্দ্র চাকমার নামে রাঙ্গামাটি জেলা জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করে।

তবে গত ২৫ আগস্ট ২০২০ সকাল ১১.০০ টার দিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ক্যথোয়াইপ্রু মারমা, সার্ভেয়ার মোঃ খোরশেদ আলম পুলিশসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবৈধভাবে নির্মিত বাড়িটি অপসারণ করে দেয় এবং মো: আবদুল্লাহ ও মো: আল আমিনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।

একই দিন পরে পুলিশ বিরোধীয় জায়গায় আর কোন ধরনের স্থাপনা নির্মাণসহ সম্প্রীতি নষ্ট হয় এমন কোন কাজ করবে না এবং নবীনচান চাকমা ও দেবেন্দ্র চাকমার নামে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করে নিবে মর্মে অঙ্গীকার নিয়ে তাদেরকে জামিনে ছেড়ে দেয়।

উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিন ধরে লংগদু উপজেলার বগাচতর ইউনিয়নের রাঙ্গীপাড়া মুসলিম সেটেলার বাঙালিরা পার্শ্ববর্তী নবীনচান চাকমার নামে রেকর্ডভুক্ত ৩.০ একর পরিমাণ জায়গাটি বেদখল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তারই অংশ হিসেবে গত ৪ জুন ২০২০ দিবাগত রাতে রাঙ্গীপাড়ার মো: আলী আহমেদ চৌধুরী ও আব্দুল আলিম সরকার নামের দুই সেটেলার বাঙালি নবীনচান চাকমার উক্ত জমির উপর রাতের আঁধারে একটি ঘর নির্মাণ করে।

পরে নবীনচান চাকমার আবেদনের প্রেক্ষিতে ২২ জুন ২০২০ সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঙ্গে পুলিশ ফোর্স, সার্ভেয়ার, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং বাদী-বিবাদী সকলকে নিয়ে জায়গাটি পরিদর্শ করেন এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উক্ত জায়াগাটিতে কোন প্রকার কার্যক্রম না করার নির্দেশ প্রদান করা হয়।

কিন্তু ২৪ জুন ২০২০ আবারও বাঙালি সেটেলাররা সদলবলে নবীনচান চাকমার মালিকানাধীন উক্ত বিরোধপূর্ণ জায়গায় জঙ্গল পরিষ্কার করে চারা রোপণের উদ্দেশ্যে গর্ত তৈরি করে।

এরপর সহকারী কমিশনার বাদী-বিবাদী সকলকে কাগজপত্র নিয়ে ২৫ জুন ২০২০ তার কার্যালয়ে দেখা করতে বলেন। উক্ত সভায় নবীনচান চাকমা রেকর্ডীয় সমস্ত কাগজপত্র দেখাতে সক্ষম হলেও সেটেলাররা জমি ক্রয়ের সাদা কাগজে একটি দলিল ছাড়া আর কিছুই দেখাতে পারেননি বলে জানা যায়।

শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০২০

চাকমাজাতির আদিনিবাস সন্ধানে-১ - By Pulak Khisa

আমরা চাকমারা বিশ্বাস করি আমাদের পূর্বপুরুষরা এসেছে চম্পক নগর থেকে। আমাদের এই ধারণাটা চলে আসছে বংশ পরম্পরায় – বাপ-দাদা, পূর্বপুরুষদের মুখ থেকে শুনে, আমাদের ‘গেংখুলি গীত’ নামক লোকগীতি বা পালাগানের মাধ্যমে। কিন্তু ঝামেলা হলো আমরা জানিনা কোথায় এই চম্পক নগর। চাকমা জাতির ইতিহাস লিখতে গিয়ে চাকমাদের এই আদি বাসস্থান চম্পক নগরের সম্ভাব্য অবস্থান সম্পর্কে অনেক লেখালেখি হয়েছে কিন্তু চম্পক নগরের সঠিক অবস্থান নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। এই লেখাতে আমারও ক্ষুদ্র প্রয়াস থাকবে চাকমাদের চম্পক নগরের অবস্থান নির্ণয়ের জন্য। তবে চম্পক নগরের অবস্থান নির্ণয়ের আগে সম্ভবতঃ বিগত কয়েক শতাব্দীর প্রমাণযোগ্য ইতিহাস নিয়ে আমরা আলোচনা করতে পারি, যা থেকে আমরা কিছুটা ইঙ্গিত পাবো যে পার্বত্য চট্টগ্রামে আসার আগে, বা পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়াও চাকমারা কোথায় বসবাস করতো। এর অংশ হিসেবে আমরা এখানে রামু জনপদে চাকমাদের অবস্থানের উপর আলোকপাত করবো।

রামু জনপদে চাকমারা

চাকমারা বর্তমানে মূলত চট্টগ্রামের উত্তর-পূর্বে পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে বসবাস করছে। তবে তারা চট্টগ্রাম ও দক্ষিণ চট্টগ্রামে বিশেষতঃ রামু জনপদে দীর্ঘ কয়েক শতাব্দী বসবাস ও রাজত্ব করেছিল। রামু উপজেলার পটভূমিতে লেখা হয়েছে “বিশ্বখ্যাত পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক স্থান রামু। রামুতে আছে গৌরবোজ্জ্বল অতীত অধ্যায়ের স্মৃতিচিহ্ন। কালের পরিক্রমায় রাজা, রাজবংশ সবই গেছে। তবু ও এখানে টিকে আছে বেশ কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক স্মৃতিচিহ্ন” (http://ramu.coxsbazar.gov.bd/…/%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE%…)। এখানে কিন্তু বলা হচ্ছেনা রামুর রাজা, রাজবংশ কারা ছিল। রামুতে বর্তমানে চাকমারা বলতে গেলে নেই, অন্ততঃপক্ষে সদর বা শহর এলাকায়, যেখানে এককালে তাদের রাজারা বসবাস ও রাজত্ব করত। উখিয়া, টেকনাফে কিছুসংখ্যক চাকমা এখনো রয়েছে হয়তো। (যেমন ১৯৫৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক শাসনের সময় অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উখিয়ার চেনছড়িতে ফেলোরাম চাকমার বাসায় আশ্রয় নিয়েছিলেন কয়েকটা দিন (https://www.prothomalo.com/…/%E0%A6%89%E0%A6%96%E0%A6%BF%E0… )। কিন্তু এই চাকমাদের দীন-দরিদ্র, শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে পড়া অবস্থা দেখলে কেউ ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করতে পারবেনা এককালে তাদের পূর্বপুরুষরা রামুতে রাজক্ষমতায় ছিল। তবে সেখানে জায়গার নাম, সেখানকার জনশ্রুতি এখনো চাকমাদের ইতিহাসের সাথে সামঞ্জস্যতা রেখে তাদের সেখানে বসবাস ও রাজত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। এই প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক রামু জনপদের উপর সংযুক্ত ডকুমেন্টারীটি দেখা যেতে পারে (https://www.youtube.com/watch?v=9PiapWvtnGQ) । গাঁয়ের বধূ মীনা বড়ুয়ার মতে (ডকুমেন্টারীর ৯:১৫ – ৯:৪০ পর্যন্ত) বাঁকখালী নদীর দক্ষিণ পাড়ে রাজারকূল, উত্তর পাড়ে চাকমার কূল – এই দুই জনপদের সাথে জড়িয়ে রয়েছে চাকমাদের প্রথম রাজা বিজয়গিরির স্মৃতি । শুধু রাজার কূল আর চাকমার কূল ইউনিয়ন নয়, রামুতে এখনো আছে রাজার কূল ও চাকমার কূলের অনতিদূরে চাকমা রাজা ফতে খাঁর নাম অনুসারে ‘ফতে খাঁর কূল’ ইউনিয়ন (সংযুক্ত গুগুল ম্যাপে এটা দেখা যেতে পারে)।

রাঙ্গামাটিতে চাকমা রাজবাড়ির আঙিনায় এখনো রয়ে গেছে রাজার কামান ‘ফতে খাঁ’ (ছবি সংযুক্ত) https://www.jagonews24.com/feature/news/59928 । চাকমা রাজা ‘ফতে খাঁ’-র নাম অনুসারে নাকি কামানটা। না, চাকমারা সম্ভবতঃ অতো উন্নত জাতি ছিলোনা যে কামান বানাতে পারে। তবে সেই কামানটা নাকি যুদ্ধে মোগলদের থেকে হস্তগত করা হয়। অর্থাৎ চাকমারা বিনা প্রতিবাদে, বিনা প্রতিরোধে মোগলদের বৈশ্যতা স্বীকার করার মতো অতো দুর্বলও ছিলোনা, অন্ততঃ যুদ্ধে মোগলদের থেকে কামান ছিনিয়ে নেয়ার সক্ষমতাও তাদের ছিল। সেই সময়েও চাকমারা দক্ষিণ চট্টগ্রামে - রামু, কক্সবাজার, টেকনাফে বসবাস ও রাজত্ব করত। এমনকি ১৬৬৬ খ্রীস্টাব্দে চট্টগ্রামের যুদ্ধে মোগল, ডাচ, পর্তুগীজদের সমন্বিত বাহিনীর কাছে আরাকান রাজা চন্দ্র সুধর্ম (সন্দা থুধম্ম) পরাজিত হলে (https://bn.wikipedia.org/…/%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A… ) এবং চাদিগাং বা চট্টগ্রাম মোগল সাম্রাজ্যভুক্ত হলেও চাকমা রাজা ধরম্যা স্বাধীনভাবেই ছিলেন এবং পরবর্তীতে মোগলদের সাথে চাকমাদের বরং সখ্যতা হয়। ১৭১৫ খ্রীস্টাব্দে রাজা ফতে খাঁর সাথে মোগলদের বাণিজ্য চুক্তিই তার প্রত্যক্ষ নিদর্শন (স্বর্গীয় বিরাজ মোহন দেওয়ান প্রণীত “চাকমা জাতির ইতিবৃত্ত” পৃঃ ১০৪-১০৫)। এই সখ্যতার কারণে সম্ভবতঃ রাজা ধরম্যা এক মোগল রমণীর পাণি গ্রহণ করেন এবং তাঁর গর্ভে যে রাজপুত্র জন্মগ্রহণ করেন তাকে চাকমারা ‘মোগল্যা’ নামে অভিহিত করে। মোগল রমণীর বংশজাত হওয়ার কারণেই হয়তো পরবর্তী চাকমা রাজারা খাঁ উপাধি গ্রহণ করেন। যেমন মোগল্যার দুই পুত্রের নাম ছিল যথাক্রমে সুভল খাঁ ও ফতে খাঁ। তাঁদের সেনাপতির নাম কালু খাঁ। রাজা সুভল খাঁ (১৭১২) থেকে রাজা ধরমবক্স খাঁ (১৮৮২) পর্যন্ত চাকমা রাজারা খাঁ উপাধি ধারণ করেন। শুধু রাজারা নয়, চাকমাদের মধ্যে অনেক গোত্র-প্রধানও খাঁ উপাধি ব্যবহার করতেন (যেমন আমার নিজের পূর্বপুরুষদের যে বংশ তালিকা আমার হস্তগত হয়েছে তাতে ‘মাখ খাঁ’ নামে এক পূর্বপুরুষের নাম উল্লেখ আছে)।

রাজা সুভল খাঁ মাত্র তিন বছর শাসন করে মারা গেলে তার ছোট ভাই ফতে খাঁ রাজা হন। মোগলদের সাথে বাণিজ্যচুক্তি, মোগলদের থেকে হস্তগত করা কামান, তাঁর নামে অদ্যাবধি ‘ফতে খাঁর কূল’ নামে সম্পূর্ণ এক ইউনিয়নের নামকরণ ইত্যাদি থেকে মনে হয় যে রাজা ফতে খাঁ বেশ প্রভাবশালী ছিলেন। এখানে চাকমাদের জায়গার নামকরণে ‘কূল’ এবং বিশেষতঃ রাজার কূল শব্দটি বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয়। চাকমাভাষায় কোন এক বৃহৎ এলাকা, উপত্যকা বুঝাতে এখনো ‘কূল’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। যেমন – চেঙ্গী (চেঙে) নদীর অববাহিকা বুঝাতে ‘চেঙে কূল বা চেঙ্গী কূল’ ব্যবহৃত হয়, মাইনী (মেগিনি) নদীর অববাহিকা বুঝাতে ‘মেগিনি কূল’ বলা হয়। অনুরূপ ভাবে কাজলং কূল, লোগাং কূল, পুজগাং কূল ইত্যাদি। রাঙ্গামাটির অধিবাসী বুঝাতে রাঙামাত্যা কুল্যা, খাগড়াছড়ির অধিবাসী বুঝাতে খাগড়াছড়ি কুল্যা বলা হয়। অনুরূপভাবে ব্যবহৃত হয় – ঢাকা কুল্যা, কুমিল্লা কুল্যা ইত্যাদি। ‘রাজার কূল’ বলতে রাজার বসবাস করা এলাকাকে বুঝায়। যেমন ভারতের মিজোরাম বা লুসাই হিলে বসবাসকারী চাকমারা বর্তমানে রাঙ্গামাটির চাকমাদের ‘রাজ-কূল্যা’ বা রাজার কূলের চাকমা হিসেবে অভিহিত করেন, নিজেদের বলেন লুসাই হিল্যা।

রাজা ফতে খাঁ ১৭১৫ থেকে ১৭৩৭ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। রামুতে রাজারকূল, চাকমারকূল, ফতেখাঁরকুল জায়গার নামকরণ থেকে প্রতীয়মান হয় যে এসব এলাকা ঐ সময়ে তাদের শাসনাধীনে ছিল। রামুতে চাকমারা বলতে গেলে এখন আর নেই এবং থাকলেও নগণ্যসংখ্যক, কিন্তু তদসত্বেও সেখানে, কক্সবাজারে ও তার আশে পাশে এলাকায় অনেক জায়গা রয়েছে যেগুলোর নামের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামে চাকমাদের গ্রাম, এলাকার মিল রয়েছে। যেমন ধলিরছড়া, কালিছড়া, পানিরছড়া, বরইছড়া, বনিয়া ছড়া, ধওয়াপালং ছড়া, হাদরা ছড়া, ধালির ছড়া, বাহার ছড়া, হাদুর ছড়া, দোচারি ছড়া, মনিয়া ছড়া, হারবাং ছড়া, জুমছড়ি, দোছড়ি, জাংছড়ি, ফুলছড়ি, নাক্ষ্যংছড়ি, সোনাইছড়ি, হিমছড়ি, চেংছড়ি, নুনছড়ি, জয়ছড়ি, মিঠাছড়ি, করল্যাছড়ি, থিমছড়ি, নোনাছড়ি, পানছড়ি, কোয়াংছড়ি, ঘিলাতলী, কলাতলী, তুলাতলী, সিবাতলী, পাহাড়তলী, বেলতলী, জারইলতলী (জারুলতলী?), বাথতলী, শ্রীমুরা, ফকিরামুরা, চৌচুলা মুরা, করলিয়া (করল্যা?) মুরা, বালুখালী, বাঁকখালী, রাজাখালী, মনাখালী, উলটাখালী, ভারুয়াখালী, নাপিতখালী, ফাস্যাখালী, মহেশখালী, উমখালী, খনাখালী, নন্দাখালী, উখিয়ার ঘোনা, খেংচরঘোনা, কালুয়ারঘোনা, আসমারঘোনা, হাউরিঘোনা, থোলিয়াঘোনা, খেনচুর ঘোনা, লাফার ঘোনা, পানিস্যা ঘোনা, জিরানিখোলা, কাচিরখোলা, হরিতলা, মুরাপাড়া, আলিখখ্যং, হোয়াইখ্যং, জওয়ারিয়া নালা, মরিচ্যা (মারিশ্যা?), বেতবুনিয়া, কাটাবনিয়া, কচুবনিয়া, আছারবনিয়া, মেরং(মেরুং?)লোয়া, চাকমারকাটা ইত্যাদি। সবচেয়ে বিস্ময়কর হলো টেকনাফের দক্ষিণে সাগরপাড়ে ‘সাবরাং’ নামে একটা ইউনিয়ন রয়েছে যা একান্তই চাকমাদের ব্যবহৃত একটি মশলা গাছের নাম অনুসারে। এটা টেকনাফ তথা বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণ ইউনিয়ন (https://bn.wikipedia.org/…/%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A…) । সাবরাং (Lemon Basil) চাকমাদের রান্নায় নিত্য ব্যবহৃত একটি মশলা পাতা যা পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের ঘরে ঘরে চাষ হয়। অথচ সমতলে এর ব্যবহার খুব একটা দেখিনি (অতি সম্প্রতি ঢাকায় সবজি বাজারে বেশ চড়া দামে একটু-আধটু বিক্রি হচ্ছে বলে আমি লক্ষ্য করেছি)।

বৃটিশরা অষ্টাদশ শতকে যখন ভারতবর্ষে রাজত্বের সূচনা করে তখন কোলকাতা ছিল একটা গ্রাম। ঢাকার ইতিহাসও খুব বেশি প্রাচীন নয়। কিন্তু ঐতিহাসিক রামু জনপদের উপর নির্মিত সংযুক্ত ডকুমেন্টারীর মতে রামু ঠাঁই পেয়েছে ১৮৫৮ বছর আগে গ্রীক ভুগোলবিদ টলেমীর ভুগোল গ্রন্থে। চীনা পরিব্রাজক ফাহিয়েন এর ভ্রমণ-বৃত্তান্ত যদি সঠিক হয়ে থাকে তবে মহামানব গৌতমবুদ্ধ হয়তো তাঁর জীবদ্দশায় স্বশরীরে এসেছিলেন এই রামু জনপদে অথবা তিনি না এলেও তাঁর মহাপরিনির্বাণের পরে এখানে আনা হয়েছিল তাঁর বক্ষাস্থির অংশবিশেষ। গৌতমবুদ্ধের এই স্মৃতিকে ধারণ করার জন্য পরবর্তীতে মহান সম্রাট অশোক তাঁর ৮৪ হাজার ধাতুচৈত্যের একটি নির্মাণ করেছিলেন এখানে, যা এখনো বিদ্যমান রয়েছে। মহামানব বুদ্ধ ও সম্রাট অশোকের স্মৃতিবিজড়িত এমন স্বনামধন্য এক জনপদে চাকমারা রাজত্ব ও বসবাস করত ভাবতে নিজেকে নিঃসন্দেহে অনেক গৌরবান্বিত বোধ হয়। চাকমারা নিজেদের শাক্যবংশীয় হিসেবে দাবি করে। প্রশ্ন জাগে শাক্যবংশীয় হিসেবে চাকমারাই কি তাহলে রামু জনপদে নিয়ে এসেছিল নিজেদের পরমাত্মীয় শাক্যমুনি গৌতমবুদ্ধের বক্ষাস্থির অংশবিশেষ?

রামু জনপদে বসবাসকে ভিত্তি করে চাকমাদের ইতিহাস, ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি ইত্যাদির উপর বেশ কিছু জটিল প্রশ্নের উত্তর দেয়া যেতে পারে, যা আমরা পরবর্তীতে আলাপ করবো। (চলবে)।

চাকমাজাতির আদিনিবাস সন্ধানে-৩ -- By Pulak Khisa


এই পর্বে আমরা ভারতের ত্রিপুরায় চাকমাদের সম্ভাব্য চম্পকনগরের অবস্থান জানার চেষ্টা করবো যেখান থেকে চাকমাদের আদিরাজা বিজয়গিরি ও সেনাপতি রাধামন চট্টগ্রাম-রামু অঞ্চলের উদ্দেশ্যে বিজয় অভিযানে যাত্রা করেন।

চাকমারকূলে চাকমা নেই, চাকমাঘাটে চাকমা নেই
--------------------------------------------------------
আগের পর্বে আমরা দেখেছি সপ্তম শতাব্দী থেকে চট্টগ্রাম রামু এলাকায় হরিকেল রাজ্য ছিল যার রাজধানী ছিল চম্পক নগর। নবম শতাব্দীতে বিরচিত ‘কর্পূর-মঞ্জুরী’ নাটকে হরিকেলের রাজধানী হিসেবে এই নাম দেখা যায়। একমাত্র চাকমারা ছাড়া এতদঅঞ্চলের অন্য কোন জাতির এই নাম ব্যবহার করার কথা নয়। কাজেই সপ্তম শতাব্দী থেকে চাকমারা এই অঞ্চলে ছিল বলে ধারণা করা যায়। এখন আমরা দেখি চাকমাদের ইতিহাস মতে এতদঅঞ্চলে বিজয়গিরির অভিযান কখন পরিচালিত হয়েছিল। ‘চাকমা জাতির ইতিবৃত্ত’ গ্রন্থের দ্বিতীয় পরিচ্ছদের বর্ণনা মতে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছিল আনুমানিক ৫৯০ খৃষ্টাব্দে (পর্ব -৩, সংযুক্তি–১)। ষষ্ঠ শতাব্দীর একদম শেষের দিকে বিজয়গিরির চট্টগ্রাম, রামু অঞ্চলে অভিযান ও বিজয় এবং ইতিহাসের বর্ণনামতে তাদের এতদঅঞ্চলে বসতি স্থাপনের সাথে সপ্তম শতাব্দীতে এই অঞ্চলে হরিকেল রাজ্যের উত্থান এবং ঐ রাজ্যের রাজধানীর নাম তাদের প্রাচীন রাজ্য বা রাজধানী চম্পকনগরের সাথে মিল থাকা ইত্যাদির মাধ্যমে চাকমাদের ইতিহাসের সামঞ্জস্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়।
এখন আমরা দেখি রাজা বিজয়গিরি কোন অঞ্চল থেকে অভিযান পরিচালনা করেছিলেন, অর্থাৎ চট্টগ্রাম, রামু জনপদে আসার আগে বিজয়গিরির দেশ কোথায় ছিল এবং চাকমাদের ইতিহাসে বর্ণিত তাঁর অভিযান পরিচালনার বর্ণনার গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু।
বিপ্রদাস বড়ুয়া সম্পাদিত শ্রীমাধবচন্দ্র চাকমা কর্ম্মী বিরচিত ‘শ্রীশ্রীরাজনামা বা চাকমা জাতির ইতিহাস গ্রন্থ’ অনুসারে রাজা বিজয়গিরির পিতৃমহ রাজা ভীমঞ্জয়, তার পুত্র সাংবুদ্ধা, যার দুই পুত্র বিজয়গিরি ও উদয়গিরি। রাজা ভীমঞ্জয়ের কালাবাঘা নামে একজন সেনাপতি ছিল, যিনি রাজার আদেশে দিগ্বিজয় মানসে প্রভূত সৈন্য নিয়ে ‘লোহিত্য’ বা ‘কপিলা’ নদীর পরপারস্থ রাজ্যসমূহ জয় করার ইচ্ছায় ক্রমশঃ পূর্ব দক্ষিণ দিক জয় করতঃ তথায় কালাবাঘা নামে এক রাজ্য স্থাপন করেন এবং ঐ রাজ্যের প্রান্তভাগে নূতন চম্পানগর নামে এক নগর স্থাপন করে রাজধানী করেন। উক্ত গ্রন্থের টিকায় বর্ণিত হয়েছে যে ‘লোহিত্য’ বা ‘কপিলা’ নদী ব্রহ্মপুত্রের নামান্তর, যা ত্রিপুরার রাজমালার দ্বিতীয় লহর মধ্যমণির ৩১৫ নং পৃষ্ঠায়ও উল্লেখ করা হয়েছে আর অচ্যুতচরণ চৌধুরী তাঁর ‘শ্রীহট্টের ইতিহাস’ গ্রন্থে শ্রীহট্ট জিলা পূর্বে কালাবাঘা রাজ্য নামে অভিহিত হতো বলে উল্লেখ করেছেন। ‘শ্রীশ্রীরাজনামা’ গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে ভীমঞ্জয়ের মৃত্যুর পরে তাঁর পুত্র সাংবুদ্ধা রাজা হন। নূতন চম্পানগরের শাসনকর্তা সেনাপতি কালাবাঘার মৃত্যু হলে রাজা সাংবুদ্ধা তদস্থলে বিজয়গিরিকে শাসনকর্তারূপে প্রেরণ করেন। বিজয়গিরি কালাবাঘায় পৌঁছে স্বীয় আধিপত্য দৃঢ় করেন এবং দিগ্বিজয়ের জন্য এক বিশাল বাহিনী প্রস্তুত করেন। স্বর্গীয় বঙ্কিম চন্দ্র চাকমা তাঁর ‘চাকমা জাতি ও সমসাময়িক ইতিহাস’ গ্রন্থে পুরাতন আসাম প্রদেশের কিয়দংশ, শ্রীহট্ট জেলা, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণ বাড়িয়া জেলা, পার্বত্য ত্রিপুরার বৃহদংশ ও চট্টগ্রামের উত্তর অংশ নিয়ে কালাবাঘা রাজ্য গঠিত ছিলো বলে উল্লেখ করেছেন। এখন আমরা দেখি উপরিবর্ণিত স্থানে যুবরাজ বিজয়গিরি পিতৃরাজ্য থেকে দূরে দ্বিতীয় চম্পকনগরে যে তার আধিপত্য দৃঢ় করেছিলেন তাঁর প্রমাণ কতটুকু। এতদুদ্দেশ্যে গুগুল ম্যাপ থেকে নেয়া উপরে বর্ণিত স্থানসমূহের একটি মানচিত্র ‘পর্ব-৩ এর সংযুক্তি-২’ এ দেখা যেতে পারে। সংযুক্ত এই মানচিত্রে প্রাচীন কালাবাঘা নামক বর্ণিত রাজ্যের জন্য চিহ্নিত জনপদে চাকমাদের ইতিকাহিনীর সহিত সংশ্লিষ্ট নিম্নবর্ণিত স্থানসমূহ দেখা যায়, যা সংযুক্ত গুগুলম্যাপে চিহ্নিত করা হয়েছেঃ
১) বিজয়নগর – বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি উপজেলা, স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয়ের পতাকা এ ইউনিয়ন দিয়ে বাংলাদেশ প্রবেশ করেছিল বিধায় স্মারক হিসেবে ২০১০ সালে এই উপজেলার নামকরণ করা হয় বিজয়নগর। তবে আমরা পরবর্তীতে বিজয়গিরির নামের সাথে বিজয়নগরের কোন সম্পর্ক রয়েছে কিনা তা খুঁজে দেখতে পারি।
২) চম্পকনগর-১ – ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার একটি ইউনিয়ন।
৩) চম্পকনগর-২ – উপরে উল্লেখিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চম্পকনগর-১ থেকে বেশি দূরে নয়, কিন্তু ভারতের পশ্চিম ত্রিপুরায়।
৪) চাকমাঘাট – ভারতের পশ্চিম ত্রিপুরায় উপরের ৩ নং ক্রমিকে উল্লেখিত চম্পকনগরের সন্নিকটে।
৫) উদয়পুর – এর নাম ছিল রাঙ্গামাটি যা ত্রিপুরা রাজাদের বংশাবলী সংক্রান্ত গ্রন্থ ‘শ্রীরাজমালা’-র বর্ণনামতে লিকা নামক মঘ সম্প্রদায় কর্তৃক শাসিত হত। তাদের থেকে ত্রিপুরার রাজা জুঝারু ফা এই স্থান দখল করেন এবং ঐ নামে প্রায় হাজার বছর ধরে ত্রিপুরার রাজধানী ছিল। পরবর্তীতে ষোড়শ শতাব্দীতে ত্রিপুরা মহারাজ উদয় মাণিক্য রাঙ্গামাটির নাম পরিবর্তন করে নিজের নামানুসারে উদয়পুর রাখেন।
৬) চম্পকনগর-৩ – উদয়পুরের প্রায় ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে দক্ষিণ ত্রিপুরায় চম্পকনগর, বাংলাদেশের ফেনী জেলা সঙ্গলগ্ন।
৭) বিজয়নগর-২ - চম্পকনগর-৩ থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে দক্ষিণ ত্রিপুরায় চট্টগ্রাম-পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্নিকটে।
৮) রাঙ্গামাটি – সিলেটের দক্ষিণ-পূর্বে আসামের করিমগঞ্জ জেলায়।
৯) চম্পকনগর-৪ – সিলেটের পূর্বদিকে, আসামের করিমগঞ্জ।

উপরের স্থানসমূহের অবস্থান পর্যালোচনা করে কালাবাঘা রাজ্যটি যে সিলেটের সন্নিকটস্থ আসাম, ত্রিপুরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইত্যাদি অঞ্চল নিয়ে গঠিত ছিল বলে প্রতীয়মান হয়। কারণ বিভিন্ন অঞ্চলে ভাগ হওয়াতে রাজ্যটি এখন আর নেই, কিন্তু বিভক্ত অঞ্চলগুলোর প্রত্যেকটিতে সেই রাজ্যের জনপ্রিয় নগর চম্পকনগর রয়ে গেছে, সেই সাথে আছে রাঙ্গামাটি, যেটি চম্পা বা চম্পকনগরের মত প্রাচীন বঙ্গ-ভারতবর্ষের একটি প্রাচীন নগর এবং চাকমাদের একটি প্রিয় নগর, যুগে যুগে চাকমারা যেখানে গেছে হয়তো এই নগরের নামটিও সাথে নিয়ে গেছে। উপরে উল্লেখিত জায়গাগুলো সম্বন্ধে পরে বলবো। তদুপরি আগে যেমন বলা হয়েছে, কালাবাঘার চম্পকনগর হলো দ্বিতীয় চম্পকনগর। সেক্ষত্রে আমাদের কালাবাঘার আগের চম্পকনগরও খুঁজতে হবে। ভারতে, আসামে আরো চম্পকনগর, বিজয়নগর, রাঙ্গামাটি রয়ে গেছে। তবে এই মুহূর্তে আমাদের কাজ হলো ত্রিপুরা বা কালাবাঘা অঞ্চলের চম্পকনগরকে তুলে ধরা যেখান থেকে বর্তমান চাকমাদের আদিরাজা বিজয়গিরি এবং তাঁর সেনাপতি রাধামন রোয়াং বা চট্টগ্রাম-রামু অঞ্চলে অভিযান চালিয়েছিলেন।
‘চাকমা জাতির ইতিবৃত্ত’ গ্রন্থের বর্ণনা অনুসারে দেখা যায় রাজা বিজয়গিরি সেনাপতি রাধামনসহ ৭ চিমু (২৬ হাজার) সৈন্য নিয়ে রোয়াংদেশ বা চট্টগ্রাম-রামু অঞ্চলে অভিযানের জন্য তার রাজ্য থেকে দক্ষিণ দিকে গমন করেন। তদকালীন ত্রিপুরা রাজা তাঁর সাহায্যার্থে কুঞ্জধন নামে এক সেনাপতিকে একদল সৈন্যসহ রাধামনের সহকারী হিসেবে নিযুক্ত করেন। তারা প্রথমে খৈ গাং (খৈয় নদী) পার হয়ে আসেন। গেংখুলীর গানে এ বিষয়ে এভাবে উল্লেখ আছে (পর্ব-৩, সংযুক্তি–৩)-
“নাজের উল্লাসে রাধামন,
খৈ গাঙত পল্লাক্কি সৈন্যগণ”।

অর্থাৎ সৈন্যবাহিনী খৈয় নদীতে উপস্থিত হলে সেনাপতি রাধামন আনন্দ উল্লাস করেন। আমরা এখন গুগুল ম্যাপ থেকে দেখি বিজয়গিরি উপরে বর্ণিত খৈয় নদীতে উপস্থিত হওয়ার বিষয়টির গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু। এই উদ্দেশ্যে ইতোপূর্বে ক্রমিক নং - ৪ এ উল্লেখিত “চাকমাঘাট” স্থানটিকে গুগুল ম্যাপ থেকে সম্প্রসারিত আকারে সংযুক্তি-৪ ও ৫ এ দেখানো হল। স্পষ্টতই চাকমাঘাট এলাকাটি ‘খোয়াই নদী’র সাথে। বর্তমানে ঐ নদীতে বাধ দেয়া হয়েছে যা Chakmaghat Barrage নামে গুগুল ম্যাপ ও স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যাচ্ছে। স্নেহভাজন অ্যাডভোকেট Nicolas Chakma নাকি ত্রিপুরার চাকমাঘাটে বেড়াতে গিয়েছিলেন। তার কাছে শুনলাম সেখানে এখন কোন চাকমা নেই, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ধামাই গোষ্ঠীর লোকজন সেখানে বাস করে, তাদের নারীরা চাকমা নারীদের মত পিনোন-খাদি পরে, তবে তাদের পিনোনে নাকি চাবুঘী নেই। ত্রিপুরার শ্রীরাজমালা গ্রন্থে অবশ্য ধামাই জাতিকে মগজাতির শাখা বিশেষ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। রাজমালার প্রথম লহর (যুঝার খণ্ড) ৪৯ নং পৃষ্ঠায় লেখা আছে (পর্ব-৩, সংযুক্তি-৬)-
রাঙ্গামাটি দেশেতে যে লিকা রাজা ছিল ।
সহস্র দশেক সৈন্য তাহার আছিল ॥
ধামাই জাতি পুরোহিত আছিল তাহার।
অভক্ষ্য না খায়ে তারা সুভক্ষ্য ব্যভার ॥
আকাশেত ধৌত বস্ত্র তারাহ শুখায়।
শুখাইলে সেই বস্ত্র আপনে নামায় ॥
বৎসরে বৎসরে তারা নদী পূজা করে।
স্রোত যে স্তম্ভিয়া রাখে গোমতী নদীরে ॥

এখানে রাঙ্গামাটি হল লিকা সম্প্রদায় থেকে ত্রিপুরা রাজা কর্ত্তৃক অধিকৃত বর্তমান উদয়পুর যা উপরে ক্রমিক নং-৫ এ উল্লেখ করা হয়েছে। রাজমালার টিকায় লিকা এবং ধামাই দুই জাতিকে মঘ জাতির শাখা বিশেষ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে রাঙ্গামাটি নামটি নিঃসন্দেহে মূল আরাকান/মিয়ানমার থেকে আগত মঘ বা আরাকানী জাতির দেয়া নাম হতে পারেনা। আর মঘ জাতির মধ্যে ধামাই নামে কোন সম্প্রদায় আছে বলে শোনা যায়না, বরং চাকমা সম্প্রদায়ের মধ্যে ধামাই নামক গোঝা/গোষ্ঠী রয়েছে, আর চাকমারা বৌদ্ধধর্মের অনুসারী হলেও নদী বা গাঙপূজা এখনো করে, চৈত্র সংক্রান্তিতে ফুলবিঝুর দিনে নদীতে গিয়ে ফুল দিয়ে পূজা করে। অন্যদিকে চম্পকনগরের মত রাঙ্গামাটি নামটিও সম্ভবতঃ চাকমারা যেখানে গেছে সাথে নিয়ে গেছে। খুব সম্ভব সেই ষষ্ঠ শতাব্দীতে চাকমারা তখনো ‘চাকমা’ নামে এত পরিচিতি লাভ করেনি, তখনো বৌদ্ধ ধর্মের ধারক-বাহক মৌর্য সম্রাট অশোকের ‘মগধ’-এর নাম এত সুপরিচিত ছিল যে প্রাচীন বিহার, ভারত, আরাকানের যে কোন বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে সম্ভবতঃ মগ নামে অভিহিত করা হত। এ বিষয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত আলাপ করা যাবে (কারণ এত দীর্ঘ আলোচনা এক পর্বে ফেসবুকে দিলে লেখাটি একঘেঁয়ে লাগতে পারে)।

এখন ‘খৈ গাঙ’ বা ‘খোয়াই নদী’র অবস্থান জানার পরে ‘ঠেওয়া’ নামে আরেক নদীর অবস্থান আমরা খুঁজি। ‘শ্রীশ্রীরাজনামা’ গ্রন্থের মতে রোয়াং রাজ্যে পৌঁছার আগে এই নদীর তীরে প্রথম শিবির স্থাপন পূর্বক রাজা বিজয়গিরি সেনাপতি রাধামনকে মগরাজ্য আক্রমণের অনুমতি প্রদান করেন। উক্ত গ্রন্থের ৪৭ নং পৃষ্ঠার টিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, “ঠেওয়া নদী কোথায় জানা যাইতেছে না”। আমরা চাকমারা অনেক ক্ষেত্রেই অন্তস্থঃ ‘গ’-কে অ-উচ্চারণ করি। যেমন খাগড়াছড়ি জায়গাটি মূলতঃ চাকমা ভাষায় বলা হয় “হাআরাসরি’, ‘নাগরি’-কে উচ্চারণ করা হয়, ‘নাঅরি’, ‘বাগান’-কে ‘বাআন’। তাই ‘ঠেওয়া’ নদীটি চাকমা ভাষায় ‘থেআ’ হবে যা বাংলায় ‘থেগা’, ইংরেজিতে “Thega” লেখা হয়। তার অর্থ হলো বর্তমান রাঙ্গামাটি জেলা ও মিজোরাম সীমান্তে থেগা নদীর তীরে সম্ভবতঃ থেগামুখ অর্থাৎ থেগা নদী যেখানে এসে কর্ণফুলীতে মিশেছে সেই স্থানে এসে বিজয়গিরি শিবির স্থাপন করলেন। প্রশ্ন জাগে এই স্থানে এসে শিবির স্থাপন করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন কি কারণে? কারণ ছিল রোয়াং রাজ্য বা রামু ছিল সাগর তীরে, সেখানে যেতে হলে নৌপথে সাগর পাড়ি দিয়ে যেতে হবে। গেংখুলী গীত এর ভাষায়ও গাওয়া হয়েছে -

অপার পানি সাগর বেই, কুল-কিনারা দেঘা নেই,
জাদিপুজাত তে ঘি দিল, রোয়্যাঙ্গা দেঝত তে কুলেল।
(স্বর্গীয় বঙ্কিম চন্দ্র চাকমা, ‘চাকমা জাতি ও সমসাময়িক ইতিহাস’ – পৃঃ ৩২)

অর্থাৎ সাগর বেয়ে তারা রামু বা রোয়াং দেশে উপনীত হয়। এই লেখার প্রথম পর্বে যেমন উল্লেখ করেছি রামু ঠাঁই পেয়েছে ১৮৫৮ বছর আগের টলেমির ভুগোল গ্রন্থে। সেই হিসেবে আরব বণিকদের মত চাকমারাও হয়ত জানত সেখানে যেতে হবে জলপথে – থেগা, কর্ণফুলী হয়ে। কিন্তু ২৬ হাজার সৈন্য বহন করার মতো নৌকা সেই পাহাড়ি পথে সাথে বয়ে নিয়ে যাওয়া বিজয়গিরি-রাধামনদের নিশ্চয় সম্ভব ছিলোনা। তাই এই প্রস্তুতির জন্য থেগাতে তারা শিবির স্থাপন করলেন। এই শিবিরে বসে তাঁরা নৌকা তৈরি করেছিলেন কিনা জানা নেই, তবে সহজ সমাধান ছিল থেগার দুপাশের পাহাড় থেকে বাঁশ কেটে ঝটপট ভেলা তৈরি। চাকমারা সেই আদিকাল থেকে ‘কাত্তোন’ অর্থাৎ বাঁশ কাটা আর সেটা দিয়ে ভেলা তৈরিতে অভ্যস্ত, এখনো কাপ্তাই-এ বাধ দেয়ার পরে কয়েক কিলোমিটার প্রশস্ত কর্ণফুলী নদীর বুকে কিলোমিটার দীর্ঘ ভেলার সারি বানিয়ে চন্দ্রঘোনার পেপার মিলে তারা বাঁশ সরবরাহ করে। আর নৌকা ফুটো হলে ডুবে যায়, কিন্তু ভেলাতে সেই ভয় নেই। তাই ২৬ হাজার সৈন্য হয়তো ঝটপট কয়েক হাজার ভেলা বানিয়ে ফেলেছিল। ভাবতে সে এক মজার দৃশ্য হবে নিঃসন্দেহে। তবে তারপরেও রামু পর্যন্ত পৌঁছা হয়তো অত সহজ ছিলোনা। তার আগে কর্ণফুলীর মোহনায় দিয়াং (দিগাং<(চা)দিগাং?) নামক স্থানে প্রতিপক্ষ মগ রাজার সাথে যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে জয়ী হলে চাকমারা আরো দক্ষিণে রোয়াং দেশ বা রামুতে অগ্রসর হয়।

খৈ গাঙ বা খোয়াই নদী অতিক্রম করার বর্ণনা থেকে আমরা বিজয়গিরি ও রাধামন কোন চম্পকনগর থেকে থেগা-কর্ণফুলী হয়ে রোয়াং রাজ্য গমণ করেছিলেন তার ধারণা করতে পারি। সিলেটের সন্নিকটে আসামের করিমগঞ্জ জেলার চম্পকনগর থেকে ‘থেগা’ গেলে আদৌ খোয়াই নদী অতিক্রমের দরকার পড়েনা। অন্যদিকে পশ্চিম ত্রিপুরার চম্পকনগর খোয়াই নদী থেকে বেশি দূরে নয়, তাই এখান থেকে যাত্রা করলে খোয়াই নদীর তীরে পৌঁছাটা গেংখুলী গীতিকাব্যে রাধামনের আনন্দ উল্লাস করার মতো এই অভিযানের একটি মাইলফলক হতে পারে বলে বিবেচিত হয়না। তাই বিজয়গিরির বাহিনী বর্তমান বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চম্পকনগর থেকে যাত্রা করে, ত্রিপুরার রাণীর বাজার, চম্পকনগর, বড়মুড়া হয়ে তেলিয়ামুড়ার সন্নিকটে খোয়াই নদী অতিক্রম করে বলে অনুমিত হয়। গুগুল ম্যাপ থেকে থেগা পর্যন্ত এই অভিযানের সম্ভাব্য গতিপথ পর্ব-৩, সংযুক্তি-৭ ও ৮ এ পদর্শিত হল।

এখানে উল্লেখ্য হাজার বছর ধরে চাকমাদের ইতিহাস নিয়ে বংশ পরম্পরায় গান করে আসছে যে গেংখুলীরা তাদের সিংহ ভাগ ছিলেন বাংলাভাষায় অশিক্ষিত। আজকে আমরা খুব সহজেই গুগুল ম্যাপে অনুসন্ধান করে তাদের বর্ণিত ‘খৈ গাং’ এর অবস্থান এবং ত্রিপুরার চাকমাঘাট জায়গা/তালুক এর অবস্থান ও তার উপর ভিত্তি করে ত্রিপুরায় চাকমাদের চম্পকনগর অন্বেষণের চেষ্টা করছি। কিন্তু এই গেংখুলীরা হয়তো জীবনে ত্রিপুরার চম্পকনগর, খোয়াই নদী, চাকমাঘাট ইত্যাদি এলাকা ভ্রমণ করেননি, বরং উত্তরসূরী হিসেবে পূর্বপুরুষদের গাওয়া লোকগীতি বংশ পরম্পরায় গেয়ে আসছেন। তাই এগুলো তাদের নেহাৎ বানানো কাহিনী হিসেবে উড়িয়ে দেয়া সমীচিন হবেনা, বরং এগুলো সংগ্রহ করে সেখান থেকে আমাদের হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করতে হবে। আগামীপর্বে ত্রিপুরা-কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানের নামের ভিত্তিতে চাকমাদের এসব অঞ্চলে বসবাসের আরো সুস্পষ্ট প্রমাণ উপস্থাপনের প্রচেষ্টা থাকবে।

উপরের এবং এর আগের পর্বের আলোচনা সমালোচনা থেকে দেখা যায় ষষ্ঠ শতাব্দীর শেষে ত্রিপুরা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-কুমিল্লা-সিলেট অঞ্চলের চম্পকনগর থেকে চাকমারা চট্টগ্রাম-রামু অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে সম্ভবতঃ হরিকেল বা হরিখোলা নামের রাজ্য স্থাপন করে যার রাজধানীও চম্পকনগর নামে অভিহিত হয়। তাদের জাতির নামানুসারে জায়গা চাকমাঘাট, চাকমারকূল এখনো এসব অঞ্চলে এককালে তাদের শাসন, তাদের বসবাসের সাক্ষ্য বহন করে। কালের প্রবাহে চাকমাঘাট, চাকমারকুল এই দুই জায়গাতেই আর কোন চাকমা নেই। (চলবে)।

কেন আঞ্চলিক স্বায়ত্ব শাসন?

বাংলাদেশ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের শাসনতান্ত্রিক অধিকার দাবীর- আবেদন পত্র গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবী ...