মঙ্গলবার, ৯ জুলাই, ২০২৪

আনন্দ মোহন চাকমা ভাষণ

বাংলাদেশের মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে রিভিউ মামলার বিজ্ঞ অ্যাটর্নি জেনারেলের রীতি-বিরুদ্ধ ভূমিকার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০-এ অন্তর্ভুক্ত আদিবাসীদের বিশেষ অধিকার হরণের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার বরাবর পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথাগত নেতৃবৃন্দ ও সর্বসাধারণের স্মারকলিপি



মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,

আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথাগত নেতৃবৃন্দ সর্বসাধারণের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা অভিনন্দন জানাচ্ছি।

আপনি অবগত আছেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম রেডলেশন ১৬০০ যা হিল ট্র্যাটস ম্যানুয়াল শামেও পরিচিত, যেটি ফিশা ১৯ জানুয়ারী ১৯০০ সালে ফার্যকর হয়। আরপর থেকে এটি পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রশাসন সংক্রান্ত প্রধান আইশী দলিল হিসেবে কাজ করে চলেছে। পাশাপাশি এই প্রবিধানে বিভিন্ন বিধানসমূহ রয়েছে যা এই অঞ্চলের সুশাসন, ভূমি প্রাকৃতিক সম্পদের সংরক্ষণ এবং এই অঞ্চলের জনগণের সংস্কৃতি ঐতিহ্যের সুরক্ষা এবং আন্তঃপ্রজন্মগত চন্ডীর জন্য অপরিহার্য।

বলাবাহুল্য ২০০৩ সালে তৎকালীন বিএসপি সরফারের অ্যাটর্নি জেনারেল . এফ. হাসান আরিফের আবেদনের ভিডিতে হাইকোর্টের এফটি বিভাগীয় বেঞ্চ ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশনকে এফাটি "মৃত আইন'' হিসাবে ঘোষণা ফরেন (Rangamati Food Products v. Commissioner of Customs & Others, 10 BLC (2005), 525) পরবর্তীফালে এই প্রেক্ষিতে অংফালীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। ২০১৭ সালে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ শুনানি শেষে "পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০০- ফে এফটি সম্পূর্ণ "জীবিত বৈধ' আইন হিসেবে বলবৎ রাবেন (Wagachara Tea Estate Ltd. v. Muhammad Abu Taher & Others, 16 BLD (AD) (2016), 36]

কিন্তু ২০১৮ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি এবং বাগড়াছড়ি জেলার বসতি স্থাপনকারী, যথাক্রনে আব্দুল আজিজ আখন্দ এবং আব্দুর মালেক শামের দুই ব্যক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন, ১৬০০ বিষয়ক সুপ্রিম ফোর্টের আপিল বিভাগের উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে দুটি রিভিউ পিটিশন দাখিল করেন (যার সিভিল পিটিশন শম্বর যথাক্রমে 54/2018 এবং 192/2018) আদের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী ছিলেন অৎফালীন বিএনপি সরকারের পূর্বেকার নিয়োগপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল জনাব এ. এফ. হাসান আরিফ। উল্লেখ্য যে, রিভিশনকারী ব্যক্তিত্তর এই রেগুলেশন সংক্রান্ত উপরোক্ত মামলা সমূহে ফোশ পক্ষভুক্ত ছিলেন না।


সাধারণ রীতি অনুসারে সরকারের অনুকূলে মহামান্য সুপ্রিম ফোর্টের দেওয়া উনে রায়ের পক্ষে বিজ্ঞ অ্যাটর্নি জেনারেলের অবস্থান গ্রহণ করার কথা। কিন্তু আর পরিবর্তে তিনি "Raja", "Indigenous Peoples" শব্দসহ আরো কিছু শব্দ ও বাব্যাংশ বাদ দেওয়াসহ প্রথাগত আইনের (Customary Law) বিস্তারিত ব্যাখ্যা সম্বলিত সর্বমোট দশটিরও অধিক অনুচ্ছেদ বাদ দেয়ার জন্য আদালতের কাছে নৌবিফ ও লিবিয়ভাবে প্রার্থনা করেছেন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে, বিগত ২৬ জুলাই ২০২৩ আরিবে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি শাগরিক সমাজের ৩২ (বত্রিশ) ম্য বিশিষ্ট ব্যক্তি, যাদের মধ্যে ছিলেন চাকমা সাফেলের প্রধান রাজা দেবাশীষ রায় এবং প্রাক্তন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যাশ গৌতম দেওয়াশ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সমীপে স্মারকলিপি প্রদান করেন। সেই স্মারকলিপিতে আঁরা মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট এর আপিল বিভাগে পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০ সংক্রান্ত চলমান দুটি রিজিড মামলায়, রেডলেশন ও এতে স্বীকৃত আদিবাসীদের অধিকার সম্বলিত প্রচলিত আইশ, প্রথা ও রীতির মোয়ালো ও চলমান ফার্যফারিআর পক্ষে অবস্থান গ্রহণের জন্য বিজ্ঞ অ্যাটর্নি জেনারেলকে যথাযথ নির্দেশের প্রার্থনা মানান।

আঁদের ক্ষোভের ফারণ হল, সংশ্লিষ্ট রিভিউ মামলায়, বিজ্ঞ অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের অবস্থান, যা ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বিধান এবং বহু সাংস্কৃতিক, ধর্ম নিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা সংক্রান্ত সাংবিধানিক বিধানেরও পরিপন্থী।




বিজ্ঞ অ্যাটর্নি জেনারেল লিখিতভাবে যে শব্দসমূহ, বাব্যাংশ ও প্রথাগত আইনের অনুচ্ছেদসমূহ বাদ দেয়ার জন্য মহামান্য সুপ্রিম ফোর্টকে আবেদন করেছেন, আ আবেদনকারীগণের দাবী অনুসারে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের বহু সাংস্কৃতিক ও ধর্ম নিরপেক্ষ অভিন্নবিআকে দুর্বল করবে যার দ্বারা বাংলাদেশ সংবিধানের ২কা, ১২ ও ২৩ফ অনুচ্ছেদে শিহিত বৌলিফ অভিপ্রায়ের পরিপন্থী হবে।

উল্লেখ্য যে, গত ৯ যে ২০২৪ আরিবে মামলাগুলি অনাদির আলিফার শীর্ষে আসলে বিজ্ঞ অ্যাটর্সি জেনারেল আদালতফে আবারও আর পূর্বের আবেদনের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট শব্দসমূহ, বাক্যাংশ ও প্রথাগত আইনের অনুচ্ছেদসমূহ বাতিল ফরার জন্য প্রার্থশা করেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা আপনার কাছে বিশী আবে আবেদন মামাচ্ছি, যাতে বিজ্ঞ অ্যাটর্নি জেনারেলফে এই মর্মে নির্দেশ পরামর্শ প্রদান করা হয়, যাতে তিনি সংশ্লিষ্ট মামলাসমূহে পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০ এর পক্ষ অবলম্বন ফরেন, যার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের মনমানুষের অধিকার রক্ষিত হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম ১৯৯৭ এর শাস্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়া যায় এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ সমগ্র দেশের বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করা হয়।

আরিখঃ জুলাই, ২০২৪

বিশীত নিবেদক

বুধবার, ৩ জুলাই, ২০২৪

জীবন আমাদের নয়

 

১. ভূমিকা

পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন হচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের পার্বত্য এলাকায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তের জন্যে গঠিত একটি স্বাধীন সংস্থা। ১৯৯০-এর নভেম্বরে কমিশন ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং ত্রিপুরার শিবিরসমূহ পরিদর্শনের অনুমতি পায়। এই শিবিরসমূহে বর্তমানে পার্বত্য এলাকা থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হওয়া লোকজন শরণার্থী হিসাবে বসবাস করছেন।

বিশ বছরের অধিককাল যাবৎ বেসরকারী সংগঠনসমূহ বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার পাহাড়ী জনগণের ওপর সংঘটিত হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, বলপূর্বক স্থানান্তরকরণ ও সাস্কৃতিক নিপীড়নের মতো উদ্বেগজনক ঘটনার বিবরণ প্রকাশ করেছে। ১৯৮৩ সাল থেকে অন্যান্যদের সঙ্গে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, এন্টি-স্লেভারী ইন্টারন্যাশন্যাল, দ্য অরগ্যানাইজিং কমিটি চিটাগাং হিল ট্র্যাক্ট ক্যাম্পেন (নেদারল্যান্ড), Gesellschaft fur Bedrohte Volker (Germany), ইন্টারন্যাশন্যাল ওয়ার্কগ্রুপ ফর ইনডিজেনাস এ্যাফেয়ার্স (ডেনমার্ক), পার্লামেন্টারী হিউম্যান রাইটস গ্রুপ এবং সারভাইভ্যাল ইন্টারন্যাশনাল (UK) কর্তৃক রিপোর্ট প্রকাশিত হলে এসব বিবরণ অনেক বৃদ্ধি পায়।

ইউনাইটেড নেশানস ওয়ার্কিং গ্রুপ ফর ইনডিজেনাস পপুলেশান্স এবং ইন্টারন্যাশন্যাল লেবার অর্গানাইজেশান (আইএলও)-এর মত আন্তর্জাতিক ফোরামসমূহ পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত বিবৃতি পেয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, ১৯৮৫ সালে আইএলও কর্তৃক একটি অসন্তোষজনক সফরই আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রবেশ সূচিত করে। অবশ্য আইএলও-র রিপোর্টসমূহ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়, তবে ১৯৮৮ সালে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশন্যালের একটি মিশন তার তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যাদি প্রকাশ করে। এই মিশনের এক্তিয়ার সীমাবদ্ধ ছিলঃ

"পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী পাহাড়ীদের জীবন ও দৈহিক নিরাপত্তার মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের জন্য গৃহীত ব্যবস্থাদি সম্পর্কে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তথ্য সন্ধান করা।... এ ধরনের একটি সংক্ষিপ্ত সফরে (পার্বত্য চট্টগ্রামে মাত্র দু'দিন) পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার পালনের বর্তমান পরিস্থিতির সব দিক সম্পর্কে তথ্যানুসন্ধান পরিচালনা করা অ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনালের পক্ষে সম্ভব কিংবা ইচ্ছা কোনটায় ছিল না"।

সুতারাং কমিশনের ১৯৯০-৯১ সফরের মত এতো খোলামেলা কোনো তথ্যানুসন্ধান অভিযান পার্বত্য চট্টগ্রামে ইতিপূর্বে আর পরিচালিত হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে লিখিত রিপোর্টসমূহের জন্যে তথ্যাদি সংগৃহীত হয়েছে হয় ঘটনার শিকার ব্যক্তি এবং দেশ থেকে পালিয়ে আসা লোকজনের মাধ্যমে, অথবা সাংবাদিক ও অনুসন্ধানী মিশনসমূহের মাধ্যমে, যারা পাহাড়ী জনগণের সাথে কথা বলার জন্য সীমিত সুযোগ পান। পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন গঠিত হয় তথ্যের এই দুই উৎসের মধ্যে যে ফাঁক রয়েছে তা ত্রিপুরা আশ্রয় শিবিরে ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে ও খোদ পার্বত্য চট্টগ্রামে তথ্যানুসন্ধানী তদন্ত পরিচালনা করে পূরণ করার জন্য।

একটি কমিশনের চিন্তাভাবনা দেখা দেয় ১৯৮৫-এর ডিসেম্বরে যখন বাংলাদেশের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী কোপেনহেগেনের ড্যানিশ পার্লামেন্টের এক সভায় ঘোষণা করেন যে বাংলাদেশ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি কমিশনকে সানন্দে স্বাগত জানাবেন। দশ মাস পরে আমষ্টারডামে পার্বত্য চট্টগ্রামের ওপর একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বেসরকারী সংস্থাসমূহ এবং আদিবাসী জনগণের পরামর্শের ভিত্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতি সম্পর্কে তদন্তের জন্য একটি আন্তর্জাতিক কমিশন গঠনের প্রস্তাব গৃহীত হয়।

তিন বছর পরে কমিশনের সদস্যরা প্রস্তুত হন, সফরসূচী প্রস্তুত হয় এবং প্রাথমিক তথ্যাদি সংগৃহীত হয়। ১৯৮৯-এর শেষ নাগাদ পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক কমিশন গঠিত হয়। কমিশনের যুগ্ম সভাপতিদ্বয় হচ্ছেন কানাডার আইন বিষয়ক অধ্যাপক ডগলাস স্যান্ডারস্ (Douglas Sanders) এবং জার্মানীর উইলফ্রিড টেলকেম্পার (Wilfried Telkaemper) (ইউরোপিয় পার্লামেন্টের সহসভাপতি)। কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া থেকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের কর্মি রোজ মুরে (Rose Murray), নরওয়ের সামী আইনজীবী লীফ ডানফিল্ড (Leif Dunfjeld) এবং গ্রীনল্যান্ড থেকে ড্যানিশ পার্লামেন্টের প্রতিনিধি হ্যান্স প্যাভিয়া রোজিং (Hans Pavia Rosing)।

কমিশন ভারত এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে ১৯৯০ সালে ত্রিপুরা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা করে। উভয় সরকারই ধারণাটিকে নীতিগতভাবে গ্রহণ করে। কিন্তু চূড়ান্ত অনুমোদন আসে বাংলাদেশের তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট এরশাদের কাছ থেকে যিনি ব্যক্তিগতভাবে কমিশনের যুগ্ম চেয়ারম্যান হিসেবে উইলফ্রিড টেলকেম্পারকে ১৯৯০-এর অক্টোবরে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানান। নভেম্বর মাসে সফরের জন্যে কমিশন প্রস্তুত হয়।

কমিশনের সদস্যরা তথ্যানুসন্ধানে অভিজ্ঞ চার ব্যক্তিকে ভারত ও বাংলাদেশ সফরে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানান: এরা হলেন টেরেসা আপারিকো (Teresa Aparico) (ডেনমার্ক), ইয়ানাকা আরেন্স (Jenneke Arens) (নেদারল্যান্ড), অ্যান্ড্রু গ্রে (Andrew Grey) (যুক্তরাজ্য) এবং উলফগ্যাং মে (Wolfgang Mey) (জার্মানী)। দুর্ভাগ্যজনক যে, শেষ মুহূর্তে দু'জন কমিশনার লীফ ডানফিয়েল্ড এবং হ্যান্স পাভিয়া রোজিং কমিশনের সঙ্গে যেতে অসমর্থ হন। প্রথম জন শারিরীক অসুস্থতার জন্য, এবং দ্বিতীয় জন ডেনমার্কের নির্বাচনের কারণে।

কমিশন প্রথমে ভারতের ত্রিপুরা সফর করে সেখানকার ছ'টি শিবিরের উদ্বাস্তুদের সাক্ষাৎকার গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতি সম্পর্কে সরাসরি বক্তব্য লাভ করা। তারপর দলটি বাংলাদেশে যাওয়ার, পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় সফর করার, বাড়তি তথ্য সংগ্রহের এবং সেখানকার পরিস্থিতির আলোকে বক্তব্যসমূহ যাচাই করার সিদ্ধান্ত নেয়। ভারত এবং বাংলাদেশ সফরের সময় কমিশনের সদস্যগণ এবং তথ্যানুসন্ধানে অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা পরিচিত ছিলেন 'কমিশন' কিংবা 'কমিশন সদস্য' হিসেবে।

১৫ নভেম্বর কমিশন দিল্লীতে মিলিত হয় এবং ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে শিবিরগুলো সফর করার অনুমতির ব্যবস্থা করে। অনুমতি তখনই দেওয়া হয়, যখন ভারত সরকার নিশ্চিত হন যে, বাংলাদেশ সরকার কমিশনকে পার্বত্য চট্টগ্রামে ঢুকতে দেবে। কমিশন ইঙ্গিত দেয় যে ত্রাণ শিবিরের পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা কমিশনের এক্তিয়ারের অংশ নয়।

কমিশন আগরতলা যায় ২১ নভেম্বর। ত্রিপুরা সরকার কমিশনকে স্বাগত জানায় এবং সরকারী অতিথিশালায় থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। কমিশন যানবাহন এবং নিরাপত্তা প্রদানের প্রশ্নে ত্রিপুরা সরকারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। ত্রিপুরায় কমিশন আগরতলা থেকে স্থানীয় চাকমা দোভাষীদের নিয়ে ভাড়া করা বেসরকারী যানবাহনে ভ্রমণ করে। নির্দিষ্ট কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়। শুরুতে কমিশন ত্রিপুরায় ১০ দিন থাকার অনুমতি চায়, কিন্তু তাকে রাজ্যে মাত্র পাঁচদিন থাকার অনুমতি দেয়া হয়। রাজ্য সরকারের দু'জন জনসংযোগ কর্মকর্তা কমিশনের সঙ্গী হন। জনসংযোগ কর্মকর্তারা শিবিরে সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং কমিশন সদস্যদের তৎপরতাকালীন সময়ে শিবিরে উপস্থিত থাকেন। সাক্ষাৎকার গ্রহণকালে তারা উপস্থিত থাকেননি। কমিশনের সদস্যদেরকে শিবিরে টেপরেকর্ডার নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। ফলে সকল সাক্ষাৎকারের পুরো ভাষ্যই হাতে লিখে গ্রহণ করা হয়। কমিশনের পরিশ্রম বাড়লেও এতে করে সাক্ষাৎকারের গুণাগুণের কোন হেরফের হয়নি। কমিশন অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করে, এবং রাজ্য সরকারের সদস্য, শিবির কর্মকর্তা ও স্থানীয় বেসরকারী সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে সক্ষম হয়।

মূল কাজ পরিচালিত হয় ছ'টি উদ্বাস্তু শিবিরের পাঁচটিতে: টাকুমবাড়ি, করবুক, পঞ্চরামপাড়া, লেবাছড়ি এবং কাঠালছড়ি। উদ্বাস্তুদের নিজেদের নির্বাচিত ৮৫ জন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার কমিশন গ্রহণ করে। বিগত বছরে গৃহীত সাক্ষাৎকারের এলোমেলো নমুনাগুলোকে তুলনা করে কমিশন সন্তুষ্ট বোধ করে যে, যে উদ্বাস্তুদের সঙ্গে কথা বলা হয়, তারা মানবাধিকার লংঘনের শিকার হয়েছেন এমন ব্যক্তিদের একটি প্রতিনিধিত্বমূলক বৈচিত্র্য প্রদান করেন।

শিবিরে কমিশন কথা বলে কৃষক, মহিলা, ভিক্ষু ও শিক্ষকদের সঙ্গে; এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে তারা কথা বলে কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় সরকারের সাবেক সদস্যদের সঙ্গে। সাক্ষাৎকারদাতা ৮৫ জনের মধ্যে ৫২ জন পুরুষ এবং ৩৩ জন মহিলা। সবার বয়স ১৭ থেকে ৭৫ বছর। সাক্ষাতকারদাতাদের অধিকাংশ সীমান্ত অতিক্রম করেন ১৯৮৬, ১৯৮৯ এবং ১৯৯০ সালে। কমিশনের কাছে সাক্ষাৎকার প্রদানকারীদের অনেকে শিবিরের অধিবাসী হিসেবে নিবন্ধিত ছিলেন না, আবার অনেকে বহুবার বাংলাদেশে গিয়ে আবার ভারতে ফিরে এসেছেন। কমিশন শিবির সফর করার সময়েই দু'জন উদ্বাস্তু পৌঁছান, যাতে দেখা যায় যে উদ্বাস্তুরা তখনও ত্রিপুরায় পালিয়ে আসছিলেন।

পার্বত্য চট্টগ্রামের ১২টি জনগোষ্ঠির মধ্যে সাক্ষাৎকার প্রদানকারী উদ্বাস্তুদের ৬০ জন ছিলেন চাকমা, ৭ জন মারমা এবং ১৭ জন ত্রিপুরা। কমিশন একজন সাওঁতালের সাক্ষাৎকারও গ্রহণ করে। ৬৫ জন উদ্বাস্তু ছিলেন বৌদ্ধ, ১৭ জন হিন্দু এবং ৩ জন খ্রীষ্টান। এই সংখ্যাগুলো শিবিরে জাতি এবং ধর্মগত পার্থক্যের অনুপাতকে মোটামুটি প্রতিফলিত করে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) দি পিপলস্ ইউনাইটেড পার্টি- এবং তার সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনী বাংলাদেশ এবং ভারত উভয় দেশেই নিষিদ্ধ। কমিশন ভারত ও বাংলাদেশ সফরকালে কোন সময়ই জ্ঞাতসারে কোন জেএসএস কিংবা শান্তিবাহিনী সদস্যের সাক্ষাৎ পায়নি, যদিও তাদের প্রতিনিধির সাথে দেখা হলে কমিশন খুশী হত।

কমিশন শিবিরে প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ এই উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করে, যেন পার্বত্য চট্টগ্রামে সেগুলোকে যথাসম্ভব যাচাই করে নেয়া যায়। ২৯ নভেম্বর কমিশন বাংলাদেশে যাত্রা করে এবং বিদেশ মন্ত্রণালয় এবং পাহাড়ী এলাকায় প্রবেশের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিশেষ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি প্রার্থনা করে।

কমিশন ঢাকায় থাকাকালীন রাষ্ট্রপতি এরশাদ পদত্যাগ করেন। অনিশ্চিত পরিস্থিতি সত্ত্বেও মন্ত্রীরা এবং কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় অনুমোদন দেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রবেশের জন্য কমিশনকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেন চট্টগ্রাম বিভাগের উর্ধতন সামরিক কর্মকর্তা চট্টগ্রাম জেনারেল অফিসার কমাড়িং (জিওসি) ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে কমিশনের সাথে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে।

গোটা সফরকালেই বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী কমিশনের সঙ্গে যথাসম্ভব সহযোগিতা করে। নিজস্ব স্বাধীনতা বজায় রাখার জন্য কমিশন নিজের ভাড়া করা যানবাহনে যাতায়াত করে। অবশ্য কয়েকবার কমিশন সেনাবাহিনী এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের তরফ থেকে (হেলিকপ্টার, জীপ এবং স্পীড বোটের মত) যানবাহন ব্যবহারের সদয় প্রস্তাব গ্রহণ করে।

কমিশনকে পাহাড়ী এলাকায় যে কোন অংশে প্রবেশাধিকার এবং যে কারো সঙ্গে কথা বলার অনুমতি দেয়া হয়। কমিশন পার্বত্য চট্টগ্রামে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ব্যাপক অংশের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। বাঙালী জন সমাজেরও ব্যাপক প্রতিনিধিত্ব ছিল: বাঙালী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, বসতিস্থাপনকারী ও পার্বত্য এলাকায় নিয়োগ প্রাপ্ত সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা ছিলেন বাংলাদেশে কমিশনের সাক্ষাৎকার নেয়া ব্যক্তিদের ৫০ শতাংশ।

চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, পাংখুয়া এবং বম জনগোষ্ঠিসহ অনেক পাহাড়ীর সঙ্গে কমিশনের দেখা হয়। কমিশনের সদস্যরা তিনটি জেলা পরিষদের দু'টোর সভাপতি এবং সদস্য, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিনিধি, সাংস্কৃতিক এবং উন্নয়ন সংস্থার সদস্য, বৌদ্ধ, হিন্দু, খ্রীষ্টান, ছাত্র এবং গ্রামবাসীর সঙ্গে সাক্ষাত করে। শান্তিবাহিনীর অভিযানের শিকার ব্যক্তি এবং আত্মসমপর্নকারী গেরিলাদের কাছ থেকেও কমিশন সাক্ষ্য শোনে।

সামরিক বাহিনীর পরিপ্রেক্ষিতের প্রতি কমিশন বিশেষ মনযোগ দেয়। কমিশন সামরিক ব্যক্তিবর্গের সাথে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক সাক্ষাৎকার নেয়, সব মিলিয়ে আলোচনা ৬০ ঘন্টার অধিক সময়ব্যাপী চলে। (গ্রামরক্ষীদল, আনসার এবং পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার এর মধ্যে পড়ে না)।

কমিশনের পাহাড়ী এলাকায় প্রবেশের পূর্বে অনেক পাহাড়ী এবং সরকারী কর্মকর্তা আশংকা প্রকাশ করেন যে কমিশনের অবস্থানকালীন সময়ে সামরিক বাহিনী এলাকার অবস্থাকে সহনীয় পর্যায়ে (sanitise) রাখবে। বাঙ্কার ভরে ফেলার, চেকপোষ্ট তুলে নেয়ার, উপজাতীয়দের চলাফেরার ওপর বিধি নিষেধ প্রত্যাহার করার, মন্দির মেরামত করে ফেলার এবং বন্দিদের মুক্তিদানের গুজব শোনা যাচ্ছিল। তবে, সফরকালে কমিশন পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষদের অবস্থার সাময়িক উন্নতিসাধনের কোন চিহ্ন দেখতে পায়নি।

কমিশন দেখতে পায় যে, জনসংহতি সমিতির নামে একটি দলিল ছড়িয়ে দেয়ার ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু কিছু সরকারী ও সামরিক কর্মকর্তা কমিশনের নিরপেক্ষতা সম্পর্কে উদ্বগ্ন ছিলেন। এই দলিলে কমিশনের কাছে সত্য প্রকাশের জন্যে জনগণকে আহ্বান জানানো হয়। এ দলিলের ভিত্তিতে কিছু কিছু কর্মকর্তা উপসংহার টানেন যে কমিশন সামরিক কিংবা জেলা পরিষদের প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাৎ করতে আগ্রহী নয়। দলিলটি কমিশনের অজ্ঞাতে এবং অনুমতি ছাড়া বিতরণ করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের একজন সামরিক কর্মকর্তা কমিশনকে এক কপি দিলে তবেই কমিশন তাতে কি লেখা ছিল তা প্রথম দেখতে পায়। যখন এটা পরিষ্কার হয় যে কমিশন সামরিক এবং বেসামরিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার জন্য উন্মুখ, তখই সরকারী উদ্বেগের একটি কারণ দূর হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রাম সফরে কমিশন তিন সপ্তাহ ব্যয় করে। সফরের প্রথম পর্যায় (৮ থেকে ১০ ডিসেম্বর) ছিল রাঙ্গামাটি জেলায়। এখানে কমিশন রাঙ্গামাটি শহর, নানিয়াচর, লংগদু, বসন্ত পাঙ্খোয়াপাড়া, জুড়াছড়ি, কাপ্তাই এবং চিৎমরম পরিদর্শন করে। দ্বিতীয় পর্যায় (১১ থেকে ১৭ ডিসেম্বর) ছিল খাগড়াছড়ি জেলায়, যেখানে কমিশন মানিকছড়ি, গুইমারা, মাটিরাঙ্গা, খাগড়াছড়ি, দিঘীনালা, বাঘাইছড়ি, বাবুছড়া, বেতছড়ি, পানছড়ি, রামগড় এবং পথ পার্শ্বস্থ অনেক গুচ্ছগ্রাম পরিদর্শন করে। তৃতীয় পর্যায় ছিল দক্ষিণাঞ্চল বান্দরবান জেলায় (২০ থেকে ২৯ ডিসেম্বর)। এখানে কমিশন বান্দরবান, রুমা, লাপেইখ্যং, মুন্যুয়াম, বড়তলি, লামা এবং আলিকদম সফর করে। সফর শেষে কমিশন রাঙ্গামাটি ফিরে আসে এবং ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১লা জানুয়ারি পর্যন্ত অবস্থান করে। (বিস্তৃত সফরসূচীর জন্য পরিশিষ্ট-১ দেখুন)।

ফলতঃ ১৯৯০-এর ৮ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯১-এর ১লা জানুয়ারি কমিশন গোটা পাহাড়ীএলাকা সফর করে বেড়ায় (যদিও সফরের গোটা সময়ব্যাপী সব সদস্য থাকতে পারেননি), সেখানকার বাংলাদেশের সমাজের সকল স্তরের সঙ্গে কথা বলে এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত শুনতে পায়। উপরন্তু কমিশন ত্রিপুরায় বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদি যাচাই করে। প্রত্যেক ব্যাপারে শিবিরে প্রদত্ত তথ্যগুলো পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থার সাথে মিলিয়ে বস্তুনিষ্ঠভাবে যাচাই করে নেয়া সম্ভব হয়।

খাগড়াছড়ি জেলায় কমিশন বার বার বাংলাদেশ সরকারের প্রতি 'স্বতঃস্ফূর্ত' আনুগত্য প্রকাশ করে আয়োজিত পাহাড়ী লোকজন এবং বাঙালী বসতিস্থাপনকারী উভয়ের সমাবেশ দেখতে পায়। কমিশন সদস্যরা এই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে এবং তাদের সাথে থাকা সামরিক ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে নির্বিঘ্নে আলাপ করতে সক্ষম হয়। বিক্ষোভকারীদের প্রবল উৎসাহের ফলে কমিশনের কাজের অগ্রগতি এতটাই ক্ষুন্ন হয় যে, কমিশনের সদস্যদের জন্য কর্তৃপক্ষের আয়োজিত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে পৌঁছানো অসম্ভব হয়ে পড়ে এবং কমিশন তার সফরসূচীও অসমাপ্ত রাখতে বাধ্য হয়।

কিছু সংখ্যক সাংবাদিক পরবর্তীকালে মত প্রকাশ করেন যে তাঁরা কমিশন সদস্যদের সাক্ষাৎকার নিতে চেয়েছিলেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে কমিশনের জন্যে কোনো আনুষ্ঠানিক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়নি।

অনেকবার পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী লোকজন কর্তৃপক্ষের তাৎক্ষণিক উপস্থিতি এড়িয়ে কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। সেসব আলোচনার পরে তথ্য প্রদানকারীদের মধ্যে বড় আশঙ্কা দেখা দেয় যে, কথা বলার জন্যে তারা প্রতিহিংসার সম্মুখীন হবে। প্রকৃতপক্ষে খাগড়াছড়ি এবং দিঘীনালায় সংঘটিত দু'টো ঘটনা কমিশনের প্রচণ্ড উদ্বেগ বাড়িয়ে দেয় যে, হয়রানি শুরু হতে পারে। সফরের সময় কমিশনের চেয়ারম্যানদ্বয় সামরিক-বেসামরিক কর্তৃপক্ষের নিকট এই উদ্বেগ খোলাখুলি প্রকাশ করেন, এবং একবার কমিশনের কাছে তথ্য প্রদানকারী এক ব্যক্তিকে ভীতি প্রদর্শনের জন্যে এক সামরিক সদস্যকে তিরস্কার করা হয়েছে বলে জানানো হয়।

সফর শেষে অবশিষ্ট কমিশন সদস্যরা রাঙ্গামাটি এবং তারপরে স্থানীয় সরকারী কর্মকর্তা, উপজাতীয় কর্তৃপক্ষ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে আরো আলোচনা করতে খাগড়াছড়ি ব্রিগেডিয়ারের আমন্ত্রণে খাগড়াছড়ি ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। অবশ্য ৩১ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পর, রাঙ্গামাটির বাইরের একটি চেকপোষ্টে কমিশনকে থামানো হয় এবং আগে রাঙ্গামাটি ক্যান্টনমেন্টে সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়। সাক্ষাতকালে ব্রিগেড মেজর কমিশনকে জানান যে, খাগড়াছড়ি ফিরে যেতে হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নতুন করে অনুমতির প্রয়োজন হবে। তিনি বলেন যে রাঙ্গামাটিতে প্রত্যাবর্তন করাটা ছিল একটি ভুল। ১ জানুয়ারি একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্তৃক কমিশনকে নোটিশ দিয়ে বলা হয় যে সেনাবাহিনীর আদেশক্রমে কমিশনকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পার্বত্য চট্টগ্রাম ছেড়ে যেতে হবে।

জার্মানী ফিরে গিয়ে উইলফ্রিড টেলকেম্পার নির্ভরযোগ্য খবর পান যে, কমিশনের সঙ্গে যারা কথাবার্তা বলেন তাদের কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়াকে চিঠি লিখে সমস্যাটি সম্পর্কে জানান, এবং কমিশনের সাথে কথা বলার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে কাউকে যাতে কষ্ট ভোগ করতে না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে তাঁর সাহায্য চান। (পরিশিষ্ট ২ দেখুন)।

ভারত এবং বাংলাদেশ দু'দেশেই কমিশন সদস্যদেরকে সতর্ক করে দেয়া হয় যে নিরাপত্তা রক্ষীদের সাহায্য প্রত্যাখ্যান করার অর্থ তাদের জীবনের প্রতি ব্যক্তিগত ঝুঁকি নেওয়া। কিন্তু কমিশন পীড়াপীড়ি করে যে পাহাড়ী লোকজনের সঙ্গে একান্ত কথোপকথনের সময় কোন ধরনের কর্মকর্তা উপস্থিত থাকতে পারবেন না, যাতে করে তারা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারেন।

পার্বত্য চট্টগ্রামের সমাজের সকল অংশ থেকে কমিশন মৌখিক বক্তব্য সংগ্রহ করে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রত্যক্ষ প্রমাণ দেখতে পায়। সেই সব তথ্যাদির পরিপূরক হিসেবে ভারত এবং বাংলাদেশে সফর করা প্রায় সকল স্থানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ দলিল পত্র পাওয়া যায়।

১৯৭১-এর স্বাধীনতার পূর্ব থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত বিস্তৃত ঘটনাবলী সম্পর্কে কমিশন তথ্যাদি পায়। পার্বত্য চট্টগ্রামে সমাজের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে কমিশনের আলাপ আলোচনায় অনেক বিষয় বার বার ঘুরে ফিরে আসে: যেমন মানবাধিকার, সামরিকীকরণ, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অধিকার, ভূমি প্রশ্ন এবং উন্নয়ন।

এই সব বিষয় প্রতিফলিত করার জন্য বর্তমান রিপোর্টটির কাঠামো বিন্যস্ত করা হয়েছে। যা এই রিপোর্টেও সুস্পষ্ট বোঝা যাবে তা হচ্ছে যে, কমিশন মনে করে পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি পূর্বতন রিপোর্টগুলোতে যেমনটা দেখানো হয়েছে, তার চেয়ে অধিক খারাপ না হলেও, তেমনটাই খারাপ। মানবাধিকার লংঘনের প্রশ্নটি নিজ গুরুত্বেই আলাদা একটি অধ্যায় পাবে বলে আশা করা হলেও, দ্রুত স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে এর ব্যাপকতা ও তীব্রতা বিচারে এটা অসম্ভব। মানবাধিকার লঙ্ঘনই হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামে ঘটমান কাঠামোগত সহিংসতার মৌলিক উপাদান। এই রিপোর্টের প্রত্যেকটি অধ্যায়ে এই নির্যাতন প্রক্রিয়ার এক একটি দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যা কেবল পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী জনগণ নয়, অনেক বাঙালী বসতিস্থাপনকারীদেরও সবসময় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে থাকে।

কৃতজ্ঞতা স্বীকার

পার্বত্য চট্টগ্রাম ও ত্রিপুরার নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশে অনুিমতি প্রদানের জন্যে কমিশন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এবং ভারতর সরকার, পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা পরিষদসমূহ এবং ত্রিপুরা রাজ্য সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানায়।

ত্রিপুরার ক্ষেত্রে কমিশন উদ্বাস্তু শিবিরের কর্মকর্তাদেরকে এবং পার্বত্য জাতিসমূহের প্রতিনিধিদেরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই সেইসব সুযোগ সুবিধা ব্যবস্থা করার জন্যে যার কারণে ব্যাপক এবং বিভিন্ন শ্রেণীর লোকজনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ সম্ভব হয়। আমাদের গভীরতম ধন্যবাদ উদ্বাস্তুদেরকে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের সব পাহাড়ী জনগোষ্ঠিগুলোকে, যাঁরা তাদের সমস্যা সত্ত্বেও, নিদারুণ দুর্দশার মধ্যে থেকেও অসীম আত্মমর্যাদা প্রদর্শন করেছিলেন। তাদের অভিভূত করা অভ্যর্থনা, সহৃদয়তা এবং উদারতা কমিশন সদস্যদের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণ এবং অনুমতির কারণেই কমিশনের পক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রবেশ করা সম্ভব হয়েছে। কমিশন বাংলাদেশে সরকারী কর্তৃপক্ষ, বিশেষত সামরিক কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাতে চায়, পার্বত্য চট্টগ্রামের অনেক এলাকায় প্রবেশাধিকার প্রদানের জন্যে। চট্টগ্রামের জিওসি কর্ণেল জহির, মেজর হান্নান, ব্রিগেডিয়ার শরিফ আজিজ, ব্রিগেডিয়ার সালজার রহমান, ব্রিগেডিয়ার আউরাল আজিম মালিক, কর্ণেল আহসান, কর্ণেল হানিফ ইকবাল এবং কর্ণেল সাখাওয়াত হোসেনকে তাদের সময় এবং সাহায্যের জন্যে ধন্যবাদ। কমিশন ধন্যবাদ জানাতে চায় মেজর এবং লেফটেন্যান্ট কর্ণেলগণকে, অফিসার ও অন্যান্য লোকদেরকে, এবং অসংখ্য সেনা ক্যাম্প, রোড প্রোটেকশন পোষ্ট ও চেকপোষ্টের জওয়ান ও স্বেচ্ছাসেবকদেরকেও, যারা কমিশনের সফর যাতে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয় তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশেরই ইতিহাসের এক সংক্ষুদ্ধ সময়ে তাদের মূল্যবান সময় এবং প্রচেষ্টা যোগান দেন।

কমিশন বাংলাদেশের বেসামরিক কর্তৃপক্ষ, বিশেষতঃ পররাষ্ট্র এবং বিশেষ মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাতে চায় তাদের অনুমতির জন্যে। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গৌতম দেওয়ান এবং সমীরণ দেওয়ান অমূল্য তথ্য, পরামর্শ এবং আতিথেয়তা প্রদান করেন, যেমনটা তিন ডেপুটি কমিশনার জীবন আমাদের নয় করেন। সর্বশেষ ধন্যবাদ স্থানীয় সরকারী কর্মকর্তা এবং গ্রামের সাধারণ মানুষকে, যারা অত্যন্ত উঞ্চতার সঙ্গে কমিশনকে অভ্যর্থনা জানায় এবং আতিথেয়তা প্রদান করে। মানবাধিকার বিষয়টি সরকারের দায়িত্ব এবং সে হিসেবে একে একটি আভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে দেখা যেতো। কমিশন বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে সে দেশের মানুষের সমালোচনা করার জন্য নয়, বরং পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতিকে নির্মোহভাবে পর্যবেক্ষণের জন্যেই। কমিশনের সফরের পরে বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে, একটি নতুন সরকার এসেছে এবং সময় পাল্টে গেছে। কমিশন আশা করে যে এই রিপোর্টটিকে বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের ওপর একটি রায় হিসেবে দেখা হবে না, কারণ এ সরকার এতই নতুন যে পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতির জন্যে তাকে দায়ী করা যায় না, বরং দেখা হবে আলোচনার অনুঘটক হিসেবে যাতে করে একটি সত্যিকার, দীর্ঘস্থায়ী শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সমাধন পাওয়া যায়।

কমিশনের গভীর হৃদয়ানুভূতি থাকল পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের প্রতি যারা শুধুমাত্র অতীতে নিদারুণ দুঃখকষ্ট ভোগ করেননি, এখনো ভোগ করে চলেছেন। [চলবে]

 

 

সোমবার, ১ জুলাই, ২০২৪

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট রাঙ্গামাটি-এর প্রকাশনা: নন্দলাল শর্মা

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট রাঙ্গামাটি-এর প্রকাশনা[1]

অপরূপ নৈসর্গিক শোভা এবং বিচিত্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবন সংস্কৃতির লীলাভূমি হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল যুগ যুগ ধরে দেশী-বিদেশী পর্যটক, নৃতাত্ত্বিক, ভাষাবিদ অন্যান্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছে। উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ উন্নয়নের লক্ষে ১৯৭৮ সালে রাঙ্গামাটিতে প্রতিষ্ঠিত হয় উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট। ২০১০ সালে জাতীয় সংসদে 'ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন- ২০১০' পাস হলে আইনের ধারা বলে প্রতিষ্ঠানটি 'ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট' নামে পরিচিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের গবেষণা প্রকাশনা শাখা একজন সহকারী পরিচালক একজন গবেষণা কর্মকর্তা পরিচালনা করেন। এই সংস্থা ১৯৭৯ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ৭৮টি প্রকাশনা উপহার দিয়েছে। বছর ভিত্তিক প্রকাশনাগুলো হচ্ছে-

১৯৭৯: . উপজাতীয় রূপকথা লোককাহিনী এবং কিংবদন্তী, . চাকমা রূপকাহিনী।

১৯৮২: . গিরিনির্ঝর, প্রথম সংখ্যা, . গিরিনির্ঝর, দ্বিতীয় সংখ্যা, . উপজাতীয় গবেষণা পত্রিকা, প্রথম সংখ্যা।

১৯৮৩: . (একুশের সংকলন), . চাকমা, মারমা ত্রিপুরা ভাষার প্রথম পাঠ, . বিঝু, . গিরিনির্ঝর, তৃতীয় সংখ্যা।

১৯৮৪: ১০. (একুশের সংকলন), ১১. বিঝু, ১২. গিরিনির্ঝর, চতুর্থ সংখ্যা, ১৩. উপজাতীয় গবেষণা পত্রিকা, দ্বিতীয় সংখ্যা, ১৪. চাকমা ভাষা শিক্ষার প্রথম পাঠ (২য় সংস্করণ), ১৫. মারমা ভাষা শিক্ষার প্রথম পাঠ (২য় সংস্করণ), ১৬. ত্রিপুরা ভাষা শিক্ষার প্রথম পাঠ (২য় সংস্করণ)

১৯৮৫: ১৭. বিঝু, ১৮. মুক্তি (বিজয় দিবস সংকলন)

১৯৮৬: ১৯. (একুশের সংকলন), ২০. বিঝু।

১৯৮৭: ২১. গিরিনির্ঝর, পঞ্চম সংখ্যা, ২২. চাকমা ভাষা শিক্ষার প্রথম পাঠ (৩য় সংস্করণ)

১৯৮৮: ২৩. পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় ভাষা, ২৪. গিরিনির্ঝর, ষষ্ঠ সংখ্যা। ১৯৮৯: ২৫. চাকমা পূজাপার্বণ, ২৬. গিরিনির্ঝর, সপ্তম সংখ্যা।

১৯৯০: ২৭. ত্রিপুরা ভাষা বা ককবোরক ভাষার অভিধান ব্যাকরণ, ২৮. গিরিনির্ঝর, অষ্টম সংখ্যা, ২৯. ত্রিপুরা পূজাপার্বণ সুকুন্দ্রায় বুকুন্দ্রায়।

১৯৯৪: ৩০. পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রকৃতি সংস্কৃতি।

১৯৯৫: ৩১. উপজাতীয় গবেষণা পত্রিকা (১ম ২য় সংখ্যা পুনর্মুদ্রণ), ৩২. মারমা ভাষা শিক্ষার প্রথম পাঠ (পুনর্মুদ্রণ), ৩৩. ত্রিপুরা ভাষা শিক্ষার প্রথম পাঠ (পুনর্মুদ্রণ)

১৯৯৬: ৩৪. বৈসাবি, ৩৫. চাকমা ভাষার শব্দকোষ, ৩৬. চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চল তার অধিবাসীবৃন্দ, ৩৭. পার্বত্য চট্টগ্রাম লুসাই পাহাড়।

১৯৯৮: ৩৮. বৈসাবি, ৩৯. বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের আদিম জনগোষ্ঠী, ৪০.

চাকমা সমাজ সংস্কৃতি। ১৯৯৯: ৪১. বৈসাবি, ৪২. ত্রিপুরা রূপকথা, ৪৩. চম্পকনগরের সন্ধানে বিবর্তনের ধারায় চাকমা জাতি।

২০০০: ৪৪. বৈসাবি, ৪৫. চাকমা চাক ইতিহাস আলোচনা, ৪৬. চাকমা রূপকাহিনী ২য় সংস্করণ, ৪৭. চাকমা ভাষা শিক্ষার প্রথম পাঠ ৪র্থ মুদ্রণ।

২০০১: ৪৮. বৈসাবি, ৪৯ Chakma Primer (চাকমা প্রথম পাঠ)

২০০২: ৫০. বৈসাবি, ৫১. বাংলাদেশের চাকমা ভাষা সাহিত্য।

২০০৩: ৫২. বৈসাবি, ৫৩. চান্দবী বারমাস চিত্ররেখা বারমাস, ৫৪. পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থার উদ্ভব ক্রমবিকাশ। ২০০৪: ৫৫. বৈসাবি, ৫৬. উপজাতীয় গবেষণা পত্রিকা ৩য় সংখ্যা, ৫৭. রাধামন

ধনপুদি, ৫৮. উপজাতীয় রূপকথা লোককাহিনী এবং কিংবদন্তী ২য় খণ্ড।

২০০৫: ৫৯. বিজু সাংগ্রাই বৈসুক, ৬০. তঞ্চঙ্গ্যা রূপকথা লোককাহিনী এবং কিংবদন্তী, ৬১. চাকমা প্রবাদ প্রবচন বাগধারা ধাঁধা।

২০০৬: ৬২. বিঝু সাংগ্রাই বৈসুক, ৬৩. পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় নান্দনিক সংস্কৃতি, ৬৪. চাকমাদের প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ আঘরতারা বিশ্লেষণ, ৬৫. The Chakma Race.

২০০৭: ৬৬. বিজু সাংগ্রাই বৈসুক, ৬৭. পার্বত্য চট্টগ্রামের উৎসব বিবাহ, ৬৮. Pleasing Tribal Cultures in Chittagong Hill Tracts.

২০০৮: ৬৯. পার্বত্য চট্টগ্রামের বিংশ শতাব্দীর কবিতা, ৭০. বিজু সাংগ্রাই বৈসুক,

৭১. Chakma Primer (২য় মুদ্রণ)

২০০৯: ৭২. বিজু সাংগ্রাই বৈসুক বিষু, ৭৩. পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি।

২০১০: ৭৪. চাকমা ভাষা শিক্ষার প্রথম পাঠ (পুনর্মুদ্রণ), ৭৫. বিজু সাংগ্রাই বৈসুক বিষু, ৭৬. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী গবেষণা পত্রিকা ৪র্থ সংখ্যা, ৭৭. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জাদুঘর, ৭৮. Khudro Nri Gostir Museum 1

১৯৮০, ১৯৮১, ১৯৯১, ১৯৯২, ১৯৯৩ এবং ১৯৯৭ এই ছয় বছর উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট থেকে কোন গ্রন্থ বা সাময়িকী প্রকাশিত হয় নি। বিষয়ভিত্তিক প্রকাশনার সংখ্যা নিম্নরূপ:

. লোকসাহিত্য ৯টি, . সাহিত্য পত্রিকা ৮টি, . গবেষণা পত্রিকা ৫টি, . ভাষাশিক্ষার পুস্তক ৯টি, . একুশের সংকলন ৩টি, . বিঝু সংকলন ১৮টি, . বিজয় দিবস সংকলন ১টি, জ. গবেষণাগ্রন্থ (অনুবাদ সহ) ২১টি, ঝ. চাকমা বর্ণমালা শিক্ষার বই ২টি এবং ঞ, বিবিধ ২টি; মোট ৭৮টি।

ক.১ উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের প্রথম প্রকাশনা 'উপজাতীয় রূপকথা লোককাহিনী এবং কিংবদন্তী (প্রথম খণ্ড)। ইনস্টিটিউটের তৎকালীন পরিচালক অশোক কুমার দেওয়ানের সম্পাদনায় এই গ্রন্থ ১৯৭৯ সালে প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটির সহকারী সম্পাদক সুগত চাকমা, প্রচ্ছদশিল্পী পিয়ার আহাম্মদ, অঙ্গসজ্জা করেছেন রতিকান্ত তঞ্চঙ্গ্যা। বইটির ভূমিকা লিখেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক আলী হায়দর খান এবং প্রসঙ্গকথা লিখেছেন সম্পাদক। পার্বত্য অঞ্চলের লোককাহিনীর প্রথম এই সংকলনে প্রকাশিত ছয়টি রচনা হচ্ছে- চাকমা পৌরাণিক কাহিনী 'লক্ষ্মীপালা'- সুগত চাকমা; মারমা রূপকাহিনী 'মনরি মাঁসুমি'- উস্যাংমা চৌধুরী, চাক রূপকাহিনী 'আউক পধুংমাং'- মং মং চাক; খুমি কিংবদন্তি 'ভোগাকাইন'-বীরকুমার তঞ্চঙ্গ্যা; বোম কিংবদন্তি 'ভোগাকাইন'- এস.এ.প্রু এবং ত্রিপুরা রূপকাহিনী

'থাইওয়ান'- মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা।

ক.২-৩ বঙ্কিম কৃষ্ণ দেওয়ানের 'চাকমা রূপ কাহিনী' ১৯৭৯ সালে প্রকাশিত হয়েছে। বইটির ভূমিকা লিখেছেন তৎকালীন পরিচালক অশোক কুমার দেওয়ান। তাঁর লেখা থেকে জানা যায় বিভিন্ন উপজাতীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে থাকা সাহিত্যিক উপাদান সংগ্রহ ও প্রকাশের কর্মসূচি উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট গ্রহণ করেছে। গ্রন্থে

পাঁচটি চাকমা রূপকাহিনী সংকলিত হয়েছে।

গ্রন্থটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে ২০০০ সালে। এই সংস্করণে নতুন আরো পাঁচটি রূপকাহিনী গ্রন্থিত হয়েছে।

ক.৪ মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরার 'ত্রিপুরা রূপকথা' (১৯৯৯) গ্রন্থে ষোলটি ত্রিপুরা রূপকথা সংকলিত হয়েছে। রূপকথাগুলোর শিরোনাম হচ্ছে ক. নাগুই, খ. চেডুওয়াং, গ. ঘুমপুই, ঘ. বুরাসা দেবতার কাহিনী, ৩. কওয়াইতেন্দ্রেছা, চ. মাইখুলুম চামানি, ছ. রায়ুসী যামি, জ. তাকপূজা, ঝ. বানর দিয়ে নাতি পালানো, ঞ, কপালের লেখা, ট. বিশ্বাসে স্বর্গলাভ, ঠ. জরকা, ড. বনের বিড়াল ও মুরগি দুই বান্ধবী, ঢ. বাঘ ও শৃগালের কাহিনী, ৭. রাক্ষসপুরীর সন্ধানে এবং ত. কাক, হরিণ ও শৃগাল তিন বন্ধুর কাহিনী।

ক.৫ 'চান্দবী বারমাস ও চিত্ররেখা বারমাস' প্রকাশিত হয়েছে ২০০৩ সালে। বারমাস দু'টির রচয়িতা যথাক্রমে ধর্মধন চাকমা ও পুষ্পমণি চাকমা (রচনাকাল ১৯০৩)। বারমাস দু'টি চাকমা লিপি থেকে বাংলা লিপিতে রূপান্তর করেছেন সুগত চাকমা।

ক.৬ 'রাধামন ধনপুদি' প্রকাশিত হয়েছে ২০০৪ সালে। চাকমা লোকসাহিত্যে মহাকাব্য সদৃশ 'রাধামন ধনপুদি পালা'টির সম্পাদক সুগত চাকমা এবং সহযোগী সম্পাদক চিরজ্যোতি চাকমা ও সুসময় চাকমা।

ক.৭ 'উপজাতীয় রূপকথা, লোককাহিনী এবং কিংবদন্তী' ২য় খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে ২০০৪ সালে। গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন সুগত চাকমা। গ্রন্থে সংকলিত চৌদ্দটি কাহিনী হচ্ছে-'পাগলা রাজার কাহিনী' সুগত চাকমা, 'রাজপুত্র ও মন্ত্রীপুত্র'-অনুপমা রোয়াজা, 'দুলু কুমারী'- রীনা দেওয়ান, 'জোংথে'-বিলখন বম, 'টিয়া কাহিনী'- অংখ্যাইছা চাক, 'বার্গী পঝন'- বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ান, 'কলাবতী কন্যা'- শোভা ত্রিপুরা  'লিকচেঙব্রে'- শ্যান থোয়াই, 'রাজকুমারী শ্বেতহস্তী'- সুরজিৎ নারায়ণ ত্রিপুরা, 'ল্যাংঙা লাঙোনী পালা'- বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ান, 'মুলঝি কন্যা'- সুগত চাকমা, 'কেচকুমারী কন্যা'-সুগত চাকমা, 'কলাথুর কন্যা'- বীরকুমার তঞ্চঙ্গ্যা এবং 'ভেইধন পেইক'-কৃষ্ণচন্দ্র চাকমা।

. বীরকুমার তঞ্চঙ্গ্যার 'তঞ্চঙ্গ্যা রূপকথা, লোককাহিনী এবং কিংবদন্তী' ২০০৪ সালে প্রকাশিত হয়েছে। এই গ্রন্থে চারটি রূপকথা, দুটি লোককাহিনী এবং কয়েকটি ভূতে পাওয়ার কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।

. বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ানের 'চাকমা প্রবাদ প্রবচন বাগধারা ধাঁধা' গ্রন্থটি ২০০৫ সালে প্রকাশিত হয়েছে। গ্রন্থে ৩৮৬টি চাকমা প্রবাদ, ১৯২টি বাগধারা এবং ৬৮টি ধাঁধা সংকলিত হয়েছে।

. উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট থেকে প্রকাশিত সাময়িক পত্র 'পিরিনির্ঝর' মোট আট সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম দ্বিতীয় সংখ্যা প্রকাশিত হয় ১৯৮২ সালের ফেব্রুয়ারি মে মাসে। তৃতীয় সংখ্যা ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসে, ৪র্থ সংখ্যা ১৯৮৪ সালের জুন মাসে; পঞ্চম সংখ্যা ১৯৮৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে; ষষ্ঠ সংখ্যা ১৯৮৮ সালের জুন মাসে; সপ্তম সংখ্যা ১৯৮৯ সালের জুন মাসে এবং অষ্টম সংখ্যা ১৯৯০ সালের অক্টোবর মাসে প্রকাশিত হয়। প্রকাশনা অনিয়মিত হলেও আট সংখ্যা 'গিরিনির্ঝরে' অনেক মূল্যবান লেখা প্রকাশিত হয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলের সমাজ, জীবন, সংস্কৃতি সাহিত্য বিষয়ক রচনায় প্রতিটি সংখ্যাই ভরপুর। প্রথম দু'সংখ্যা গিরিনির্ঝর- এর সম্পাদনা পরিষদের সভাপতি ছিলেন ইনস্টিটিউটের তৎকালীন পরিচালক অশোক কুমার দেওয়ান। সম্পাদক ছিলেন গবেষণা প্রকাশনা শাখার তৎকালীন সহকারী পরিচালক সুগত চাকমা। এছাড়া সম্পাদনা পরিষদে ছিলেন তিনজন সদস্য বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ান, বরেন কুমার ত্রিপুরা এবং জাফার আহমাদ হানাফী। তৃতীয় চতুর্থ সংখ্যা সম্পাদনা করেছেন গবেষণা প্রকাশনা শাখার তৎকালীন সহকারী পরিচালক জাফার আহমাদ হানাফী। তৃতীয় সংখ্যায় সাময়িকী উপকমিটির সদস্য হিসেবে যাঁদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাঁরা হলেন অশোক কুমার দেওয়ান, জাফার আহমাদ হানাফী, শান্তিময় চাকমা, বীরকুমার তঞ্চঙ্গ্যা, বরেন্দ্র কুমার ত্রিপুরা, কে এস প্রু, থানজামা লুসাই, ইরা মুরুং, মং মং চাক, নন্দলাল শর্মা এবং শামসুল হুদা।

গিরিনির্ঝর পঞ্চম সংখ্যার সম্পাদনা উপকমিটিতে ছিলেন সুরেন্দ্রলাল ত্রিপুরা, শান্তিময় চাকমা, মংসানু চৌধুরী, কামাল নাসের চৌধুরী এবং নন্দলাল শর্মা। ষষ্ঠ, সপ্তম অষ্টম সংখ্যা সম্পাদনা করেন ইনস্টিটিউটের তৎকালীন পরিচালক সুরেন্দ্রলাল ত্রিপুরা। তিন সংখ্যার সহকারী সম্পাদক গবেষণা প্রকাশনা শাখার তৎকালীন সহকারী পরিচালক সাহানা দেওয়ান।

. দেশের অপরাপর জনগণের কাছে পার্বত্যাঞ্চলের জীবন মানসের স্বরূপকে উন্মোচিত করার জন্যে 'গিরিনির্ঝর' প্রকাশিত হয়। প্রথম সংখ্যার সম্পাদকীয়তে মানসম্পন্ন রচনা বেশি পাওয়া যায়নি বলা হলেও সুনির্বাচিত রচনার সমাহার এতে পরিলক্ষিত হয়। সংখ্যায় প্রকাশিত পাঁচটি প্রবন্ধ হচ্ছে অশোক কুমার দেওয়ানের 'নৃতত্ত্বের আলোকে পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি', মং মং চাক-এর 'চাক উপজাতি পরিচিতি', নন্দলাল শর্মার 'গৈরিকার সংবাদ কলামে পার্বত্য চট্টগ্রাম', এ.কে.এম মকছুদ আহমেদের 'পার্বত্য চট্টগ্রামের সাংবাদিকতা' এবং মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরার 'ত্রিপুরার মুকুটহীন রাজা সাধু রত্নমণি'। এ সংখ্যায় প্রকাশিত একমাত্র গল্প 'সোনার খনি' লিখেছেন বীরকুমার তঞ্চঙ্গ্যা; দুটি চাকমা কবিতা লিখেছেন দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান চাকমা (সুগত চাকমাকৃত বঙ্গানুবাদসহ) ও শ্যামল কান্তি তালুকদার এবং বাংলা কবিতা লিখেছেন জয়নুল আবেদীন আজাদ ও শামসুল হুদা। চাকমা কিংবদন্তি 'পাগলা রাজার কাহিনী' লিখেছেন সুগত চাকমা। চাকমা রূপকথা 'ক'বি আর ধ'বি' এবং মারমা রূপকথা 'রাজপুত্র ও মন্ত্রীপুত্র' লিখেছেন যথাক্রমে বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ান ও অনুপমা রোয়াজা। প্রথম সংখ্যার সর্বশেষ রচনা একটি একাঙ্কিকা 'সবজান্তার ভাষা বিভ্রাট' লিখেছেন বরেন ত্রিপুরা।

খ.২ দ্বিতীয় সংখ্যা গিরিনির্ঝরে প্রকাশিত পাঁচটি প্রবন্ধ হচ্ছে সুগত চাকমার 'পার্বত্য চট্টগ্রামের একজন তরুণ শাসক'; যামিনী রঞ্জন চাকমার 'সাধক শিবচরণ'; নন্দলাল শর্মার 'পমলাধন তঞ্চঙ্গ্যা ও ধর্মধ্বজ জাতক'; অশোক কুমার দেওয়ানের 'বৌদ্ধ রঞ্জিকা ও প্রসঙ্গ কথা' এবং মহেন্দ্র লাল ত্রিপুরার 'ত্রিপুরা বিবাহরীতি'। এ সংখ্যায় একটি মাত্র চাকমা কবিতা কবিকৃত বঙ্গানুবাদসহ প্রকাশিত হয়েছে। কবিতাটি হল সলিল রায়ের 'মনর কথা মনত জানে'। চাকমা কিংবদন্তি 'ননাকাজী', চাক রূপকথা 'টিয়া কাহিনী' এবং বোম রূপকথা 'জোংথে' লিখেছেন যথাক্রমে বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ান, অংখ্যাইছা চাক এবং বিলখন বোম। একটি মাত্র গল্প 'দুলুকুমারী' লিখেছেন রীনা দেওয়ান। সবশেষে একটি নিবন্ধ- 'উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট সম্পর্কে কিছু কথা'।

খ.৩ গিরিনির্ঝর তৃতীয় সংখ্যা বিষয়বস্তুর বৈচিত্র্যে ভরপুর। এ সংখ্যার প্রথম রচনা 'চট্টগ্রাম বেতারে পাহাড়িকা' একটি সচিত্র ফিচার' লিখেছেন প্রভাংশু ত্রিপুরা। 'উপজাতীয় গান' শিরোনামে ছয়টি গান বঙ্গানুবাদসহ প্রকাশিত হয়েছে। মুরুং গান, বোম গান ও তঞ্চঙ্গ্যা গান লিখেছেন যথাক্রমে মেনপুং রোয়াজা, রেডাঃ এস এল পারদো ও জ্যোৎস্না তঞ্চঙ্গ্যা। মারমা, চাকমা ও ত্রিপুরা গান লিখেছেন যথাক্রমে উচ হা, শান্তিময় চাকমা ও কাবেরী ত্রিপুরা। শেষ দুটি গানের স্বরলিপি তৈরি করেছেন যথাক্রমে সুজিত কুমার দাশ ও প্রভাংশু ত্রিপুরা। এই সংখ্যায় প্রকাশিত সাতটি প্রবন্ধ হচ্ছে যথাক্রমে নন্দলাল শর্মার 'চাকমা কবি

সলিল রায়', বরেন ত্রিপুরার 'ত্রিপুরা সমাজ অতীত ও বর্তমান', প্রদীপ চৌধুরীর

'খিয়াং উপজাতি', যোগেশ চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যার 'তঞ্চঙ্গ্যা সংস্কৃতি', সুশোভন দেওয়ানের

'গারো উপজাতির চিরাপ্পা', সজ্জিত কুমার চাকমার 'চাকমা বয়ন শিল্প' এবং শৈ চিং

প্র-এর 'মারমা সঙ্গীত ও নৃত্য'। বঙ্গানুবাদসহ চাকমা কবিতা লিখেছেন নির্মল চাকমা

ও রণজিত চাকমা এবং ত্রিপুরা কবিতা লিখেছেন মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা।

এই সংখ্যায় প্রকাশিত চারটি রূপকথা হচ্ছে শোভা ত্রিপুরার ত্রিপুরা রূপকথা 'কলাবতী কন্যা', বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ানের চাকমা রূপকথা 'বার্গী পঋন', এম, এন অঙ- এর মারমা রূপকথা 'বিষফল' এবং শ্যান থোয়াই-এর চাক রূপকথা 'লিকলেঙব্রে'। বাংলা কবিতা লিখেছেন তা চিং প্রু, জয়নুল আবেদীন আজাদ, অরুণ রায় এবং শাহরীয়ার রুমী; গান লিখেছেন আ. ল সিদ্দীক; 'রেশমী খাদি' শীর্ষক গল্প লিখেছেন সুপ্তা চাকমা; স্মৃতি কথা 'রোমস্থিত দিনগুলি' লিখেছেন উন্মেষ চাকমা। বীর কুমার তঞ্চঙ্গ্যার 'রক্ত তিলক' নাটিকা এই সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া সংযুক্ত হয়েছে চিঠিপত্র এবং ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম।

খ.৪ গিরিনির্ঝর চতুর্থ সংখ্যায় উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের উপজাতীয় সংগীত ও নৃত্য বিষয়ক সেমিনার প্রতিবেদন লিখেছেন জাফার আহমাদ হানাফী। এছাড়া প্রকাশিত হয়েছে উপজাতীয় ভাষা শিক্ষা কোর্স সম্পর্কিত প্রতিবেদন।

উপজাতীয় গান অধ্যায়ে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, চাক, পাংখো ও তঞ্চঙ্গ্যা গান বঙ্গানুবাদসহ প্রকাশিত হয়েছে। চাকমা এবং দুটি মারমা গানের গীতিকার যথাক্রমে শান্তিময় চাকমা ও ম্যামাচিং। চাকমা গানটির স্বরলিপি করেছেন সুজিত কুমার দাশ। দু'টি ত্রিপুরা গান লিখেছেন কাবেরী ত্রিপুরা রীতা। চাক ও পাংখো গান লিখেছেন যথাক্রমে মং মং চাক এবং সাংখুমা পাংখুয়া। একটি করে তঞ্চঙ্গ্যা গান লিখেছেন কার্তিক চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা এবং জ্ঞান বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা। এছাড়াও একটি রাগ প্রধান গান

লিখেছেন কবি অরুণ রায়।

এ সংখ্যায় প্রকাশিত ছয়টি প্রবন্ধ হচ্ছে যোগেশচন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যার 'তঞ্চঙ্গ্যা সমাজে বিবাহ প্রথা ও পদ্ধতি'; নন্দলাল শর্মার 'চুনীলাল দেওয়ান কবি ও গীতিকার'; রণজিৎ সিংহের 'মণিপুরী সমাজ ও সংস্কৃতি'; মংছেন চীং (মংছিন)-এর 'রাখাইন রাখোপোয়ে বা রথোৎসব'; প্রভাংশু ত্রিপুরার 'ত্রিপুরা উপজাতির বৈইসু উৎসব' এবং সুগত চাকমার

'পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় সামাজিক কাঠামো।'

এ সংখ্যায় প্রকাশিত চারটি গল্প হচ্ছে শোভা ত্রিপুরার 'মাইসির স্বপ্ন'; অভয় চাকমার 'বাস্তবের মুখোমুখি স্বপ্নের অচেতন শরীর'; নুদিবানা চাকমার 'চিক কবি' এবং বীরকুমার তঞ্চঙ্গ্যার 'দুর্যোধন তালুকদার ও নংপ বৈদ্য'।

জেলা ও উপজেলা পরিচিতি পর্যায়ে খাগড়াছড়ি জেলা ও বরকল উপজেলা

সম্পর্কে লিখেছেন যথাক্রমে সুরেন্দ্রলাল ত্রিপুরা ও এ কে এম মকছুদ আহমেদ।

বঙ্গানুবাদসহ চাকমা কবিতা লিখেছেন সুগত চাকমা, পুষ্প স্মৃতি চাকমা, বিনয় শংকর

চাকমা ও চাকমা দীপ উজ্জ্বল এবং চাক ও ত্রিপুরা কবিতা লিখেছেন যথাক্রমে অং খ্য

ইং চাক ও সুরেশ ত্রিপুরা। বাংলা কবিতা লিখেছেন জয়নুল আবেদীন আজাদ ও

শামসুল হুদা। কবি আল মাহমুদের 'সবুজ পাতা' কবিতার চাকমা অনুবাদ করেছেন

কৃষ্ণচন্দ্র চাকমা। চাকমা রূপকথা 'টুনটুনি আর হুলো বেড়াল' এবং ত্রিপুরা রূপকাহিনী 'রাজকুমারী ও শ্বেতহস্তী' লিখেছেন যথাক্রমে বঙ্কিমচন্দ্র দেওয়ান এবং সুরজিত নারায়ণ ত্রিপুরা।

সুরেন্দ্রলাল ত্রিপুরার ভ্রমণকাহিনী 'ঠেগাঠুমে একুশ দিন', শেখর দস্তিদারের আলোচনা 'বিজু উৎসব একটি সমীক্ষা', যামিনী রঞ্জন চাকমার আলোচনা 'শিবচরণ প্রসঙ্গে'; সুনীল কান্তি দে-র প্রতিবেদন 'পার্বত্য চট্টগ্রামের খেলাধুলা', হীরারানী বড়ুয়ার প্রতিবেদন 'উপজাতীয় ভাষা শিক্ষা কোর্স' ও 'উপজাতীয় রচনা প্রতিযোগিতার ফলাফল' ছাড়াও এ সংখ্যায় একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ানের 'দাগকথা' (চাকমা প্রবচন) শিরোনামে ১৮৩টি চাকমা প্রবচন প্রকাশনা।

খ.৫ পঞ্চম সংখ্যা গিরিনির্ঝরে সংকলিত হয়েছে পাঁচটি প্রবন্ধ। যথা- শেখর দস্তি দারের 'খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা: সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার', ভগদত্ত খীসার 'চাকমা লিপি ও ভাষা'; সুপ্রিয় তালুকদারের 'চাকমা সংস্কৃতির আদিরূপ'; নন্দলাল শর্মার 'কুমার কোকনদাক্ষ রায়ের নাটিকা দক্ষিণের মন্ত্র গুঞ্জরণে' এবং সুহৃদ চাকমার 'কবিতা ও আধুনিক চাকমা কবিতার পটভূমি'।

এ সংখ্যায় বাংলা কবিতা লিখেছেন রাজমাতা বিনীতা রায়, কামাল চৌধুরী ও শামসুল হুদা। চাকমা কবিতা লিখেছেন ধবল কিরণ চাকমা, বড়তোষ চাকমা এবং চাকমা গান লিখেছেন রিপন চাকমা।

বিবিধ রচনা পর্যায়ে স্মৃতিকথা 'সুবরি ফুল' লিখেছেন বীর কুমার তঞ্চঙ্গ্যা; 'পূর্বাঞ্চলে ত্রিপুরাদের আগমন' শীর্ষক আলোচনা করেছেন মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা; চাকমা কিংবদন্তি 'ও ভেইধন পেইক' লিখেছেন কৃষ্ণচন্দ্র চাকমা এবং চাকমা লোকসাহিত্য 'নরপুদি পালা' সংগ্রহ ও বঙ্গানুবাদ করেছেন বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ান।

খ.৬ গিরিনির্ঝর ষষ্ঠ সংখ্যায় প্রকাশিত পাঁচটি প্রবন্ধ হচ্ছে সুগত চাকমার 'পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় সমাজ ও সংস্কৃতির রূপরেখা'; প্রভাংশু ত্রিপুরার 'ত্রিপুরা উপজাতীয় উত্তরাধিকার আইন'; নন্দলাল শর্মার 'চাকমা ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহের ভূমিকা'; সুরেন্দ্রলাল ত্রিপুরার 'চাকমা উপজাতির ছড়া ও ছড়া গান' এবং রমণীমোহন চাকমার 'পরিবর্তনের পথে চাকমা সমাজ'।

উপজাতীয় গান পর্যায়ে বঙ্গানুবাদসহ ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা ও মারমা গান লিখেছেন যথাক্রমে সুরেশ ত্রিপুরা, লগ্নকুমার তঞ্চঙ্গ্যা ও মং প্রু চৌধুরী। চাকমা কবিতা লিখেছেন শিশির চাকমা। বঙ্গানুবাদসহ চাকমা কবিতা লিখেছেন রবি শংকর চাকমা, শ্যামল কান্তি তালুকদার ও মৃত্তিকা চাকমা। বাংলা কবিতা লিখেছেন কাজী রফিকুল হক, চারুবিকাশ চাকমা, সুপ্রিয় তালুকদার, মোহাম্মদ ইসহাক ও শাহরীয়ার রুমী। স্বরলিপিসহ বাংলা গান লিখেছেন কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া। এছাড়া গল্প লিখেছেন বীরকুমার তঞ্চঙ্গ্যা এবং চাকমা কিংবদন্তি 'রোঙাবেঙার ধুন্দাখানা' লিখেছেন বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ান।

খ.৭ সপ্তম সংখ্যা গিরিনির্ঝরে প্রকাশিত পাঁচটি প্রবন্ধ হচ্ছে নন্দলাল শর্মার 'পার্বত্য চট্টগ্রামের ছোটগল্প ও গল্পকার', সুগত চাকমার 'কিংবদন্তীর আরাকান', সুরেন্দ্রলাল ত্রিপুরার 'উপজাতিদের সামাজিক স্তর বিন্যাস', শাহরীয়ার রুমীর 'পার্বত্য চট্টগ্রামের কবিতা' এবং ভিক্ষু আর্যপ্রিয়-এর 'শিক্ষাই চরিত্র'। দুটি নিবন্ধ 'রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার প্রাথমিক শিক্ষার বিরাজমান পরিবেশ ও প্রতিকার' এবং 'উপজাতি পরিচিতি' লিখেছেন যথাক্রমে অজিত প্রসাদ চৌধুরী ও আতাউর রহমান।

সংখ্যাটিতে বাংলা কবিতা লিখেছেন কাজী রফিকুল হক, মোসলেহ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, সুপ্রিয় তালুকদার, মাকসুদুর রহমান, আলো ইসলাম, মনিরুজ্জামান এবং মৃত্তিকা চাকমা। বঙ্গানুবাদসহ চাকমা কবিতা লিখেছেন ধবল কিরণ চাকমা এবং কবিতা চাকমা। এছাড়া লোকসাহিত্য পর্যায়ে 'শিয়াল' ও 'লাঙ্যা লাঙনী পালা' (বঙ্গানুবাদসহ) উপস্থাপন করেছেন যথাক্রমে কৃষ্ণচন্দ্র চাকমা ও বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ান।

খ.৮ অষ্টম সংখ্যা গিরিনির্ঝরে প্রকাশিত দুটি প্রবন্ধ হচ্ছে সুরেন্দ্রলাল ত্রিপুরার 'পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা অগ্রগতির ইতিবৃত্ত' এবং নন্দলাল শর্মার 'পার্বত্য চট্টগ্রামের লিটল ম্যাগাজিন'। 'বর্ষপঞ্জি ত্রিপুরাব্দ: প্রাচীন সভ্যতার দলিল' এবং 'একটি রাখাইন

বিয়ে' শীর্ষক দুটি নিবন্ধ লিখেছেন যথাক্রমে প্রভাংশু ত্রিপুরা ও সুগত চাকমা। এ সংখ্যায় বাংলা কবিতা লিখেছেন কাজী রফিকুল হক, কাজী মোস্তফা মোসলেহউদ্দিন আহমদ চৌধুরী, নাজিম হাসান, আলো ইসলাম, সুপ্রিয় তালুকদার, মাকসুদুর রহমান, ভূঁইয়া মোখলেস উর রাহমান ও হীরা বড়ুয়া। বঙ্গানুবাদসহ চাকমা কবিতা লিখেছেন মৃত্তিকা চাকমা। একটি মাত্র গল্প 'কৃষ্ণচূড়ার ভালবাসা' লিখেছেন শোভা ত্রিপুরা এবং ভ্রমণকাহিনী 'তীর্থের পথে পথে' লিখেছেন বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ান।

গ. উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগ থেকে উপজাতীয় গবেষণা পত্রিকার চারটি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে যথাক্রমে ১৯৮২ সালের জুন, ১৯৮৪ সালের জুন, ২০০৪ সালে ও ২০১০ সালে। এই গবেষণা সাময়িকী উপজাতীয় অঞ্চল এবং উপজাতীয় বিষয়ক কিংবা উপজাতীয় প্রেক্ষাপটে মৌলিক গবেষণামূলক লেখা প্রকাশের উদ্দেশ্যে প্রকাশিত হয়। প্রথম সংখ্যাটির প্রধান সম্পাদক অশোক কুমার দেওয়ান এবং সহকারী সম্পাদক সুগত চাকমা। দ্বিতীয় সংখ্যাটির সম্পাদক সুরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এবং সহকারী সম্পাদক জাফার আহমাদ হানাফী। তৃতীয় সংখ্যাটি সম্পাদনা করেছেন সুগত চাকমা। চতুর্থ সংখ্যাটির সম্পাদক শুভ্রজ্যোতি চাকমা।

প্রথম সংখ্যায় প্রকাশিত হয় পাঁচটি প্রবন্ধ। এগুলো হচ্ছে সুগত চাকমার 'চাকমা বর্ণমালার ইতিবৃত্ত'; অমরেন্দ্রলাল খীসার 'পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম চাষ অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যৎ'; বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ানের 'চাকমা জাতীয় বিচার'; অশোক কুমার দেওয়ানের 'চাকমা জাতির ইতিহাসে অষ্টাদশ শতক' এবং সুরেন্দ্রলাল ত্রিপুরার 'পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় নৃত্যগীত'।

দ্বিতীয় সংখ্যায় প্রকাশিত তিনটি প্রবন্ধ হল-সুগত চাকমার 'পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু কথা'; আবদুল হক চৌধুরীর 'পার্বত্য চট্টগ্রামের মারমা উপজাতি' এবং সুরেন্দ্র লাল ত্রিপুরার 'পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজস্বের ইতিহাস'।

১৯৯৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে 'উপজাতীয় গবেষণা পত্রিকা' শিরোনামে প্রথম ও দ্বিতীয় সংখ্যা একত্রে পুনর্মুদ্রিত হয়েছে। এ সংখ্যাটিতে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান পারিজাত কুসুম চাকমার শুভেচ্ছা বাণী এবং ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সুগত চাকমার ভূমিকা সংযোজিত হয়েছে।

উপজাতীয় গবেষণা পত্রিকা তৃতীয় সংখ্যা সুগত চাকমার সম্পাদনায় ২০০৪ সালে প্রকাশিত হয়েছে। এ সংখ্যায় তিনটি প্রবন্ধ সংকলিত হয়েছে। এগুলো হচ্ছে: 'পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন ভাষা ও উপভাষার মৌলিক শব্দ সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণপূর্বক তাদের প্রাথমিক শ্রেণীকরণ'- সুগত চাকমা, 'বাংলাদেশের উপজাতীয় সমাজ ও সংস্কৃতি'- ড. জাফার আহমাদ হানাফী এবং 'পার্বত্য অঞ্চলের কৃষিঋণ ব্যবস্থা একটি সমকালীন চিত্র'- বি.এইচ. সোহরোয়ারদী।

২০১০ সালে প্রকাশিত চতুর্থ সংখ্যায় পত্রিকাটির নামকরণ হয়েছে 'ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী গবেষণা পত্রিকা'। এ সংখ্যাটি সম্পাদনা করেছেন শুভ্র জ্যোতি চাকমা। চতুর্থ সংখ্যায় প্রকাশিত তিনটি প্রবন্ধ হচ্ছে-সুগত চাকমার 'পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ভাষাসমূহের স্বর ও ব্যঞ্জনধ্বনি ন্যূনতম শব্দজোড় এবং বাকসংকেত', ইন্দুলাল চাকমার 'পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের মৎস্য সম্পদের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা' এবং সিং ইয়ং ম্রো-এর 'ম্রো-নারী: জীবন ও সংগ্রাম'।

. পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপজাতীয় জনগণের সঙ্গে যোগাযোগের লক্ষ্যে অঞ্চলে কর্মরত -উপজাতীয় কর্মকর্তা কর্মচারীদের উপজাতীয় ভাষা শিক্ষা করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়। এই উদ্দেশ্যে উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট চাকমা, মারমা ত্রিপুরা ভাষায় প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করে। রাঙ্গামাটি, বান্দরবান খাগড়াছড়িতে বেশ 'টি কোর্স পরিচালিত হয়। ভাষা শিক্ষার্থীদের জন্য ভাষা শিক্ষার বই প্রয়োজন। তাই ইনস্টিটিউট ১৯৮৩ সালে প্রকাশ করে জাফার আহমাদ হানাফী সম্পাদিত 'চাকমা মারমা ত্রিপুরা ভাষার প্রথম পাঠ, উপজাতীয় ভাষা শিক্ষা-' নামক একটি পুস্তক। পরবর্তীকালে বইটি তিনখণ্ডে বিভক্ত করে তিনটি পৃথক বই প্রকাশ করা

হয়।

. উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট পরিচালিত উপজাতীয় ভাষা শিক্ষা কোর্সের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রণীত 'চাকমা ভাষা শিক্ষার প্রথম পাঠ' দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৯৮৪ সালের নভেম্বর মাসে। এটি সম্পাদনা করেন জাফার আহমাদ হানাফী। সুগত চাকমা সম্পাদিত বইটির তৃতীয় চতুর্থ সংস্করণ প্রকাশিত হয় যথাক্রমে ১৯৮৭ সালে ২০১০ সালে।

২০১০ সালে বইটি পঞ্চমবার পুনর্মুদ্রিত হয়েছে। 'চাকমা ভাষা শিক্ষার প্রথম পাঠ' রচনা করেছেন বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ান সুগত চাকমা। গ্রন্থের ভূমিকায় চাকমা বর্ণ এবং বাংলা বর্ণের চাকমা উচ্চারণ আলোচিত হয়েছে। প্রথম অধ্যায়ে চাকমা শব্দাবলীর শ্রেণী বিভাগ ব্যুৎপত্তি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে আছে বাক্য গঠন কথোপকথন। শেষ অধ্যায়ে আছে চাকমা ব্যাকরণ। এতে স্থান পেয়েছে পদ প্রকরণ, বচন, লিঙ্গ, ধাতু ক্রিয়া, ক্রিয়ার কাল ধাতুরূপ, বাক্য, বাগধারা প্রবচন।

. 'মারমা ভাষা শিক্ষার প্রথম পাঠ' গ্রন্থটিও উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট পরিচালিত ভাষা শিক্ষা কোর্স-এর শিক্ষার্থীদের জন্য প্রণীত। বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৯৮৪ সালের নভেম্বর মাসে। এটি রচনা করেছেন থোয়াইন প্রু এবং এস প্রু; সম্পাদনা করেছেন জাফার আহমাদ হানাফী। গ্রন্থটি পাঁচটি অধ্যায়ে বিভক্ত। যথা-. শব্দাবলী, . বাক্য, . ধাঁধা ছড়া, . গল্প এবং . ব্যাকরণ। ১৯৯৫ সালে বইটি পুনর্মুদ্রিত হয়েছে।

. বরেন ত্রিপুরা সুরেন্দ্রলাল ত্রিপুরা রচিত এবং জাফার আহমাদ হানাফী সম্পাদিত 'ত্রিপুরা ভাষা শিক্ষার প্রথম পাঠ' ইনস্টিটিউট পরিচালিত উপজাতীয় ভাষা শিক্ষা কোর্সের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রণীত। বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ ১৯৮৪ সালের নভেম্বর মাসে প্রকাশিত হয়েছে। বইটি ছয়টি অধ্যায়ে বিভক্ত। যথা-. শব্দাবলী, . বাক্য, . ধাঁধা, ছড়া, কবিতা, . গল্প, . ত্রিপুরা ভাষা, . ব্যাকরণ। ১৯৯৫ সালে বইটি পুনর্মুদ্রিত হয়েছে।

. অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট তিনটি সংকলন প্রকাশ করেছে যথাক্রমে ১৯৮৩, ১৯৮৪ ১৯৮৬ সালে।

. একুশে সংকলন '' ১৯৮৩ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি জাফার আহমাদ হানাফীর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়। এটি কতিপয় সুনির্বাচিত রচনার পুনর্মুদ্রণ।

. জাফার আহমাদ হানাফী সম্পাদিত ১৯৮৪ সালে একুশে সংকলন '' তে কবি আব্দুল হাকিম, কাজী নজরুল ইসলাম, শামসুর রাহমান, আব্দুল গাফফার চৌধুরী, মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ, দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান চাকমা, আল মাহমুদ, আবু জাফর, ওবায়দুল্লাহ এবং জীবনানন্দ দাশের কবিতা সংকলিত হয়েছে।

এই সংকলনে প্রকাশিত দুটি প্রবন্ধ হচ্ছে জাফার আহমাদ হানাফী-এর 'শাশ্বত বাংলা: বাংলাদেশ' এবং নন্দলাল শর্মার 'ছোটগল্পে একুশের চেতনা: পার্বত্য চট্টগ্রামে।'

''তে গান লিখেছেন সুরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা; কবিতা লিখেছেন আবু করিম, সুগত চাকমা, ক্য শৈ প্রু, প্রদীপ তালুকদার, মো. সিরাজুল ইসলাম, বিনয় শংকর চাকমা, মং সানু, চাই থুই মারমা, মইনউদ্দীন ভূঁইয়া শাহরীয়ার রুমী। সুগত চাকমা ক্য শৈ প্র-এর কবিতা যথাক্রমে চাকমা মারমা ভাষায় রচিত এবং বঙ্গানুবাদ সংবলিত। গল্প লিখেছেন জয়নুল আবেদীন আজাদ সুসময় চাকমা।

. একুশের সংকলন '' ১৯৮৬ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হয়। এটি সম্পাদনা করেন জাফার আহমাদ হানাফী, সহ সম্পাদক সুসময় চাকমা। সংকলনে প্রকাশিত প্রবন্ধ হচ্ছে-জাফার আহমাদ হানাফী' 'বাংলা ভাষা'; সুগত চাকমার 'একুশের তাৎপর্য'; ক্য শৈ প্রু-এর 'মারমা উপজাতীয় ভাষার প্রকৃতি মারমা লোক সাহিত্য'; সুসময় চাকমার 'চাকমা রাজমহিষী কালিন্দী রানী'; রণজিৎ সিংহের 'মণিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়া ভাষা'; নন্দলাল শর্মার 'স্বাধীনতা উত্তর একুশের প্রকাশনা: পার্বত্য অঞ্চলে' এবং বীরকুমার তঞ্চঙ্গ্যার 'একুশে ফেব্রুয়ারি না আটই ফাল্গুন' স্মৃতিকথা লিখেছেন প্রতিমা চাকমা কে এম মকছুদ আহমেদ; কবিতা লিখেছেন কামাল চৌধুরী, শাহরীয়ার রুমী, বিনয় শংকর চাকমা, অভয় চাকমা, জগত জ্যোতি চাকমা, প্রতিম রায়, রোহিতাশ্ব দেওয়ান কনক শর্মা। এছাড়া প্রকাশিত হয়েছে শান্তিময় চাকমার চাকমা গান, মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরার ত্রিপুরা কবিতা, জটিল বিহারী চাকমার চাকমা ছড়া এবং কামনা ত্রিপুরার ত্রিপুরা ছড়া।

. পার্বত্য অঞ্চলের প্রধান উৎসব বিঝু চৈত্র সংক্রান্তিতে অর্থাৎ বাংলা সনের শেষ দিনে উদযাপিত হয়। চাকমারা বিঝু, মারমারা সাংগ্রাই এবং ত্রিপুরাগণ বৈসু নামে উৎসব পালন করেন। বর্ষ বিদায় বর্ষ বরণের এই মাঙ্গলিক ক্ষণটিকে ধারণ করার জন্য প্রতিবছর অনেক সংকলন প্রকাশিত হয় পার্বত্য অঞ্চলে এমনকি পার্বত্য অঞ্চলের বাইরেও। উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৬ ক্রমান্বয়ে চার বছর বিঝু সংকলন প্রকাশ করেছে 'বিষ্ণু' নামে। ১৯৯৬ এবং ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বিঝু সংকলন প্রকাশিত হয়েছে 'বৈসাবি' নামে। ২০০৫ থেকে এই সংকলন 'বিঝু সাংগ্রাই বৈসুক' নামে এবং ২০০৮ সাল থেকে 'বিঝু সাংগ্রাই বৈসুক বিষু' নামে প্রকাশিত হচ্ছে।

. জাফার আহমাদ হানাফী সম্পাদিত 'বিষ্ণু' (১৯৮৩) প্রথম রচনা ঈশ্বরচন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যার তঞ্চঙ্গ্যা গান 'চুমা ফুল' এর বাংলা অনুবাদ করেছেন সুগত চাকমা। বাংলা ভাবার্থসহ ত্রিপুরা চাকমা ভাষায় বিঝুর গান লিখেছেন যথাক্রমে মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা পুষ্পস্মৃতি চাকমা। বঙ্গানুবাদসহ মারমা গান লিখেছেন এস প্রু এবং ওমর খৈয়ামের পঁচিশটি রুবাইয়াতের চাকমা অনুবাদ করেছেন সুগত চাকমা। চাকমা কবিতা লিখেছেন চাঁদ রায়, রবিচন্দ্র চাকমা, স্মৃতি চাকমা, উকিম চাকমা ও শাশ্বত চাকমা। ত্রিপুরা কবিতা লিখেছেন হিরেন ত্রিপুরা; মারমা কবিতা লিখেছেন মঙঞোহা অঙ এবং পাইসান মারমা। বাংলা কবিতা লিখেছেন শেখর দস্তিদার। গল্প লিখেছেন শোভা ত্রিপুরা ও কুবলেশ্বর ত্রিপুরা। বিজুর অনুভূতি প্রকাশ করেছেন বীরকুমার চাকমা এবং ত্রিপুরারী বিজয় চাকমা।

চ.২ 'বিষ্ণু' (১৯৮৪) সম্পাদনা করেছেন জাফার আহমাদ হানাফী। এই সংকলনে সংকলিত হয়েছে ড. মুহম্মদ এনামুল হকের প্রবন্ধ 'বাংলা নববর্ষ বা পয়লা বৈশাখ'। 'বিঝু'তে প্রকাশিত অন্যান্য প্রবন্ধ হচ্ছে সজ্জিত কুমার চাকমার 'বিজু ও চাকমা পিঠা'; মহেন্দ্র লাল ত্রিপুরার 'ত্রিপুরাদের বুইসুক বা চৈত্র সংক্রান্তি' এবং মংছেনচীং (মংছিন) এর 'নববর্ষ ও রাখাইন সম্প্রদায়'।

এই সংকলনে মর্মার্থসহ ত্রিপুরা গরাইয়া নৃত্যের গান লিখেছেন সুরেন্দ্রলাল ত্রিপুরা; চাকমা কবিতা লিখেছেন সুগত চাকমা, রঞ্জিত চাকমা, পুষ্পস্মৃতি চাকমা ও আর্যমিত্র চাকমা; মারমা কবিতা লিখেছেন উচ হা এবং বাংলা কবিতা লিখেছেন যোগেশচন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা, আফরোজা নীলা, সুসময় চাকমা ও জাফার আহমাদ হানাফী। এছাড়া চাকমা গান লিখেছেন ধলেন্দ্র চাকমা, 'আষাঢ় মাসের পানি খাওয়া' কিংবদন্তি লিখেছেন বরেন ত্রিপুরা এবং গল্প লিখেছেন বীরকুমার তঞ্চঙ্গ্যা, শাহরীয়ার রুমী এবং রতিকান্ত তঞ্চঙ্গ্যা। ৮.৩ ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত সংকলন 'বিঝু'-এর সম্পাদক জাফার আহমাদ

হানাফী এবং সহ সম্পাদিকা সাহানা দেওয়ান। এই সংকলনে ড. মুহম্মদ এনামুল

হকের 'নববর্ষ' শীর্ষক ভাষণটি সংকলিত হয়েছে। 'ছেলেবেলার রাঙ্গামাটি' শীর্ষক স্মৃতিকথা লিখেছেন সুগত চাকমা; চাকমা কবিতা লিখেছেন জগতজ্যোতি চাকমা, প্রতিম রায় ও পুষ্পিতা খীসা। বাংলা কবিতা লিখেছেন অং সুই মারমা ও ভূঁইয়া মোখলেস উর রাহমান। ত্রিপুরা ও তঞ্চঙ্গ্যা গান লিখেছেন যথাক্রমে মহেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও দীননাথ তঞ্চঙ্গ্যা। নাগা উপকথা লিখেছেন বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ান এবং গল্প লিখেছেন শাহরীয়ার রুমী ও বিনয় শংকর চাকমা।

চ.৪ ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত 'বিঝু'-এর সম্পাদক জাফার আহমাদ হানাফী এবং সহ সম্পাদক সুসময় চাকমা। সংকলনটির সম্পাদনা পরিষদে ছিলেন সুরেন্দ্রলাল ত্রিপুরা, শান্তিময় চাকমা, জাফার আহমাদ হানাফী এবং কামাল এ নাসের চৌধুরী। এই সংকলনটিতে 'নববর্ষ উৎসব' এবং 'উপজাতীয় খেলাধুলা' শীর্ষক দুটি প্রবন্ধ

লিখেছেন যথাক্রমে জাফার আহমাদ হানাফী ও সুসময় চাকমা। বাংলা কবিতা লিখেছেন কামাল চৌধুরী, সুপ্রিয় তালুকদার, ভূঁইয়া মোখলেস উর রাহমান, আর্যমিত্র চাকমা ও জগতজ্যোতি চাকমা। চাকমা কবিতা লিখেছেন সুগত চাকমা, মৃত্তিকা চাকমা, ধবল কিরণ চাকমা, রোহিতাশ্ব দেওয়ান ও মিন্টু চাকমা এবং চাকমা গান লিখেছেন নুদিবানা চাকমা ও শান্তিময় চাকমা। বাংলা গান ও মারমা কবিতা লিখেছেন যথাক্রমে সুরেন্দ্রলাল ত্রিপুরা ও চাই সুই মারমা; চাকমা ছড়া লিখেছেন দিলীপ কুমার চাকমা। এছাড়া ভ্রমণকাহিনী 'সাজেক উপত্যকায়' লিখেছেন মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের ভৌতিক রহস্য সম্পর্কে আলোচনা করেছেন কৃষ্ণচন্দ্র চাকমা।

চ.৫ ১৯৯৬ সালের বিজু উপলক্ষে প্রকাশিত 'বৈসাবি' সম্পাদনা পরিষদেরআহ্বায়ক সুগত চাকমা এবং সদস্য মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা, প্রসূন দেওয়ান ও প্রদীপ কুমার দে। এ সংকলনে প্রকাশিত প্রবন্ধাবলী হচ্ছে সুগত চাকমার 'পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয়দের বর্ষবিদায় ও বর্ষ বরণ উৎসব', মং শে নুক মারমার 'সাংগ্রাই জলোৎসবের তাৎপর্য', অপুল ত্রিপুরার 'ত্রিপুরা জাতির বৈসুক উৎসব ও গরাইয়া নৃত্যের তাৎপর্য'; মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরার 'কাতার বা (নূতন) ত্রিপুরা নামকরণ ও আগমন সম্পর্কে কিংবদন্তি'। গল্প লিখেছেন ঐশ্বর্য চাকমা শিখী ও সুরজিৎ নারায়ণ ত্রিপুরা; কিংবদন্তি লিখেছেন বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ান (রোঙ্যা বেঙার তামাক খাওয়া), রূপকথা লিখেছেন সুগত চাকমা; বাংলা কবিতা লিখেছেন রুহুল আমীন, চাকমা কবিতা লিখেছেন ভগদত্ত খীসা, নির্বিজয় তঞ্চঙ্গ্যা, প্রদীপজয় চাকমা, স্মৃতিজীবন তালুকদার ও শিশির চাকমা; ত্রিপুরা কবিতা লিখেছেন মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা; চাকমা, তঞ্চঙ্গ্যা ও ত্রিপুরা গান লিখেছেন যথাক্রমে রূপায়ন চাকমা, ঈশ্বরচন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা ও মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা।

চ.৬ ১৯৯৮ সালে প্রকাশিত বৈসাবি সংকলনে সম্পাদকের নাম অনুল্লেখিত। এতে প্রকাশিত তিনটি প্রবন্ধ হচ্ছে বীরকুমার তঞ্চঙ্গ্যার 'বৈসাবি নূতন ভাবনা'; মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরার 'ত্রিপুরা গতির ঐতিহ্যবাহী গরয়া নৃত্য' এবং বি এইচ সোহরোয়ারদীর 'পার্বত্য চট্টগ্রামের নববর্ষ উদযাপন: বৈ সা বি প্রেক্ষিত'।

এই সংকলনে গল্প লিখেছেন শোভা ত্রিপুরা, সুগত চাকমা ও ঐশ্বর্য চাকমা; কবিতা লিখেছেন প্রিয়াঙ্কা, মৃত্তিকা চাকমা, অংসা প্রু মারমা; চাকমা গান লিখেছেন সমর চাকমা, শিশির চাকমা; চাকমা ও ত্রিপুরা কবিতা লিখেছেন যথাক্রমে চিত্রমোহন চাকমা ও মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা; রূপকথা লিখেছেন বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ান; চাকমা প্রবন্ধ 'গাঙ্যের বর পরং' লিখেছেন ঝিমিতঝিমিত চাকমা এবং চাকমা চিত্রনাটিকা 'শান্তি দেবী জদন হলা' লিখেছেন মৃত্তিকা চাকমা।

চ.৭ ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত বৈসাবি সংকলনেও সম্পাদকের নাম নেই। এতে প্রকাশিত প্রবন্ধাবলী হচ্ছে বীর কুমার তঞ্চঙ্গ্যার 'বৈসাবির আর এক গল্প', সুগত চাকমার 'বর্ষ বিদায় ও বর্ষবরণ উৎসব: বিঝু, সাংগ্রাই ও বৈসুক', মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরার 'বৈসুক উদযাপনের তাৎপর্য', বি. এইচ. সোহরোয়ারদীর 'প্রসঙ্গ: পার্বত্য অঞ্চলের নববর্ষ উদযাপন', মহেন্দ্র লাল চাকমার 'সেকালে বিঝু আর কিছু কথা', মংছেনচীং (মংছিন)-এর 'রাখাইন নববর্ষ বা সাইংক্রাইন পোয়ে বা পানিখেলা বা জলোৎসব' এবং 'বৌদ্ধধর্ম ও দর্শন' মোহিনী রঞ্জন চাকমার 'বিক্ষিপ্ত ভাবনা', লুগচান চাঙমার 'চাকমা সমাজের লোকসাহিত্যের ধারা' এবং প্রভাংশু ত্রিপুরার 'পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনাময় অঞ্চল খাগড়াছড়ি'।

এ সংকলনে গল্প লিখেছেন শোভা ত্রিপুরা ও অনন্যা চাকমা; কবিতা লিখেছেন- কমলধন তঞ্চঙ্গ্যা, শ্যামল তালুকদার, রিপরিপ চাকমা, উ এ নু (প্রিয়াংকা পুতুল), মাছানু রাখাইন; ত্রিপুরা কবিতা ও গান লিখেছেন যথাক্রমে মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা ও সুরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এবং চাকমা চিত্রনাট্য 'তুলোপুদি বাবর বুর পারানা' লিখেছেন মৃত্তিকা চাকমা।

চ.৮ 'বৈসাবি' ২০০০ সালের সংকলনেও সম্পাদকের নাম নেই। শুভেচ্ছা বাণী দিয়েছেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান চিং কিউ রোয়াজা, ভূমিকা লিখেছেন তৎকালীন পরিচালক সুপ্রিয় তালুকদার। 'বৈসাবি'তে প্রকাশিত ছয়টিপ্রবন্ধ হচ্ছে-সুগত চাকমার 'চাকমা আত্মীয়বাচক শব্দের অর্থতত্ত্ব', মোহিনীরঞ্জন চাকমার 'ঘিলাখারা/খিলাখেলা', কংজঅং চৌধুরীর 'পার্বত্য খাগড়াছড়ির মঙ্ রাজ পরিবার', ঝিমিত ঝিমিত চাকমার 'নাহ্', মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরার 'বুইসুকনি সালো (বিঝুর দিনে)', শ্রীবীর কুমার তঞ্চঙ্গ্যার 'অন্যরকম বিষ্ণু' এবং শোভা ত্রিপুরার গল্প 'কাঁঠালচাঁপার বনের বউ' ছাড়াও সংকলনে বাংলা কবিতা লিখেছেন শ্যামল তালুকদার, শোভা ত্রিপুরা, তাপস দাশ, প্রিয়াংকা পুতুল ও রিপরিপ চাকমা; চাকমা কবিতা লিখেছেন মৃত্তিকা চাকমা, অংছাইন চাক, লগ্নকুমার তঞ্চঙ্গ্যা, পারমিতা তঞ্চঙ্গ্যা, লুগচান চাকমা ও কিশলয় চাকমা; ত্রিপুরা কবিতা ও গান লিখেছেন মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা এবং চাকমা নাটিকা 'গুনমনে ইস্কুলত যেব' লিখেছেন মৃত্তিকা চাকমা।

চ.৯ 'বৈসাবি' ২০০১ সালের সংকলনে শুভেচ্ছা বাণী দিয়েছেন চিং কিউ রোয়াজা, ভূমিকা লিখেছেন সুপ্রিয় তালুকদার। সম্পাদকের নাম অনুল্লেখিত সংকলনে প্রকাশিত পাঁচটি প্রবন্ধ হচ্ছে- সুগত চাকমার 'সাগরতীরে চাকমা গ্রামে', বীরকুমার তঞ্চঙ্গ্যার 'বিঝু যেই গল্পের শেষ নেই', কংজঅং চৌধুরী লিংকনের 'বৌদ্ধ দর্শনে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য ও গণতন্ত্র', মোহিনীরঞ্জন চাকমার 'বৌদ্ধধর্মের পরম লক্ষ্য নির্বাণ' এবং ঝিমিত ঝিমিত চাকমার 'সংসমার' (চাকমা প্রবন্ধ)। সংকলনে চাকমা কবিতা লিখেছেন তরুণ কুমার চাকমা, রনেল চাকমা, অংছাইন চাক, নিমাই চাকমা, প্রিয়জীবন চাকমা ও করুণাশীষ চাকমা; বাংলা কবিতা লিখেছেন শোভা ত্রিপুরা, শ্যামল তালুকদার, মুহাম্মদ ফোরকান, রিপরিপ চাকমা ও পারমিতা তঞ্চঙ্গ্যা এবং চাকমা নাটক 'জোয্য' লিখেছেন মৃত্তিকা চাকমা।

চ.১০ 'বৈসাবি' ২০০২ সালের সংকলনে শুভেচ্ছা বাণী দিয়েছেন ড. মানিকলাল দেওয়ান, ভূমিকা লিখেছেন সুপ্রিয় তালুকদার। সম্পাদকের নাম অনুল্লেখিত। সংকলনে প্রকাশিত চারটি বাংলা প্রবন্ধ হচ্ছে সুগত চাকমার 'বিষ্ণু'-র কিছু স্মৃতি এবং প্রাসঙ্গিক কথা', মোহিনীরঞ্জন চাকমার 'বৈসাবি অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ', মথুরা ত্রিপুরার 'প্রজন্মের চোখে চাকমা সমাজ ও সংস্কৃতি' এবং থোঁ ক্রো-এর 'রাখাইন মাহা সাংগ্রে'; একমাত্র চাকমা প্রবন্ধ হচ্ছে-ঝিমিত ঝিমিত চাকমার 'আনঝিব'। সংকলনে চাকমা কবিতা লিখেছেন শ্যামল তালুকদার, তরুণ কুমার চাকমা, নিকোলাই চাকমা, রনেল চাকমা, পহেলা চাকমা, নিসান চাকমা, পিয়া চাকমা ও নীলোৎপল চাকমা; বাংলা কবিতা লিখেছেন রিপরিপ চাকমা, শোভা ত্রিপুরা, পারমিতা তঞ্চঙ্গ্যা, টিনু চৌধুরী, উ এ নু (প্রিয়াংকা পুতুল); ত্রিপুরা কবিতা 'সাচালাংরাজা' (বসন্তরাজ) লিখেছেন মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা; চাকমা গান লিখেছেন চিত্রমোহন চাকমা, মিতা চাকমা, বিশ্বনাথ চাকমা এবং চাকমা নাটক 'পার্বতীর মা' লিখেছেন মৃত্তিকা চাকমা।

চ.১১ 'বৈসাবি' ২০০৩ সালের সংকলনে শুভেচ্ছা বাণী দিয়েছেন তৎকালীন উপমন্ত্রী মণি স্বপন দেওয়ান, ড. মানিক লাল দেওয়ান ও সুজিত দেওয়ান। সম্পাদকের নাম অনুল্লেখিত হলেও সম্পাদকীয় লিখেছেন সুগত চাকমা। সংকলনে বাংলা প্রবন্ধ লিখেছেন-মুজিবুল হক বুলবুল (বিঝু পাখীর ডাকে, বৈসাবি আসে), সুগত চাকমা (রাধামন ধনপুদি ব্যালাডে কিশোরী ধনপুদির এক বিঝু দিনের কাহিনী), মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা (ত্রিপুরা পল্লীতে বৈসুক উদযাপন), হীরা রানী বড়ুয়া (আমার জানা বিউ পরব), আর্যমিত্র চাকমা (চাকমা বারমাসীর উদ্ভব ও বিকাশের ধারায় মা বাববারমাস) ও প্রভাংশু ত্রিপুরা (ত্রিপুরা জনজীবনে তাদের বর্ষপঞ্জি ত্রিপুরাব্দের প্রভাব); রূপকাহিনী লিখেছেন কৃষ্ণচন্দ্র চাকমা (গুঅচ্যেলা বলী) ও সুরজিৎ নারায়ণ ত্রিপুরা (গুম চাক জামা চিনার কুমারী); স্মৃতিচারণ করেছেন রমণীমোহন চাকমা (সেই হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি); চাকমা গান লিখেছেন রিপন চাকমা ও ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা; তঞ্চঙ্গ্যা গান লিখেছেন ঈশ্বরচন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা; ত্রিপুরা গান লিখেছেন সুরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা; বাংলা কবিতা লিখেছেন মঈন উদ্দিন ভূঁইয়া, শ্যামল তালুকদার, পারমিতা তঞ্চঙ্গ্যা ও শোভা ত্রিপুরা এবং বাংলা অনুবাদসহ চাকমা কবিতা লিখেছেন অং ছাইন চাক।

চ.১২ 'বৈসাবি' ২০০৪ সালের সংকলনে ভূমিকা লিখেছেন সুগত চাকমা। সম্পাদকের নাম অনুল্লেখিত। সংকলনে প্রকাশিত প্রবন্ধ হচ্ছে মধুমঙ্গল চাকমার 'বিঝুর গুরুত্ব ও তাৎপর্য', মুজিবুল হক বুলবুলের 'রাংগাবি রাংগামাটি', সিদ্ধার্থ কুমার তঞ্চঙ্গ্যার 'তঞ্চঙ্গ্যা বিবাহ প্রথা ও পদ্ধতি', সুসময় চাকমার 'প্রসংগ চাকমাদের আঘরতারা', মঈন উদ্দীন ভূঁইয়ার 'রাংগামাটি নগর পরিকল্পনা ও বৃক্ষের নান্দনিক পরিচর্যা' ও প্রদীপ কুমার দে-র 'রাঙ্গামাটিস্থ উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠা, উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম সম্পর্কে দুটি কথা'; লোককাহিনী লিখেছেন সুগত চাকমা (মালোক্সিমা এবং নিশাঙ্যা ও চূচ্যাঙ্যার গল্প), কৃষ্ণচন্দ্র চাকমা (গণচঅ পজ্জন) ও মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা (হে মা গোমতী নদী); চাকমা গান লিখেছেন ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা, শ্যামল তালুকদার, সুশান্ত চাকমা ও সলিল রায়; ত্রিপুরা গান লিখেছেন জীবন রোয়াজা; চাক গান লিখেছেন অং ছাইন চাক; বাংলা কবিতা লিখেছেন পারমিতা তঞ্চঙ্গ্যা, রাঙাবী তঞ্চঙ্গ্যা ও আজাদ বুলবুল; চাকমা কবিতা লিখেছেন পরিমল বিকাশ চাকমা, চিত্রমোহন চাকমা, সুগম চাকমা ও রিপন চাকমা এবং চাকমা নাটিকা 'পরিবেশ রক্ষা কর' লিখেছেন মৃত্তিকা চাকমা।

চ.১৩ বিঝু সংকলনের নাম ২০০৫ সালে পরিবর্তিত হয়েছে। 'বিজু-সাংগ্রাই- বৈসুক' নামে ২০০৫ সাল থেকে সংকলন প্রকাশিত হচ্ছে। ২০০৫ সালের সংকলনটি সম্পাদনা করেছেন শুভ্রজ্যোতি চাকমা, সম্পাদনা সহকারী প্রদীপ কুমার দে ও পলাশ কুমার চাকমা। সংকলনটিতে প্রবন্ধ লিখেছেন সুগত চাকমা- 'আমার দেখা বিজু উৎসব', বীরকুমার তঞ্চঙ্গ্যা- 'বিঝুর দিনে সর্বানন্দের দুঃখ কেন?', শরৎকান্তি চাকমা- 'বসন্ত উৎসব ও বৈসাবি', মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা- 'হাদুক রায়ের বৈসুক উদযাপনের সমস্যা', হিরহিত চাকমা-'স্মৃতি বিস্মৃতির শৈশব', সুসময় চাকমা-'প্রসংগ বৌদ্ধ রঞ্জিকা', শুভ্রজ্যোতি চাকমা-'পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্ষণজন্মা চিত্রশিল্পী চুনীলাল দেওয়ান', জিতেন চাকমা-'পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয়দের ব্যবহৃত বাঁশের তৈরী বিভিন্ন ধরনের বস্তুগত সংস্কৃতি'; থয়সা খিয়াং-'খিয়াং উপজাতির জীবন ও সংস্কৃতি', শুভ্রজ্যোতি চাকমা-'স্মৃতিময় দিনের খণ্ডিত আলেখ্য', শাক্য উজ্জ্বল চাকমা-রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সমবায়ের ভূমিকা ও প্রদীপ কুমার দে-উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট, রাঙ্গামাটির উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ড। রূপকথা লিখেছেন কৃষ্ণচন্দ্র চাকমা; চাকমা কবিতা লিখেছেন-চুনীলাল দেওয়ান, সলিল রায়, পরিমল বিকাশ চাকমা, মৃত্তিকা চাকমা, তরুণ কুমার চাকমা, শংকর চাকমা, বারেন্দ্রলাল চাকমা; তঞ্চঙ্গ্যা কবিতা লিখেছেন প্রভাতী তঞ্চঙ্গ্যা; বাংলা কবিতা লিখেছেন মুজিবুল হক বুলবুল, মোহাম্মদ ইসহাক, শোভা ত্রিপুরা, মঈন উদ্দিন ভূঁইয়া, সমীরণ চাকমা ও লিটন চাকমা; ত্রিপুরা গান লিখেছেন সুরেন্দ্রলাল ত্রিপুরা; চাকমা গান লিখেছেন অমর শান্তি চাকমা ও বিশ্বনাথ চাকমা এবং তঞ্চঙ্গ্যা গান লিখেছেন লগ্নকুমার তঞ্চঙ্গ্যা।

চ.১৪ 'বিজু সাংগ্রাই বৈসুক ২০০৬' সম্পাদনা করেছেন শুভ্রজ্যোতি চাকমা। বাণী দিয়েছেন ড. মানিক লাল দেওয়ান। সংকলনে প্রবন্ধ লিখেছেন শুভ্রজ্যোতি চাকমা-'বিজু ও প্রকৃতি', শরৎকান্তি চাকমা-'নিজস্ব সত্তার বৈসাবি', মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা-'ত্রিপুরাদের বৈসুক উৎসব', প্রদীপ কুমার দে-'চট্টগ্রাম অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের চৈত্র সংক্রান্তি ও পহেলা বৈশাখ', নূরনবী বেলাল-'বাংলা নববর্ষ পুরাতন নতুনের যোগবিয়োগ', রিপা চাকমা 'বৈসাবি উৎসব', সুগত চাকমা-'চাকমা জুম নৃত্য এবং আমার রচিত হিল্ল মিলাভুয়া জুমত যায় দে গানটি সম্পর্কে কিছু কথা', আর্যমিত্র চাকমা-'চাকমা রানী কালিন্দীর ধর্ম সংস্কার ও বৌদ্ধ রঞ্জিকা প্রসঙ্গে', প্রভাংশু ত্রিপুরা 'ত্রিপুরা মহারাজা গোবিন্দ মাণিক্যের স্মৃতি বিজড়িত স্থান দীঘিনালা এবং তাঁর কিছু জনহিতকর কাজ', ইন্দুলাল চাকমা-পার্বত্য জেলাসমূহে মাছ চাষের সম্ভাবনা', প্রগতি খীসা-'চাকমা বৈদ্যদের দৃষ্টিতে শরীর বিদ্যা ও রোগ চিকিৎসার পদ্ধতি' ও শাক্য উজ্জ্বল চাকমা-'উপজাতীয় সংস্কৃতির বিকাশে সমবায়'। সংকলনে রূপকথা লিখেছেন কৃষ্ণচন্দ্র চাকমা, বীরকুমার তঞ্চঙ্গ্যা ও জিরকুং সাহু; ভ্রমণ কাহিনী লিখেছেন ইন্দ্রলাল চাকমা ও সুপ্রিয় চাকমা; ছোটগল্প লিখেছেন সুনিল কান্তি চাকমা; চাকমা গান লিখেছেন বিশ্বনাথ চাকমা; মারমা গান লিখেছেন চধুই প্রু, কংসা জাই ও অংক্য থোয়াই মারমা; ত্রিপুরা গান লিখেছেন প্রহেলিকা ত্রিপুরা; তঞ্চঙ্গ্যা গান লিখেছেন সুচন্দা প্রভা তঞ্চঙ্গ্যা; বাংলা গান লিখেছেন মমতাজ আলী খান; চাকমা কবিতা লিখেছেন পরিমল চাকমা, সুসময় চাকমা, মৃত্তিকা চাকমা, তরুণ কুমার চাকমা, রণজিত দেওয়ান, গীতিময় দেওয়ান এবং বাংলা কবিতা লিখেছেন সিংইয়ং ম্রো, পুলক বড়ুয়া, শামীম আরা পারভিন সুমী, মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, চিং অং চাক ও পিয়া রাখাইন তুলি।

চ.১৫ রুনেল চাকমা ও শুভ্রজ্যোতি চাকমার যৌথ সম্পাদনায় 'বিজু সাংগ্রাই বৈসুক ২০০৭' প্রকাশিত হয়েছে। এই সংকলনে প্রবন্ধ লিখেছেন সুগত চাকমা-'বিজু সাংগ্রাই, বৈসুক ও বিষু উৎসব সম্পর্কে কিছু কথা ও কিছু গান', শুভ্রজ্যোতি চাকমা-'চাকমাদের বিঝু অনেক আশা আর হাজার স্বপ্ন', আর্যমিত্র চাকমা-'বিজু আসে বাঁধভাঙা আনন্দের জোয়ারের মত', ইন্দুলাল চাকমা-'ছোটবেলার বিজুর আনন্দ', বীরকুমার তঞ্চঙ্গ্যা-'বিষু উদযাপনের প্রকৃতি এবং আমার ঠাকুরদাদার নিকট শোনা একটি কাহিনী', মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা-'আমাদের বৈসুক উৎসব', প্রদীপ কুমার দে-'বাংলা নববর্ষের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি', সুসময় চাকমা-'চাকমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য', রুনেল চাকমা-বৈচিত্র্যে রাঙ্গামাটি উপজাতীয় জাদুঘর', মৃত্তিকা চাকমা-'কাব্যভাবনা: মফস্বলের গীতিকবি চিত্রমোহন চাকমা', প্রভাংশু ত্রিপুরা-'ত্রিপুরা ভাষায় পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন নদনদী ও পাহাড় পর্বতের নামকরণ', অরুণ লেইব্রেস-'স্বল্প পরিচিত খিয়াং উপজাতির কিছু কথা', রাজিব ত্রিপুরা-'আমার দেখা কেথারক পূজা' ও সঞ্জীবচন্দ্র চাকমা-'বারব্য গাজা ফরা গোষ্ঠির সংক্ষিপ্ত পরিচিতি'। রূপকথা লিখেছেন-জিরকুং সাহু; চাকমা কবিতা লিখেছেন-পরিমল বিকাশ চাকমা, অজয় চাকমা, রঞ্জিত দেওয়ান, শ্যামল তালুকদার ও বারেন্দ্রলাল চাকমা; ত্রিপুরা কবিতা লিখেছেন অলিন্দ্র ত্রিপুরা; বাংলা কবিতা লিখেছেন মুজিবুল হক বুলবুল, শরৎকান্তিচাকমা, প্রজ্ঞাশ্রী তঞ্চঙ্গ্যা ও এস.এম. রেজাউল করিম; চাকমা ছড়া লিখেছেন বিজ্ঞান্তর তালুকদার; চাকমা গান লিখেছেন সুরেশ ত্রিপুরা ও তরুণ কুমার চাকমা; মারমা গান লিখেছেন অংক্য থোয়াই মারমা; ত্রিপুরা গান লিখেছেন তৃষ্ণা ত্রিপুরা; তঞ্চঙ্গ্যা গান লিখেছেন সুচন্দা প্রভা তঞ্চঙ্গ্যা এবং গুর্খা গান লিখেছেন মনোজ বাহাদুর।

চ.১৬ 'বিজু সাংগ্রাই বৈসুক বিষু' ২০০৮ সম্পাদনা করেছেন শুভ্রজ্যোতি চাকমা। এই সংকলনে প্রবন্ধ লিখেছেন শান্তি কুমার চাকমা-'চাকমাদের বিজু উৎসব ও অসমীয়দের বিহু উৎসব', মোখলেস উর রাহমান ভূঁইয়া-'বিজু, বৈসুক, সাংগ্রাই ও বাংলা নববর্ষ পার্বত্য অঞ্চলের মিলনের এক মহা ঐকতান', বিশ্বজিৎ সিংহ-'উপজাতীয় সংস্কৃতি', সুসময় চাকমা-'রাধামন ধনপুদি পালায় ঘিলাখারা প্রসঙ্গ'; রাজীব ত্রিপুরা-'আমার দেখা গড়িয়া পূজা ও নৃত্য', মনোজ বাহাদুর 'রাঙ্গামাটির গুর্খা সম্প্রদায়', প্রভাংশু ত্রিপুরা-'কর্ণফুলী নদীর নামের উপাখ্যান', ইন্দুলাল চাকমা-'বন্দুককোণো মোন থেকে যমচুগ' ও অরিন্দম চাকমা-'গুণী কবি ও সাহিত্যিক চিত্রমোহন চাকমা'; ভ্রমণ কাহিনী লিখেছেন সুগত চাকমা- 'অনুভবে ও স্মৃতিতে রাঙ্গামাটি সঙ্গীত অন্বেষণ প্রতিযোগিতা ২০০৭', অরুণেন্দু ত্রিপুরা-'দেখে এলাম রাইংক্ষ্যা হ্রদ ও বগা লেক'; ছোটগল্প লিখেছেন মুজিবুল হক বুলবুল, বীর কুমার তঞ্চঙ্গ্যা ও শতদল বড়ুয়া; লোককাহিনী লিখেছেন ঝিনু চাকমা, লগ্ন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা ও পারকুম লুসাই; চাকমা কবিতা লিখেছেন ধর্মধন পণ্ডিত (অনুলিখন শুভ্রজ্যোতি চাকমা), পরিমল বিকাশ চাকমা, বারেন্দ্রলাল চাকমা ও তরুণ কুমার চাকমা; বাংলা কবিতা লিখেছেন শ্যামল তালুকদার, নূরুল হক, প্রজ্ঞাশ্রী তঞ্চঙ্গ্যা, রামচন্দ্র চাকমা ও সৈয়দ ইসমাইল হোসেন মানিক; চাকমা গান লিখেছেন রিপন চাকমা, মারমা ও তঞ্চঙ্গ্যা গান লিখেছেন সাথোয়াই মারমা ও তঞ্চঙ্গ্যা গান লিখেছেন ঈশ্বরচন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা।

চ. ১৭ 'বিজু সাংগ্রাই বৈসুক বিষু' ২০০৯ সম্পাদনা করেছেন শুভ্র জ্যোতি চাকমা। ১১২ পৃষ্ঠার এ সংকলনটির মূল্য এক শত টাকা, প্রচ্ছদ শিল্পী ছন্দসেন চাকমা। সংকলনে প্রকাশিত দশটি প্রবন্ধ হচ্ছে- 'নাকশা ফুল এবং একটি প্রেম উপাখ্যান'-সুসময় চাকমা, 'দীঘিনালা উপজেলায় অবস্থিত শিব বিগ্রহসমূহ'-রাজিব ত্রিপুরা, 'উপজাতীয় কাব্য সাহিত্যে সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ'-বিশ্বজিৎ সিংহ, 'গোপন যন্ত্রণার কারাগারে বন্দি কয়েদী কবি দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান চাকমা'-আজাদ বুলবুল, 'ত্রিপুরা উপজাতির সঙ্গীত- প্রভাংশু ত্রিপুরা, 'ফুরামোন বৃত্তান্ত' রামচন্দ্র চাকমা, 'বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' জানে আলম, 'পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয়দের বিবাহ রীতি'- মো. আব্দুল মানিক, 'যে ফুলে ফল হয় না'- ইন্দুলাল চাকমা, 'বিজু সাংগ্রাই ইতিবৃত্ত'- অনুপ পোদ্দার।

সংকলনে ভ্রমণকাহিনী 'ক্ষণিকের দেখা থাইল্যান্ড' লিখেছেন সুগত চাকমা; তঞ্চঙ্গ্যা লোককাহিনী লিখেছেন লগ্ন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা চাকমা কবিতা লিখেছেন তরুণ কুমার চাকমা, রাজা দেবাশীষ রায়, পরিমল বিকাশ চাকমা, হ্যাপী চাকমা (সুখী), সুচিন্ত চাকমা ও মিনতি দেওয়ান; তঞ্চঙ্গ্যা কবিতা লিখেছেন অজিত কুমার তঞ্চঙ্গ্যা; 'গেংখুলীর মিলাবুয়া' কবিতার বঙ্গানুবাদ করেছেন সুগত চাকমা বাংলা কবিতা লিখেছেন শ্যামল তালুকদার, প্রগতি খীসা, অরুণপ্রসাদ ভট্টাচার্য, সৈয়দ ইসমাইল হোসেন; তঞ্চঙ্গ্যা গান লিখেছেন ঈশ্বরচন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা, বাংলা ভাবানুবাদসহ চাকমা গান লিখেছেন সুচিন্ত্য দেওয়ান। এছাড়া সংকলিত হয়েছে বিভিন্ন সংগ্রাহকের সংগ্রহীত ত্রিশটি চাকমা ধাঁধা এবং নিক্সন চাকমার চাকমা ছোটগল্প।

চ. ১৮ 'বিজু সাংগ্রাই বৈসুক বিষু ২০১০' সম্পাদনা করেছেন শুভ্রজ্যোতি চাকমা। ১১২ পৃষ্ঠার সংকলনটির মূল্য একশত টাকা। সংকলনে প্রকাশিত নয়টি প্রবন্ধ হচ্ছে-'বিজু এবং চাকমা সংস্কৃতি'- প্রিয়দর্শী খীসা, 'বাংলা নববর্ষ ও চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা এবং ত্রিপুরাদের চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব'-রতিকান্ত তঞ্চঙ্গ্যা, পার্বত্য চট্টগ্রামে সাহিত্য চর্চায় বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু উৎসবের অনুপ্রেরণা'-শুভ্র জ্যোতি চাকমা, 'সাংগ্রাই বিজু বৈসুক উৎসব: সম্প্রীতির ব্যঞ্জনায় একবিংশ শতাব্দীর প্রত্যাশা'- মংক্য শোয়েনু নেভী, 'মাতৃভাষায় শিক্ষা দান : চাকমা ভাষা ও বর্ণমালার প্রাসঙ্গিকতা'-আর্যমিত্র চাকমা, 'হাতির পদাঘাতে নিহত পার্বত্য চট্টগ্রামের এক হতভাগ্য ডেপুটি কমিশনার ল্যান্স নিবলেট'-আজাদ বুলবুল, 'অতীতে ত্রিপুরা রাজ্যে গ্রাম কার্বারীদের দায়িত্ব ও কার্যাবলী' প্রভাংশু ত্রিপুরা, 'বর্তমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যুগে চাকমা বৈদ্যদের চিকিৎসা শাস্ত্র' প্রগতি খীসা, 'ম্রো অলংকার' সিং ইয়ং ম্রো। ভ্রমণ কাহিনী লিখেছেন সুপ্রিয় তালুকদার (থাইল্যান্ডের স্মৃতি), সুগত চাকমা (ভিয়েতনামে আসেম সম্মেলনে), শরৎকান্তি চাকমা (বিজুর আনন্দে দেবতা পুকুর ও আলুটিলা ভ্রমণ) ও রাজিব ত্রিপুরা (সাজেক দেখে এলাম); তঞ্চঙ্গ্যা রূপকথা লিখেছেন 'রাস্কাইত বুলির সর্গ মারানা'; চাকমা কবিতা লিখেছেন শিশির চাকমা, শ্যামল তালুকদার (বঙ্গানুবাদ মৃত্তিকা চাকমা), বারেন্দ্রলাল চাকমা (বঙ্গানুবাদ সহ) এবং বাংলা কবিতা লিখেছেন হাফিজ রশিদ খান।

ছ. ১৯৮৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট থেকে প্রকাশিত হয়েছে বিজয় দিবস সংকলন 'মুক্তি'। এটি সম্পাদনা করেছেন জাফার আহমাদ হানাফী। এর সহকারী সম্পাদক সুসময় চাকমা। 'মুক্তি'তে প্রকাশিত প্রবন্ধ-নিবন্ধ হচ্ছে কাজী মোতাহার হোসেনের 'স্বাধীনতা', এ কে এম মকছুদ আহমেদ-এর 'বিজয় দিবস', সুগত চাকমার 'চাকমা বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্য', বীর কুমার তঞ্চঙ্গ্যার 'বিজয় দিবস প্রাসঙ্গিক কিছু কথা', রতিকান্ত তঞ্চঙ্গ্যার 'জাতিগঠনে চিত্রকলার প্রভাব'; নন্দলাল শর্মার 'বিজয় দিবসের প্রকাশনা: পার্বত্য অঞ্চলে' এবং সুসময় চাকমার 'কর্ণফুলী নাম সমাচার'।

জীবনানন্দ দাশ, সৈয়দ আলী আহসান এবং দীপংকর শ্রীজ্ঞান চাকমার বাংলা কবিতা এ সংকলনে সংকলিত হয়েছে। এছাড়া চাকমা কবিতা লিখেছেন সমর গিরি, ধবল কিরণ চাকমা ও মুজিবুল হক বুলবুল; মুরুং কবিতা লিখেছেন মনোরঞ্জন মুরুং এবং বাংলা কবিতা লিখেছেন বীরকুমার তঞ্চঙ্গ্যা, বিনয় শংকর চাকমা, শ ম মঈন উদ্দিন মিন্টু, ভূঁইয়া মোখলেস উর রাহমান ও জগৎ জ্যোতি চাকমা। 'মুক্তি'তে গল্প লিখেছেন শান্তনু চৌধুরী এবং বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ান; দেশাত্মবোধক

বাংলা গান লিখেছেন সুরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও সুজিত কুমার দাশ; তঞ্চঙ্গ্যা ও চাকমা গান লিখেছেন যথাক্রমে কার্তিক চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা এবং লালপা চাকমা।

জ. উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট এ পর্যন্ত একুশটি মৌলিক ও অনূদিত গবেষণা গ্রন্থ প্রকাশ করেছে। এই গ্রন্থগুলোর প্রকাশনা ইনস্টিটিউটের একটি উল্লেখযোগ্য কর্ম। পার্বত্য অঞ্চল ও তার অধিবাসী সম্পর্কে আগ্রহ মেটাতে বইগুলো মূল্যবান অবদান রাখতে সক্ষম।

জ.১ উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট থেকে প্রকাশিত প্রথম গ্রন্থ সুগত চাকমার 'পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় ভাষা' ১৯৮৮ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত হয়। ভূমিকা ছাড়া এ গ্রন্থে সাতটি অধ্যায় আছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রচলিত উপজাতীয় ভাষাগুলোকে লেখক মূলত দু'ভাগে ভাগ করেছেন। ইন্দো আর্য শাখায় আছে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা ভাষা। অন্যান্য ভাষা ভোটবর্মী দলের অন্তর্ভুক্ত।

চাকমা ভাষা বিষয়ক অধ্যায়ে আলোচিত বিষয় হল ইতিহাস, চাকমা ভাষা ও বর্ণমালা, বাংলা বর্ণ ও চাকমা উচ্চারণ, ধাতু, ক্রিয়ার ভাব, চাকমা ক্রিয়া বিভক্তিগুলি, ব্যুৎপত্তি এবং চাকমা শব্দাবলী ও এগুলোর উৎস সম্পর্কে আলোচনা।

দ্বিতীয় অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে মারমা ভাষা। আলোচ্যসূচি হল-পরিচিতি, মারমা ভাষা ও বর্ণমালা, বাংলা বর্ণে মারমা উচ্চারণ, মারমা পদাশ্রিত নির্দেশক, ক্রিয়ার কাল ও বিভক্তি এবং শব্দকোষ।

তৃতীয় অধ্যায়ে ত্রিপুরা ভাষা বিষয়ক আলোচনার বিষয় হল-পরিচিতি, পদাশ্রিত নির্দেশক, বচন, লিঙ্গ, কারক, ক্রিয়া, বাক্য গঠন রীতি ও শব্দাবলী।

চতুর্থ অধ্যায়-চাক ভাষা। আলোচ্য বিষয়-পরিচিতি, চাকদের ইতিকথা, চাক সংখ্যা গণনা, বচন, লিঙ্গ, কারক, কাল ও বাক্যরীতি এবং শব্দাবলী।

পঞ্চম অধ্যায়-কুকি চিন ভাষা। উত্তর কুকি চিন দলের লুসেই, পাংখো, বোম ও খ্যাং এবং দক্ষিণ কুকি চিন দলের খুমি ভাষা এ অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে।

ষষ্ঠ অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে ম্রো ভাষা। শেষ অধ্যায়ে সংকলিত হয়েছে

উপজাতীয় শব্দসংগ্রহ। পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন উপজাতির ভাষা নিয়ে প্রথম আলোচনা

গ্রন্থ হিসেবে এ বইটির সামাজিক, ভাষাতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

জ.২ ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় গ্রন্থ বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ানের 'চাকমা পূজা পার্বণ' ১৯৮৯ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত হয়। চাকমারা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হলেও বৌদ্ধ আদর্শের পরিপন্থী কিছু লৌকিক আচার অনুষ্ঠান তাদের সমাজে প্রচলিত ছিল। লুপ্তপ্রায় ইতিহাস ও সমাজজীবন থেকে গবেষক এবং চাকমা লোকজীবন রসিক বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ান তথ্যাদি আহরণ করে এই গ্রন্থ প্রণয়ন করেছেন। এ গ্রন্থে যে সব পূজা পার্বণের বর্ণনা দেয়া হয়েছে সেগুলো হচ্ছে-গঙাত ভাত জরা দেনা, মা লক্ষ্মীমা পূজা, নুয়াভাত, চামনী, চুমুলাং, অহইয়া, সিন্দি ফানাচ বাত্তি, আহজার বাত্তি, ধর্মকাম, থানমানা, মালেইয়া, আহল্ পালনী, মাধাধুয়া, জুম মারানা, কুলুক মারানা, ভূত পূজা, শিজি ভাতদ্যা, এদা দাগা, ব্যূহচক্র, বিঝু, কঠিন চীবর দান, বিবাহ, মৃত সৎকার এবং গাড়িটানা।

জ.৩ সুরেন্দ্রলাল ত্রিপুরার 'ত্রিপুরা ভাষা বা কক বরোক ভাষার অভিধান ও ব্যাকরণ' ১৯৮৯ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে প্রকাশিত হয়েছে। বাংলা বর্ণে ত্রিপুরা লেখা এবং পড়ার কতিপয় নিয়ম ও পদ্ধতি আলোচনার পর বিপুল সংখ্যক ত্রিপুরা বা কক বরোক শব্দের বাংলা অর্থ দেয়া হয়েছে। গ্রন্থের শেষাংশ ব্যাকরণ। বেশ কিছু প্রবাদ বাক্যও এতে সংযোজিত হয়েছে। কক বরোক ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে গ্রন্থটিউপকারে আসবে।

জ.৪ সুরেন্দ্রলাল ত্রিপুরার 'ত্রিপুরা পূজা পার্বণ সুকুন্দ্রায় বুকুন্দ্রায়' ১৯৯০ সালে প্রকাশিত হয়েছে। ত্রিপুরাগণ সনাতন ধর্মাবলম্বী হলেও তাদের মধ্যে লৌকিক অনেক পূজা পার্বণ প্রচলিত। প্রতিমা তৈরি না করে তারা নানা অপদেবতার পূজা করে থাকে। বিভিন্ন রোগের প্রতিকার কল্পে তারা নানা পূজা করে। অন্যান্য কারণে বা উপলক্ষেও পূজা হয়। এ সকল পূজার নিয়ম কানুন ও রীতিনীতি আলোচ্যগ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে।

জ.৫ সুরেন্দ্রলাল ত্রিপুরার 'পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রকৃতি ও সংস্কৃতি' ১৯৯৪ সালের অক্টোবর মাসে প্রকাশিত হয়েছে।

গ্রন্থটির প্রকৃতি অংশে পার্বত্য অঞ্চলের সীমানা, আয়তন ও অবস্থান, জেলা গঠন ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা, ভূপ্রকৃতি, জলবায়ু, বন, উদ্ভিদ, বন্যপ্রাণী, কৃষি, মৎস্য, পশুসম্পদ প্রভৃতি বিষয় আলোচিত হয়েছে। এরপর আলোচিত হয়েছে বিভিন্ন উপজাতির সংস্কৃতি। গ্রন্থের 'চাকমা' অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে নাম পরিচয়, নৃতাত্ত্বিক পরিচয়, আদি নিবাস, সমাজ কাঠামো, বসতি অঞ্চল, ইতিকথা, ভাষা, হরফ, বাসগৃহ, ধর্মবিশ্বাস, উৎসব ও পালপার্বণ, পেশা, লোকসাহিত্য ও বসতি স্থান।

'মারমা' অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে-পরিচিতি, বসতি, বাসগৃহ, ধর্ম, উৎসব, খাদ্যাভাস ও রান্নাবান্না, ভাষা হরফ, প্রবাদ বাক্য, নৃত্য, বাদ্যযন্ত্র, বিবাহ, মৃত্যু, পোশাক, চীফ ও রোয়াজা, ক্যাং ও বসতি স্থান।

'ত্রিপুরা' অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে পরিচিতি, দফা, বসতি স্থান, জন্ম, নামকরণ, মৃত্যু, ভাষা, বিবাহ, হরফ, প্রবাদবাক্য, ধর্ম, দেবদেবী, উৎসব ও পূজা পার্বণ।

'ম্রো' অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে দল ও গোত্র, বসতি স্থান, শিক্ষা, জনসংখ্যা, পরিবার, ভাষা, পেশা, পোশাক, পরিচ্ছদ, বিবাহ, জন্ম, ধর্ম ও নৃত্যগীত।

'লুসেই' অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে লুসেই শব্দের অর্থ, ঘরবাড়ি, নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য, চুল বাঁধার রীতি ও পোশাক পরিচ্ছদ, বিবাহ, জন্ম, মৃত্যু, সর্দার, উত্তরাধিকার, জুম, বিশ্বাস, উৎসব, মৃত্যু, বিবাহ, ধর্ম বিশ্বাস, জন্ম ও ভাষা।

'বোম' অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে নাম পরিচয়, গোত্রবিভাগ, ধর্মবিশ্বাস ও পূজা পার্বণ, উত্তরাধিকার, মৃত্যু এবং সৃষ্টি সম্পর্কে ধারণা।

'পাংখুয়া' অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে নাম পরিচয়, বসতি অঞ্চল, গোত্র বিভাগ, সংখ্যা, পোশাক, অলঙ্কার, বিবাহ ও ভাষা।

'খ্যাং' অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে নামকরণ, গোত্র বিভাগ, ধর্ম, বিবাহ, জন্ম,

মৃত্যু, উৎসব, পেশা, খাদ্যাভ্যাস ও ভাষা। 'চাক' অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে ইতিহাস, গোত্র বিভাগ, জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ, পোশাক পরিচ্ছদ, অলঙ্কার, ভাষা ও নৃত্যগীত।

'খুমী' অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে পরিচিতি, বিশ্বাস, বসতি, সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কিত গল্প, বিবাহ, নামকরণ ও ভাষা।

পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন উপজাতির সাংস্কৃতিক পরিচয় সম্পর্কে এই গ্রন্থটি পর্যটকদের তাৎক্ষণিক কৌতূহল নিবৃত্ত করতে সহায়ক হবে।

জ.৬ অশোক কুমার দেওয়ানের (১৯২৬-১৯৯১) 'চাকমা ভাষার শব্দকোষ' ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত হয়েছে। গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন সুগত চাকমা। এটি চাকমা ভাষারঅভিধান। ভাষাবিদ ও গবেষকদের কাছে গ্রন্থটি সমাদৃত হবে।

জ.৭ পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম জেলা প্রশাসক ক্যাপ্টেন থমাস হার্বাট লুইন এর The Hill Tracts of Chittagong and the Dewellers Therein (1869) গ্রন্থের হিরহিত চাকমা কৃত বঙ্গানুবাদ 'চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চল ও তার অধিবাসীবৃন্দ' ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত হয়।

গ্রন্থটি চার অংশে বিভক্ত। প্রথম অংশে আছে পার্বত্য অঞ্চলের ক. সীমানা নদনদী, প্রাকৃতিক দৃশ্য, মৃত্তিকা, জলবায়ু, রাস্তাঘাট, উৎপন্ন দ্রব্য, বনভূমি, কৃষিকাজ ও প্রাণিকূল এবং খ. পার্বত্য অঞ্চলে বৃটিশ শক্তির উত্থান ও অগ্রগতি, অতীত তথ্যাদি, পোর্তুগীজ প্রভাব, রাজস্ব ব্যবস্থার প্রকৃতি, বৃটিশ কর্তৃপক্ষের সাথে উপজাতীয় প্রধানদের সম্পর্ক, বর্তমান প্রশাসনিক পদ্ধতি-এর প্রকৃতি ও দুর্বলতা। দ্বিতীয় অংশে আলোচিত হয়েছে পার্বত্য জাতিসমূহ (ভূমিকা), পার্বত্য

জাতিসমূহের শ্রেণী বিভাগ, প্রতিবেশীদের সাথে সম্পর্কের অবনতি, পার্বত্য উপজাতিসমূহের সাধারণ রীতিনীতি, দাসপ্রথা; ক. খ্যয়ংথাগন (নদীর সন্তান করদ উপজাতিসমূহ) গোষ্ঠী, ধর্ম, উৎসবাদি, পোষাক পরিচ্ছদ, সামাজিক অভ্যাস, সঙ্গীত, প্রবাদ বাক্য, বিবাহ, শেষ কৃত্য অনুষ্ঠানাদি, পৌরাণিক কাহিনী, নাটক, খ. চাকমা উপজাতি, উৎপত্তি, উপজাতীয় প্রধানদের কালানুক্রমিক তালিকা, ভাষা গোষ্ঠী, উৎসবাদি, ধর্ম, প্রেম-ভালবাসা-বিবাহ শেষকৃত্য অনুষ্ঠান, অপরাধ, শাস্তি এবং সঙ্গীত।

তৃতীয় অংশে আলোচিত হয়েছে ক. ত্রিপুরা বা ম্রো উপজাতি- তাদের জীবন প্রণালী ও অভ্যাস; খ. খুমী, ম্রো, খ্যাং, বনযোগী এবং পাংখুয়া উপজাতি, অভ্যাস ও রীতিনীতি; গ. কুকী বা লুসাই এবং সেন্দুজ উপজাতি তাদের রীতিনীতি, মন্তব্য ও উপসংহার।

চতুর্থ অংশে আলোচিত হয়েছে পরিশিষ্টসমূহ ক. দারুবৃক্ষ ও পার্বত্য অঞ্চলের অন্যান্য উৎপন্ন দ্রব্যাদি, খ. পার্বত্য অঞ্চলে ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত টোটকা ও ভেষজ মূল, গ. বাঁশ ও বেত, ঘ. শস্য ও জুম উৎপন্ন দ্রব্যাদি।

জ.৮ পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম জেলা প্রশাসক লে. কর্নেল থমাস হার্বাট লুইন এর A Fly on the Wheel (1912) গ্রন্থের জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা কৃত বঙ্গানুবাদ 'পার্বত্য চট্টগ্রাম ও লুসাই পাহাড়' ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত হয়েছে। লুইনের মূল গ্রন্থটি তেরটি অধ্যায়ে বিভক্ত। গ্রন্থটির ছয়টি অধ্যায় (অষ্টম থেকে ত্রয়োদশ) পার্বত্য চট্টগ্রাম ও লুসাই পাহাড়ের উপজাতি বিষয়ক। জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা এই ছয়টি অধ্যায়ই অনুবাদ করেছেন। ছয়টি অধ্যায়ের শিরোনাম যথাক্রমে ১. সেন্দু জাতি, ২. পার্বত্য চট্টগ্রাম (১৮৬৫-৬৬), ৩. পার্বত্য চট্টগ্রাম (১৮৬৭), ৪. চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চল, ৫. লুসাইদের বিরুদ্ধে অভিযান এবং ৬. উপসংহার।

জ.৯ টি এইচ লুইনের অপর একটি গ্রন্থ (Wild Rules of South Eastern India, 1870) গ্রন্থের বঙ্গানুবাদ 'বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের আদিম জনগোষ্ঠী' প্রকাশিত হয়েছে ১৯৯৮ সালে। অনুবাদ করেছেন প্রবীণ আইনজীবী জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা। ভূমিকা ছাড়া গ্রন্থটি তিন খণ্ডে বিভক্ত।

প্রথম খণ্ডে আলোচিত হয়েছে ভৌগোলিক অবস্থান, দৃশ্যাবলী, জলবায়ু, যোগাযোগ ব্যবস্থা, হাটবাজারসমূহ, উৎপাদিত পণ্য, চাষাবাদ, গ্রাম্য ব্যবস্থা, পশু সম্পদ, প্রশ্নমবসতি স্থাপনকারীগণ, বৃটিশ শক্তির উত্থান, সরকারি নির্দেশাবলী, মহাজনেরা, আইন ও বিধিবিধানসমূহ।

দ্বিতীয় খণ্ডে আলোচিত হয়েছে পাহাড়ী উপজাতিগুলো, আদি ঐতিহাসিক তথ্যাদি, অভ্যাস এবং রীতিনীতি, খিয়োংথা, ধর্ম, পোশাক এবং অভ্যাস, উৎসবাদি; পোশাক, বিবাহ, শবদাহ অনুষ্ঠান, চাকমা উপজাতি, প্রথাদি ও মৃতের সৎকার পদ্ধতি ও অপরাধের শাস্তি।

তৃতীয় খণ্ডে আলোচিত হয়েছে পাহাড়ী উপজাতিগুলোর সামাজিক আচার আচরণাদি, তিযোরা উপজাতি, তাদের নাম এবং উৎপত্তি, বিয়ে, প্রেম নিবেদন, পোশাক, আগুন জ্বালানোর পদ্ধতি, বাইরে জঙ্গলে অবসর কাটানো, বিরোধ নিষ্পত্তি, গ্রাম্য সামাজিক প্রথাদি (রীতিনীতি), কুমি/খেমী উপজাতি, গ্রামসমূহ, আদি সৃষ্টির কাহিনী, মু উপজাতি, খিয়েং বা খিয়াং, পাংখো এবং বনযোগী, লুসাই, সেন্দু জাতি

এবং উপসংহার।

জ.১০ বঙ্কিমচন্দ্র চাকমার 'চাকমা সমাজ ও সংস্কৃতি' ১৯৯৮ সালে প্রকাশিত হয়েছে। গ্রন্থটি দুটি অধ্যায়ে বিভক্ত। প্রথম অধ্যায়ে আছে চারটি পরিচ্ছেদ। যথা-১. চাকমার বৈশিষ্ট্য, ধর্ম, বিষু বা বিঝু উৎসব, তাল্লিক শাস্ত্র, ২. চাকমা ভাষা, অক্ষর বা বর্ণমালা, লোকসাহিত্য; ৩. শিল্প, পোষাক পরিচ্ছদ, অলংকার, ব্যবসাবাণিজ্য, জীবিকা, খেলাধুলা, বাদ্যযন্ত্র, নাচ ও গান, পিদা, মদজগরা, আংম (বাড়ি) অস্ত্র ও রান্নার সামগ্রী ও ঢেঁকি। দ্বিতীয় অধ্যায়ের চারটি পরিচ্ছেদে আছে ১. চাকমা জাতির শ্রেণী বিভাগ, গোজা ও গোষ্ঠী, ২. জ্ঞাতিসম্পর্ক বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের বিধান, অবৈধ বিবাহ, বিবাহ পদ্ধতি, চুগুলাঙ, বিবাহঘটিত ও অন্যান্য অপরাধ ও শান্তি, বিবাহবিচ্ছেদ, অবৈধ বিবাহঘটিত জাতীয় বিচার পদ্ধতি, অভিভাবক নির্ণয়, উত্তরাধিকার নীতি; ৩. শবদাহ, সাতদিন্যা, গাড়ি টানা, বজারি এবং ৪. ম্যালেইয়া ডাকা, রাস্তাঘাট নিয়ন্ত্রক, নোয়া, ছেলেমেয়ের জন্মোৎসব, সুচিতা, ফিবলা, নরম ও ছোট ডিম পাড়া, ভারাল, স্বপ্ন, শুভাশুভ নির্ণয়, চন্দ্রগ্রহণ, সূর্যগ্রহণ, রাজ্য শাসন পদ্ধতি।

জ.১১ সুপ্রিয় তালুকদারের 'চম্পকনগর সন্ধানে: বিবর্তনের ধারায় চাকমা জাতি' গ্রন্থটি ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত হয়েছে। গ্রন্থটি চার অধ্যায়ে বিন্যস্ত। প্রথম অধ্যায়ের আলোচ্য বিষয়-পার্বত্য চট্টগ্রাম ও তার অধিবাসী, পৌরাণিক উপাখ্যান ও নৃবিজ্ঞান, শাক্য বংশের উৎপত্তি ও বিস্তৃতি, নির্ভরযোগ্য তথ্য ও ঘটনাপ্রবাহ, চাক ও চাকমা, চাকমা রাজবংশ; দ্বিতীয় অধ্যায়ের আলোচ্য বিষয় ভাষা, ধর্ম ও সংস্কৃতি; তৃতীয় অধ্যায়ের আলোচ্য বিষয় চাকমা জাতির পরিচয়; ঘটনাপঞ্জি; চতুর্থ অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে সমাজ ব্যবস্থা ও বিচার কাঠামো, খাদ্যাভাস, জুমচাষ, প্রবাদ, বাসগৃহ, সামাজিক আচার অনুষ্ঠান, গঝা-গুত্তি, নৃত্যগীত, বাদ্যযন্ত্র, অলংকার ও খেলাধুলা।

জ.১২ সুগত চাকমার 'চাকমা ও চাক ইতিহাস আলোচনা' ২০০০ সালে প্রকাশিত হয়েছে। গ্রন্থটি তিন অধ্যায়ে বিন্যস্ত। প্রথম অধ্যায়ের ১ম পরিচ্ছেদে আলোচিত হয়েছে 'শাক, চাকমা ও চাকদের নামগত সম্পর্ক', 'সাক শব্দের ব্যুৎপত্তি' এবং 'চাকমাদের নৃতাত্ত্বিক সাংস্কৃতিক দল ভাষা ও ঐতিহ্যের পরিচয়'। ২য় পরিচ্ছেদে 'শাক্যদের ইতিকথা', ৩য় পরিচ্ছেদে 'চাকদের ইতিকথা' ও চতুর্থ অধ্যায়ে 'চাকদের আদিবাস ও যুনানের জিনুও উপজাতি' আলোচিত হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ের ১ম পরিচ্ছেদে 'পশ্চিমী সাক (১০ম শতাব্দী থেকে ১৪শ শতাব্দী পর্যন্ত), ২য় পরিচ্ছেদে 'চাকদের পূর্বদলের সাথে আরাকানের সংঘর্ষ এবং আরাকান কর্তৃক মইটাগিরি বিজয়' আলোচিত হয়েছে। তৃতীয় অধ্যায়ের ১ম পরিচ্ছেদে 'চাকমাদের সম্পর্কে নানা লেখকের মতামত ও চাকমা আদি বাসস্থান সম্পর্কে কিংবদন্তী', দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে 'চাকমা ইতিহাস ষোড়শ শতাব্দী' এবং ৩য় পরিচ্ছেদে 'চাকমা ইতিহাস' (অষ্টাদশ শতাব্দী)' আলোচিত হয়েছে।

জ.১৩ সুগত চাকমার 'বাংলাদেশের চাকমাভাষা ও সাহিত্য' (২০০২) গ্রন্থটি ছয়টি পর্যায়ে বিন্যস্ত। প্রথম পর্যায়ে চাকমা ভাষা পরিচিতি ধ্বনিতত্ত্ব, রূপতত্ত্ব, বাক্যের গঠন, বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়া, মৌলিক শব্দ ও চাকমা বর্ণমালা; দ্বিতীয় পর্যায়ে লোকসাহিত্য: ছড়া, ধাঁধা, প্রবাদবাক্য, বারমাসী, উভাগীত ও পালাগান, চাকমা জনপ্রিয় লোককাহিনী রাধামন ধনপুদি; তৃতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশের চাকমা সাহিত্য চর্চা : কবিতা, নাটক ও গল্প আলোচিত হয়েছে। কবিতা অংশে আলোচনার জন্য নির্বাচিত কবি-শিবচরণ, ফিরিংচান, বিশ শতকের প্রথম তিনটি কবিতা-চুর্নীলাল দেওয়ান, মুকুন্দ তালুকদার ও সলিল রায়, দীপংকর শ্রীজ্ঞান চাকমা, সুগত চাকমা, ফেলাজেয়া চাকমা, ভগদত্ত খীসা, সুহৃদ চাকমা, মৃত্তিকা চাকমা, শিশির চাকমা ও বীরকুমার তঞ্চঙ্গ্যা। নাটক অংশে আলোচিত হয়েছে চারটি নির্বাচিত নাটক-সুগত চাকমার 'ধেঙ্গাবৈদ্য', শান্তিময় চাকমার 'ঝরাপাদার জীংকানি', মৃত্তিকা চাকমার 'দেবসি আহধর কালাছাবা' ও ঝিমিত ঝিমিত চাকমার 'আন্দলত পহর'। গল্প অংশে আলোচিত চারটি গল্প হচ্ছে সুগত চাকমার 'পজ্জন', নমিতা দেওয়ানের 'কালাচান-র বিঝু', রাজা দেবাশীষ রায়ের 'গম লাগানাতুন বেচ' ও শান্তিময় চাকমার 'গধারাম স্ববন'।

জ.১৪ জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা অনূদিত 'পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থার উদ্ভব ও ক্রমবিকাশ' গ্রন্থটি ২০০৩ সালে প্রকাশিত হয়েছে। ১৯২৭ সালে কলকাতাস্থ বেঙ্গল গভর্নমেন্ট প্রেস থেকে প্রকাশিত ব্রিটিশ সরকারের সরকারি চিঠিপত্র সংকলন Selections from the correspondence on the revenue adminstration of the Chittagong Hill tracts গ্রন্থের বঙ্গানুবাদ করেছেন জ্ঞানেন্দুবিকাশ চাকমা। গ্রন্থের আলোচ্য বিষয় ক. পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা গঠন, সুপারিন্টটেন্ডেন্টের পদ সৃষ্টি, সুপারিন্টটেন্ডেন্ট পদে নিয়োগ ও তথায় অনুসরণের জন্য লে. গভর্নর কর্তৃক প্রণীত বিধি; খ. উপজাতীয় চীফদের নিয়োগ: গ. বন প্রশাসন/ব্যবস্থাপনা, ঘ. পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজস্ব সার্কেল গঠন, ঙ. পার্বত্য চট্টগ্রামের ভবিষ্যৎ শাসন ব্যবস্থার (বিধির) রূপরেখার প্রস্তুতি; চ. ১৮৯২ইং সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধি প্রণয়নের প্রস্তুতি এবং ছ. ১৮৯২ইং সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধির বিরুদ্ধে উপজাতীয় চীফ ও অন্যান্যদের আপত্তি।

জ.১৫ 'পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় নান্দনিক সংস্কৃতি' নামে পার্বত্য অঞ্চলের সমাজ ও সংস্কৃতির ১১৩টি স্থির চিত্র-এর একটি এ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে ২০০৬ সালে। শুরুতে সুগত চাকমার প্রবন্ধ 'পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় নান্দনিক সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য' স্থান পেয়েছে। এর সম্পাদক সুগত চাকমা, নির্বাহী সম্পাদক রুনেল চাকমা, সহকারী সম্পাদক শুভ্রজ্যোতি চাকমা।

জ.১৬ 'চাকমাদের প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ আঘরতারা বিশ্লেষণ' গ্রন্থটি সুগত চাকমার সম্পাদনায় ২০০৬ সালে প্রকাশিত হয়েছে। গ্রন্থের সহযোগী সম্পাদক রুনেল চাকমা ও শুভ্রজ্যোতি চাকমা। গ্রন্থে সংকলিত চারটি প্রবন্ধ হল-সুগত চাকমার 'বাংলাদেশে দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে বৌদ্ধধর্ম, বিভিন্ন মতাবলম্বী বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং চাকমা সমাজের অধুনা লুপ্তপ্রায় বিশেষ বৌদ্ধ সম্প্রদায় লুরি এবং চাকমা বর্ণে লিখিত তাদের ধর্মীয় গ্রন্থ আঘরতারা'; শ্রদ্ধালংকার ভিক্ষু ও সুগত চাকমার 'চাকমা বর্ণে লিখিত আঘরতারা এবং পালি ভাষায় লিখিত বৌদ্ধ ধর্মীয় গ্রন্থ ত্রিপিটকের অন্তর্গত সূত্র, কাহিনী ইত্যাদির সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যের বিচার বিশ্লেষণ'; সুসময় চাকমার 'লুরিদের পূজা পার্বণ ও জীবনধারা'; সুগত চাকমার 'চাকমাদের কতগুলি গুরুত্বপূর্ণ পূজানুষ্ঠানের ব্যাপারে কয়েকজন লেখকের তালিকাভুক্ত তারাগুলির মধ্যেকার নাম ও ব্যবহার সম্পর্কে একটি তুলনামূলক আলোচনা'। গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে চাকমা হরফে সংগৃহীত 'পরাঙফুলু তারা', 'জয়মঙ্গলতারা', 'দাসাপারামি তারা', 'সিগলমোগল তারা', 'সাঙেচফুলুতারা' (আংশিক) ও 'সাদেংগিরিতারা'। পরিশিষ্টতে বিরাজমোহন দেওয়ানের 'চাকমা জাতির

ইতিবৃত্ত' (১৯৬৯) গ্রন্থের 'আগরতারা' অংশটি সংকলিত হয়েছে। জ.১৭ সুপ্রিয় তালুকদারের The Chakma Race গ্রন্থটি ২০০৬ সালে প্রকাশিত

হয়েছে। গ্রন্থের আলোচ্য বিষয় হল-The Chittagong Hill Tracts and the dwellers therein, The origin of Cakya Race. The origin of the Chakma and their migration, The Chakma Dynesty, Law, Religion,

Culture, The Chak and the Chakma, Chronicles. জ. ১৮ সুগত চাকমা সম্পাদিত Pleasing Tribal Culture in Chittagong

Hill Tracts গ্রন্থটি ২০০৭ সালে প্রকাশিত হয়েছে। এই গ্রন্থটি 'পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় নান্দনিক সংস্কৃতি গ্রন্থের ইংরেজি সংস্করণ। গ্রন্থটির নির্বাহী সম্পাদক রুনেল চাকমা, সহকারী সম্পাদক শুভ্রজ্যোতি চাকমা।

জ.১৯ 'পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় উৎসব ও বিবাহ' গ্রন্থটি সুগত চাকমার সম্পাদনায় ২০০৭ সালে প্রকাশিত হয়েছে। গ্রন্থটির সহযোগী সম্পাদক রুনেল চাকমা ও শুভ্রজ্যোতি চাকমা। গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে এগারটি প্রবন্ধ। এগুলো হচ্ছে-'চাকমা উৎসব ও বিবাহ'-শুভ্রজ্যোতি চাকমা, 'মারমা উৎসব ও বিবাহ'-মংক্য শোয়েনু, 'ত্রিপুরা উৎসব ও বিবাহ'-প্রভাংশু ত্রিপুরা, 'তঞ্চঙ্গ্যা উৎসব ও বিবাহ'-বীরকুমার তঞ্চঙ্গ্যা, ম্রো বিবাহ উৎসব-সিং ইয়ং ম্রো, 'বম উৎসব ও বিবাহ'-জিং আলহ বম; 'পাংখোয়া উৎসব ও বিবাহ'-লাল ছোয়াক লিয়ানা পাংখোয়া; 'চাক উৎসব ও বিবাহ'-অং ছাইন চাক; খিয়াং উৎসব ও বিবাহ'-খয়সা খিয়াং; 'লুসাই উৎসব ও বিবাহ'-লানছানি লুসাই এবং 'খুমী উৎসব ও বিবাহ'-সিঅং খুমী।

জ.২০ সুগত চাকমা সম্পাদিত 'পার্বত্য চট্টগ্রামের বিংশ শতাব্দীর নির্বাচিত কবিতা' ২০০৮ সালে প্রকাশিত হয়েছে। গ্রন্থটির সহযোগী সম্পাদক রুনেল চাকমা ও শুভ্র জ্যোতি চাকমা। গ্রন্থের দুটি অংশ; প্রথম অংশে ২৬ জন কবির (৮জন বাংলাভাষী, ১৮ জন উপজাতি) ৭১টি বাংলা কবিতা দ্বিতীয় অংশে ৩৯ জন কবির (একজন বাংলাভাষী) ৭৮টি উপজাতীয় ভাষার কবিতা সংকলিত হয়েছে। পার্বত্য অঞ্চল থেকে প্রকাশিত পত্রিকা, সাময়িকী ও লিটল ম্যাগাজিন থেকে কবিতা সংগ্রহ করা হয়েছে। দ্বিতীয় অংশে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, চাক ও ম্রো কবিতা বঙ্গানুবাদসহ প্রকাশিত হয়েছে।

.২১ সুগত চাকমার 'পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি' গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছে ২০০৯ সালে। গ্রন্থে আলোচিত হয়েছে- পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল পরিচিতি, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের ইতিকথা, পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি সমূহের নাম, জনসংখ্যা বসতি এলাকা, পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, ম্রো, চাক, লুসেই, বম, পাংখুয়া, খিয়াং খুমী), পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপজাতিসমূহের সমাজ ব্যবস্থা সামাজিক কাঠামো এবং উপজাতিদের ভাষা।

. ডা. ভগদত্ত খীসা অন্যান্য সম্পাদিত চাকমা বর্ণমালা শিক্ষার বই Chakma Primer বা চাকমা পথম পাঠ প্রকাশিত হয়েছে ২০০১ সালে। বইটির দ্বিতীয় মুদ্রণ হয়েছে ২০০৮ সালে।

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট থেকে প্রতিষ্ঠানটির জাদুঘর সম্পর্কিত দুটি পুস্তিকা ২০১০ সালে প্রকাশিত হয়েছে। বাংলায় প্রকাশিত পুস্তিকাটির নাম 'ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জাদুঘর' পুস্তিকাটিতে জাদুঘরের বিবরণ এবং সংগৃহীত কিছু দুষ্প্রাপ্য জিনিসের চিত্র আছে। অপর পুস্তিকাটি বাংলা পুস্তিকার ইংরেজি সংস্করণ Khudro Nri Gosti Museum.

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ইনস্টিটিউট রাঙ্গামাটি থেকে প্রকাশিত সাময়িকী, গবেষণাপত্র সংকলনে প্রকাশিত হয়েছে ১৮৯টি প্রবন্ধ। প্রবন্ধগুলোর বিষয় লেখক ভিত্তিক তালিকা নিম্নরূপ (প্রবন্ধের নামের পর সাময়িকীর সংক্ষিপ্ত নাম প্রকাশের সন দেয়া হয়েছে):

ইতিহাস নৃতত্ত্ব

অশোক কুমার দেওয়ান

চাকমা জাতির ইতিহাসে অষ্টাদশ শতক। উগপ- ১৯৮২ নৃতত্ত্বের আলোকে পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি। :

গিনি ১৯৮২ ফেব্রুয়ারি।

প্রভাংশু ত্রিপুরা

: ত্রিপুরা ভাষায় পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন নদনদী

পাহাড় পর্বতের নামকরণ। বিজু ২০০৭

: ত্রিপুরা মহারাজ গোবিন্দ মানিক্যের স্মৃতি বিজড়িত স্থান দীঘিনালা এবং তাঁর কিছু জনহিতকর কাজ।

বিষ্ণু ২০০৬

রামচন্দ্র চাকমা সুরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা

: ফুরামোন বৃত্তান্ত। বিজু ২০০৯

: পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজস্বের ইতিহাস। উগপ ১৯৮৪

উৎসব

: বিষ্ণু সংগ্রাই ইতিবৃত্ত। বিষ্ণু ২০০৯

অনুপ পোদ্দার অপুল ত্রিপুরা

: ত্রিপুরা জাতির বৈসুক উৎসব গরাইয়া নৃত্যের তাৎপর্য।

বৈসাবি ১৯৯৬

আর্যমিত্র চাকমা : বিষ্ণু আসে বাঁধভাঙা আনন্দের জোয়ারের মত। বিজু ২০০৭

ইন্দু লাল চাকমা : ছোটবেলার বিজুর আনন্দ। বিজু ২০০৭

জাফার আহমাদ হানাফী নববর্ষ উৎসব। বিঝু ১৯৮৬

: রাখাইন মাহা সাংগ্রে। বৈসাবি ২০০২

নূর নবী বেলাল : বাংলা নববর্ষে পুরাতন নতুনের যোগবিয়োগ। বিষ্ণু ২০০৬

প্রদীপ কুমার দে : চট্টগ্রাম অঞ্চলে হিন্দু সম্প্রদায়ের চৈত্র সংক্রান্তি পহেলা বৈশাখ। বিষ্ণু ২০০৬

: বাংলা নববর্ষের কৃষ্টি সংস্কৃতি। বিজু ২০০৭

প্রভাংশু ত্রিপুরা : ত্রিপুরা উপজাতির বৈইসু উৎসব। গিনি ১৯৮৪

প্রিয়দর্শী খীসা বি এইচ সোহরোয়ারদী : বিষ্ণু এবং চাকমা সংস্কৃতি। বিষ্ণু ২০১০ পার্বত্য চট্টগ্রামের নববর্ষ উদযাপন: বৈসাবি প্রেক্ষিত।

বৈসাবি ১৯৯৮

: প্রসঙ্গ: পার্বত্য অঞ্চলের নববর্ষ উদযাপন। বৈসাবি ১৯৯৯

বীর কুমার তঞ্চঙ্গ্যা : অন্যরকম বিষু। বৈসাবি ২০০০

: বিঝু যেই গল্পের শেষ নেই। বৈসাবি ২০০১

: বিঝুর দিনে সর্বানন্দর দুঃখ কেন? বিষ্ণু ২০০৫

: বিষু উদযাপনের প্রকৃতি এবং আমার ঠাকুর দাদার নিকট শোনা

একটি কাহিনী। বিষ্ণু ২০০৭

: বৈসাবি: নূতন ভাবনা। বৈসাবি ১৯৯৮

: বৈসাবির আর এক গল্প। বৈসাবি ১৯৯৯

মং ক্য শোয়েনু নেভী

: সাংগ্রাই বিজু বৈসুক উৎসব: সম্প্রীতির ব্যঞ্জনায় একবিংশ

শতাব্দীর প্রত্যাশা। বিষ্ণু ২০০০ : নববর্ষ রাখাইন সম্প্রদায়। বিঝু ১৯৮৪ মংছেনচীং (মং ছিন)

: রাখাইন নববর্ষ বা সাইংক্রাইন পোয়ে বা পানিখেলা বা জলোৎসব।

বৈসাবি ১৯৯৯

: রাখাইন রাখোপোয়ে বা রথোৎসব। গিনি ১৯৮৪ : সাংগ্রাই জলোৎসবের তাৎপর্য। বৈসাবি ১৯৯৬

মং শে নুক মারমা

মধুমঙ্গল চাকমা : বিঝুর গুরুত্ব তাৎপর্য। বৈসাবি ২০০৪

মহেন্দ্রলাল চাকমা : সেকালে বিঝু আর কিছু কথা। বৈসাবি ১৯৯৯

: আমাদের বৈসুক উৎসব। বিজু ২০০৭

মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা

: ত্রিপুরা পল্লীতে বৈসুক উদযাপন। বৈসাবি ২০০৩

: ত্রিপুরাদের বৈসুক উৎসব। বৈসাবি ২০০৬

: ত্রিপুরাদের বৈসুক বা চৈত্র সংক্রান্তি। বিজু ১৯৮৪

: বুইসুকানি সালো (বিজুর দিনে) বৈসাবি ২০০০

: বৈসুক উদযাপনের তাৎপর্য। বৈসাবি ১৯৯৯

: হাদুক রায়ের বৈসুক উদযাপনের সমস্যা। বিষ্ণু ২০০৫

মুজিবুল হক বুলবুল : বিজু পাখীর ডাকে, বৈসাবি আসে। বৈসাবি ২০০৩ মোখলেস উর রাহমান ভূঁইয়া: বিজু, বৈসুক, সাংগ্রাই বাংলা নববর্ষ পার্বত্য অঞ্চলের মিলনের এক মহা ঐকতান। বিজু ২০০৮

মোহিনী রঞ্জন চাকমা : বৈসাবি: অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। বৈসাবি ২০০২

রতিকান্ত তঞ্চঙ্গ্যা : বাংলা নববর্ষ ও চাকমা মারমা তঞ্চঙ্গ্যা এবং ত্রিপুরাদের চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব। বিজু ২০১০

রাজিব ত্রিপুরা : আমার দেখা কেহারক পূজা। বিষ্ণু ২০০৭

: আমার দেখা গড়িয়া পূজা ও নৃত্য। বিষ্ণু ২০০৮

রিপা চাকমা : বৈসাবি উৎসব। বিজু ২০০৬

শরৎকান্তি চাকমা : নিজস্ব সত্তার বৈসাবি। বিজু ২০০৬

: বসন্ত উৎসব ও বৈসাবি। বিজু ২০০৬

শান্তিকুমার চাকমা : চাকমাদের বিজু উৎসব ও অসমীয়দের বিহু উৎসব। বিজু ২০০৮

শুভ্র জ্যোতি চাকমা : চাকমাদের বিজু: অনেক আশা আর হাজার স্বপ্ন। বিজু ২০০৭ : বিষ্ণু ও প্রকৃতি। বিজু ২০০৬

সুগত চাকমা : আমার দেখা বিজু উৎসব। বিজু ২০০৫

: পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয়দের বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ উৎসব।

বৈসাবি ১৯৯৬

: বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ উৎসব বিষু, সাংগ্রাই ও বৈসুক। বৈসাবি ১৯৯৯

: বিজু সাংগ্রাই বৈসুক ও বিষু উৎসব সম্পর্কে কিছু কথা ও কিছু গান। বিজু ২০০৭

: বিঝুর কিছু স্মৃতি এবং প্রাসঙ্গিক কথা। বৈসাবি ২০০৮

সুশোভন দেওয়ান হীরারানী বড়ুয়া : গারো উপজাতির চিরাপা। গিনি ১৯৮৩ : আমার জানা বিউ পরব। বৈসাবি ২০০৩

কৃষি, মৎস্য ও বন অমরেন্দ্রলাল খীসা : পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম চাষ: অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। উপপ ১৯৮২

ইন্দুলাল চাকমা : পার্বত্য অঞ্চলের মৎস্য সম্পদের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা। ক্ষুনৃগপ ২০১০

: পার্বত্য জেলাসমূহে মাছ চাষের সম্ভাবনা। বিজু ২০০৬

: স্বল্প পরিচিতি খিয়াং উপজাতির কিছু কথা। বিজু ২০০৭

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিচিতি

অরুণ লেইব্রেস

আতাউর রহমান : উপজাতি পরিচিতি। গিনি ১৯৮৯

আবদুল হক চৌধুরী : পার্বত্য চট্টগ্রামের মারমা উপজাতি। উগপ ১৯৮৪

কং জ অং চৌধুরী : পার্বত্য খাগড়াছড়ির মও রাজ পরিবার। বৈসাবি ২০০০

প্রদীপ চৌধুরী : খিয়াং উপজাতি। গিনি ১৯৮৩

মং মং চাক : চাক উপজাতি পরিচিতি। গিনি ফেব্রুয়ারি ১৯৮২

মনোজ বাহাদুর : রাঙ্গামাটির গুর্ষা সম্প্রদায়। বিজু ২০০৮

সি ইয়ং ম্রো : ম্রো নারী: জীবন সংগ্রাম। ক্ষুনৃগপ ২০১০

ধর্ম দর্শন

অশোক কুমার দেওয়ান বৌদ্ধ রঞ্জিকা প্রসঙ্গ কথা। গিনি মে ১৯৮২

আর্থমিত্র চাকমা

: চাকমা রানী কালিন্দীর ধর্ম সংস্কার বৌদ্ধ রঞ্জিকা প্রসঙ্গে।

বিজু ২০০৬

কং অং চৌধুরী : বৌদ্ধ দর্শনে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য গণতন্ত্র। বৈসাবি ২০০১

মংছেনচীং (মংছিন) : বৌদ্ধ ধর্ম দর্শন। বৈসাবি ১৯৯৯

মোহিনী রঞ্জন চাকমা : বৌদ্ধধর্মের পরম লক্ষ্য নির্বাণ। বৈসাবি ২০০১

রাজিব ত্রিপুরা : দীঘিনালা উপজেলায় অবস্থিত শিববিগ্রহসমূহ। বিষ্ণু ২০০৯

সুসময় চাকমা : প্রসঙ্গ: চাকমাদের আঘরতারা। বৈসাবি ২০০৪

: প্রসঙ্গ: বৌদ্ধ রঞ্জিকা। বিজু ২০০৫

ব্যক্তিত্ব

আজাদ বুলবুল : হাতির পদাঘাতে নিহত পার্বত্য চট্টগ্রামের এক হতভাগ্য ডেপুটি কমিশনার ল্যান্স নিবলেট। বিজু ২০১০

মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা : ত্রিপুরার মুকুটহীন রাজা সাধু রত্নমণি। গিনি ফেব্রু ১৯৮২

শুভ্রজ্যোতি চাকমা : পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষণজন্মা চিত্রশিল্পী চুনীলাল দেওয়ান। বিজু ২০০৫

সুগত চাকমা : পার্বত্য চট্টগ্রামের একজন তরুণ শাসক। গিনি মে ১৯৮২

সুসময় চাকমা : চাকমা রাজমহিষী কালিন্দীরানী। ১৯৮৬

বিবিধ

ইন্দুলাল চাকমা : বন্দুক কোণোমোন থেকে যমচুগ। বিজু ২০০৮ : যে ফুলে ফল হয় না। বিজু ২০০৯

.কে.এম. মকছুদ আহমদ। জানে আলম বিজয় দিবস। মুক্তি ১৯৮৫ : বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বিজু ২০০৯

জাফার আহমাদ হানাফী ঝিমিত ঝিমিত চাকমা শাশ্বত বাংলা বাংলাদেশ। ১৯৮৪ : আনঝিব। বৈসাবি ২০০২ : নাহ্। বৈসাবি ২০০০

: সংসমার। বৈসাবি ২০০১ : উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট রাঙ্গামাটির প্রদীপ কুমার দে

উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ড। বিজু ২০০৫ : রাঙ্গামাটিস্থ উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠা, উদ্দেশ্য কার্যক্রম সম্পর্কে দুটি কথা।

বৈসাবি ২০০৪

প্রভাংশু ত্রিপুরা : কর্ণফুলী নদীর নামের উপাখ্যান। বিজু ২০০৮

: পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনাময় অঞ্চল খাগড়াছড়ি। বৈসাবি ১৯৯৯

বীর কুমার তঞ্চঙ্গ্যা : একুশে ফেব্রুয়ারি না আটই ফাল্গুন। ১৯৮৪

: বিজয় দিবস প্রাসঙ্গিক কিছু কথা। মুক্তি ১৯৮৫

মঈন উদ্দিন ভূঁইয়া : রাঙ্গামাটি নগর পরিকল্পনা বৃক্ষের নান্দনিক পরিচর্যা। বৈসাবি ২০০৪

মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা : কাতার বা (নূতন) ত্রিপুরা নামকরণ আগমন সম্পর্কে কিংবদন্তি। বৈসাবি ১৯৯৬

মোহিনী রঞ্জন চাকমা : বিক্ষিপ্ত ভাবনা। বৈসাবি ১৯৯৯

মুজিবুল হক বুলবুল : রাংগাবি রাঙ্গামাটি। বৈসাবি ২০০৪

রুনেল চাকমা : বৈচিত্র্যে রাঙ্গামাটি উপজাতীয় জাদুঘর। বিজু ২০০৭

শুভ্রজ্যোতি চাকমা : স্মৃতিময় দিনের খণ্ডিত আলেখ্য। বিজু ২০০৫

সুগত চাকমা : একুশের তাৎপর্য। ১৯৮৬

: কিংবদন্তীর আরাকান। গিনি ১৯৮৯

: পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু কথা। উগপ ১৯৮৪

: সাগরতীরে চাকমা গ্রামে। বৈসাবি ২০০১

সুসময় চাকমা : কর্ণফুলী নাম সমাচার। মুক্তি ১৯৮৪

: নাকশা ফুল এবং একটি প্রেম উপাখ্যান। বিজু ২০০৯ : স্মৃতি বিস্মৃতির শৈশব। বিজু ২০০৫ হিরহিত চাকমা

লিপি ভাষা

আর্যমিত্র চাকমা

: মাতৃভাষায় শিক্ষাদান: চাকমা ভাষা বর্ণমালার প্রাসঙ্গিকতা।

বিজু ২০১০

জাফার আহমাদ হানাফী বাংলা ভাষা। ১৯৮৬

ভগদত্ত খীসা : চাকমা লিপি ভাষা। গিনি ১৯৮৭

রণজিৎ সিংহ : মণিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়া ভাষা। ১৯৮৬

সুগত চাকমা : চাকমা আত্মীয়বাচক শব্দের অর্থতত্ত্ব। বৈসাবি ২০০০ : চাকমা বর্ণমালার ইতিবৃত্ত। উগপ ১৯৮২

: পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ভাষাসমূহের স্বর

ব্যঞ্জনধ্বনি ন্যূনতম শব্দজোড় এবং বাক সংকেত।

ক্ষুনৃগপ ২০১০

: পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন ভাষা উপভাষার মৌলিক শব্দ সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণপূর্বক তাদের প্রাথমিক শ্রেণীকরণ। উগপ ২০০৪

শিক্ষা

অজিত প্রসাদ চৌধুরী : রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার প্রাথমিক শিক্ষার বিরাজমান পরিবেশ প্রতিকার। গিনি ১৯৮৯

ভিক্ষু আর্যপ্রিয় : শিক্ষাই চরিত্র। গিনি ১৯৮৯

সুরেন্দ্রলাল ত্রিপুরা : পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা অগ্রগতির ইতিবৃত্ত। গিনি ১৯৯০

সমাজ অর্থনীতি

বাংলাদেশের উপজাতীয় সমাজ সংস্কৃতি। উগপ ২০০৪

জাফার আহমাদ হানাফী

প্রভাংশু ত্রিপুরা : অতীত ত্রিপুরা রাজ্য গ্রাম কার্বারীদের দায়িত্ব কার্যাবলী। বিজু ২০১০

: ত্রিপুরা উপজাতীয় উত্তরাধিকার আইন। গিনি ১৯৮৮

বঙ্কিমকৃষ্ণ দেওয়ান : চাকমা জাতীয় বিচার। উগপ ১৯৮২

বরেন ত্রিপুরা বি.এইচ. সোহরোয়ারদী : ত্রিপুরা সমাজ: অতীত বর্তমান। গিনি ১৯৮৩ পার্বত্য অঞ্চলের কৃষিঋণ ব্যবস্থা একটি সমকালীন চিত্র। উগপ ২০০৪

মথুরা ত্রিপুরা : প্রজন্মের চোখে চাকমা সমাজ সংস্কৃতি। বৈসাবি ২০০২

মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা : ত্রিপুরা বিবাহরীতি। গিনি ১৯৮২

মো. আব্দুল মানিক : পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় বিবাহরীতি। বিজু ২০০৯

যোগেশ চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা : তঞ্চঙ্গ্যা সমাজে বিবাহ প্রথা পদ্ধতি। গিনি ১৯৮৪

রণজিৎ কুমার সিংহ : মণিপুরী সমাজ সংস্কৃতি। গিনি ১৯৮৪

রমণী মোহন চাকমা : পরিবর্তনের পথে চাকমা সমাজ। গিনি ১৯৮৮

শাক্য উজ্জ্বল চাকমা : রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার আর্থ সামাজিক উন্নয়নে সমবায়ের ভূমিকা। বিজু ২০০৫

সঞ্জীব চন্দ্র চাকমা : বারব্য গোজা ফরা গোষ্ঠীর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি। বিজু ২০০৭

সজ্জিত কুমার চাকমা : চাকমা বয়ন শিল্প। গিনি ১৯৮৩

সিদ্ধার্থ কুমার তঞ্চঙ্গ্যা সুগত চাকমা : তঞ্চঙ্গ্যা বিবাহ প্রথা পদ্ধতি। বৈসাবি ২০০৪ : একটি রাখাইন বিয়ে। গিনি ১৯৯০

: পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় সমাজ সংস্কৃতির রূপরেখা।

গিনি ১৯৮৮ : পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় সামাজিক কাঠামো। গিনি ১৯৮৪

সুরেন্দ্রলাল ত্রিপুরা : উপজাতিদের সামাজিক স্তরবিন্যাস। গিনি ১৯৮৯

সাহিত্য

অরিন্দম চাকমা : গুণী ব্যক্তি সাহিত্যিক চিত্রমোহন চাকমা। বিজু ২০০৮

আজাদ বুলবুল : গোপন যন্ত্রণার কারাগারে বন্দি কয়েদি দীপংকর শ্রীজ্ঞান চাকমা। বিষ্ণু ২০০৯

ক্য শৈ প্রু : মারমা উপজাতীয় ভাষার প্রকৃতি মারমা লোকসাহিত্য। বিষ্ণু ১৯৮৬

নন্দলাল শর্মা : কুমার কোকনদাক্ষ রায়ের নাটিকা দক্ষিণের মন্ত্র গুঞ্জরণে। গিনি ১৯৮৭

: চাকমা কবি সলিল রায়। গিনি ১৯৮৩

: চাকমা ভাষা সাহিত্যের বিকাশে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহের ভূমিকা। গিনি ১৯৮৮

: চুনীলাল দেওয়ান: কবি ও গীতিকার। গিনি ১৯৮৪

: ছোট গল্পে একুশের চেতনা পার্বত্য চট্টগ্রামে। অ ১৯৮৪

: পমলাধন তঞ্চঙ্গ্যা ও ধর্মধ্বজ জাতক। গিনি মে ১৯৮২

: পার্বত্য চট্টগ্রামের ছোটগল্প ও গল্পকার। গিনি ১৯৮৯

: পার্বত্য চট্টগ্রামের লিটল ম্যাগাজিন। গিনি ১৯৯০

: স্বাধীনতা উত্তর একুশের প্রকাশনা: পার্বত্য অঞ্চলে। অ ১৯৮৬

: বিজয় দিবসের প্রকাশনা পার্বত্য অঞ্চলে। মুক্তি ১৯৮৫

প্রভাংশু ত্রিপুরা : বর্ষপঞ্জি ত্রিপুরাব্দ: প্রাচীন সভ্যতার দলিল। গিনি ১৯৯০

বিশ্বজিৎ সিংহ : উপজাতীয় কাব্য সাহিত্যে সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ। বিজু ২০০৯

মৃত্তিকা চাকমা : কাব্য ভাবনা: মফস্বলের গীতিকবি চিত্রমোহন চাকমা। বিজু ২০০৭

যামিনী রঞ্জন চাকমা : সাধক শিবচরণ। গিনি মে ১৯৮২

লুগচান চাঙমা : চাকমা লোকসাহিত্যের ধারা। বৈসাবি ১৯৯৯

শাহরীয়ার রুমী : পার্বত্য চট্টগ্রামের কবিতা। গিনি ১৯৮৯

শুভ্রজ্যোতি চাকমা : পার্বত্য চট্টগ্রামে সাহিত্য চর্চায় বিজু, সংগ্রাই, বিষু

উৎসবের অনুপ্রেরণা। বিষ্ণু ২০১০

শেখর দস্তিদার : খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা: সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার। গিনি ১৯৮৭

সুগত চাকমা : রাধামন ধনপুদি ব্যালাডে কিশোরী ধনপুদির এক বিঝু দিনের কাহিনী। বৈসাবি ২০০৩

: চাকমা উপজাতির ছড়া ও ছড়াগান। গিনি ১৯৮৮

সুরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা সুসময় চাকমা : রাধামন ধনপুদি পালায় ঘিলাখারা প্রসঙ্গ। বিজু ২০০৮

সুহৃদ চাকমা : কবিতা ও আধুনিক চাকমা কবিতার পটভূমি। গিনি ১৯৮৭

সাময়িকপত্র ও সাংবাদিকতা

এ.কে.এম মকছুদ আহমেদ: পার্বত্য চট্টগ্রামের সাংবাদিকতা। গিনি ফেব্রুয়ারি ১৯৮২ নন্দলাল শর্মা : 'গৈরিকা'র সংবাদ কলামে পার্বত্য চট্টগ্রাম। গিনি ফেব্রুয়ারি ১৯৮২

সংস্কৃতি

জিতেন চাকমা : পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতীয়দের ব্যবহৃত বাঁশের তৈরী বিভিন্ন ধরনের বস্তুগত সংস্কৃতি। বিজু ২০০৫

খয়সাপ্রু খিয়াং : খিয়াং উপজাতির জীবন ও সংস্কৃতি। বিজু ২০০৫

প্রগতি খীসা : চাকমা বৈদ্যদের দৃষ্টিতে শরীর বিদ্যা ও রোগ চিকিৎসার পদ্ধতি। বিজু ২০০৬

: বর্তমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যুগে চাকমা বৈদ্যদের চিকিৎসা শাস্ত্র।

বিজু ২০১০

প্রভাংশু ত্রিপুরা : চট্টগ্রাম বেতারে পাহাড়িকা। গিনি ১৯৮৩

: ত্রিপুরা উপজাতির সঙ্গীত। বিষ্ণু ২০০৯

: ত্রিপুরা জনজীবনে তাদের বর্ষপঞ্জি ত্রিপুরাব্দের প্রভাব। বৈসাবি ২০০৩

বিশ্বজিৎ সিংহ : উপজাতীয় সংস্কৃতি। বিজু ২০০৮

মহেন্দ্রলাল ত্রিপুরা : ত্রিপুরা জাতির ঐতিহ্যবাহী গরয়া নৃত্য। বৈসাবি ১৯৯৮

মোহিনীরঞ্জন চাকমা : ঘিলখারা/ঘিলাখেলা। বৈসাবি ২০০০

যোগেশ চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা : তঞ্চঙ্গ্যা সংস্কৃতি। গিনি ১৯৮৩

রতিকান্ত তঞ্চঙ্গ্যা : জাতি গঠনে চিত্রকলার প্রভাব। মুক্তি ১৯৮৫

শাক্যউজ্জ্বল চাকমা : উপজাতীয় সংস্কৃতির বিকাশে সমবায়। বিষ্ণু ২০০৬

শৈ চিং প্রু : মারমা সঙ্গীত নৃত্য। গিনি ১৯৮৩

সজ্জিত কুমার চাকমা : বিজু চাকমা পিঠা। বিষ্ণু ১৯৮৪

সিং ইয়ং ম্রো : ম্রো অলংকার। বিজু ২০১০

সুগত চাকমা : চাকমা জুম নৃত্য এবং আমার রচিত হিল্প মিলাভূয়া জুমত যায় দে গানটি সম্পর্কে কিছু কথা। বিজু ২০০৬

: চাকমা বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্য। মুক্তি ১৯৮৫

সুপ্রিয় তালুকদার : চাকমা সংস্কৃতির আদিরূপ। গিনি ১৯৮৭

সুরেন্দ্রলাল ত্রিপুরা : পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় নৃত্যগীত। উগপ ১৯৮২

সুসময় চাকমা : উপজাতীয় খেলাধুলা। বিজু ১৯৮৪ : চাকমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। বিষ্ণু ২০০৭

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট, রাঙ্গামাটি মূল্যবান গ্রন্থ, সংকলন সাময়িকী প্রকাশ করেছে। সাহিত্যপত্রিকা গিরিনির্ঝর পুনঃ প্রকাশিত হওয়া গবেষণা পত্রিকা বছরে অন্তত একটি সংখ্যা প্রকাশিত হওয়া বাঞ্ছনীয়। প্রতিবছর নিয়মিত গ্রন্থ প্রকাশ করে সংস্থাটি পার্বত্য অঞ্চলের সমাজ-সংস্কৃতির উন্নয়নে মূল্যবান অবদান রাখবে বলে দৃঢ় বিশ্বাস।

সূত্র: পার্বত্য চট্টগ্রামের লিটল ম্যাগাজিন ও অন্যান্য



[1] নন্দলাল শর্মা (Nondolal Shorma) জন্ম : ৩০ জুন ১৯৫১, মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার সিদ্ধেশ্বরপুর গ্রামে। পিতা : প্রয়াত রুদ্রেশ্বর শর্মা মাতা : প্রয়াতা সুশীলাময়ী শর্মা শিক্ষা কর্মজীবন : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স সহ স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় যথাক্রমে প্রথম দ্বিতীয় স্থান লাভ। ১৯৭৪ সালে বর্তমান। লক্ষ্মীপুর জেলার লক্ষ্মীপুর কলেজে অধ্যাপনার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু। ১৯৭৬ সালে যােগ দেন সরকারি কলেজে। রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ, বৃন্দাবন। সরকারি কলেজ মুরারিচাঁদ কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। ২০০৪ সালে প্রফেসর পদে পদোন্নতি লাভ। মুরারিচাঁদ কলেজের উপাধ্যক্ষ হিসেবে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি মেট্রোপলিটন ইউনির্ভাসিটির প্রফেসর পদে কর্মরত। পুরস্কার : শিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়ােজিত জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০০০- জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কলেজ শিক্ষক নির্বাচিত হয়ে স্বর্ণপদক লাভ। সাহিত্য পুরস্কার : বিএনএসএ সাহিত্য। পুরস্কার ১৯৯৬, মহাকবি সৈয়দ সুলতান সাহিত্য পুরস্কার ২০০১, রাগীব রাবেয়া সাহিত্য পুরস্কার ২০০৪, ডা. রসুল সাহিত্য পুরস্কার ২০১৪।

কেন আঞ্চলিক স্বায়ত্ব শাসন?

বাংলাদেশ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের শাসনতান্ত্রিক অধিকার দাবীর- আবেদন পত্র গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবী ...