আমরা একঝাঁক শান্তি
শ্বেত পায়রা। দীর্ঘদিন যাবৎ চাঙমা বর্ণমালা ও ভাষাকে বিকশিত করার জন্যের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে চাঙমা লেঘা
কোর্স পরিচালনা করে আসছি। এভাবে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে অভিজ্ঞতা আলোকে দেখেছি আমাদের
মা-বোন, বাপ-ভাইরেরা অত্যমত্ম গরীব-প্রান্তিক। ২০ টাকা দামে বই কিনে সামর্থ্যটুকু
অনেকের নেই।
আপনা
নিশ্চয়ই জানেন, ভাষা জাতীয় স্বকীয়তার প্রতীক। আর বর্ণমালা হলো তার অন্যতম ধারক ও
বাহক। কেননা বর্ণমালার মধ্যে দিয়ে জাতীয় বুদ্ধি ও চিমত্মা-চেতনা বিকাশ ঘটে।
চাকমাদের বর্ণমালা থাকার এবং বাংলাদেশে দ্বিতীয় ভাষা হওয়ার সত্বেও সে প্রাণ প্রিয়
বর্ণমালা ও ভাষা চর্চা না থাকার বা না
শেখার ২০১৭ সালে মাননীয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার পাঁচটির ভাষার
প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে নিজস্ব ভাষা বই দেওয়ার সত্বেও আমরা পড়াতে পারছিনা। এটা
অত্যন্ত লজ্জার বিষয়। বলাবাহুল্য, এক সময় নিজস্ব বর্ণমালার ব্যবহার গ্রামের
বৈদ্যদের তালিকশাস্ত্র ছাড়া আর কোথাও লজ্জাজনক ভাবে অনুপস্থিত। তেমনি ইদানিং,
চাঙমা বর্ণমালা শিক্ষা বই যেখানে সেখানে
পাওয়ার সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত চাঙমা সুধী মহলে কাছে তার প্রভাব পরিলক্ষিত দেখা যাচ্ছে না।
অন্যদিকে
ইউনেস্কো সর্তক করে দিচ্ছে যে, প্রতি চৌদ্দ দিনে একটি বিপন্ন ভাষা মৃত্যু বা
বিলুপ্ত ঘটছে। ভাষা ব্যবহারীর সংখ্যা পঞ্চাশ হাজারের নিচে নেমে গেলেই ভাষা বিপন্ন হয়ে পড়ে বলে ভাষা গবেষকের মত। আবার
সংখ্যাটি পঞ্চাশ হাজারের উপরে হলেও ব্যবহারকারীদের মধ্যে যদি শিশু-কিশোরের সংখ্যা
আনুপাতিক ভাবে কম হয়, সে ভাষা বাচিঁয়ে রাখার দুরূহ হয়ে পড়ে।
মর্মাহত হলেও সত্য যে,
মাত্র একশ বছরে আগে বাংলাদেশের ভাষার সংখ্যা ছিল বায়ান্ন। একশ বছরে বিলুপ্ত হয়েছে
দশটি ভাষা। বর্তমানে বাংলা বাদে যে একচলিস্নশটি ভাষা টিকে আছে অত্যন্ত ধুঁকে
ধঁকে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী একুশ’শ সালের মধ্যে চাঙমা ভাষা বিলুপ্ত হওয়ার
সম্ভাবনা অত্যান্ত বেশী।
তাই এমন এক স্বন্ধিক্ষণে আমরা তিন পার্বত্য জেলাতে কমপক্ষে বিশ হাজার স্কুলের প্রাণ প্রিয় ভবিষ্যৎ
জাতির কর্ণধারকে আগামী ১লা জানুয়ারী ২০১৮ইং ‘‘সাঙু- ২০১৭’’ নামে চাঙমা লেখা শিক্ষা বইটি বিনামূল্যে হাতে তুলে দিতে সকল পেশা,
সকল শ্রেণীর কাছ হতে দু’হাত পেতে সহযোগীতা
চাচ্ছি এবং আমরা আশাবাদী-বিশ্বাসী যে, আপনি-আপনারা সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে একটি
ভাষাকে পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠাতার জন্য অবদান রাখবেন।
বিকাশ নং- ০১৯১-৬৯৯৩২২২-ইনজেব চাঙমা; ০১৮২-৮৮২৪৯৩৯ – শ্রেয়সী চাঙমা।
নিবেদক
সাঙু- ২০১৭ ফগদাঙি পরিষদ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন