সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

তোমার মত বড়ভাই পেয়ে সত্যি অনেক অনেক গর্বিত আমি- সোহেল চাঙমা

পৃথিবীতে খুবই কম মানুষ আছে যারা সমাজের জন্য নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করতে পারে। কিন্তু যারা সমাজের জন্য কাজ নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে তাদের নামও মানুষের হৃদয়ে শতাব্দী থেকে শতাব্দী পরও থেকে যায়।
দাদা,তুমিও নিজের পরিবারে অনেক কিছু অভাব থাকলেও সমাজকে কোনোদিন সেই অভাবে থাকতে দাওনি।সেই ছোটকাল থেকে দেখে আসছি কিভাবে সমাজের জন্য কাজ করে চলতেছ।জুম্মদের অস্তিত্ব রক্ষা করার জন্য একদিনতো নিজের জীবনকেও বিলিয়ে দিতে বসেছিলে।হয়ত ভগবানের অশেষ কৃপায় সেই মৃত্যুর দরজা থেকে রক্ষা পেয়েছিল।কিন্তু মৃত্যুর দরজার থেকেও বেঁচে গিয়েও অনেক বছর পরিবারকে ছেড়ে থাকতে হয়েছিল অনেক কষ্টে। এখনো তুমি বসে নেই।নিজের জুম্ম জাতের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও অস্তিত্ব রক্ষা করার জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে চলতেছ।
তোমার একটা দিন যায়নি মনে হয় পরিবারের যেকোনো সদস্য থেকে বকা না খেয়ে।বিশেষ করে মা। মা'তো প্রতিনিয়ত বলত যে(পোবু ভালেদ ন অব আার,পর বালেত্তি)এই পুত্র টা জীবনে উন্নতি করতে পারবেনা শুধু অন্যর জন্যে।আরও বলত মানুষের কাজ করে কি লাভ এদিকে নাতনিগুলো ভালোভাবে পড়তে পারছেনা।আরও অনেক কিছু।কিন্তু এটাও সত্যি যে,এই পৃথিবীতে খুবই কম মা-বাবা আছে যারা চায় নিজের ছেলে-মেয়েরা সমাজের জন্য কাজ করুক,সংগ্রামী হোক, বিপ্লব করুক।
এটা কোনোদিন আশা করিনি তোমার জীবনে এরকম অবস্হা পরতে হবে।আাজকে ভাবী(বুজি) যে আমাদের ছেড়ে চলে গেছে এটা কিন্তু পরিবারের যেকোনো সদস্য থেকে তোমাকে বেশি প্রিয়জন হারনোর আগুনে জ্বলতে হবে।কিছুওতো করার ছিলনা।আসলে জীবনে চলতে গেলে সব কিছু স্বাদ গ্রহন করতে হয়।প্রিয়জন পাওয়ার আনন্দ,হারানো শোক সবকিছু।এগুলা সারা আসলে জীবন অপূর্ণ মনে হয়।তবুও এই হারানোতা কিন্তু ব্যাতিক্রম।
কিন্তু ভাবীও(বুজি) তো তোমাকে অনেক সাহাযা করেছে তোমার এই সমাজকে সাহায্য করার ব্যাপারে। আামার মনে হয় কোনোদিন তোমার এই কাজে বাধা সৃষ্টি করেনি।তুমি সাংসারিক কাজে উদাসীন হলেও ভাবী(বুজি)তোমার যে একটা মেয়ে আর একটা ছেলে তাদেরকে কোনোদিন অভাবে থাকতে দেয়নি।টাকা না থাকলে অন্যর কাছে দৈনিক কাজ করে পরিবারের খরচ,ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনা খরচ জুগিয়েছে।এগুলো কি কম!


ভবিষ্যৎ অনেক অন্ধকার। জোনাকি রাও আলো দেখাচ্ছেনা আমাদের।তবুও আমরা চলেছি গুতিকয়েক মানুষের অবদান নিয়ে।যাদের অবদানে আজকে আমি নিজেকে জুম্ম বলে পরিচয় দিতে পারতেছি সারা পৃথিবীর মধ্যে।
আমি মনে করি তুমিও শোক ভুলে আরও বেশি সমাজের জন্য কাজ করে যেতে পারবা।
সবকিছু অন্ধকার হলেও একদিন এই অন্ধকার থেকে আলো ছিনিয়ে আানতে হবে।ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পৃথিবীতে টিকে থাকার মত আলো জুগিয়ে যেতে হবে।
যেহেতু আমাদের মা-বাবা চাকরি করেনা তাই একটু অভাব দিয়ে বড় হয়েছি।জীবনের সবকিছু অভাব পেয়েছি।কিন্তু একটা জিনিষের অভাব মনে হয় কোনোদিন পায়নি,তা হচ্ছে বইয়ের অভাব।জীবনকে যখন থেকে বুঝতে পেরেছি, জীবনকে জানতে চেষ্টা করেছি।এই অভাবটা পেলে হয়ত আজকে আমিও এই জায়গায় আসতে পারতাম না।
ভাবী মরেও মরেনি সে বেঁচে থাকবে তোমার কাজের মাধ্যমে। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য তুৃমি যে অবদান রেখে যাচ্ছ একদিন সত্যি ভাবীকেও পাওয়া যাবে সেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্য।এই অবদান প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম মনে রাখবে।
দিনশেষে,
তোমার মত বড়ভাই পেয়ে সত্যি অনেক অনেক গর্বিত আমি।





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কেন আঞ্চলিক স্বায়ত্ব শাসন?

বাংলাদেশ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের শাসনতান্ত্রিক অধিকার দাবীর- আবেদন পত্র গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবী ...