শুক্রবার, ২২ এপ্রিল, ২০২২

পার্বত্য চট্টগা্মে ঘটনা প্রবাহ ফেব্রুয়ারি ২০২২

 


ফেব্রুয়ারি
২০২২খ্রি. [1] দিবাগত রাত ১০:৩০ ঘটিকায় রুমা উপজেলার বথি ত্রিপুরা পাড়া এলাকায় সংঘটিত হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, রুমা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বথি ত্রিপুরা পাড়ায় একটি সশস্ত্র গ্রুপ অবস্থান করছে বলে সেনা-মদদপুষ্ট মগপার্টির সূত্রে খবর পেয়ে মগপার্টির সশস্ত্র সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে রুমা জোনের নিয়ন্ত্রণাধীন রাইংখিয়াং লেক সেনা ক্যাম্প হতে সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবের নেতৃত্বে একদল সেনা উক্ত এলাকায় অভিযান যায়।

সেনা সদস্যরা বথি ত্রিপুরা পাড়ার একটি খালী ঘরে অবস্থানরত সশস্ত্র গ্রুপের সদস্যদের ঘিরে ফেলে এবং তাদের উপর উপর্যুপরি গুলি বর্ষণ করে। এতে সশস্ত্র গ্রুপের সদস্যরা পাল্টা গুলি বর্ষণ করে বলে স্থানীয় সূত্র উল্লেখ করে।

আজ ফেব্রুয়ারি ইস্যুকৃত আইএসপিআরের প্রেসবিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায় যে, সময় এলোপাতাড়ি গুলিতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে রাইংখিয়াং লেক ক্যাম্পের কমান্ডার সিনিয়ার ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলেই নিহত হন এবং ফিরোজ নামে সেনাবাহিনীর একজন সৈনিক ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন।

পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল থেকে ১টি এসএমজি, ২৪৯ রাউন্ড তাজা গুলি, ৩টি এম্যোনিশন ম্যাগাজিন, ৩টি গাদা বন্দুক, গাদা বন্দুকের রাউন্ড গুলি, জোড়া ইউনিফর্ম এবং নগদ ৫২,৯০০ টাকা উদ্ধার করে বলে আইএসপিআর প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, সেনা সদস্যদের গুলিবর্ষণে ঘটনাস্থলে কথিত সশস্ত্র গ্রুপের তিনজন সদস্য নিহত হন। তবে তাদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

অন্যদিকে উদ্ধারকৃত এসএমজি ২৪৯ রাউন্ড গুলি আক্রান্ত সশস্ত্র গ্রুপের ব্যবহৃত অস্ত্র গোলাবারুদ বলে স্থানীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে উদ্ধারকৃত ৩টি গাদা বন্দুক, গাদা বন্দুকের রাউন্ড গুলি জোড়া ইউনিফর্ম ইত্যাদি মগপার্টি কর্তৃক সরবরাহকৃত অস্ত্র জিনিসপত্র হতে পারে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।

সশস্ত্র গ্রুপের নিহত তিনজন সদস্যের নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি। আইএসপিআর প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে নিহত উক্ত তিনজন সশস্ত্র সদস্যসন্তু লারমা সমর্থিত জেএসএস মূল দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীবলে উল্লেখ করা হয়। তবে নিহত উক্ত ব্যক্তিরা জনসংহতি সমিতির সদস্য নন বলে জনসংহতি সমিতির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

ফেব্রুয়ারি ২০২২, বিশেষ প্রতিবেদক[2]: তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনী কর্তৃক কমপক্ষে জন নিরীহ জুম্মকে গ্রেফতার, জুম্মদের ২টি বাড়ি তল্লাসী জন জুম্মকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া বান্দরবান জোনে অনুষ্ঠিত এক গোপন বৈঠকে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলনরত ব্যক্তিবর্গ জনসংহতি সমিতির সদস্যদের বিরুদ্ধে মগপার্টিকে লেলিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।

দীঘিনালায় জনকে প্রহার

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, আজ শুক্রবার ( ফেব্রুয়ারি) সকাল :৩০ ঘটিকায় খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলা বাবুছড়া ইউনিয়নের উল্টাছড়ি দজর পাড়ায় কথিত সন্ত্রাসী লেবাস দিয়ে একজন জুম্ম গ্রামবাসীর বাড়িকে লক্ষ্য করে সেনাবাহিনী অতর্কিতভাবে ১০-১৫ রাউন্ড গুলি ছুড়ে।

উল্লেখ্য যে, উল্টাছড়ি দজর পাড়ায় সেনাবাহিনী কর্তৃক অতর্কিত ব্রাশ ফায়ারের পর পরই উক্ত এলাকা থেকে রীনা বাপ ওরফে রিপন চাকমা (৪৫) এবং তার ছেলে কালায়্যা চাকমা (১৯)-কে আটক করে বেদম প্রহার করা হয়েছে। কালায়্যা চাকমা সবেমাত্র এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে বলে জানা গেছে।

রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেনাবাহিনী সেখানে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে। ফলে উক্ত এলাকার জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বাবুছড়া আর্মি ক্যাম্প সাবজোন কমাণ্ডার ওয়ারেন্ট অফিসার এনাম, জারুলছড়ি ক্যাম্প কমাণ্ডার ওয়ারেন্ট অফিসার ইমাম-এর নেতৃত্বে ঘটানাটি সংগঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে।

জুরাছড়িতে ২টি বাড়ি তল্লাসী জনকে মারধর

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, গত বুধবার ( ফেব্রুয়ারি) রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি উপজেলাধীন বনযোগীছড়া জোনের অধীনে যক্ষা বাজার আর্মি ক্যাম্প, শিলছড়ি ক্যাম্প জোন সদর হতে একদল সেনা সদস্য যৌথভাবে জুরাছড়ির চকপতিঘাট, চুমাচুমি, ঘিলাতুলি সামিড়া এলাকায় টহল অভিযান পরিচালনা করে।

পরে সেনা সদস্যরা জুরাছড়ি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সামিড়া গ্রামে রাত আনুমানিক .২৫ ঘটিকায় জ্যোতি রঞ্জন চাকমা, পিতা দয়াধন চাকমা সাবেন্দ্র চাকমা, পিতা অজ্ঞাত-এর বাড়ি ব্যাপক তল্লাশী করে। এরপর সেনা সদস্যরা একই গ্রামে রূপেন্টু চাকমা, পিতা বলুক্কে চাকমাকে ব্যাপক মারধর করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রাঙ্গামাটির সমতাঘাটে জনকে আটক

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, গত মঙ্গলবার (১লা ফেব্রুয়ারি) সকাল :২০ ঘটিকার সময় সেনাবাহিনী কর্তৃক রাঙামাটি শহরের সমতাঘাট এলাকায় এক চা দোকান হতে ব্যক্তিকে আটক করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

আটককৃতদের মধ্যে শশীদেয়ান পাড়ার ফুলেশ্বর চন্দ্র চাকমা নামে একজন প্রধান শিক্ষকের নাম পাওয়া গেছে। তবে বাকি তিনজনের মধ্যে রিজার্ভ বাজার থেকে শুকর ব্যবসায়ী জনৈক ত্রিপুরা, বাঘাছোলা মৌজার হেডম্যানের ছেলে বলে জানা গেছে।

তাদেরকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর ক্যাম্প থেকে পরে ছেড়ে দেয়া হয় বলে জানা গেছে।

ফেব্রুয়ারী ২০২২, রাঙ্গামাটি[3]: রাঙামাটি জেলার নান্যাচর উপজেলার ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের ভূইয়ো আদাম নামক গ্রামে সেনাবাহিনী কর্তৃক কথিত সন্ত্রাসী খোঁজার নাম করে অতর্কিতভাবে এলোপাতাড়ি ব্রাশফায়ারের ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে কোন হতাহতের ঘটনা না ঘটেনি বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ শুক্রবার সকাল ১০ ঘটিকায় নান্যাচর সেনা জোনের অধীন কুতুকছড়ি সেনা ক্যাম্প থেকে একদল সেনা সদস্য সিএনজি মাহিন্দ্র গাড়িযোগে ঘিলাছড়ির ভূইয়ো আদাম নামক গ্রামে হানা দেয়। সময় সেনা সদস্যরা সন্ত্রাসীরা কোথায়? সন্ত্রাসীরা কোথায়? চিৎকার করতে করতে এলোপাতাড়ি ব্রাশফায়ার করতে শুরু করে।

গুলির আওয়াজ শুনে ভয়ে গ্রামবাসীরা এদিক ওদিক ছুটে চলে যায়। তবে কেউ হতাহত হন নি। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে সেনাদের সাথে মিল্টন তঞ্চঙ্গ্যা নামে একজন সোর্স ছিল।

সেনা সদস্যরা গুলি করে ক্ষান্ত না হয়ে গ্রামের বাসিন্দা কৃপণ চাকমা (৪২) পিতা-নিশীরাম চাকমা বাড়িতে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। তবে সৌভাগ্যক্রমে আগুন না ধরায় বাড়িটি ক্ষতি থেকে রক্ষা পায়।

ফেব্রুয়ারি ২০২২, রাঙ্গামাটি[4]: রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে বিজিবি কর্তৃক দুইজনকে সাময়িক আটক এবং রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার জীবতলীতে সেনাবাহিনী কর্তৃক তল্লাসী অভিযান পরিচালনা করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অন্যদিকে আজ সেনাবাহিনী কর্তৃক দীঘিনালার বাবুছড়া ইউনিয়নের উল্টাছড়ি দজর পাড়া থেকে আটককৃত কালায়্যা চাকমা (১৯)-কে অমানষিক মারধরের পর গুরুতর আহত অবস্থায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

বাঘাইছড়িতে দুইজনকে আটক:

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, বাঘাইছড়ি উপজেলাধীন সার্বোয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বাবু ভূপতি রঞ্জন চাকমা ওরফে অতুল বিহারীকে বিজিবি কর্তৃক আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

আজ শুক্রবার ( ফেব্রুয়ারি) বিকাল আনুমানিক :৩০ ঘটিকায় সার্বোয়াতলীর মেদিনীপুরে নির্বাচনী প্রচারণায় গেলে সেখান থেকে তাকে আটক করা হয় বলে জানা যায়। তবে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে বলে জানানো হয়।

এছাড়া রতন চাকমা নামে আরেকজনকে আটক করা হয় বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। তবে তাকে শিজক দোর এলাকায় ছেড়ে দেয়া হয় বলে জানা গেছে।

জীবতলীতে তল্লাসী অভিযান:

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, গত বুধবার ( ফেব্রয়ারি) বিকাল :০০ ঘটিকায় ক্যাপ্টেন মোঃ মাহমুদল হক নেতৃত্বে জীবতলী সেনানিবাস ( আর ), গবঘোনা সেনা ক্যাম্প এবং এস ব্যান্ড সেনা ক্যাম্প হতে টি স্পিড বোট যোগে ৪০/৪৫ জনের একদল সেনা কর্তৃক জীবতলী ইউনিয়নের ভাইবোনছড়া, ধুল্যাছড়ি, কৌশল্যা ঘোনায় তল্লাসী অভিযান চালানো হয়েছে বলে খবর পাওয়া যায়।

অভিযানের সময় ভাইবোনছড়া গ্রামের দীপক চাকমা (৩৫), পিতা দীনময় চাকমার বাড়ীতে গিয়ে সেনাবাহিনী তাকে খোঁজ করে।

সময় দীপক চাকমা বাড়িতে ছিলেন না। তাকে না পেয়ে সেনাবাহিনী কুলদ্বীপ চাকমা শুভমঙ্গল চাকমাকে খোঁজ করে। শুভ মঙ্গল চাকমাকে কেউ চিনে কিনা কিংবা কোথায় থাকে তা ব্রিজের দোকানের নিকট হতে সেনা সদস্যরা জিজ্ঞেস করে। এরপর সেনা দলটি ক্যাম্পে চলে যায় বলে জানা গেছে।

ফেব্রুয়ারি ২০২২, রাঙ্গামাটি[5]: রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়ায় সেনা-মদদপুষ্ট মগপার্টি সন্ত্রাসী কর্তৃক এক নিরীহ মুদি দোকানদারকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। তবে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, শুক্রবার ( ফেব্রুয়ারি) দুপুর :০০ টার দিকে রাজস্থলীর বাঙ্গালহালিয়া রাস্তা হয়ে দুটি মোটর সাইকেল যোগে সেনা-মদদপুষ্ট মগপার্টির চারজন সন্ত্রাসী গাইন্দ্যা পাড়ার এক নিরীহ মুদি দোকানদারের উপর সশস্ত্র হামলা করে।

উক্ত মুদি দোকানদারের নাম হলো উছাইনু মারমা (৩০), পিতা মংউচিং মারমা। উছাইনু মারমা মুদির দোকান চালানোর পাশাপাশি রাজমিস্ত্রীর কাজও করতেন।

মগপার্টি কর্তৃক সশস্ত্র হামলার সময় উছাইনু মারমা নিজ দোকানে দুপুরের খাদ্য খেতে বসেছিলেন। মগপার্টির সন্ত্রাসীদেরকে তাঁর দোকানের দিকে আসতে দেখে তিনি দৌঁড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সঙ্গে সঙ্গে উছাইনু মারমাকে লক্ষ্য করে মগপার্টির সদস্যরা গুলি ছোঁড়ে। তবে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় উছাইনু মারমা প্রাণে বেঁচে যান।

মগপার্টির নেতা অংসিংনু মারমা, পিতা- মংরে মারমা, গ্রাম- কাকঁড়াছড়ি পাড়া, থানা- চন্দ্রঘোনা, রাঙ্গামাটি-এর নেতৃত্বে উক্ত হামলাটি চালানো হয় বলে জানা যায়।

মগপার্টির সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার ঘন্টাখানেক পর বাঙ্গালহালিয়া সেনাক্যাম্পের একদল সেনাসদস্য উক্ত গাইন্দা পাড়ায় গিয়ে উছাইনু মারমাকে খোঁজ করে।

উছাইনু মারমার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অভিযোগ হলো তার কাছে নাকি অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। আগামীকাল শনিবার উছাইনু মারমাকে বাঙ্গালহালিয়া ক্যাম্পে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে সেনাসদস্যরা চলে যায় বলে জানা যায়।

ফেব্রুয়ারি ২০২২, চট্টগ্রাম[6]: আজ শুক্রবার ২০২২ ইং তারিখে খাগড়াছড়ি সদরে ধর্মসুখ বিহারের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ভদন্ত বিশুদ্ধা মহাথেরোকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা চট্টগ্রাম বায়োজিদস্থ মাঝের ঘোনা এলাকায় জুম্ম চাদিগাঙ সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত জ্ঞান জ্যোতি ভিক্ষুকে কুপিয়ে জখম করার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম নগরে মানববন্ধন বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে চট্টগ্রামস্থ সচেতন ছাত্র-যুব-নারী নাগরিক সমাজ।

মানববন্ধনে জুম্ম চাদিগাঙ সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহারের সভাপতি, বাবু চৈতন্য বিকাশ চাকমা (আন্দোলন) এর সঞ্চালনায় রাপাইং মারমা (নেভী) সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জুম্ম চাদিগাঙ সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ (ভিক্টিম) ভদন্ত জ্ঞান জ্যোতি ভিক্ষু, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের কেন্দ্রীয় নেতা ডাক্তার সুশান্ত বড়ুয়া, চট্টগ্রাম নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহার অধ্যক্ষ চবি পালি বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর জিনো বোধি ভিক্ষু, চবি পালি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ডক্টর জ্ঞান রত্ন মহাস্থবির, ধর্ম আলো বৌদ্ধ বিহার কার্যকারী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অংক্যচিং মারমা, সার্বজনীন শ্রী শ্রী ত্রিপুরা বিতা রাধা কৃষ্ণ মন্দির কমিটি সাংগঠনিক সম্পাদক পরেশ ত্রিপুরা, মৈত্রী বনবিহারে উপেদষ্টা ধিমান চাকমা, হিল চাদিগাং বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ সাধনা জ্যোতি মহাস্থবির, ইঞ্জিনিয়ার মহিনী রঞ্জন চাকমা প্রমূখ।

অধ্যাপক . জ্ঞানরত্ন বলেন, শান্তিপূর্ণ ভিক্ষুরা সহজে রাজপথে নামে না। কিন্তু তাঁরা আজ নামতে বাধ্য হয়েছে। এদেশ বৌদ্ধ সংস্কৃতি সভ্যতায় সমৃদ্ধ। কিন্তু ইতিহাসকে অস্বীকার করে বার বার ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং হচ্ছে। খাগড়াছড়িতে বিশুদ্ধ মহাস্থবিরকে হত্যা এবং চট্টগ্রামে অগ্রজ্যোতি ভিক্ষুকে হত্যার উদ্দেশ্য হামলা একই বিষয়ের প্রতিনিধিত্ব করে।

অধ্যাপক . জিনো বোধি মহাস্থবির বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ধর্মাবলম্বীদের উপর বার বার হামলার বিচার না হওয়ার কারণে ঘটনাগুলো পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। অবিলম্বে হত্যাকারী হামলকারীদের গ্রেফতার বিচার করতে হবে। অন্যথা বৌদ্ধ সমাজ রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

ডা. সুশান্ত বড়ুয়া বলেন, সারাদেশে পরিস্থিতি এমন খারাপ হয়েছে যে ধর্মীয়গুরু হত্যার প্রতিবাদে ধর্মীয়গুরু ধর্মাবলম্বীদের রাজপথে নেমে আন্দোলন করতে হয়। অথচ চাইলে প্রশাসন এসব স্পর্শকাতর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত বিচার করতে পারে।

কিন্তু দেশের রাজনৈতিক দলের কোন প্রতিবাদ না থাকা কিংবা প্রশাসনের উদাসীনতা এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে উৎসাহী হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে যে ঘটনা সংগঠিত হয়েছে সেখানকার স্থানীয় প্রশাসন সেনাবাহিনী দায় এড়িয়ে যেতে পারে না। অবিলম্বে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার বিচার করতে হবে।

ফেব্রুয়ারী ২০২২, আন্তর্জাতিক ডেস্ক[7]: খাগড়াছড়িতে বিশুদ্ধা মহাথেরোকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা এবং চট্টগ্রামে জ্ঞানজ্যোতি ভিক্ষুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার নিন্দা জানিয়ে এবং হত্যাকান্ডের বিচার চেয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য ভিত্তিক ত্রিপুরা চাকমা স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন (টিসিএসএ)-এর পক্ষ থেকে ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে স্থানীয় মহকুমা ম্যাজিষ্ট্রেট (এসডিএম)-এর মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট এক স্মারকলিপি পেশ করা হয়।

গতকাল শুক্রবার ( ফেব্রুয়ারি) ত্রিপুরা চাকমা স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের ৮টি শাখা সংগঠনের মধ্যে তিনটি শাখার উদ্যোগে একই সাথে কাঞ্চনপুর এসডিএম, লংথারাই এসডিএম এবং কৈলাশহর এসডিএম-এর হাতে এই স্মারকলিপি তুলে দেয়া হয় এবং অন্য পাঁচটি শাখা সংগঠনও / দিনের ভিতরে স্মারকলিপি জমা দেবেন বলে জানানো হয়।

স্মারকলিপিতে বাংলাদেশের আদিবাসীসহ মুসলিম ধর্মাবলম্বী বাদে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জীবন রক্ষার ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানানো হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিসিএসএ-এর সদস্যবৃন্দসহ কার্যনির্বাহী সম্পাদক যদন কুমার চকমা, রুপক চাকমাও সুবল চাকমা, ইয়ং চাকমা এসোসিয়েশন (ওয়াইসিএ)-এর পক্ষ থেকে প্রদীপ চাকমা এবং চাকমা ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ইণ্ডিয়া (সিএনসিআই)-এর পক্ষ থেকে শুভরঞ্জন চাকমা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ৩০ জানুয়ারি খাগড়াছড়ি সদরে ধর্মসুখ বিহারের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ভদন্ত বিশুদ্ধা মহাথেরোকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা চট্টগ্রামস্থ জুম্ম চাদিগাং বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত জ্ঞানজ্যোতি ভিক্ষুকে রাত পৌনে ১টায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় কুপিয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনা সংঘটিত হয়।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে মুসলিম দ্বারা আদিবাসীসহ হিন্দুদের উপর অত্যাচার, ধর্ষণ, হত্যা এবং মন্দির ভাংচুর নিত্যদিনের কাজে পরিণত হয়েছে। এই সমষ্ট কাজে যারা যারা লিপ্ত তাদেরকে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তির দাবি জানানো হয়। সেই সাথে ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানানো হয় সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি এবং পুলিশ বাহিনী আসামিদের আইনের আওতায় এনে কাউকে শাস্তি দিতে পারেনি বলেও উল্লেখ করা হয়।

ফেব্রুয়ারি ২০২২, বিশেষ প্রতিবেদক[8]: তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন স্থানে সেনা-মমদপুষ্ট সংস্কারপন্থী ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বান্দরবানে একজনকে তুলে নেয়া, বাঘাইছড়িতে একজন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীকে হুমকি এবং পানছড়িতে সশস্ত্র অপৎপরতা মহড়া ইত্যাদি ঘটনা সংঘটিত করে চলেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, শনিবার ( ফেব্রুয়ারি) অপরাহ্ন :৩০ টায় বান্দরবানে সেনামদদপুষ্ট সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীরা কর্তৃক এক নিরীহ গ্রামবাসীকে তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অপহরণকারী নাম রত্নসেন তঞ্চঙ্গ্যা (৪৮) পিতা মহেন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা। তিনি বান্দরবান সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের কিবুক পাড়ার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

অটল চাকমার নেতৃত্বে সংস্কারপন্থীরা ২টি মোটর সাইকেল আর একটি সিএনসি যোগে এসে রত্নসেন তঞ্চঙ্গ্যাকে তুলে নিয়ে যায়।

বাঘাইছড়িতে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীকে হুমকি:

আজ শনিবার ( ফেব্রুয়ারি) আনুমানিক সন্ধ্যায় :৪৫ মিনিটে সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসীরা বাঘাইছড়ি উপজেলাধীন খেদারমারা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বিল্টু চাকমাকে অপহরণ করার হুমকি প্রদান করা হয়েছে। প্রাণের ভয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

পানছড়িতে সেনা-মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা:

গত শুক্রবার ( ফেব্রুয়ারি ২০২২) দুপুর ১২টার সময় সেনা-মদদপুষ্ট সংস্কারপন্থী ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা পানছড়ি সদরের মানিক্যাপাড়া থেকে দুটি টমটম (ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা) যোগে কলেজ গেইট পালিটোল বৌদ্ধ বিহারের রাস্তায় নেমে মির্জাটিলা এলাকায় প্রবেশ করে। সেখানে ঘন্টাখানেক অবস্থান করার পর তারা লতিবানের শান্তি রঞ্জন পাড়া মঞ্জু আদামে যায়।

আগামী ফ্রেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীরা সেনা-প্রশাসনের সহযোগীয়তায় নানাভাবে তৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

  ফেব্রুয়ারি ২০২২, বান্দরবান[9]: সেনাবাহিনীর মদদপুষ্ট মগপার্টি সন্ত্রাসীদের গুলিতে বান্দরবান পার্বত্য জেলাধীন রোয়াংছড়ি উপজেলার তারাছা ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকায় উনুমং মারমা (৪৭) নামে নিরীহ এক জুম্ম গ্রামবাসী খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উনুমং মারমাকে গুলি করার আগে, সন্ত্রাসীরা বড়শিলা পাড়া নামক গ্রামে পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির রোয়াংছড়ি থানা কমিটির সদস্য মংসিংনু মারমাকে খোঁজ করে বলে জানা গেছে। তবে বিপদ টের পেয়ে মংসিংনু মারমা অন্যত্র পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ মার্চ ২০২২ সকাল আনুমানিক ১১:০০ টার দিকে মগ পার্টি সন্ত্রাসীদের ১২ জনের একটি সশস্ত্র দল নয়া পাড়ায় এসে উনুমং মারমাকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। ঘটনাস্থলে উনুমং মারমা মারা যায়। এরপর সন্ত্রাসীরা উনুমং মারমার লাশটি সেখান থেকে নিয়ে যায়। এসময় উনুমং মারমা একটি দোকানের সামনে বসেছিল।

উনুমং মারমা কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য নয়, তবে পার্বত্য চুক্তির সমর্থক বলে জানা গেছে। তার বাড়ি তারাছা ইউনিয়নের তালুকদারপাড়া (ঙাককোয়াইওয়া) গ্রামে। তিনি পার্শ্ববর্তী গ্রাম নয়াপাড়া এলাকায় বেড়াতে গিয়েছিলেন।

প্রতিপক্ষের হামলায় মগপার্টির সন্ত্রাসী নিহত:

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, ফেব্রুয়ারি দুপুর :০০ টার দিকে রোয়াংছড়ি-রুমা সীমানা ফালংক্ষ্যং নামক জায়গায় সাঙ্গু নদীর তীরে প্রতিপক্ষের সাথে মগপার্টির এক সংঘর্ষ হয়। এতে মগপার্টির জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী ঘটনাস্থলে নিহত হয় বলে জানা গেছে।

সময় উনুমংকে মেরে ফেরার পর মগপার্টির সন্ত্রাসীরা রুমার দিকে নৌকায় যাচ্ছিল। মাঝপথে রোয়াংছড়ির বড়শিলা পাড়ায় মংসিংনু মারমাকে ধরার ব্যর্থ চেষ্টা করার পর সন্ত্রাসীরা রুমার দিকে যেতে থাকে। ঐসময় ঘটনাটি ঘটে বলে সূত্র জানায়।

ফেব্রুয়ারি ২০২২, পার্বত্য চট্টগ্রাম[10]: বান্দরবানের নং কুহালং ইউনিয়নের কিবুক পাড়ায় সেনা-মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী কর্তৃক জনকে মারধরের পর মুক্তিপণ আদায় খাগড়াছড়ির জেলার পানছড়ি থানাস্থ আদি ত্রিপুরা পাড়া থেকে জনকে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার ( ফেব্রুয়ারি) অপরাহ্ন :৩০ টায় বান্দরবানের নং কুহালং ইউনিয়নের কিবুক পাড়ার বাসিন্দা রত্নসেন তঞ্চঙ্গ্যা (৪৮), পিতা- মহেন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যাকে সেনামদদপুষ্ট সংস্কারপন্থী ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে সন্ত্রাসীরা বান্দরবান পৌরসভার বালাঘাটা বাজারে এনে ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে প্রচণ্ড মারধর করার পর একলক্ষ টাকা মুক্তিপণ মুচলেকা নিয়ে সন্ধ্যার দিকে ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, অপহরণের নেতৃত্ব দেন সন্ত্রাসী অটল চাকমা, রামতংসাং বম (মালেক) ওয়াইমং মারমা

অপরদিকে, সেনা-মদদপুষ্ট সংস্কারপন্থী সন্ত্রাসী কর্তৃক খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি থানাস্থ আদি ত্রিপুরা পাড়ার বাসিন্দা কাঞ্চনময় ত্রিপুরা (৪৯), পিতা-অজ্ঞাত কে অপহরণের করে নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার ( ফেব্রুয়ারি) পানছড়ি বাজারের শুকতারা বোর্ডিংয়ে অবস্থানরত সেনা মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের / জনের একটি সশস্ত্র দল রাত সাড়ে টার সময় সিএনজি যোগে পানছড়ি সদর ইউনিয়নের কলাবাগান এলাকার রাস্তা থেকে জনৈক ব্যক্তিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

অপহরণের পর কাঞ্চনময় ত্রিপুরাকে সেনাবাহিনীর পানছড়ি সাব-জোনে নিয়ে যাওয়া হয় বলে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানায়।

  ফেব্রুয়ারি ২০২২ রাঙ্গামাটি[11]: রাঙ্গামাটি জেলার বরকল উপজেলাস্থ হরিণা ইউনিয়নের নং ওয়ার্ডের ১৬০ নং তৈবাং মৌজায় ঘাসকাবাছড়া বিজিবি ক্যাম্প থেকে শ্রীনগর বাজার পর্যন্ত বিজিবি কর্তৃক সীমান্ত সড়ক নির্মাণে জন গ্রামবাসীর কিছু সেগুন বাগান কেটে ধ্বংস করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ক্ষয়ক্ষতির শিকার জন গ্রামবাসীরা হলেন- রেবতী রঞ্জন চাকমা (৭০), পিতা মৃত সুরেন্দ্র চাকমা, প্রেম কুমার চাকমা (৪২), পিতা মৃত হেম রঞ্জন চাকমা, স্নেহ কুমার চাকমা (৪৩), পিতা মৃত বীর কুমার চাকমা, সুশীল বিকাশ চাকমা (৪৪), পিতা মৃত প্রসন্ন কুমার চাকমা, প্রতিভা রঞ্জন চাকমা (৫০), পিতা মৃত জ্যোতিষ চন্দ্র চাকমা, শান্তিময় চাকমা (৪৬), পিতা ললিত কুমার চাকমা সুদীপ্ত চাকমা (৪২), পিতা মৃত সূর্য সেন চাকমা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিজিবি ঘাসকাবাছড়া বিওপি ক্যাম্পের কমান্ডার নাম মোঃ হায়দার এর নেতৃত্বে ঘাসকাবাছড়া ক্যাম্প থেকে শ্রীনগর বাজার পর্যন্ত বিজিবি কর্তৃক ১০ ফুট চওড়া অনুমানিক কিলোমিটার একটি সীমান্ত সড়ক নির্মাণে সময় জন গ্রামবাসীর ২৫ টি সেগুন গাছ কেটে দেয়া হয়। যার বাজার মূল্য লক্ষ টাকার উপরে।

উল্লেখ্য, রাস্তাটি না কাটার আগে ক্যাম্প কমান্ডার মো: হায়দার শ্রীনগর বাজারের স্থানীয় কার্বারী জ্ঞানশ্রী চাকমার সাথে রাস্তাটির বিষয়ে কথা বললে তিনি স্থানীয় গ্রামবাসীদের ক্ষয়ক্ষতির কথা বিবেচনা করে রাস্তাটি না কাটার অনুরোধ করেন। কিন্তু গ্রামবাসীদের ক্ষয়ক্ষতি ক্ষতিপূরণের কথা বিবেচনা না করে বর্তমানে রাস্তাটি বিজিবি নির্মাণ করছে বলে জানা যায়।

অন্যদিকে ক্ষতির শিকার গ্রামবাসীরা ভয়ে কোনো অভিযোগ প্রতিবাদ করতে চায়নি। বর্তমানে কাটা গাছগুলো সেখানেই পড়ে বয়েছে বলে জানা যায়।

বর্তমানে যে রাস্তাটি কাটা হচ্ছে সেটি শ্রীনগর বাজার থেকে ঢেবাছড়ি বিজিবি বিওপি ক্যাম্প, শ্রীনগর বাজার থেকে শুকনা ছড়ি বিওপি ক্যাম্প শ্রীনগর বাজার থেকে সাওথল বিজিবি বিওপি ক্যাম্প পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে বলে জানা যায়।

 

ফেব্রুয়ারি ২০২২, রাঙ্গামাটি[12]: রাঙ্গামাটি জেলার গবঘোনায় সেনাবাহিনী কর্তৃক নিরীহ গ্রামবাসীর বাড়ি তল্লাসী অপর জনকে হয়রানিমূলক জিজ্ঞাসাবাদ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রবিবার ( ফেব্রুয়ারি) ২০২২ ইং দুপুর ১২.০০ টার সময় গবঘোনা এসব্যান্ড সেনা ক্যাম্প হতে গবঘোনা সেনা ক্যাম্প কম্যান্ডার ক্যাপ্টেন মোঃ মাহমুদুল হকের নেতৃত্বে দুটি স্পীড বোট যোগে ১৫/২০ জনের একটি সেনা দল হরিন ছড়া পাড়ায় টহল অভিযান চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া যায়।

উক্ত পাড়ায় মংশেপ্রু মারমা (৪২), পিতা- ভিন্ন উচাই সিং মারমা, গ্রাম- হরিন ছড়া, নং ওয়ার্ড, নং কাপ্তাই ইউনিয়ন কাছ থেকে রাগান্বিত স্বরে সেনারা জিজ্ঞেস করে যে, এখানকার গ্রামে বা এলাকায় কে কে জেএসএসের কাজ করে এবং কে কে জেএসএসকে সার্বিক সাহায্য দিয়ে আসছে, তাদের নামের তালিকা দেন। সেনাসদস্যরা এলাকাবাসীদের নানারকম অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে বলেও জানা যায়।

অপরদিকে একই পাড়াস্থ শিশু কুমার চাকমা (৪৫) পিতা-মদন মোহন চাকমা গ্রাম-হরিন ছড়া, নং ওয়ার্ড, নং কাপ্তাই ইউনিয়নের বাড়ি হয়রানিমূলক তল্লাশি চালিয়েছে বলে জানা যায়।

উল্লেখ্য, শিশু কুমার চাকমা বর্তমানে রাঙামাটি জেলহাজতে রয়েছে বলে জানা যায়।

  ফেব্রুয়ারি ২০২২, খাগড়াছড়ি[13]: খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়া ইউনিয়নের উল্টাছড়ি দজর পাড়ায় সেনাবাহিনী কর্তৃক একজন নিরীহ গ্রামবাসী বাড়ি তল্লাসী এবং নিরীহ দুইজন গ্রামবাসীকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, আজ বুধবার ( ফেব্রুয়ারি) সকাল :০০ টায় বাবুছড়া ইউনিয়নের উল্টাছড়ি দজর পাড়ায় দীঘিনালা জোন, বাবুছড়া সাব-জোন এবং জারুলছড়ি ক্যাম্প থেকে একদল সেনা সদস্য তল্লাসী অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে সেনা সদস্যরা উক্ত গ্রামের কার্বারী অবনী চাকমার বাড়ি ঘেরাও করে তল্লাসী চালায় এবং জিনিষপত্র তছনছ করে।

সে সময় কার্বারী বাড়িতে ছিলেন না। সেনা সদস্যরা অবনী কার্বারীকে বাড়িতে না পেয়ে তার মেয়েকে অনেকক্ষণ বেঁধে রাখে। শুধু তাই নয়, অবনী চাকমার স্ত্রীকে তার মেয়েকে বাঁধতে বাধ্য করা হয় বলে জানা যায়।

এছাড়াও সেনা সদস্যরা বাবুছড়া ইউনিয়নের ধনপাতা থেকে ভান্তে (৩৮) নামে এক নিরীহ জুম্ম গ্রামবাসীকে ধীরেন পাড়া থেকে নিগিরা রঞ্জন চাকমা (৪০)-কে আটক করে জারুলছড়ি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয় মুরুব্বীরা জারুলছড়ি ক্যাম্পে গিয়ে অনেক আকুতি মিনতির পর তাদের দুইজনকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানা যায়।

উল্লেখ্য যে, গত ফেব্রুয়ারি ভোর ০৫:৩০ টায় বাবুছড়া ইউনিয়নের উল্টছড়ির দজর পাড়ায় কথিত সন্ত্রাসীর লেবাস দিয়ে এক সাধারণ জুম্ম গ্রামবাসীর বাড়িকে লক্ষ্য করে সেনাবাহিনী অতর্কিতভাবে ১০-১৫ রাউন্ড গুলি ছুড়ে। গুলি ছোড়ার পর তারা উক্ত বাড়ির সমস্ত জিনিষপত্র তছনছ করে দেয় এবং অনেক জিনিসপত্র পুড়িয়ে দেয়।

শুধু তাই নয় উক্ত গ্রামের বাসিন্দা রিনা বাপ ওরফে রিপন চাকমা (৪৫) তার ছেলে কালায়্যা চাকমা (১৯)-কে সেনাবাহিনী কর্তৃক বেদম প্রহার করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ছেড়ে দেয়ার পর কালায়্যা চাকমা এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা যায়।

তার একদিন পর উক্ত গ্রামের ইউপি মেম্বার কার্বারীকে ক্যাম্পে ডাকা হয়। এসময় তাদেরকে অনেক হয়রানিমূলক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে জানা যায়।

সেনাবাহিনীর এরূপ হিংস্র কর্মকাণ্ডের ফলে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অন্যদিকে সেনাবাহিনীর এরূপ হিংস্রতা পরিলক্ষিত হওয়ার কারণে মাইনী এলাকার লোকজন রাতের বেলায় ঘরে থাকতেও ভয় পাচ্ছে বলে জানা যায়।

  ফেব্রুয়ারি ২০২২, আন্তর্জাতিক ডেস্ক[14]: খাগড়াছড়িতে বিশুদ্ধা মহাথেরোকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা এবং চট্টগ্রামে জ্ঞানজ্যোতি ভিক্ষুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত শাস্তির দাবি জানিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে চাকমা সমাজের ৪টি সংগঠনের পক্ষ থেকে গন্ডাছড়ার মহকুমা ম্যাজিষ্ট্রেট (এসডিএম)-এর মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট এক স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার ( ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশের মুসলিম দ্বারা বৌদ্ধ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অত্যাচার, গত ৩০ জানুয়ারি খাগড়াছড়ি সদরে ধর্মসুখ বিহারের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ভদন্ত বিশুদ্ধা মহাথেরোকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা এবং চট্টগ্রামস্থ জুম্ম চাদিগাং বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত জ্ঞানজ্যোতি ভিক্ষুকে ৩১ জানুয়ারি ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় জড়িতদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার শাস্তির দাবি জানিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ৪টি সংগঠন, চাকমা স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন (টিসিএসএ), চাকমা সামাজিক রেজ্যে পরিষদ, চাকমা বুদ্ধিষ্ট ওয়েলফ্য়ার সোসাইটি এবং চাকমা গাবুজ্জে জদা-এর পক্ষ থেকে গন্ডাছড়ার এসডিএম-এর মারফত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট এক স্মারকলিপি পেশ করা হয়।

স্মারকলিপি প্রদানের পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে গন্ডাছড়া হাসপাতাল এলাকায় জড়ো হয় এবং সেখান থেকে এক প্রতিবাদী মিছিল শুরু হয়ে গন্ডাছড়া এসডিএম-এর অফিসের সামনে এসে শেষ হয়।

বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে হত্যার প্রতিবাদ এবং জড়িতদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানানো হলেও এখনো পর্যন্ত সরকার কোন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে পারেনি এবং শাস্তি দিতে পারেনি বলে উক্ত সমাবেশে উল্লেখ করা হয়।

সমাবেশে চাকমা স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন (টিসিএসএ)-এর সভাপতি মিলন বিকাশ চাকমা বাংলাদেশ সরকারের কাছে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত শাস্তির দাবি জানান এবং ভবিষ্যতে যদি এই ধরনের ঘটনা আরো ঘটে তাহলে এর থেকে বড় ধরনের আন্দোলন অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

 ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, খাগড়াছড়ি[15]: খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলার মাইসছড়ি এলাকায় সেটলার বাঙালি কর্তৃক ভূমি বেদখল জুম্মদের গ্রামে হামলার চেষ্টার ঘটনাকে কেন্দ্র করেউত্তেজনা বিরাজ করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২) সকাল টার সময় মো. আবু বক্কর মো. শাহিনের নেতৃত্বে ১৫/২০ জনের একদল সেটলার বাঙালি লেমুছড়ির আর্য সমাধি ভাবনা কুটিরের প্রায় ১২ হতে ১৫ একর জায়গা বেদখল করতে যায়। সেটলাররা উক্ত জায়গা পরিষ্কার করতে গেলে স্থানীয় পাহাড়িরা বাধা দেয়। এতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাজাই মারমা সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন বলে জানা গেছে।

অপরদিকে, উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ দুপুর :০০টার দিকে মো. আশরাফ মো. আজিমের নেতৃত্বে শতাধিক সেটলার বাঙালি জয়সেন পাড়া এলাকায় পাহাড়ি গ্রামে হামলা ঘরবাড়ি ভাংচুরের চেষ্টা চালায়।

এতেও স্থানীয় পাহাড়িরা প্রতিরোধ গড়ে তুলে। পাহাড়িদের প্রতিরোধের মুখে সেটলাররা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বর্তমানে ঘটনাস্থলে সেনা সদস্যরা অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।

 

১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, রাঙ্গামাটি[16]: রাঙ্গামাটির মগবান ইউনিয়নের পৃজুছড়া থেকে সেনাবাহিনী কর্তৃক জন নিরীহ গ্রামবাসীকে ধরে নেয়ার পর জনকে অস্ত্র গুঁজে দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অপহরণের শিকার জন ব্যাক্তিরা হলেন- দয়ন্ত চাকমা (৫২), পিতা- চিকন পেদা চাকমা, অংশাপ্রু মারমা (৫৪), পিতা- খলোচী মারমা, এবং জ্ঞান রতন চাকমা (৩৫), পিতা- বিমল কান্তি চাকমা। তাদের সকালে বাড়ি মগবান ইউনিয়নের পৃজুছড়ায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার ( ফেব্রয়ারি) রাত :০০ টায় জীবতলী সেনানিবাস গবঘোনা সেনা ক্যাম্প কম্যান্ডার ক্যাপ্টেন মোঃ মাহমদুল নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জনের একদল সেনা যৌথভাবে একটি ট্রলার যোগে গিয়ে মগবান ইউনিয়নে পৃজুছড়া নামক স্থানে তল্লাসী অভিযান পরিচালনা করে। সেখানে তারা ভুক্তভোগী জনের বাড়ি ঘেরাও করে ভোর :০০ টার দিকে তিনজনকে জীবতলী সেনানিবাসে নিয়ে যায়।

এরপর সকালে জানাজানি হলে স্থানীয় মগবান ইউনিয়নের নং ওয়ার্ড মেম্বার সবিনয় চাকমা, নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ মহমদুর হক নং ওয়ার্ড কিরণ বিকাশ চাকমা সকাল :০০ টার দিকে জীবতলী সেনানিবাসে গেলে অংশাপ্রু মারমা (৫৪) জ্ঞান রতন চাকমা (৩৫)-কে ছেড়ে দিলেও দয়ন্ত চাকমাকে একটি দেশীয় (গাদা বন্দুক) অস্ত্র গুঁজিয়ে দিয়ে রাঙামাটি কোতোয়ালি থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।

 

১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, রাঙ্গামাটি[17]: রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নের কারিগড় পাড়া থেকে সেনা-মদদপুষ্ট মগপার্টি সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক একজন নিরীহ জুম্ম কৃষককে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অপহৃত ব্যক্তির নাম থোয়াইচিং মারমা (৪৭), পিতা মৃত মংসাগ্য মারমা। তিনি পেশায় একজন কৃষক এবং রাইখালী ইউনিয়নের কালামাইশ্যা মুখ পাড়া (কানাইয়া পাড়া)-এর অধিবাসী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ছিল কারিগড় পাড়া বাজারের হাটের দিন। সেদিন সকাল ১০:৩০ ঘটিকায় রাইখালী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কারিগড় পাড়া থেকে মগপার্টির চাঁদা সংগ্রাহক অংসিনু মারমা প্রান্ত ঘোষসহ চারজন সশস্ত্র সদস্য মোটরসাইকেলে করে থোয়াইচিং মারমা অপহরণ করে নিয়ে যায়।

অপহরণের পর মগ পার্টির সন্ত্রাসীরা থোয়াইচিং মারমাকে বাঙ্গালহায়িয়া বাজারের দিকে নিয়ে যায় বলে জানা যায়। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সন্ত্রাসীরা এখনো তাকে ছেড়ে দেয়নি। থোয়াইচিং মারমার নিরাপত্তা নিয়ে তার পরিবারের লোকজন আত্মীয়-স্বজনরা খুবই উদ্বেগ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে বলে জানা গেছে।

১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, বিশেষ প্রতিবেদক[18]: চাঁদাবাজি মুক্তিপণের অর্থ ভাগাভাগিতে বিরোধের জেরে সেনাবাহিনীর বান্দরবান রিজিয়নের জি২আই কর্তৃক সেনা ক্ষমতাসীন দল মদদপুষ্ট এক চাঁদাবাজকে গুলি করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, সেনাবাহিনীর বান্দরবান রিজিয়নের জি২আই মো: এরশাদ উল্লাহ এবং ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)-এর বান্দরবান জেলা প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা অনুপম চাকমা অর্থ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কালাচোখা চাকমা (অটল) এর মধ্যে চাঁদাবাজি মুক্তিপণের অর্থ ভাগাভাগিতে বিরোধ দেখা দেয়।

এই বিরোধের জের ধরে গত বুধবার ফেব্রুয়ারি ২০২২ দিবাগত রাত ১১:০০ ঘটিকায় কালাচোখ চাকমা (অটল) অনুপম চাকমাকে রিজিয়নের জি২আই মো: এরশাদ উল্লাহ পিস্তল দিয়ে গুলি করে বলে জানা যায়। এতে সেনা-মদদপুষ্ট চাঁদাবাজ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অনুপম চাকমা গুরুতর আহত হয়।

ঘটনাটি বান্দরবান সদর সেনাগ্যারিসন থেকে 200 গজ দূরে সেগুনবাগান এলাকায় ঘটে। আহত অনুপম চাকমাকে প্রাথমিকভাবে বান্দরবান সদরের ইম্মানিয়েল মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি হয়। অপারেশন সফল হলেও সুস্থ না হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেলে রেফার করা হয় বলে জানা যায়।

এদিকে ঘটনাটি সম্পর্কে রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জিয়া উল অবহিত হলে সেনা ক্ষমতাসীন দলের মদদপুষ্ট সংস্কারপন্থী জেএসএস, ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) মগপার্ট সন্ত্রাসী গ্রুপের সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বান্দরবান রিজিয়নের জি২ মেজর মো: এরশাদ উল্লাহকে ঢাকায় বদলি করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

উল্লেখ্য যে, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনী ক্ষমতাসীন দল কর্তৃক সৃষ্ট সশস্ত্র সংগঠন সংস্কারপন্থী জেএসএস, ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) মগ পার্টিকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে খুন, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায় ইত্যাদি সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে এক অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। সংস্কারপন্থী ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সশস্ত্র সদস্যদের রাঙ্গামাটি জেলার সুবলং, লংগদুর তিনটিলা, দীঘিনালার বাবুছড়া, রাঙ্গামাটি জীবতলীসহ বিভিন্ন স্থানে এবং বান্দরবান পৌরসভার বালাঘাটা শহরের কেন্দ্রস্থলে সশস্ত্রভাবে মোতায়েন রেখে জনসংহতি সমিতির সদস্য চুক্তি সমর্থকসহ সাধারণ লোকের উপর সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী, ক্ষমতাসীন দল প্রশাসন আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লক্ষ লক্ষ টাকার চাঁদাবাজি করে চলেছে।

অপরদিকে মগ পার্টি সন্ত্রাসীদের রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার গাইন্দ্যা ইউনিয়নের পোয়াইতু পাড়ায় মগ পার্টি সন্ত্রাসীদের রাজস্থলীর পোয়াইতু পাড়ায় খুন, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায় লক্ষ লক্ষ টাকার চাঁদাবাজি করে চলেছে। সম্প্রতি সেনাবাহিনীর উদ্যোগে বান্দরবান সদর এলাকায় কুহালং মৌজার সশস্ত্র অবস্থায় মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। কুহালং এলাকায় মো: রনি নামে জনৈক ব্যক্তি মগপার্টির নেতৃত্বের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। মগপার্টিকে বান্দরবান সদর পাইছড়া এলাকায় চাঁদা কালেকশনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, বান্দরবান[19]: বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলার বাজার এলাকা থেকে দুইজন নিরীহ জুম্মকে সেনাবাহিনী কর্তৃক আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে

আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন রোয়াংছড়ি বাজার সদর এলাকার বাসিন্দা মংয়ইচিং মারমা (৩০) এবং রাজভিলা ইউনিয়নের বাসিন্দা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রাজভিলা ইউনিয়নের সভাপতি চাইসইপ্রু মারমা (৫৫)

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০:০০ ঘটিকায় রোয়াংছড়ি বাজার সদর এলাকার বাসিন্দা মংয়ইচিং মারমা বাজার করতে বাড়ির সামনের দোকানে গেলে সেখান থেকে রোয়াংছড়ি সেনা জোনের একদল সেনা সদস্য গাড়িতে করে দ্রুত গতিতে এসে মাস্তানির স্টাইলে মংয়ইচিং মারমাকে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে রোয়াংছড়ি সেনাক্যাম্পে নিয়ে যায়।

ঘটনার পর পর পরিবারের লোকজন গ্রামের মুরুব্বিসহ দেখা করতে গেলে সেনাসদস্যরা দেখা করতে দেয়নি। পরে বিকাল :০০ টার সময় তাকে বান্দরবান সেনানিবাসে পাঠানো হয়। সর্বশেষ তথ্য মোতাবেক বান্দরবান সেনানিবাসে তাকে রাখা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে কি কারণে মংয়ইচিং মারমাকে আটক করা হয়েছে পরিবারকে বিস্তারিত কিছুই জানানো হয়নি।

অন্যদিকে আনুমানিক বিকাল :০০ টার সময় চাইসইপ্রু মারমা মিথ্যা মামলায় আদালতের হাজিরা শেষে গাড়ি যোগে বাড়ি ফেরার সময় গাড়িটি ডুলুপাড়া আর্মি ক্যাম্পের তল্লাসি চৌকিতে পৌঁছলে তল্লাসি চৌকিতে থাকা সেনা সদস্যরা তাকে আটক করে। এখনো পর্যন্ত তাকে ডুলুপাড়া আর্মি ক্যাম্পে আটক করে রাখা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

উল্লেখ্য, চাইসইপ্রু মারমা জনসংহতি সমিতির রাজভিলা ইউনিয়ন শাখার সভাপতি হলেও দীর্ঘদিন যাবত নিষ্ক্রিয় রয়েছেন বলে জানা যায়।

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, বান্দরবান[20]: সেনা-মমদপুষ্ট ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক বান্দরবান সদর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় জমি জবরদখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, ইউপিডিএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক অস্ত্রের মুখে ভূমি জবরদখলের একটি ঘটনা হলো বান্দরবান রাজার উচপ্রুর মৌজাধীন (বোমাং রাজার ৩১৩নং খাস মৌজা) মেঘলা পর্যটনের সন্নিকটস্থ চাকমা পাড়ার (পর্যটন মোটেলের পেছনে) এক বৌদ্ধ বিহারের জায়গা জবরদখল করা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পর্যটন চাকমা পাড়ার একজন গ্রামবাসী জানান যে, দীর্ঘদিন থেকে বৌদ্ধ বিহারের এই জায়গার নিয়ে সেটেলার বাঙালির সাথে বিরোধ চলেছিল। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার ১০ ফেব্রুয়ারি সেটেলার বাঙালিসহ ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) দলের অনুপম চাকমা (অনু)-এর নেতৃত্বে - জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী বিহারের উক্ত জায়গাটি দখল করে নেয়।

তিনি আরো জানান যে, “ভয়ে আমরা গ্রামবাসীরা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারিনি। আমাদের করার কিছুই নেই। আমরা অসহায়।

তবে পবিত্র ধর্মীয় জায়গার জবরদখলকারীকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবি জানাতে গ্রামবাসীরা জেলা প্রশাসকের কাছে যাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা চাকমা পাড়ায় দিন রাত মদ্যপানসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপ জড়িত থাকলেও ভয়ে গ্রামবাসীরা দেখেও না দেখার ভান করে থাকে।

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায় যে, পর্যটন চাকমা পাড়ার কার্বারী অনিল চাকমা ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) দলের সহযোগী। তিনি ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সশস্ত্র সন্ত্রাসীদেরকে গ্রামে প্রথমে আশ্রয় দিয়েছিলেন। তার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সন্ত্রাসীরা এখন বিহারের জায়গা জবরদখল করছে।

বর্তমানে দখলকৃত জায়গায় বাগান করার জন্য অনুপম চাকমা (অনু) জুম কাটা শুরু করেছে বলে জানা গেছে। ভয়ে কেউ এর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস করছেন না।

উল্লেখ্য যে, পর্যটন চাকমা পাড়াটি চাকমা অধ্যুষিত গ্রাম। চাকমা, মারমা বাঙালি মিলে এই গ্রামে ৪০ পরিবারের বসবাস রয়েছে।

২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, বান্দরবান[21]: বান্দরবানের রাজবিলা ইউনিয়নে সেনাবাহিনী ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ মদদপুষ্ট মগপার্টির সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা জন গ্রামবাসী বাড়ি তল্লাসী এবং একজন গ্রামবাসীকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, গতকাল রবিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত :১৫ ঘটিকার সময় মগপার্টি নামে খ্যাত মারমা লিবারেশন পার্টি আনুমানিক ১৫-২০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙালহালিয়া থেকে এসে বান্দরবান সদর উপজেলার ১নং রাজবিলা ইউনিয়নের ৩ন ওয়ার্ডের রাজবিলা তঞ্চঙ্গ্যা পাড়ার নিবাসী খোকন তঞ্চঙ্গ্যা (৪০), পিতা- মৃত দিরি মোহন তঞ্চঙ্গ্যা-এর বাড়ি ঘেরাও করে।

দূর থেকে দেখতে পেয়ে খোকন তঞ্চঙ্গ্যা তাড়াতাড়ি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। এরপর মগপার্টি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা খোকন তঞ্চঙ্গ্যার বাড়ি ঘেরাও করে তল্লাশি করতে থাকে। তাকে না পেয়ে সন্ত্রাসীরা প্রায় ১০-১৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে।

তার ১৫-২০ মিনিট পর খোকন তঞ্চঙ্গ্যার আপন ছোট ভাই রতন তঞ্চঙ্গ্যা (৩৬), পিতা মৃত দিরি মোহন তঞ্চঙ্গ্যার বাড়ি ঘেরাও করে এবং রতন তঞ্চঙ্গ্যাকে খোঁজ করে। সে সময় সন্ত্রাসীরা রতন তঞ্চঙ্গাকে মারধর করে মাথা সমস্ত শরীর জখম করে রক্তাক্ত অবস্থায় অজ্ঞান করে রেখে চলে যায়।

মগ পার্টি সদস্যরা খোকন তঞ্চঙ্গ্যা রতন তঞ্চঙ্গ্যার বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পর রাত আনুমানিক ১০:১৫ ঘটিকার সময় মগপার্টির সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা রাজবিলা মধ্যম পাড়ার নিবাসী চিংহ্লাউ মারমা (৫৫), পিতা মৃত থোয়াইঅং মারমার বাড়ি ঘেরাও করে এবং তাকে খোঁজাখুজি করে।

চিংহ্লাউকে না পেয়ে রাজবিলা উপর পাড়ার মংতো মারমা (কার্বারী)-এর বাড়ি দেখাতে চিংহ্লাউ ছেলেকে সঙ্গে নিতে উদ্যত হয়। পরে চিংহ্লাউ মারমার স্ত্রী মগ পার্টির সদস্যদের কাছে ছেলেকে ফেরত পাওয়ার জন্য পা ধরে ছেলের জীবন ভিক্ষা চাইলে তখন সন্ত্রাসীরা ছেলেকে রেখে চলে যায়।

এরপর রাত আনুমানিক ১০:২০ ঘটিকার সময় একই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের রাজবিলা মধ্যম পাড়ায় হানা দেয়। তখন পাড়ায় গিয়ে মংতো মারমা কার্বারী (৩৮), পিতা- মৃত মংপ্রু মারমা-এর বাড়ি ঘেরাও করে এবং বাড়ি তল্লাশি করতে থাকে। এসময় কার্বারীর স্ত্রীর কাছ থেকে তার স্বামী কোথায় আছে এবং কোথায় থাকে ইত্যাদি জিজ্ঞাসা করে এবং বাড়ির যাবতীয় আসবার পত্রসহ তছনছ করে ঘরের দরজা জানালা ভেঙে দিয়ে যায়।

উল্লেখ্য যে, রতন তঞ্চঙ্গ্যাকে মারধরের পর সন্ত্রাসীরা গুরুতর আহত অবস্থায় রেখে যায়। আজ সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে চিকিৎসার জন্য রতন তঞ্চঙ্গ্যাকে হাসপাতালে নেয়া হয়।

যাদের বাড়ি তল্লাসী করেছে যাকে মারধর করেয়ে তাঁরা এক সময় জেএসএস-এর সমথর্ক ছিলেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে তারা নিস্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছেন এবং তাদের নিজ নিজ পারিবারিক কাজ কর্ম নিয়ে থাকেন।

উল্লেখ্য যে, বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বান্দরবান পার্বত্য জেলায় পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অর্থ বিভাগের প্রধান চীফ কালেক্টর কালাচোখা চাকমা অটলকে ধর্মত ছেলে হিসেবে গ্রহণ করেছে। ক্যশৈহ্লা এই সন্ত্রাসীকে তাঁর নিজের স্বার্থে নিরাপত্তা দিতে বিশেষ বাহিনীর হিসাবে ব্যবহার করে চলছে। বিশেষ সূত্রে জানতে পারি, প্রত্যেক সপ্তাহে একবার করে ক্যশৈহ্লার সরকারি বাসভবনে (বাংলোর) সাক্ষাৎ করতে নিয়মিত আসা যাওয়া করে বলে জানা গেছে।

 

 ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, রাঙ্গামাটি[22]: রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার বালুখালি ইউনিয়নে সেনাবাহিনী কর্তৃক জন জেলে গ্রামবাসীকে অমানুষিকভাবে মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মারধরের শিকার জেলেরা হলেন- নাগা চাকমা (৩৫), পিতা ফনী ভুষন চাকমা, সাং বালুখালী; নীতি ভুষন চাকমা (৩০), পিতা অশোক কুমার চাকমা, সাং বালুখালী এবং বনিয়া চাকমা (৪৫), পিতা পুইয়া চাকমা, সাং গবঘোনা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, গত শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) আনুমানিক ১০.০০ টার সময়ে রাঙ্গামাটি সদর উপজেলাধীন ২নং মগবান ইউনিয়নের গবঘোনা সেনা ক্যাম্প হতে ক্যাপ্টেন মাহমদুল নেতৃত্বে ২০/২৫ একটি সেনা দল রাত বালুখালী ইউনিয়নের নং ওয়ার্ডে বালুখালী গ্রামে কিজকি জেলের বহদ্দার সুনীল চাকমা বাড়ীতে হানা দেয়।

সময় উক্ত তিনজন জেলে ভাত খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেই মূ্র্হুতে সেনা সদস্যরা তাদেরকে বন্দুকের বাট দিয়ে আঘাত করে বেদম মারধর করে।

এসময় সেনা সদস্যরাকে কে অস্ত্র পাচার করে’, ‘কে কে চাঁদা উত্তোলন করেইত্যাদি জিজ্ঞাসাবাদ করে। ভুক্তভোগীরাজানি নাবললে সেনা সদস্যরা আরো বেশি অমানুষিকভাবে মারধর করতে থাকে। এভাবে ইচ্ছামত মারধরের পর রাত :০০ টার দিকে সেনা সদস্যরা ক্যাম্পে চলে যায়।

 

 

বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২[23]) বিকাল :০০ টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার উজোবাজারের সাপ্তাহিক হাটবার। জ্ঞান রঞ্জন চাকমা(৫০) বাজারে গিয়ে বেচা-কেনা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বিকাল :০০ টার দিকে তিনি রেতকাবা দোপদা নামক স্থানে দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন।

এমন সময় বাঘাইহাট জোন থেকে একটি পিকআপে করে একদল সেনা সদস্য এসে দোকান থেকে তাকে আটক করে জোনে নিয়ে যায়।

সেখানে নেয়ার পর তাকে শারীরিক নির্যাতনের পরচাঁদার রসিদ বইগুঁজে দিয়ে তাকে সাজেক থানায় হস্তান্তর করা হয় বলে জানা যায়।

আটককৃত জ্ঞান রঞ্জন চাকমা(৫০) সাজেকের ডানে বাইবাছড়া গ্রামের মৃত দিব্য চরণ চাকমার ছেলে। সেনা সদস্যরা জ্ঞান রঞ্জন চাকমাকে বিনা করণে আটক করেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

 

 

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২[24], রাত আনুমানিক :০০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত আনুমানিক :০০টার সময় তন বিহারী চাকমা নিজ বাড়ির উঠানে বসে আগুন পোহাচ্ছিলেন। সময় একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী এসে তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন।

নিহত তন বিহারী চাকমা, পিতা-লক্ষ্মীধন চাকমা খাগড়াছড়ি উপজেলা সদরের সাতভাইয়াপাড়ার বাসিন্দা এবং পেশায় একজন কৃষক। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় বলেও জানা গেছে। তবে কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি মোহাম্মদ রশিদ বলেন, দুর্বৃত্তরা তন বিহারীকে ঘরের সামনে গুলি করে হত্যা করে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। তার শরীরে একাধিক গুলির চিহ্ন রয়েছে। তবে এই বিষয়ে পরিবার বা স্থানীয়রা কেউ কিছু বলতে রাজি হয়নি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

তবে স্থানীয় কয়েকজন অধিবাসী জানান, সেনা মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীরা ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।

 

 

বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি[25]) রাত ১০:০০ টার দিকে রুমা বাজার থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নের নম্বর ওয়ার্ডের আবুপাড়ায় গ্রামের কার্বারীর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে পাড়ার বাসিন্দারা হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন লকরুই কার্বারী (৭০) এবং তাঁর চার ছেলে রুমতুই ম্রো (৩৫), রেংঙি ম্রো (৩০), মেনওয়াই ম্রো (২৫) রিংরাও ম্রো (২০) ঘটনায় কার্বারীর আরেক ছেলে পালিয়ে রক্ষা পেয়েছেন। তিনি এখন পলাতক রয়েছেন। নিহত চার ভাইয়ের মধ্যে রিংরাও ম্রো ছিল কলেজের ছাত্র।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, হামলাকারীরা প্রথমে লকরুই কার্বারীর বড় ছেলে রুমতুই ম্রোকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে কার্বারীর বাড়িতে গিয়ে লকরুই কার্বারী, ছেলে রেংঙি ম্রো, মেনওয়াই ম্রোকে হত্যা করা হয়। কার্বারীর কলেজপড়ুয়া সবার ছোট ছেলে রিংরাও ম্রো আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন। তাঁকে সেখানে গিয়ে হত্যা করা হয়। কার্বারীর আরেক ছেলে পালিয়ে রক্ষা পেয়েছেন। তিনি এখন পলাতক।

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায় যে, গত বছর থেকে কার্বারীর পরিবারের সঙ্গে জুমের সীমানা নিয়ে পাড়ার লোকজনের বিরোধ চলছে।

আরো অভিযোগ রয়েছে যে, কারবারির পরিবার পাড়ার লোকজনের উপর জাদুটোনা করছিল। তাতে পাড়ার লোকজন মারা যাচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়। সেই অভিযোগ তুলে পাড়ার লোকজনই কার্বারীর পরিবারকে কুপিয়ে মেরে ফেলেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

 

 

২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ খ্রি. রাঙ্গামাটি[26] পার্বত্য জেলাধীন বরকল উপজেলার আইমাছড়া ইউনিয়নে জমিতে গরুকে চরতে বাধা দেওয়ায় এক জুম্ম গ্রামবাসীকে বাঙালি সেটেলারদের মারধর এবং বাঘাইছড়ি উপজেলার ৩০নং সারোয়াতুলি ইউনিয়নে ৮নং ওয়ার্ড নবপেরাছড়ায় সেটেলার বাঙ্গালি কতৃক দুই জুম্ম জেলে গণমারধরের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, বান্দরবান[27]: সম্প্রতি বান্দরবান পার্বত্য জেলাধীন রুমা উপজেলার গ্যালেংগ্যা ইউনিয়নে বিভিন্ন জুম্ম জনপ্রতিনিধি গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে আয়োজিত এক সভায় সেনাবাহিনীর বান্দরবান ব্রিগেড এর কম্যান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জিয়াউল হক বলেন, ‘বর্তমানে দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, কিন্তু দেশ চালায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশে সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এবং সেনাবাহিনীর পর্যটনের বিরুদ্ধে স্থানীয় জুম্মদের আন্দোলনের প্রতি প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে ব্রিগেড কম্যান্ডার মো. জিয়াউল হক আরও বলেন, ‘সেনাবাহিনীর পর্যটনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে এই এলাকার মানুষ। এসব আন্দোলন করে কোনো লাভ হবে না। এগুলো বন্ধ করতে হবে। সেনাবাহিনীর উদ্যোগে চলমান পর্যটনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে দায়েরকৃত মামলা তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা কর, যত টাকা লাগে দেবো।

তিনি আরও বলেন, ‘লাখ টাকা না, কোটি টাকা দেবো এবং এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করতে হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ব্রিগেড কম্যান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জিয়াউল হক গ্যালেংগ্যা ইউনিয়ন এলাকায় সফরে গেলে সেনাবাহিনীর নির্দেশে স্থানীয় বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এসময় সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কর্মকর্তাসহ গ্যালেংগ্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেনরত ম্রোসহ বিভিন্ন মেম্বার গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, ব্রিগেড কম্যান্ডার এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান মেনরত ম্রোকে তার ইউনিয়নের সকল মেম্বারদের নিয়ে অচিরেই ব্রিগেড অফিসে গিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করার নির্দেশ দেন। জবাবে চেয়ারম্যান মেনরত ম্রো মেম্বারদের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন বলে জানান।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার জানান, অধিকাংশ জনপ্রতিনিধির আশংকা হচ্ছে, ব্রিগেড অফিসে গেলে সেনাবাহিনী জোর করে অথবা সুকৌশলে আদিবাসীদের মালিকানাধীন পর্যটনের জায়গাগুলো হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে অথবা পর্যটন স্পটগুলোর উপর না-দাবি পত্রে স্বাক্ষর বা টিপসই নিতে পারে।

 

২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, রাঙ্গামাটি[28]: রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন বরকল উপজেলার আইমাছড়া ইউনিয়নে নিজের জমির উপর গরু চড়াতে বাঁধা দেয়ায় সেটেলার বাঙালি কর্তৃক এক জুম্ম গ্রামবাসী মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ উপজেলার আইমাছড়া ইউনিয়নে কলাবুনিয়ার এলাকায় জন সেটেলার বাঙালি কর্তৃক অমর কান্তি চাকমা (৩৫) নামে এই জুম্ম গ্রামবাসীকে মারধরের ঘটনা ঘটে। অমর কান্তি চাকমার বাড়ি আইমাছড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড এলাকায়। আক্রমণকারী সেটেলার বাঙালিরা হল আইমাছড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ দুর্জয়, মোঃ আকাশ, মোঃ আরিফ, মর্জিনা বেগম টুনি।

ঘটনার শিকার অমর কান্তি চাকমা জানান, আমাদের চাষাবাদ করা জমিতে গরু না চড়ানোর জন্য গরুর মালিক সেটেলার বাঙালিদের বহুবার সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু তারা কথা শোনেননি। এত করে সতর্কতা দেয়া সত্বেও জমিতে খোলামেলাভাবে তারা গরুগুলো ছেড়ে দেন। এতে জমির ফসল ক্ষতি হয়। এই সমস্যাটি ছিল দীর্ঘদিনের।

তিনি আরও বলেন, আজকেও তারা (সেটেলার বাঙালিরা) প্রতিবারের ন্যায় গরুগুলো ছেড়ে দেন। এরপর গরুগুলো জমির উপর খোলামেলাভাবে চড়তে দেখে তাদের বাড়িতে এগিয়ে দিয়ে আছি। এরপর নিজের জমিতে মাটি কাটার কাজ ধরি। পরবর্তীতে তারা বিকাল :৩০টার দিকে আমাকে খুঁজতে খুঁজতে চলে আসে। এরপর আমি কেনো গরুগুলো বাড়িতে তাড়িয়ে দিয়ে এসেছি-এই কথা বলতেই মোঃ দুর্জয়, মোঃ আকাশ, মোঃ আরিফ, মর্জিনা বেগম টুনি ৫জন মিলে আমাকে আক্রমণ করে এবং মারধর করতে থাকে।

ওই ঘটনার খবর শুনে পার্শ্ববর্তী স্নেহ কুমার চাকমা দৌঁড়ে এসে তাকে উদ্ধার করায় প্রাণে বেঁচে যান বলে জানান অমর কান্তি চাকমা।

উল্লেখ্য, উক্ত সেটেলার বাঙালিরা এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা নন। ১৯৭৯-৮০ সালের দিকে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে থেকে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে জুম্ম অধ্যুষিত আইমাছড়া এলাকায় জোরপূর্বক বসতিদান করা হয়। এরপরও তারা পার্শ্ববর্তী জুম্মদের অনেক জায়গা-জমি বেদখল করে।

 

 

২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, রাঙ্গামাটি[29]: রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন বাঘাইছড়ি উপজেলার ৩০নং সারোয়াতুলি ইউনিয়নে ৮নং ওয়ার্ড নবপেরাছড়ায় সেটেলার বাঙ্গালি কতৃক দুই জুম্ম জেলে গণমারধরের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, দুপুর ১২ টার সময় এই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ দুপুর ১২ টার সময় ৩০নং বাঘাইছড়ি উপজেলার সারোয়াতুলি ইউনিয়নে ৮নং ওয়ার্ড নবপেরাছড়ায় জুম্মদের নিজেদের ঝাকের মাঝখানে সেটেলার বাঙ্গালিরা জাল ফেলে তাতেই জুম্মরা বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করলে সেটেলার বাঙালিরা লংগদু থানার গুলশাখালী গ্রামের বাসিন্দার রফিকুল ইসলাম(৩৫) পিতাবুরুস আলী; সফিকুল ইসলাম(৩১) পিতাবুরুস আলী; জালাল উদ্দিন(৩৭) পিতাইউসুফ আলীর নেতৃত্বে দুই জুম্ম জেলেকে গণমারধর করেন।

উল্লেখ্য, উক্ত গণমারধরের ঘটনায় রফিকুল ইসলাম(৩৫), সফিকুল ইসলাম(৩১), জালাল উদ্দিন(৩৭) ছাড়াও আরও একাধিক সেটেলার বাঙালি সংশ্লিষ্ট ছিল বলে জানা গেছে।

মারধরের শিকার দুই জম্ম জেলের নাম বিন্দাবাশি চাকমা(৩২) নৌকা আলি চাকমা(৩৮) উভয়ের বাড়ি ৩০নং সারোয়াতুলি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড নবপেরাছড়া এলাকায়।

উক্ত মারধরের ঘটনায় নবপেরাছড়ায় জুম্মদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।

 

 

২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, বান্দরবান[30]: বান্দরবান পার্বত্য জেলাধীন রোয়াংছড়ি উপজেলা সদর এলাকার মংসিংশৈ মারমা (৩৭), পিতা-মৃত নিংসামং মারমা নামের এক জুম্ম গ্রামবাসী অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্রমতে, সেনামদদপুষ্ট মগ পার্টির সন্ত্রাসীরাই এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ দুপুর আনুমানিক ১২:০০ টার দিকে উপজেলার রোয়াংছড়ি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের নতুন পাড়া এলাকায় নিজ বাড়ির পাশে একটি চায়ের দোকানে বসে থাকা অবস্থায় মংসিংশৈ মারমাকে একদল সশস্ত্র লোক এসে গুলি করে চলে যায়। এসময় গুলি লেগে ঘটনাস্থলেই মংসিংশৈ মারমা মারা যায়। তবে কে বা কারা গুলি করে চলে যায় তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি।

জানা গেছে, মংসিংশৈ মারমা একসময় দীর্ঘদিন যাবৎ রোয়াংছড়ি থানা কমিটির পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু সাম্প্রতিককালে এলাকার পরিস্থিতি খারাপ হলে নিজেকে সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে দূরে সরিয়ে নেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকটি সূত্রমতে, স্থানীয় সেনাবাহিনী কিছুদিন ধরে তাকে নানাভাবে নিজেদের কাজে লাগানোর চেষ্টা করছিল। ইতোমধ্যে মগ পার্টির সন্ত্রাসীদের সাথে মংসিংশৈ মারমার একাধিকবার ফোনে বাকবিতন্ডা হয় বলেও জানা যায়। উক্ত সূত্রটির মতে, মগ পার্টির সন্ত্রাসীরাই মংসিংশৈ মারমাকে খুন করতে পারে।

জানা গেছে, রোয়াংছড়ি সেনা ক্যাম্প থেকে নিহত মংসিংশৈ মারমার বাড়ির দূরত্ব বড় জোর ২৫০ হতে ৩০০ গজ।

 

 

২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ খ্রি. সম্প্রতি বান্দরবান[31] পার্বত্য জেলাধীন রুমা উপজেলার গ্যালেংগ্যা ইউনিয়নে বিভিন্ন জুম্ম জনপ্রতিনিধি গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে আয়োজিত এক সভায় সেনাবাহিনীর বান্দরবান ব্রিগেড এর কম্যান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জিয়াউল হক বলেন, ‘বর্তমানে দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, কিন্তু দেশ চালায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

 

২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, বান্দরবান[32]: বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার নোয়াপতং ইউনিয়নের খেয়াংম্রং পাড়া থেকে সেনাবাহিনী কর্তৃক মংয়ইপ্রু মারমা (৩০) নামে এক নিরীহ জুম্মকে ক্যাম্পে ডেকে নিয়ে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আজ সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মংয়ইপ্রু মারমাকে রোয়াংছড়ির আন্তাপাড়া সেনা ক্যাম্পে ডেকে নিয়ে গ্রেফতার করা হয়। তিনি নোয়াপতং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মধ্যপাড়া গ্রামের মংচথই মারমার ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, ক্যাম্পে দেখা করার জন্য বলা হলে মংয়ইপ্রু মারমা গ্রামের কার্বারী হ্লাগ্য মারমাসহ দুজন গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সোমবার বিকাল :০০ টায় আন্তাপাড়া ক্যাম্পে দেখা করতে যান।

আলাপ করার পর কার্বারী হ্লাগ্য মারমাদের জিম্মায় মংয়ইপ্রুকে ছেড়েও দেয় সেনা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কিছুক্ষণ পর সেনাবাহিনী কর্তৃক আবার দরকার আছে বলে মংয়ইপ্রুকে ডেকে নিয়ে বান্দরবান সেনা জোনে চালান দেয়া হয় বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জনপ্রতিনিধি জানান।

এসময় তাকে গ্রেফতার করে গাড়িতে তুলে রোয়াংছড়ি সেনা জোনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেনা জোনে নিয়ে মংয়ইপ্রু মারমাকে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাতনামা অস্ত্রধারী কর্তৃক জনৈক মংশিংশৈ মারমাকে হত্যার ঘটনায় জড়িত করে বান্দরবান সদর থানায় সোপর্দ করা হয় বলে জানা যায়।

উল্লেখ্য যে, মংশিংশৈ মারমাকে গুলি করে হত্যা ঘটনায় তার স্ত্রী হ্লাউয়ই মারমা অজ্ঞাতনামা / জন অস্ত্রধারীর বিরুদ্ধে রোয়াংছড়ি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় মংয়ইপ্রু মারমার নাম ছিল না।

মংয়ইপ্রু মারমা পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রোয়াংছড়ি থানা শাখার সাবেক সভাপতি ছিলেন। সংগঠনের সাথে তার দীর্ঘদিন ধরে কোনো সংযোগ ছিল না বলে জানা গেছে।

তাঁর পিতামাতা রোয়াংছড়ি সদর এলাকায় বসবাস করলেও বিয়ে করার পর মংয়ইপ্রু মারমা খেয়াংম্রং পাড়াতে দীর্ঘ অনেক বছর ধরে বসবাস করে আসছেন। তাঁদের পরিবার অত্যন্ত গরীব নিরীহ।

মংয়ইপ্রু মারমাকে মিথ্যাভাবে মংশিংশৈ মারমার হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত করা হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উক্ত জনপ্রতিনিধি জানান।

 

 



[1] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 2, 2022

[2] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 4, 2022

[3] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 4, 2022

[4] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 4, 2022

[5] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 4, 2022

[6] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 4, 2022

[7] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 5, 2022

[8] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 5, 2022

[9] By Hill Voice –ফেব্রুয়ারি 5, 2022

[10] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 6, 2022

[11] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 7, 2022

[12] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 7, 2022

[13] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 9, 2022

[14] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 9, 2022

[15] তথ্যসূত্র : সিএইসটি নিউজ

[16] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 10, 2022

[17] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 11, 2022

[18] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 14, 2022

[19] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 15, 2022

[20] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 18, 2022

[21] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 21, 2022

[22] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 21, 2022

[23] সূত্র: সিএইচটি নিউজ

[24] By Hill Voice –ফেব্রুয়ারি 24, 2022

[25] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 24, 2022

[26] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারি 26, 2022

[27] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 26, 2022

[28] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 26, 2022

[29] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 26, 2022

[30] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারি26, 2022

[31] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারি 27, 2022

[32] By Hill Voice -ফেব্রুয়ারী 28, 2022

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কেন আঞ্চলিক স্বায়ত্ব শাসন?

বাংলাদেশ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের শাসনতান্ত্রিক অধিকার দাবীর- আবেদন পত্র গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবী ...