শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

মারমা দুই বোনকে ধর্ষণ ও নিপীড়ন করেছে কারা?



১. জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশিদুল হাসান
২. বিলাইছড়ির ১০ আনসার ব্যাটালিয়নের জোন কমান্ডার আফজল হোসেন
৩. রাঙামাটি জেলার আনসার কমান্ডার আব্দুল আউয়াল
তিনজনের বক্তব্য মিলিয়ে দেখুন। আসল সত্যটা জানতে পারবেন। সেনাবাহিনী যে কিছু ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে সেটা পরিষ্কার!
মারমা কিশোরী ধর্ষণের শিকার ঘটনার #চারদিন_অতিবাহিত_হওয়ার_পর_সেনাবাহিনী_পক্ষ_থেকে_বলা_হচ্ছে!
( পত্রিকায় প্রকাশিত খবর)
ঘটনার ওই রাতেই -
#আনসার সদস্য গিয়াস উদ্দিনকে আটক করা হয়েছে!
#আনসার সদস্য গিয়াস উদ্দিনকে ব্যাটালিয়ন সদরে ক্লোজড করা হয়েছে!
তাহলে আনসার সদস্য গিয়াস উদ্দিনকে আটক, ব্যাটালিয়ন সদরে ক্লোজড করার কথা তারা গোপন রেখেছিল কেন?
#গিয়াস উদ্দিনকে আটক, ব্যাটালিয়ন সদরে ক্লোজড করা হয়েছে এটার সত্যটা কি?
#আনসার সদস্য গিয়াস উদ্দিনকে কেন পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়নি?
#আনসার সদস্য গিয়াস উদ্দিনের বিচার কি তাহলে দেশের প্রচলিত আইনে হবে না?
গিয়াস উদ্দিন আটক বা ব্যাটালিয়ন সদরে ক্লোজড -এর ঘটনা সব সাজানো নাটক হলেও এ প্রশ্ন আসতেই পারে।

#ঘটনা: -
গত ২২ জানুয়ারি ২০১৮ দিবাগত রাত আনুমানিক ২:৩০ টায় রাঙ্গামাটি জেলাধীন বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ওড়াছড়ি গ্রামে এক মারমা কিশোরী (১৭) ফারুয়া সেনা ক্যাম্পের সেনাসদস্য কর্তৃক নিজ বাড়িতে ধর্ষণের শিকার এবং তার আরেক ছোট বোন (১৫) শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয়।

#সেনা_সন্ত্রাস!
> ২২ জানুয়ারি ২০১৮ দিনের বেলায় ফারুয়া ক্যাম্পের একদল সেনা ওড়াছড়িতে ভিকটিমের বাবার বাড়িতে গিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি দেন এবং কেউ এসে জানতে চাইলে ‘ধর্ষিত হয়েছে’ বলে কেউ যাতে না বলে তা নির্দেশ দিয়ে আসেন। বললে #মেরে_ফেলা_হবে_বলে_হুমকি_দেন। তবে ‘শুধু একটু গায়ে ধরে টানাটানি করা হয়েছে’ বলতে বলা হয়!
> ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ রাংগামাটি জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) ও পুলিশ সুপারের (এসপি) নেতৃত্বে প্রশাসনের একটি দল ওড়াছড়িতে গিয়ে ভিকটিমের মা বাবার ও এলাকার মুরুব্বিদের সাথে কথা বলেন এবং ভিডিও করেন বলে জানা যায়। এ সময়ে ভিকটিমের মা বাবা সেনাবাহিনীর শিখিয়ে দেয়া কথাগুলো বলতে বাধ্য হন।
> ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ রাত ১১.০০ টায় আবার ভিকটিমের বাবার বাড়িতে সেনাবাহিনী যায়। তবে সেখানে গিয়ে কি বলেছে সেটা জানা না গেলেও কি বলতে পারে সেটা অনুমান করা যায়। ভিকটিমদের রাঙ্গামাটি হাসপাতালে যাওয়া বন্ধ করতে ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ সারাদিন গাছকাবাছড়া ক্যাম্পের চেকপোস্টে সেনা সদস্যরা তল্লাসী চালিয়ে যাত্রীবাহী বোট ও নৌকায় কোন মারমা লোকজন আছে কিনা খুঁজতে থাকে!
> ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ দুপুর ১২:০০ টার দিকে ভিকটিমকে রাঙ্গামাটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর স্থানীয় প্রশাসন ও প্রশাসনের দৌঁড়ঝাপ শুরু হয়। সন্ধ্যার পর থেকেই একদল পুলিশ এসে ভিকটিমদেরকে সার্বক্ষণিক প্রহরায় রাখে। এরপর রাত ৮:০০ টার দিকে দুইজন পুরুষ পুলিশ এসে দুই ভিকটিমকে হাসপাতালের অফিস কক্ষে নিয়ে যায়। প্রায় একঘন্টা ধরে উক্ত দুইজন পুলিশ ভিকটিমদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। সেসময় উক্ত কক্ষে কোন নার্স বা চিকিৎসক কিংরা মহিলা পুলিশ রাখা হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদের পর দুই টিভটিমকে হাসপাতালের বেডে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশকে না জানিয়ে ভিকটিমের জন্য কোন খাবার বা ঔষধ অন্য কাউকে দিয়ে নিয়ে না আসার জন্য নার্সদেরকে পুলিশ নির্দেশ দেয়!
>> ২৪ জানুয়ারি ২০১৮ ভোরে একদল সেনা সদস্য ভিকটিমদের বাড়িতে গিয়ে তাদের মাতা-পিতা, স্থানীয় এক হেডম্যান ও এক কার্বারীকে দীঘলছড়ি সেনা জোনে নিয়ে যায়। পরে হেডম্যান ও কার্বারীকে ছেড়ে দিলেও ধর্ষণের ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে ভিকটিমের মা-বাবাকে জোর করে এনে বিলাইছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রাম চরণ মারমা ওরফে রাসেল মারমাকে দিয়ে রাঙ্গামাটি জেলা প্রেস ক্লাবে #গত ২৪_জানুয়ারি_২০১৮ সকালে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে ধর্ষণের শিকার কিশোরীর ছোট ভাই জানান( মারমা ভাষায়) - সেই রাতে তাদের বাড়িতে যারা ঢুকেছিল তারা-
১. সেনাবাহিনীর পোশাক পড়া ছিল
২. কথা বলতে চাইলে মাথায় বন্দুকের নল তাক করে
=============================
#আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশিদুল হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিলাইছড়ির ওড়াছড়ি গ্রামের একটি বাড়িতে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল তল্লাশি চালাচ্ছিল। এ সময় পাশের আরেকটি বাড়ি থেকে একটি চিৎকারের শব্দ শুনে সেনা সদস্যরা সেখানে যান এবং একজন আনসার সদস্যকে দেখতে পান। পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ওই আনসার সদস্যকে স্থানীয় আনসার কমান্ডারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখানে কোনও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি।’
#বিলাইছড়ির ১০ আনসার ব্যাটালিয়নের জোন কমান্ডার আফজল হোসেন বলেন, ‘অপরাধীদের ধরতে ২০ জনের একটি টহল দল সন্দেহজনক বাড়িগুলোয় অভিযান চালাচ্ছিল। টহল দলে ছিলেন সেনাবাহিনীর ১৪ জন ও আনসারের ৬ জন সদস্য। অভিযানের অংশ হিসেবে সেদিন একটি বাড়িতে তল্লাশি করা হয়েছিল। একজন আনসার সদস্য বাড়ির ভেতরে ঢুকে পড়লে পোশাক পরা দেখে একটি মেয়ে চিৎকার করে ওঠে। সেখানে আর কিছুই হয়নি, হওয়ার সুযোগও ছিল না। আমরা পাহাড়ের নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত। কিছু লোক আছে যারা পাহাড়কে অশান্ত করতে এসব বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।’
# বিষয়ে জানতে চাইলে রাঙামাটি জেলার আনসার কমান্ডার আব্দুল আউয়াল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তল্লাশি অভিযানের সময় একটি মেয়ের চিৎকারে শুনে সবাই সেখানে যায়। কিন্তু সন্দেহজনক কিছুই পায়নি। এরপরও যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে সেই আনসার সদস্য গিয়াস উদ্দিনকে ব্যাটালিয়ন সদরে ক্লোজড করা হয়েছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে সেখানে আদৌও কিছু ঘটেছিল কিনা।’


বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
প্রকাশিত: ১৪:২৩, জানুয়ারি ২৬, ২০১৮ |সর্বশেষ আপডেট: ০৮:২৭, জানুয়ারি ২৭, ২০১৮

রাঙামাটি সদর হাসপাতালরাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার ওড়াছড়ি গ্রামে মারমা পরিবারের এক বোনকে ধর্ষণ ও আরেক বোনকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা এক আনসার সদস্যকে আটক করে তার ব্যাটালিয়নের কাছে হস্তান্তর করেছে। তাকে ক্লোজড করে ব্যাটালিয়ন সদরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,  ২২ জানুয়ারি গভীর রাতে বিলাইছড়ির ফারুয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ওড়াছড়ি গ্রামে সেনাবাহিনী ও আনসারের সদস্যরা অভিযান চালায়। এসময় এক মারমা পরিবারের বড় বোনকে (১৮) ধর্ষণ এবং ছোট বোনকে (১৩) যৌন নিপীড়নের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নির্যাতনের শিকার দুই বোনকে ২৩ জানুয়ারি রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই দুই কিশোরীকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়, রানি য়েন য়েন, রাঙামাটির এমপি ঊষাতন তালুকদার ও রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা।
এরপর চাকমা রাজা তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, “গতকাল (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে রাঙামাটির সদর হাসপাতালে গিয়েছিলাম ধর্ষণ ও যৌন হামলার শিকার দুই বোনকে দেখতে ও তাদের সঙ্গে কথা বলতে। ঘটনায় আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলাটা সম্ভব হলো ‘নিরাপত্তা’ বাহিনীর বিশেষ পোশাকধারী ও ওয়াকি-টকিওয়ালা এবং ওয়াকি-টকিবিহীন বিশেষ পোশাকবিহীন ব্যক্তিদের বিরোধিতার মুখে। প্রথম বাধা ছিল দর্শনার্থী সংখ্যা নিয়ে। আমার সঙ্গে ছিলেন প্রফেসর বাঞ্চিতা,রানি য়েন য়েন। দ্বিতীয় বাধা ছিল ভাষা। তৃতীয় বাধা ছিল সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি আছে কিনা। আমি বললাম, চাকমা সার্কেলের প্রধান হিসেবে অবশ্যই আমার অধিকার আছে আমার সার্কেলের অধিবাসীর খোঁজ-খবর নেওয়ার। আর মানিবাধিকারের বিষয়ে প্রফেসর বাঞ্চিতার রয়েছে দেশের যেকোনও নাগরিকের মানবাধিকার বিষয়ে তদারকি করার। পালটা প্রশ্ন করলাম যে আমাদের দেখা করার ও কথা বলার বিপক্ষে কি কোনও আইন-আদেশ আছে কিনা? উত্তপ্ত ব্যক্তি পরামর্শ দিলেন, এসপি বা ওসি সাহেবের অনুমতি নিতে। আমিও উত্তপ্তভাবে বললাম, তাদের আপত্তি থাকলে যেন তারাই আমাকে কথাটি জানায়।  গরজ তাদের, আমাদের নয়। দুই বোনের মানসিক ও মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা যে আতঙ্কগ্রস্ত, তা স্পষ্ট। ভাগ্যিস রানি য়েন য়েন মারমা ভাষাভাষী। এতে অন্তত জড়তা পুরোপুরি দূরীভূত না হলেও তারা কিছুটা মাত্রায় হলেও স্বস্তিবোধ করছিলেন।’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কেন আঞ্চলিক স্বায়ত্ব শাসন?

বাংলাদেশ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের শাসনতান্ত্রিক অধিকার দাবীর- আবেদন পত্র গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবী ...