শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

রাঙামাটির এসপি ভিক্টিমদের নাম ও ছবি প্রকাশ

রাঙমাত্যা পুলিশ সুপার।
Dipo Chakma
রাঙামাটির এসপি ভিক্টিমদের নাম ও ছবি প্রকাশ করে আজ নিজের চরিত্র উম্মোচন করেছেন। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জেলা রাঙামাটির পুলিশের প্রধান হিসেবে তার ন্যূনতম দায়িত্বজ্ঞান ও বিবেকবান নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন আমরা তাই তুলছি। এসব মানুষ রাষ্ট্রের বড় দায়িত্বগুলোতে বসে থাকেন বলে দেশের আজ এই অবস্থা।
আর প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে হাসপাতালে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিবরণঃ
আপনারা জানেন, গতকাল রাঙামাটি হাসপাতালে মারমা বোনদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং রাণী ইয়েন ইয়েন সহ বাকিদের মারধর করা হয়েছে। এর আগে হাসপাতালের সমস্ত লাইট বন্ধ করে দেয়া হয়, শুধুমাত্র মহিলা ওয়ার্ড ছাড়া যেখানে ভিক্টিমদের সাথে অবস্থান করছিলেন রাণী ও ভলান্টিয়াররা।
লাইট অফ করে ১০-১২ জন মহিলা (মুখে কাপড় পেঁচানো) আর সাথে ৬-৭ জন পুরুষ ওয়ার্ডে প্রবেশ করে। এদের সকলের নেতৃত্বে ছিল রমেল চাকমার হত্যাকারী মেজর তানভীর। এসেই তারা ভলান্টিয়ারদের অন্য রুমে আটকে রাখে। রাণীর সাথে তখন ছিল মাত্র একজন ভলান্টিয়ার যে সেখান থেকে সরে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। এরপর তারা সমন্বিতভাবে রাণী ও অন্য একজন ভলান্টিয়ারের উপর আক্রমণ করে। দুইজনকেই মাটিতে ফেলে পেটানো হয়। রাণীর মাথায় কিল-ঘুষি দিয়ে আঘাত করা হয় অনেকবার। লাথি মারা হয়েছে বেশ কয়েকটি। এরপর তাদের মারতে মারতে হাসপাতালের দোতলা থেকে নিচতলায় নিয়ে আসা হয়। ভলান্টিয়ার মেয়েটিকে সামনের দরজায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং রাণীকে পিছনের দরজার দিকে। নিয়ে যাওয়ার সময় রাণী ও অন্য ভলান্টিয়ারকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছিল তারা বারবার।
ওয়ার্ডের মধ্যে রাণীর ফোন ছিনতাই করার চেষ্টাও চলে। আর মেয়ে ভলান্টিয়ারটি সে ফোনটি নিয়ে ধস্তাধস্তি করে আর্মি-পুলিশের সাথে। ফলে তাকে সবচেয়ে বেশি মারধর করা হয়।
মেয়ে ভলান্টিয়ারকে ভিক্টিমদের সাথে গাড়িতে তুলে নেয়ার প্রথমে চেষ্টা করা হয়েছিল। পরে সে সিদ্ধান্ত বাতিল করে তারা। এ সুযোগে মেয়েটি সেখান থেকে পালিয়ে দোতলায় একটি স্টোররুমে নিয়ে আটকে রেখে নিজেকে রক্ষা করে। পরবর্তীতে জানা গেছে যে, মেয়েটিকে খুঁজতে পুলিশ আর রাত ১১টার দিকে আর্মির একটি দল হাসপাতালে গিয়েছিল। তবে এর আগে মেয়েটি সেখান থেকে সরে পড়ে।
আর রাণীকে যখন পিছনের দরজা দিয়ে ঠেলে দেয়া হয় তখন অন্ধকারের সুযোগে তিনি দেয়াল টপকে হাসপাতালের পিছনের লেকের পাড়ে আশ্রয় নেন। আশ্রয় নেয়ার আগে তিনি হাসপাতালের মেইন গেইটের দিকে এগিয়ে যান এবং হাসপাতালের কম্পাউন্ডে সিলভার কালারের একটি মাইক্রোবাস (যেখানে করে মেয়েদের নেয়া হয়েছিল) এবং সে গাড়ির আগে পিছে আর্মির ভ্যান দেখতে পেয়েছিলেন। কাউকে তখন হাসপাতাল এরিয়ায় ঢুকতে দেয়া হচ্ছিল না তাই হাসপাতাল ছিল একেবারে খাঁ খাঁ। এরপর রাণী নিজেকে রক্ষার
সেখানে তিনি অনেকগুলো লাইট দেখতে পেয়েছিলেন। প্রায় ৩০-৩৫ মিনিট পরে তিনি সেখান থেকে চলে আসেন এবং সিএনজি দিয়ে রাজবাড়িতে চলে যান।
সর্বশেষঃ এসপির আপলোড দেয়া ছবিতে বাড়ির যে ঠিকানা দেয়া হয়েছে সেখানে আর মেয়েগুলো নেই। আর আমরা তাদের দেখবো কিনা জানি না, তবে একটি বিচারের বাণী এভাবে নিভৃতে হারিয়ে গেল। দেখিয়ে দিয়ে গেল, পাহাড়ি জাতিসত্তাগুলোর জন্য রাষ্ট্রের আইন ইচ্ছে মতো পরিবর্তন করা যায়, নিজেদের সুবিধা মতো ব্যবহার করা যায়। আর এই অন্যায়টি ধামাচাপা দেয়া হল আরেকটি অন্যায়ের হোতা রমেল চাকমার হত্যাকারী মেজর তানভীরের মাধ্যমে।
এই রাষ্ট্রকে ঘৃণা ছাড়া আমাদের আর দেয়ার কিছু নেই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কেন আঞ্চলিক স্বায়ত্ব শাসন?

বাংলাদেশ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের শাসনতান্ত্রিক অধিকার দাবীর- আবেদন পত্র গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবী ...