শনিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

আর ১৫ বঝর ৫ মাচ ১৯ দিন পর ঢাকাত চাঙমা লেঘা শিঘিয়্যা পরবোয়াউনরে সার্টিফিকেট দিয়্যা অহ্’ল




২০০৪ সাল, সেপ্টেম্বর ৭ তারিক চাঙমা সাহিত্য বাহ্ উদ্যোগে ঢাকা ট্রাইব্যাল হোস্টেলত চাঙমা লেঘা কোর্স ফাংফগদাঙ গচ্ছে সক্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উপমন্ত্রী সুনানু মণিসবন দেবান। তা সমারে আহ্’জিল এল’ আদিবাসী লেখক সঞ্জীব দ্রং দাঘি। যা বেক আদিবাসীউনর এক্কান দাঙর চেদন এই যায়।
নানান অনটনে আর ঢাকাত চাঙমা লেঘাশিঘানা কোর্স গরা ন’ অহ্’য়। গেল্লে ২১ জুলাই ২০২০ সালত জুম্ম কালচারাল একাডেমিত চাঙমা সাহিত্য বাহ্ উদ্যোগে তিন মাজ্যা চাঙমা লেঘা শিঘানা কোর্স ফাংগদাঙ গরানা ১৫ বঝর ৫ মাচ ১৯ দিন পর আর’ ঢাকাত চাঙমা লেঘা শিঘিয়্যা পরবোয়াউনরে সার্টিফিকেট ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সাল এক সিজি কেনত সার্টিফিকেট দিয়্যা অইয়ে।
চাঙমা কালচারাল একাডেমি ভবনত এ কেজ্জোআন গরা অইয়ে। কেজ্জোআনর পত্থম ত্রিপিটক পাঠ গচ্ছে সুনানু রিটন চাঙমাদাঘি। আ চাঙমা সাহিত্য বাহ্ যার অবদানে পিত্তিমীত সিদি পচ্ছে সে স্বগীয় পাহাড়ীকা চাঙমারে ইধোত তুলি ১ মিনিট অলর গরি তানার পর চাঙমা সাহিত্য বাহ্ ফাংফগদাঙ গীত শুনা অইয়ে।
এ খলাবোত খলানানু সুনানু মোহন চাঙমা(সাত্থুয়া, ওমর আলী ইক্কুল এন্ড কলেচ), সুনানু স্মৃতি বিকাশ চাঙমার খলা পজ্জনীয়ে পাত্তুরুতুরু কধগী সানানু তপন চাঙমাদাঘি।

এ খলাবোত নকবাচ্যা গরবা এল’ চাঙমা সাহিত্য বাহ্ গরা কমিতি জধানানু সুনানু ইনজেব চাঙমা, মুলুক গরবা এলাক চাঙমা সাহিত্য বাহ্’র গরা কমিতি দাঙর কাবিদ্যাঙ সুনানু সম্ভুমিত্র চাঙমা, সুনানু রতন বিজয় চাঙমা, সুনানু দিলীপ চাঙমা আ মঞ্জুমিত্র চাঙমাদাঘি।
কধগীউনে কলাক- “এক্কো জাত পিত্তিমীত বুগত থিগী থেবার চেলে ভাচ আ অঝাপাত শিঘানা খামাক্কাই সাতকাম। তারা আঝা রাঘেই অহ্’লাক মুজুঙর দিনতয়্য নিআহ্’লচি গরি কাম গরিবার।




মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

দূঃখ- 𑄌𑄋𑄴𑄟 𑄛𑄳𑄢𑄧𑄉𑄴𑄉 𑄖𑄛𑄧𑄥𑄴

কানাডার সর্বচ্চো বিচারালয় দেখতে গিয়েছিলাম আজকে দেশের রাজধানীতে । সেই এক অনুভূতি নিয়ে ঘরে ফিরলাম। কাজের জন্য দুতাবাসে গেছিলাম। ঘরে ঢুকতেই এক ছোট বোনের বার্তায় জানলাম , আমার অন্যতম সহযোদ্ধার ( ইনজেব দা) দুঃখজনক খবর। বড় ক্ষতি হয়ে গেল তার যা আর ফিরে পাওয়ার নয়! বাস্তবতা মেনে নিতে হবে সবাইকে। আমরা সবাই এই পথের পথিক। দূঃখ!

সবকিছু পেছনে ফেলে রেখে শুরু হোক অবিরাম পথচলা - Pragati Khisa (14 ফেব্রুয়ারি, 8:10 AM-এ ·)

সকল অানন্দোজ্জ্বল সৃষ্টি বিলয়ধর্মী
তাই অপ্রমত্ত হও।
ওঠো, জাগো।
তোমার মনের অন্ধ বিবরে জ্বেলে রাখা
কামনা চেরাগ নিভে দাও

প্রজ্জ্বলিত করো প্রজ্ঞার দীপাবলি।
মানব জাতির কাছে এটাই তথাগত শাস্তার অন্তিম শিক্ষা।

অতএব, অামাদের কাছে কারোর জীবনপাতে কোন অশ্রুপাত নেই। তবুও মাঝে মধ্যে এমন কারো কারো মৃত্যু ঘটে তাতে শুধু অশ্রুপাত নয়, তার প্রজন্মের হৃদয়াকাশে ঘটে যায় বিনামেঘে বজ্রপাত।চাঙমা সাহিত্য বাহ্ কর্ণধার স্নেহভাজন শ্রী ইনজেব চাকমা চারু'র সহধর্মীনি পাহাড়ীকা চাকমার অকাল জীবনপাত তারই প্রোজ্জ্বল উপমা।
স্নেহভাজন ইনজেব চাকমা'কে অামরা যখন বলি-বিশ্বজুড়ে চলছে মিছিল, অালোর মিছিল, স্বজাতির ভাষা, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির অাবাহন সৃষ্টির মিছিল, চলছে অধিকার অাদায়ের বজ্রকন্ঠে চিৎকার, কেওক্রাডং হতে অঝলচুগ পর্যন্ত যে মূহুর্তে চলছে অঝাপাতের মিছিল, অামরা যখন বলি এগিয়ে যাও ইনজেব ভাইয়া অারো সম্মূখে এমনতর সময়ে তার প্রাণ শক্তির মূলস্রোতধারা নিভে যাওয়া সত্যিই বেদনার। তবুও অাশায় বুক বাঁধি এই বলে যে, প্রিয় ইনজেবকে যে কিনা অপ্রমত্ত ভালোবাসা বিলিয়ে দিয়ে তিলে তিলে ইমারতের মতো করে গড়ে তুলেছে তার পবিত্র মরদেহের পুষ্পিত কফিন অামাদের কাছে একদীপ্ত প্রত্যয়ের অঙ্গীকার। তার সমস্ত কফিন ভরে ওঠুক ফুলে ফুলে অার চাঙমা সাহিত্য বাহ্ পতাকার চাদরে মোড়ানো হয়ে ওঠুক পূরোটা কফিন।
মানুষ জানুক, দেখুক অার অনুধাবণ করুক একজন সহধর্মীনি স্বামীকে কতটা যোগাতে পারে প্রাণশক্তি?
সুপ্রিয় ইনজেব মনের অপূর্ণ অাকাংখার দহন বুকে জ্বেলে রেখে অারো এগিয়ে যাও সম্মূখে। থেমে যাওয়া নয়, সবকিছু পেছনে ফেলে রেখে শুরু হোক অবিরাম পথচলা। পরপারে তুমি ভালো থেকো অনেক অনেক বেশি।
১৪-০২-২০২০

ইনজেব দার কাছে ফাগুনের চিঠি:Pragya Alo Taluckder 14 ফেব্রুয়ারি, 9:28 AM-এ ·

ভালোবাসা দিবসে প্রিয়জনদের একটু স্পেশালভাবে ভালোবাসা প্রকাশ করা হয়। এই দিনটি হয়তো হাজারো কর্মব্যস্ততার মাঝে একদিনের জন্য হলেও প্রিয়জনদের নিয়ে চিন্তা করার একটি দিন। কিন্তুু সে দিনটি যদি হয় প্রিয়জন হারানোর একটি দিন তখন সেটা কেমন বেদনার তা আমার প্রকাশ করার কোন ভাষা নেই!
ইনজেব দা আপনাকে কতদিন ধরে চিনি তা হয়তো কম কিন্তু যতদিন ধরে চিনি তাতে আপনার প্রতি ভালোবাসাটা অনেক আর অনেক। আজকের এইদিনে আপনার হারিয়ে যাওয়া প্রিয় মানুষটিকে হয়তো চিনিনা এখনো কিন্তু আপনার চির বৈশিষ্টের গুণে আমি জানি উনি কেমন হবেন। আর উনার প্রতি আপনার ভালোবাসাটাও।
আপনার কষ্টের ভাগ হয়তো নেওয়া যাবেনা। অন্যদিকে আপনার এখানে এসে আপনার প্রতি আমার ভালোবাসা প্রকাশের যে সুযোগ সেটাতেও আমি অংশগ্রহণে ব্যর্থ! তাই এখান থেকেই আমার সমবেদনা জানানো ছাড়া আর কিছুই করতে পারলামনা। তার জন্য আমি খুবই দুঃখিত।
আপনি জানেন পৃথিবীর কোন কিছুই স্থায়ী নয়।কি ফুল কি পশু কি মানুষ! আমরা এই পৃথিবীতে শুধু নিজের কর্মের দ্বারাই নিজেদের চালিত রাখি। আর এটি এমন যে তার জন্য কাউকে ধরেও রাখতে পারিনা কিংবা সঙ্গেও নিতে পারিনা! আমরা ক্ষণিকের জন্য এই পৃথিবীতে এসে দুঃখের সাথে যুদ্ধ করতে থাকি। অনেকেই ভুলে যাই আমার কি করা উচিত! আর বাস্তবতাকে আমরা মেনে নিতে পারিনা, এখানেই আমাদের পরাজয়। শুধু আশার কথা হলো আমরা কিছুদিন পরে হলেও সেই করুণ কালো অধ্যায়কে ছুঁড়ে ফেলে দিতে সক্ষম হই। আর নতুন করে স্বপ্ন বানতে পারি আপন গতিতে।
আমি জানে আপনার স্বপ্ন কি। আর এও জানি আপনার স্বপ্নের সাথে আমাকেও গেঁথে ফেলেছেন। কারণ এই স্বপ্ন যে শুধু একজনের নয়! পৃথিবীর প্রতিটি শোষিত জাতির এমন স্বপ্ন থাকে যা হয়তো প্রায় ঘুমন্ত। আপনি আমাদের মাঝে সে ঘুমন্ত স্বপ্নকে জাগিয়ে তুলেছেন। হ্যাঁ, তাই আজ আমরা আমাদের মাতৃভাষায় লেখালিখি করতে জানি। এটা আমাদের অন্য কারোর সাথে যুদ্ধ নয়! যুদ্ধটা বরং আমাদের নিজেদের সাথেই। তাই আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি ধরে রাখার এই যুদ্ধে আবারো আপনাকে খুব তাড়াতাড়ি ফিরে পাবো এই প্রত্যাশা রাখি।
পরিশেষে ভাবির আত্মার সৎগতি কামনা রইল। ভালো থাকুন আপনি, ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল প্রাণী।
★★ সাধু সাধু সাধু ★★

সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

তোমার মত বড়ভাই পেয়ে সত্যি অনেক অনেক গর্বিত আমি- সোহেল চাঙমা

পৃথিবীতে খুবই কম মানুষ আছে যারা সমাজের জন্য নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করতে পারে। কিন্তু যারা সমাজের জন্য কাজ নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে তাদের নামও মানুষের হৃদয়ে শতাব্দী থেকে শতাব্দী পরও থেকে যায়।
দাদা,তুমিও নিজের পরিবারে অনেক কিছু অভাব থাকলেও সমাজকে কোনোদিন সেই অভাবে থাকতে দাওনি।সেই ছোটকাল থেকে দেখে আসছি কিভাবে সমাজের জন্য কাজ করে চলতেছ।জুম্মদের অস্তিত্ব রক্ষা করার জন্য একদিনতো নিজের জীবনকেও বিলিয়ে দিতে বসেছিলে।হয়ত ভগবানের অশেষ কৃপায় সেই মৃত্যুর দরজা থেকে রক্ষা পেয়েছিল।কিন্তু মৃত্যুর দরজার থেকেও বেঁচে গিয়েও অনেক বছর পরিবারকে ছেড়ে থাকতে হয়েছিল অনেক কষ্টে। এখনো তুমি বসে নেই।নিজের জুম্ম জাতের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও অস্তিত্ব রক্ষা করার জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে চলতেছ।
তোমার একটা দিন যায়নি মনে হয় পরিবারের যেকোনো সদস্য থেকে বকা না খেয়ে।বিশেষ করে মা। মা'তো প্রতিনিয়ত বলত যে(পোবু ভালেদ ন অব আার,পর বালেত্তি)এই পুত্র টা জীবনে উন্নতি করতে পারবেনা শুধু অন্যর জন্যে।আরও বলত মানুষের কাজ করে কি লাভ এদিকে নাতনিগুলো ভালোভাবে পড়তে পারছেনা।আরও অনেক কিছু।কিন্তু এটাও সত্যি যে,এই পৃথিবীতে খুবই কম মা-বাবা আছে যারা চায় নিজের ছেলে-মেয়েরা সমাজের জন্য কাজ করুক,সংগ্রামী হোক, বিপ্লব করুক।
এটা কোনোদিন আশা করিনি তোমার জীবনে এরকম অবস্হা পরতে হবে।আাজকে ভাবী(বুজি) যে আমাদের ছেড়ে চলে গেছে এটা কিন্তু পরিবারের যেকোনো সদস্য থেকে তোমাকে বেশি প্রিয়জন হারনোর আগুনে জ্বলতে হবে।কিছুওতো করার ছিলনা।আসলে জীবনে চলতে গেলে সব কিছু স্বাদ গ্রহন করতে হয়।প্রিয়জন পাওয়ার আনন্দ,হারানো শোক সবকিছু।এগুলা সারা আসলে জীবন অপূর্ণ মনে হয়।তবুও এই হারানোতা কিন্তু ব্যাতিক্রম।
কিন্তু ভাবীও(বুজি) তো তোমাকে অনেক সাহাযা করেছে তোমার এই সমাজকে সাহায্য করার ব্যাপারে। আামার মনে হয় কোনোদিন তোমার এই কাজে বাধা সৃষ্টি করেনি।তুমি সাংসারিক কাজে উদাসীন হলেও ভাবী(বুজি)তোমার যে একটা মেয়ে আর একটা ছেলে তাদেরকে কোনোদিন অভাবে থাকতে দেয়নি।টাকা না থাকলে অন্যর কাছে দৈনিক কাজ করে পরিবারের খরচ,ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনা খরচ জুগিয়েছে।এগুলো কি কম!


ভবিষ্যৎ অনেক অন্ধকার। জোনাকি রাও আলো দেখাচ্ছেনা আমাদের।তবুও আমরা চলেছি গুতিকয়েক মানুষের অবদান নিয়ে।যাদের অবদানে আজকে আমি নিজেকে জুম্ম বলে পরিচয় দিতে পারতেছি সারা পৃথিবীর মধ্যে।
আমি মনে করি তুমিও শোক ভুলে আরও বেশি সমাজের জন্য কাজ করে যেতে পারবা।
সবকিছু অন্ধকার হলেও একদিন এই অন্ধকার থেকে আলো ছিনিয়ে আানতে হবে।ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পৃথিবীতে টিকে থাকার মত আলো জুগিয়ে যেতে হবে।
যেহেতু আমাদের মা-বাবা চাকরি করেনা তাই একটু অভাব দিয়ে বড় হয়েছি।জীবনের সবকিছু অভাব পেয়েছি।কিন্তু একটা জিনিষের অভাব মনে হয় কোনোদিন পায়নি,তা হচ্ছে বইয়ের অভাব।জীবনকে যখন থেকে বুঝতে পেরেছি, জীবনকে জানতে চেষ্টা করেছি।এই অভাবটা পেলে হয়ত আজকে আমিও এই জায়গায় আসতে পারতাম না।
ভাবী মরেও মরেনি সে বেঁচে থাকবে তোমার কাজের মাধ্যমে। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য তুৃমি যে অবদান রেখে যাচ্ছ একদিন সত্যি ভাবীকেও পাওয়া যাবে সেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্য।এই অবদান প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম মনে রাখবে।
দিনশেষে,
তোমার মত বড়ভাই পেয়ে সত্যি অনেক অনেক গর্বিত আমি।





বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

“এয’ নিজ’ দাবে, নিজ’ গরজে মা ভাচ, অঝাপাত শিঘি”

ইরুক বিচ্চায়ন ইন্টারনেদর যুগত পিত্তিমিত্তুন বহুত ভাচ আ ওক্কোর লুগি জাদন্নোই। আমার চাঙমা লেঘা আ ভাচ্চানয়্য চচ্চা ন’ থানার লুগি যেবার অক্ত। ১৮ বঝর আগে ২০০০ সালত পল্যা জানুয়ারীত এক ঝাক ভার্সিটি, মেডিকেল আ ইঞ্জিনিয়ারিঙত পোর্বায়া লগে মিলিনে চাঙমা সাহিত্যর পহ্’র ছদক চাঙমাউন ইদু আ পিত্তিমি ইদু ছিদিনে চাঙমা সাহিত্যরে বিচ্চসাহিত্য ইজেবে থিদব্বরী গরিবার অতালিয়ে ধারচ লোইনে “চাঙমা সাহিত্য বা” নাঙে এ Linguistic জধাবো বানা অয়ে। আমার আর’ লক্য আ উদ্দিচ্য অলদে, চাঙমা একাডেমি থিদব্বর গরানা, চাঙমা সাহিত্যিকউনরে মান গজানা, অজল অজল গবেসনা গরানা। ইয়ানি এক্কান রুটিনর কাম ইজেবে আমি ২০০৪ সালত্তুন ধরি এয’ সং চাঙমা লেঘা শিঘানা কোর্স চালে যের। ২০১৮ খ্রি. সং আমি ২৬৪২ জনওে চাঙমা লেঘা শেঘেলং। এচ্যে যারা হিল চাদিগাঙর বারে আঘন তারা হিলচাদিগাঙত্তুন দুরত থাগত্তে থাগত্তে মানুচ্ছুন কধ’ গেলে জাদর ভাচ, ওক্কোর আ সাহিত্যিত্তুনয়্য ফারক অই যাদন্দোই। অক্তে অক্তে বহুজনরে দেঘা যায়দে, নিজ’ মা ভাচ চাঙমা ভাচ্ছানয়্য পরি ফেলাদন। আরেককিত্তেন্দি, মিজোরাম সি.এ.ডি.সি- এ বাংলা ওক্কোর তুলি দিয়্যা, অরুনাচলর চাঙমাউনে বাংলা ওক্কোর মাদেই ন’ জানন আ তিবিরে চাঙমাউনেয়্য বাংলা ওক্কোর তুলি দেদন। তারা বানা চাঙমা ওক্কোর, চাঙমা লেঘা জানন, লেঘন আন্তজার্তিক ভাচ ইজেবে ইংজেজিয়্য জানন। ইক্যে আমি চাঙমা অইনে চাঙমা লেঘা ন’ পাল্লে লারে গরি আমা জাদর দাঙর কত্তা মিজোরাম, অরুনাচল আ তিবিরে চাঙমাউন্দোই ফারক অই যেবংগোই। সং সং চাঙমা অইনে আমি কার’ কধা ন’ বুঝিবং। যিক্যে গরি মিয়ানমার’ চাঙমাউন্দোই কধা কোই কি গল্লে বুঝা বুঝি ন’ অই। কারন আমি এব’ বাংলা ওক্কোরলোই লুদুপুদ আঘি। চাঙমা ওক্কোর, চাঙমা লেঘা ন’ পাচ্যগরি আমা পুয়ো/ঝিউনে কেনে জাদর দাঙর কত্তা অরুনাচল, মিজোরম, তিবিরে, বিহার, কক্সবাজার আ আরাকানর চাঙমাউন্দোই কুদুম্ব রাঘেবাক? এধক্যে গরি আমি তারাল্লোই লারে লারে গরি চাঙমা লেঘা শেঘানা অলিবর কারনে আমি ফারক অই যেবংগোই। আর এক্কান দাঙর কধা অলদে ইক্যে বাংলা ক্লাশ টুত সং মা ভাঝর বই দিল। দুগর কধা অলদে আমি সে বইয়্যন পড়ে ন’ পারির। মাত্তর আমি “চাঙমা সাহিত্য বাহ্’র কাম্মোউনে সিআনি অবার দিদং ন’ চেই। সেনে আমি দিঘীনালা, মালছড়ি, পানছড়ি চাগালাত মা-ভাঝর বই পড়েবাত্তে আমি সাত্থুয়া জুগোল গজ্জেই। আমি চেই জাদ’ ভেই বোনুনে ভিন চাগালাত বা যে যিদু থায় জাদ’ লেঘা চাঙমা লেঘা পাত্তোক। আমি তারারে শেঘেবং। আ সেত্তেই এ জুগলনা।
আমার এ চাঙমা সাহিত্য বাহ্ বোত আঘন তারা যে যেঙরি পারন চাঙমা লেঘা শেঘে যাদন।চাঙমা সাহিত্য পহ্’র সিদি দেদন হিলাহিলিত, ঘনাঘনিত লুমে দি যাদন।
আঝা রং তুমি বেগে খবর প’ আগেদি ঢাকাত্তুন চাঙমা সাহিত্য পত্রিকা নাঙে এক্কো চাঙমা ওক্কোর, ভাচ আ সাহিত্য বিসয়ক ম্যাগাজিন ছাবা অয়। ইক্যে দিঘীনালাত্তুন ধারাদিঘলী গরি ছাবা অয়। আমি চাঙমা সাহিত্য বাহ্’ তপ্পেত্তুন সে চাঙমা সাহিত্য পত্রিকাবো ফগদাঙ গরি আ হিলচাদিগাঙরর কনাকনি, ঘনাঘনিত্তুন ধরি ঢাকা, চাদিগাঙ আ ভিন দেজত যিদু যিদু চাঙমা জাত ভেই বোনুন থান, সিদু চাঙমা ওক্কোর, ভাচ আ সাহিত্যর পহ্’র ছদক লুমে দি যেল্লোই।
তে, তমা সিদু আমার কুজোলী-
“এয’ নিজ’ ধাবে, নিজ’ গরজে মা ভাচ, অঝাপাত শিঘি”

রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

উল্টাছড়ি হাই ইক্কুলত তিন মাজ্যা চাঙমা লেঘা সার্টিফিকেট কোর্স আরগানি


ভাঝর মাস ২০২০ খ্রি.। বাংলাদেশ সাধীন অনার ৪৮ বঝর ভিদি জেল মাত্তর, দুগর কধা এজ' এ দেঝর চিগোন চিগোন জাদর ভাচ আন্ধারত মিজি আঘে।
এধক্যে চেদনত্তুন চাঙমা সাহিত্য বাহ্ খাগাড়াছড়ি জেলা ধেলা উদ্যোগে গেল্লে ৩০ জানুয়ারি ২০২০ খ্রি. উল্টাছড়ি হাই ইক্কুলত চাঙমা লেঘা শিঘানা আরগানি গরা অইয়ে।

শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

কমলছড়ি পাইলট হাই ইক্কুল আ নান্যাচর কলেজত পত্থম চাঙমা লেঘা সার্টিফিকেট কোর্স ফগদাঙ

নান্যাচর কলেজত কোর্স ফগদাঙ
চাঙমা সাহিত্য পত্রিকা ডেস্ক: এক্কান ভাচ বাজে রাঘে বাত্তে, এক্কান ভাচ পিত্থিমী বুগত থিদব্বরীত্যাই চাঙমা সাহিত্য বাহ্ নিআহ্’লচি গরি কাম গরি যার। সে ধারাদিঘলী কামর নালে এচ্যে ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ইং রোজ শুক্কর বার বেন্যামাধান ১১ টায় অক্তত নান্যাচর সরকারি কলেজত তিন মাজ্যা চাঙমা লেঘা সার্টিফিকেট কোর্স ফাংফগদাঙ গরা অয়্যা।

কোর্স ফাংফগদাঙ গচ্ছে সাবেক্কং ইউনিয়নর ২ নং ওয়ার্ড মেম্বার সুনানু রিপেল চাঙমা। ফাংশানানত খলানানু এল’ চাঙমা সাহিত্য বাহ্ নান্যারচর উপজেলা ধেলা জধানানু সুনানু সুপায়ন চাঙমা, মুলুক গরবা ইজেবে এল’ চাঙমা সাহিত্য বাহ্ গরা কমিতি জধানানু সুনানু ইনজেব চাঙমা, নান্যাচর ধেলা এজাল জধানানু, কবি পাভেল চাঙমা আ নান্যাচর ধেলা ভান্ডালি কাবিদ্যাঙ সুনানু কাহিনী চাঙমাদাঘি।

কধগীউনে কলাক “চাঙমা ভাচ্ছান থিদ’ গরিবাত্যাই যা গরানা দরগার সিআনি গরিবাত্যাই বেক্কুনে উজে এজানা দরগার।

এ অক্তত খাগাড়াছড়ি সদর উপজেলা “কমলছড়ি পাইলট হাই ইক্কুলত চাঙমা লেঘা কোর্স ফাং ফগদাঙ গরা অইয়ে। ইয়োত চাঙমা সাহিত্য বাহ্ গরাকমিতি ভান্ডালি কাবিদ্যাঙ সুনানু শ্রেয়সী চাঙমা, দিঘীনালা কলেজ ধেলা ভান্ডালি কাবিদ্যাঙ সুনানু যুথিকা চাঙমা, খাগাড়াছড়ি জেলা ধেলা এজাল জধানানু সুনানু তোষী চাঙমাদাঘি আহ্’জিল অই কোর্স ফাং গরা অইয়ে।

শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২০

দুখ্যে মানব সেবিয়্যা “মানবকি কল্যাণ সংঘ”(মাকস) এ তিন বঝর পুন্নো ২০২০ খ্রি.

জানুয়ারি ৫, দুখ্যে পিড়িল্যা মানজর কায় থেইয়্যা জধা “মানবিক কল্যাণ সংঘ” তিন বঝর পুন্নো অহ্’ল। নানাঙ অনটনে ৫ জানুয়ারি দিন্নো পালে ন’ পারিলেয়্য ৩১ জানুয়ারি মাকস এ জনমপুর পালা অইয়ে। এক্কান কধা ন’ অহ্’লে ন’ অহ্’য় এ দিন্নো এমপি কুজেন্দ্র ত্রিপুরা নকবাচ্যা গরবা ইজেবে থেবার কধা থেলেয়্য তা’ মাহ্ অসুক থানার এ খলাবো আহ্’জিল অই ন’ পারে।
বেন্যা মাধান ১০ টা খাগাড়াছড়ি জিরো মেইল “হিল ফ্লেভারস রেস্টুরেন্ট” হল রুমত বেন্যা পর্বত কিংসুক চাঙমা খলা পজ্জোনীয়ে খলানানু মাকস এর এজাল জধানানু তাপস ত্রিপুরা।
খলা আরগানিত কোচপানা কধগী মাকস’র এজাল দাঙর কাবিদ্যাঙ সুনানু সৌরভ চাঙমা জধাবো কামানি ইধোত তুলি যারা মাকস সমারে এলাক আ যারা মাকস কায় থেনেই এজাল দি জাদন তারারে পাত্তুরুতুরু জানেয়্যা।
এ খলাবোত মুলুক গরবা ইজেবে এলাক- উন্মেষ’র জধানানু সুনানু বিটন চাঙমা, বায়েপ’র সংস্কৃতি আ শিক্খা বিষয়ক কাবিদ্যাঙ সুনানু বিপর্শী চাঙমা, গরীব শিক্ষার্থীর কল্যাণ সংঘ’র সল্লাদার সুনানু লায়ম দেওয়ান, চাঙমা সাহিত্য বাহ্’র জধানানু সুনানু ইনজেব চাঙমা আ ইন্সপেক্টর (পুলিশ) সুনানু প্রিয়দর্শী চাঙমাদাঘি।
জারা মাকস’র নিআহ্’লচি গরি কাম গচ্ছোন তারা মান দেনার সমারে সমারে খলানানু বেক্কুনরে কোচপানা, ভালেদি আ পাত্তুরুতুর জানেই সভা থুম গরি দিয়্যা।
বেল্যা মাধান ২ টা দি পর্ববো আরগানি গরা অইয়ে। ইয়ো খলানানু এল’ মাকস’র জধানানু সুনানু শান্তিময় চাঙমা। সভা আরগানিত গরবাউনরে ফুল আ খাদি দিন্যাই গরবাউনরে গজি অইয়ে।
শিক্ষাবিদ সুনানু তাতুমণি চাঙমা, পানছড়ি হাই ইক্কুলর সাত্থুয়া বাসুদেব চাঙমা, কবি সুনানু আলোময় চাঙমা, লুদিক’র জধানানু রতœ উজ্জ্বল চাঙমা, কবি আ সাত্থুয়া ভদ্রসেন চাঙমা, বিদিজিয়্যা খাগাড়াছড়ি সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বিউটি রাণি ত্রিপুরা, মানেই সেবিয়্যা সুজন চাঙমা, কার্বারি এসোসিয়েশন, খাগাড়াছড়ি জেলা সভাপতি রনিক ত্রিপুরা আ কবি রনজিত চাঙমাদাঘি।
তারা বেগে মাকস’র কামানি বাইনি গরি কলাক- “আমাত্তুন মুজুঙে আক্কোই জা পরিব’ লেঙে লেঙে ফোঃবে ফোঃবে অহ্’লেয়্য। ইত্তুন সরে ন’ এবার আ দোল দোল নক্ষত্র জনম দিন্যাই বেক জধাউন এক অই কাম গরিবার আঝা, মুজুঙে উজে জেবার আওচ গরিলাক।

মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৯

বেগর এজালে চাঙমা সাহিত্য বাহ্ মুজুঙে আক্কোই যার-যেব

এচ্যে ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ খ্রি. মঙ্গলবার বেন্যা মাধান ১০ টা চাঙমা সাহিত্য বাহ্ পানছড়ি ধেলা আঞ্জামে চেঙ্গী সারিবালা স্মৃতি মহাবিদ্যালয় ধনর আ মনর এজালে পানছড়ি চাগালা বেক চাঙমা লেঘা সেন্টারর সার্টিফিকেট আনি দিয়্যা অইয়ে।
খলা পজ্জোনী চাঙমা সাহিত্য বাহ্ পানছড়ি ধেলা এজাল দাঙর জধানানু সুনানু পিংকি চাঙমা, চেঙ্গী সারিবালা স্মৃতি মহাবিদ্যালয় অধ্যক্ষ কিরণ চাঙমা খলানায়ে কবিদ্যা কনা আরগানি গরা অহ্’য়। ২৫ জন কবি আওজি মনে কবিদ্যা কলাক। কবিদ্যা কনা থুম অনার সমারে সামরে সার্টিফিকেট দেনা সভা আরগানি গরা অহ্’য়।
ইরুক বিচ্চায়ন ইন্টারনেদও যুগত পিত্তিমিত্তুন বহুত ভাচ আ ওক্কোর লুগি জাদন্নোই। আমার চাঙমা লেঘা আ ভাচ্চানয়্য চচ্চা ন’ থানার লুগি যেবার অক্ত। ১৮ বঝর আগে ২০০০ সালত পল্যা জানুয়ারীত এক ঝাক ভার্সিটি, মেডিকেল আ ইঞ্জিনিয়ারিঙত পোর্বায়া লগে মিলিনে চাঙমা সাহিত্যর পহ্’র ছদক চাঙমাউন ইদু আ পিত্তিমি ইদু ছিদিনে চাঙমা সাহিত্যরে বিচ্চসাহিত্য ইজেবে থিদব্বরী গরিবার অতালিয়ে ধারচ লোইনে “চাঙমা সাহিত্য বাহ্” নাঙে এ Linguistic জধাবো বানা অইয়ে। আমার আর’ লক্য আ উদ্দিচ্য অলদে, চাঙমা একাডেমি থিদব্বর গরানা, চাঙমা সাহিত্যিকউনরে মান গজানা, অজল অজল গবেসনা গরানা। ইয়ানি এক্কান রুটিনর কাম ইজেবে আমি ২০০৪ সালত্তুন ধরি এয’ সং চাঙমা লেঘা শিঘানা কোর্স চালে যের। ২০১৯ খ্রি. সং আমি ৭৬৮৩ জনরে চাঙমা লেঘা শেঘা অইয়ে ভিলে চাঙমা সাহিত্য বাহ্ জধানানু সুনানু ইনজেব চাঙমা কোইয়ে।
এ মিলনি খলাবো সরিত অইয়ে কধগীউনে কলাক
“এচ্যে যারা হিল চাদিগাঙর বারে আঘন তারা হিলচাদিগাঙত্তুন দুরত থাগত্তে থাগত্তে মানুচ্ছুন কধ’ গেলে জাদর ভাচ, ওক্কোর আ সাহিত্যিত্তুনয়্য ফারক অই যাদন্দোই। অক্তে অক্তে বহুজনরে দেঘা যায়দে, নিজ’ মা ভাচ চাঙমা ভাচ্ছানয়্য পরি ফেলাদন। আরেককিত্তেন্দি, মিজোরাম সি.এ.ডি.সি- এ বাংলা ওক্কোর তুলি দিয়্যা, অরুনাচলর চাঙমাউনে বাংলা ওক্কোর মাদেই ন’ জানন আ তিবিরে চাঙমাউনেয়্য বাংলা ওক্কোর তুলি দেদন। তারা বানা চাঙমা ওক্কোর, চাঙমা লেঘা জানন, লেঘন আন্তজার্তিক ভাচ ইজেবে ইংজেজিয়্য জানন। ইক্যে আমি চাঙমা অইনে চাঙমা লেঘা ন’ পাল্লে লারে গরি আমা জাদর দাঙর কত্তা মিজোরাম, অরুনাচল আ তিবিরে চাঙমাউন্দোই ফারক অই যেবংগোই। সং সং চাঙমা অইনে আমি কার’ কধা ন’ বুঝিবং। যিক্যে গরি মিয়ানমার’ চাঙমাউন্দোই কধা কোই কি গল্লে বুঝা বুঝি ন’ অই। কারন আমি এব’ বাংলা ওক্কোরলোই লুদুপুদ আঘি। চাঙমা ওক্কোর, চাঙমা লেঘা ন’ পাচ্যগরি আমা পুয়ো/ঝিউনে কেনে জাদর দাঙর কত্তা অরুনাচল, মিজোরম, তিবিরে, বিহার, কক্সবাজার আ আরাকানর চাঙমাউন্দোই কুদুম্ব রাঘেবাক? এধক্যে গরি আমি তারাল্লোই লারে লারে গরি চাঙমা লেঘা শেঘানা অলিবর কারনে আমি ফারক অই যেবংগোই”
কধগীউনে আর’ কলাক-
“আর এক্কান দাঙর কধা অলদে ইক্যে বাংলা সরকাচ্যা এ বঝর আমারে ক্লাশ টুত সং মা ভাঝর বই দিল। ইআন এ্যানে এ্যানে ন’ পেই। কধক চোগ’ পানি, লো ধালানার পর বাংলা দেঝর স্বাধীনতা ৪৬ বঝর পর আ পার্বত্য চুক্তি ১৮ বঝর পরম ভাঝর বই পেলং। দুগর কধা অলদে আমি সে বইয়্যন পড়ে ন’ পারির। মাত্তর আমি “চাঙমা সাহিত্য বাহ্’র কাম্মোউনে সিআনি অবার দিদং ন’ চেই।”
কধাআন এ সভাবোত সরিত অইয়ে মুলুক মুলুক গরবাউনে সল্লা পরামর্শ দিলাক।
সভাবো নকবাচ্যা গরবা ইজেবে এল’ পানছড়ি উপজেলা প্যানেল চেয়ারম্যান সুনানু চন্দ্র দেব চাঙমা, মুলুক গরবা ইজেবে এলাক- ২নং চেঙ্গী ইউনিয়ন পরিধর চেয়ারম্যান সুনানু কালাচাঁদ চাঙমা, চেঙ্গী সারিবালা কলেজর প্রভাষক সুনানু ইতি চাঙমা, চাঙমা সাহিত্য বাহ্ গরাকমিতি দপ্তর তথ্য আ গবেষণা কাবিদ্যাঙ সুনানু স্মরণিকা চাঙমা, চাঙমা সাহিত্য বাহ্ সল্লাদার, কবি-নাট্যকার সুনানু সবিতা চাঙমা বাংলা দেঝর সরকারত্তুন দাঙর মান পিয়্যা সুনানু সুজন চাঙমা, পজগাঙ হাই ইক্কুল সাত্থুয়া ইন্দ্র লাল চাঙমা, সংবাদিক, কবি সুনানু নূতন ধন চাঙমা, রুপসী চাঙমা রুপা, পরেশ চাঙমা, লব্দ চাঙমা সুমুত্ত পানছড়ি ধেলা সাবাঙ্গী দাঘি।
শেজে ১২৭ জন চাঙমা লেঘা পর্বোয়াউনরে সার্টিফিকেট দিয়্য অহ্’য়।


সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৯

জাদে জাত তগায় ....


            
ইনবেজ চাঙমা
আগাজ’ বেল, এ পিত্তিমী থেব’ বাজি
থেবং আমি, থেব’ চাঙমা জাদি
সংসমারে খুচ পেলেবং, সংসমারে উজেবং
জাদর সবন আনিবং ছিনি।

মোমবাত্তি সান আহ্’ঙিবং পহ্’র সিদিবং আন্দারত
এজোক কালা মেক চাগা ত্যুঅ বেল’ সান জ¦লিবং,
বর বোইয়ের বেই যোক, উদোক তুবোল সাগরত
লেঙে লেঙে, ফোঃবে ফোঃবে ত্যুঅ আমি আহ্’দিবং।

কোণা-কুনিত, ঘোনা-ঘুনিত নিঘুচ মনে
তোগেবং বিজয় গিরি খুচ মাজারা
এম. এন, লারমা চেদন বুগত বানি
উজেই নিবং চাঙমা সাহিত্য বাহ্ ।
08/12/2019 11.00 PM

সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৯

জুম্ম জাতির দুগর মাচ: মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা জাতীয় সংসদের বক্তব্য -৪


খসড়া সংবিধানের উপর আলোচনা করতে গিয়ে মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা ১৯৭২, ২৫ অক্টোবর গণপরিষদের অধিবেশনে বলেন:

 গণপরিষদে খসড়া সংবিধানকে দফাওয়ারী বিবেচনা কালে ৩১ অক্টোবর, ১৯৭২ ইং আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল রাজ্জাক ভূঁইয়া সংবিধান বিলের ৬ অনুচ্ছেদের পরিবর্তে সংশোধনী প্রস্তাব আনেন। সংশোধনী প্রস্তাবটি হলো- ৬। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইনের দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হইবে, বাংলাদেশের নাগরিকগণ বাঙ্গালী বলিয়াপরিচিত হইবে।” উক্ত সংশোধনী প্রস্তাবের বিরুদ্বে প্রতিবাদ জানান এভাবে-
মাননীয় স্পীকার সাহেব, জনাব আবদুল রাজ্জাক ভূইয়া সংশোধনী প্রস্তাব এনেছেন যে, বাংলাদেশের নাগরিকগণ বাঙালী বলে পরিচিত হবেন।
মাননীয় স্পীকার সাহেব, এ ব্যাপারে আমার বক্তব্য হল, সংবিধান বিলে আছে, “বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইনের দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হইবে” এর সংগে সুস্পষ্ট করে বাংলাদেশের নাগরিকগণকে ‘বাঙালী’ বলে পরিচিত করবার জন্য জনাব আবদুল রাজ্জাক ভূঁইয়ার প্রস্তাবে আমার একটু আপত্তি আছে যে, বাংলাদেশের নাগরিকত্বের যে সংজ্ঞা, তাতে করে ভালভাবে বিবেচনা করে তা যথোপযুক্তভাবে গ্রহণ করা উচিৎ বলে মনে করি।
আমি যে অঞ্চল থেকে এসেছি, সেই পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীরা যুক যুগ ধরে বাংলাদেশে বাস করে আসছে। বাংলাদেশে বাংলা ভাষায় বাঙালীদের সঙ্গে আমরা লেখাপড়া শেখে আসছি। বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা ওতঃপ্রতভাবে জড়িত। বাংলাদেশের কোটি কোটি জনগণের সঙ্গে আমরা আমরা ওতঃপ্রতভাবে জড়িত। সবদিক দিয়েই আমরা একসঙ্গে এক যোগে বসবাস করে আসছি। কিন্তু আমি একজন চাঙমা। আমার বাপ দাদা, চৌদ্দ পুরুষ- কেই বলেন নাই, আমি বাঙালী।
আমার সদস্য-সদস্যা ভাই-বোনদের কাছে আমার আবেদন, আমি জানি না, আজ আমাদের এই সংবিধানে কেন বাঙালী বলে পরিচিত করতে চায়।
মাননীয় স্পীকার সাহেব, আমদিগকে বাঙালি জাতি বলে কখনো বলা হয় নাই। আমরা কোনদিনই নিজেদের বাঙালি বলে মনে করি নাই। আজ যদি এই সার্বভৌম বাংলাদেশের সংবিধানের জন্য এই সংশোধনী পাশ হয়ে যায়, তাহলে আমাদের এই চাঙমা জাতির অস্তিত্ব লোপ পেয়ে যাবে। আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। আমরা আমাদেরকে বাংলাদেশী বলে মনে করি এবং বিশ^াস করি। কিন্তু বাঙালী বলে নয়। .......
মাননীয় স্পকিার, আমাদের অধিকার সম্পর্ণরূপে খর্ব করে ৬ নম্বর অনুচ্ছেদ সংশোধিত আকারে গৃহীত হল। আমি এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং প্রতিবাদ স্বরূপ আমি অনির্দ্দিষ্ট সময়ের জন্য গণপরিষদ বৈঠক বর্জন করছি।”

*জুম্ম সংবাদ বুলেটিন (১০ই নভেম্বর ৮৩ স্মরণে বিশেষ সংখ্যা) বুলেটিন নং- ২৩, ৫ম বর্ষ, ১০ই নভেম্বর ৯৫, শুক্রবার  

রবিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৯

জুম্ম জাতির দুগর মাচ: মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা জাতীয় সংসদের বক্তব্য -৩

 খসড়া সংবিধানের উপর আলোচনা করতে গিয়ে মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা ১৯৭২, ২৫ অক্টোবর গণপরিষদের অধিবেশনে বলেন:
মাননী স্পীকার সাহেব, ১৯৪৭ সালে কেউ কি চিন্তা করেছিলেন যে, পাকিস্তান ধ্বংস হয়ে যাবে? জনাব মোঃ আলী জিন্নাহ বলেছিলেন, ÒPakistan has come to stay” নিয়তি অদৃষ্ট থেকে সেদিন নিশ্চয় উপহাস ভরে হেসেছিলেন। সেই পাকিস্তান অধিকার হারা বঞ্চিত মানুষের বুকের জ্বালায়, উত্তপ্ত নিঃশ্বাসে পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে। আমি আমার অভিব্যাক্তি প্রকাশ করছি। আমি একজন নির্যাতিত অধিকার হারা মানুষ। পাকিস্তানের সময় দীর্ঘ ২৪ বছর পর্যন্ত একটি কথাও বলতে পারিনি। আমাদের অধিকারকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেওয়া হয়েছিল। সেই অধিকার আমরা পেতে চাই এই চাওয়া অন্যায় নয়। সেই অধিকার এই সংবিধানের মাধ্যমে দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের মত যাতে সেই অধিকার আমরাও পেতে পারি, সেই কথাই আজকে আপনার মাদ্যমে পরিষদের নিকট নিবেদন করতে চাচ্ছি। সেই অধিকারের কথাই আমি বলতে চাচ্ছি। মানুষের মত মানুষ হয়ে বেঁচে থাকার অধিকার আমাদের হয়নি- যেমন দেওয়া হয়নি বায়লাদেশের লক্ষ লক্ষ নিপীড়িত মানুষকে।
তাই আমি আমার কথা যদি আপনার মাদ্যমে মাননীয় সদস্য - সদস্যাদের ভাই-বোনদের কাছে পৌঁছিয়ে দিতে পারি, তাহলে আমি মনে করব, আমার অভিব্যাক্তি সার্থক হয়েছে। কারণ, আমার যে দাবী সেই দাবী আজকে নয়। এই দাবী করেছি স্বৈরাচারি আয়ূব ও স্বৈরাচারী ইয়াহিয়ার সময়ও। আমরা রাজনৈতিক দিক দিয়ে পেছনে পড়ে রয়েছি। অগ্রসর জাতির মত শক্তিশালী দল গঠণ করে দাবী আদায় করতে পারছি না। কারণ এতে যতটা রাজনৈতিক সচেনতার দরকার, ততটা রাজনৈতিক সচেনতার অভাব রয়েছে আদিবাসীদের মধ্যে, আমাদের মধ্যে।
মাননী স্পীকার সাহেব, আজকে তাই কথা প্রসঙ্গে এই কথা বলতে চাচ্ছি যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বদৌলতেই আজকে বৈদ্যুতিকবাতি জ¦লছে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের জল বিদ্যুতের বদৌলতে কলখানা চলছে। অথচ সেই পার্বত্য চট্টগ্রামকে শোষণ করা হচ্ছে। হাজার হাজার মানুষের জীবনকে বিলিয়ে দিয়ে, যারা দেশকে গড়েছে, পাকিস্তানের শাসকরা তাদের মানুষের মতো বাঁচার অধিকার দেয়নি। আমার বক্তব্য হল, আজকে আমরা এই সংবিধানে কিচুই পাইনি। আমি আমার বক্তব্য হয়তো সঠিকভাবে বলতে পারছি না, কিন্তু আমার বক্তব্যের মধ্যে কোন অপ্রাসাঙ্গিক কিছুই নাই।
আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা নিয়ে আমাদের জাতির পিতা শ্রদ্ধেয় বঙ্গবন্ধুর কাছে যুক্তি স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। এই স্মারকলিপিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের জন্য গণতান্ত্রিক শাসনের কথা বলেছিলাম, আমাদের আদিবাসীদের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক স্বায়ত্ব-শাসনের কথা বলেছিলাম।
এই সংবিধানে আমরা আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমরা বঞ্চিত মানব। আমাদের অধিকার হরণ করা হয়েছে। এই সংবিধানের বাইরে কথা আমি বলতে চাচ্ছি না। আমার পার্বত্য চট্টগ্রামের কথা সংবিধানে বলা হয়নি। এই জন্য এই কথা বলছি যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম একটা ইতিহাস। এই ইতিহাসকে অস্বীকার করা হয়েছে। আমি জানিনা, আমাদের কথা তারা কেমন করে ভুলে গেলেন? আমরাও যে বাংলাদেশের সংগে এক হয়ে গণবাংলার সংগে জড়িয়ে থাকতে চাই, সে কথা তারা কি ভুলে গেছেন?
আমাদের এই সংবিধানের খসড়া তৈরী করার সময় তারা অন্যান্য দেশের সংবিধান দেখেছে। তাঁরা দেখেছেন বাংলাদেশের ইতিহাস। তাঁরা দেখেছেন বাংলাদেশের এক কোণায় রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। কিন্তু কিসের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসকে এখানে স্থান দেওয়া হয়নি?
আমরা জানি, ইতিহাসকে বিকৃত করা যায় না। কিন্তু আমরা কি দোষ করেছি? কেন আমরা অভিশপ্ত জীবন যাপন করবো? পাকিস্তানের সময়ে ছিল আমাদের অভিশপ্ত জীবন। আজকে দেশ স্বাধীন হয়েছে। এখানে গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র হতে চলেছে। আমাদের অধিকার তুলে ধরতে হবে এই সংবিধানে। কিন্তু তুলে ধরা হয়নি। যদি আমাদের কথা ভুলে যেতে চান, যদি ইতিহাসের কথা ভুলে যেতে চান, তাহলে তা আপনারা পারেন। কিন্তু আমি পারি না। আদিবাসীরা কি চায়? তারা চায় স্বাধীন অধিবেশনে তাদের সত্যিকারের নিশ্চয়তা।
মাননীয় ডেপুটি স্পীকার সাহেব, তাই আজকে বঞ্চিত মানুষের মনের কথা আমি আপনার মাধ্যমে তুলে ধরতে চাই। সেই বঞ্চিত মানুষের একজন হয়ে আমি বলতে চাচ্ছি, আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের যারা নির্যাতিত সেই বৃটিশ আমল থেকে শুরু করে, সেই পাকিস্তান আমলের যে নির্যাতিন ভোগ করেছি সেই নির্যাতন থেকে রেহাই পেতে চাই। আমরা চাই মানুষের মত মানুষ হয়ে বেঁেচ থাকতে।
এই খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটি আমাদেরকে সমাজতন্ত্রের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই খসড়া সংবিধান প্রণয়ন করেছেন। এই খসড়া সংবিধানে আমাদের অবহেলিত অঞ্চলের কোন কথা নাই। তাই আজকে আমি বলতে চাই, পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির কাছে কি অপরাধ করেছে, তা আমি জানি না।
পার্বত্য চট্টগ্রাম হল বিভিন্ন জাতিস্বত্ত¡ার ইতিহাস। কেমন করে সেই ইতিহাস আমাদের সংবিধানের পাতায় স্থান পেলনা, তা আমি ভাবতে পারি না। সংবিধান হচ্ছে এমন একটা ব্যবস্থা, যা অনগ্রসর জাতিকে, পিছিয়ে পড়া নির্যাতিত জাতিকে, অগ্রসর জাতির সংগে সমান তালে এগিয়ে নিয়ে আসার পথ নির্দেশ  করবে। কিন্তু বস্তুতঃ পক্ষে এই পেশকৃত সংবিধানে আমরা সেই রাস্তার সন্ধান পাচ্ছি না। ...... .......
পার্বত্য চট্টগ্রামের একটা ইতিহাস আছে এবং সেই ইতিহাসকে কেন এই সংবিধানে সংযোজিত করা হল না? যদি পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের অধিকার স্বীকৃত না হয়, তাহলে এই সংবিধান তাদের কি কাজে লাগবে। আমি একজন মানুষ যেখানে জন্মগ্রহণ করেছি, যে জন্মভূমিতে আজন্ম লালিত পালিত হয়েছি, সেই জন্মভূমির জন্য আমার যে কথা বলার রয়েছে, সে কথা যদি প্রকাশ করতে না পারি, যদি এই সংবিধানে তার কোন ব্যবস্থাই দেখতে পাই না, তাহলে আমাকে বলতে হবে যে, বঞ্চিত মানুষের জন্য সংবিধানে কিছুই রাখা হয়নি। বঞ্চিত মানুষের সংবিধান এাঁ কিছুতেই হবে না এবং মানুষ এটাকে গ্রহণ করতে দ্বিধাবোধ করবে।
তাই আমার কথা শেষ করার আগে আমার কথাগুলি সংক্ষিপ্ত আকারে বলতে চাই, এই সংবিধানে মানুষের মনের কথা লেখা হয়নি। কৃষক, শ্রমিক, মেথর, কামার, কুমার, মাঝিমাল্লার জন্য কোন অধিকার রাখা হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জনগণের অধিকারের কথাও সংবিধানে লেখা হয়নি।

*জুম্ম সংবাদ বুলেটিন (১০ই নভেম্বর ৮৩ স্মরণে বিশেষ সংখ্যা) বুলেটিন নং- ২৩, ৫ম বর্ষ, ১০ই নভেম্বর ৯৫, শুক্রবার  

জুম্ম জাতির দুগর মাচ: মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা বক্তব্য -২

খসড়া সংবিধানের উপর আলোচনা করতে গিয়ে মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা ১৯৭২, ২৫ অক্টোবর গণপরিষদের অধিবেশনে বলেন:
মাননীয় স্পীকার সাহেব, আজকে যে পবিত্র দলিল আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের হাতে তুলে দিতে যাচ্ছি, সেটা যেন ১৯৫৬ সালের এবং ১৯৬২ সালের দলিলের মত না হয় এবং সেদিনের মতো করুণ অবস্থা যেন আমাদের জীবদ্দশায় দেখে যেতে না হয়।
মাননীয় স্পীকার সাহেব, আজকে মানুষের মনে যে সন্দেহ দেখা দিচ্ছে, আমরা যদি সেই সন্দেহের অবসারন না করি, পরিষদে আমরা যদি তার নিরসন না করি, তাহলে আর কে করবে? আমাদের পর যাঁরা আসবেন , তাদের সেই একই করুণ অবস্থা হবে- যেমন হয়েছে পূর্ববর্তীদের। সেই করুণ কাহিনীর পুনরাবৃতিত্ত ঘটুক, আমরা তা চাই না। ......
সংবিধানে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের মনের কথা যদি সত্যিকারভাবে  লিপিবদ্ধ হত, তাহলে আজকে নিদর্লীয় সদস্য হিসাবে এই সংবিধানকে অভিননন্দন জ্ঞাপন করতে করতে পারতাম। আভিনন্দন জ্ঞাপন করতে না পারার অনেক কারণের মধ্যে এক কারণ হল, এখানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিগুলি পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি।
মাননীয় স্পীকার, এই দলিলের বিভিন্ন অনুচ্ছেদ থেকে প্রমাণ পাওয়া যাবে যে, এক হাতে অধিকার দেওয়া হয়েছে এবং অন্য হাতে সেটা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। মাননীয় স্পীকার সাহেব, সংবিধানের ১০ নং অনুচ্ছেদ এবং ২০ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে:
১০। মানুষের উপর মানুষের শোষণ হইতে মুক্ত ন্যায়নুগ ও সাম্যবাদী সমাজ লাভ নিশ্চিত করিবার উদ্দেম্যে সমাজতান্ত্রিক অর্তনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হইবে।
এবং
২০। কর্ম হইতেছে কর্মক্ষম প্রত্যেক নাগরিকের পক্ষে অধিকার, কর্তব্য ও সম্মানের বিষয় এবং প্রত্যেক নিকট হইতে যোগ্যতানুসারে ও পারিশ্রমিক লাভ করিবেন।
মাননীয় স্পীকার, আজকে এখানে বলতে বাদ্য হচ্ছি, একদিকে হিংসাদ্বেষ বিহীন সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রতি¤্রুতি দেওয়া হয়েছে আর অন্যদিকে উৎপাদন যন্ত্র ও উৎপাদন ব্যবস্থাসমূহের মালিকানা, রাষ্ট্রীয় মালিকানা, সমবায়ূ মালিকানা ও ব্যক্তিগত মালিকানা অইনের দ্বারা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যের আবব্দ করে শোষণেরপথ প্রশস্ত করে দেওয়া হয়েছে। আমরা এমন একটা ক্ষমতা দেখতে পাচ্ছি, যে ক্ষমতা বলে সরকার একটা লোককে এক পয়সার অধিকারী হতে দেবেন এবং অন্য একটা লোকের জন্য এক কোটি টাকার মালিকানার অধিকার রেখে দেবেন।
মাননী স্পীকার সাহেব, তাই এই  দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের মনের কথা, প্রাণের কথা এখানে প্রতিফলন হয়নি বলে আমি মনে করি। কৃষকের কথা প্রতিফলিত হয়নি, রিক্সাওয়ালার কথা প্রতিফলিত হয়নি,  মেথরের কথা প্রতিফলিত হয়নি। আজ এদর সবার জীবন, মেথরের জীবন, খেটে খাওয়া মানুষের জীবন অভিশপ্ত। তাদের কথা, তাদের দাবী এখানে স্থান পায়নি। এই যে অভিশপ্ত জীবন তাদের কথা সংবিধানে নাই।
তারা যদি আজ জিজ্ঞেসা করে, “তোমরা দেশের ভাগ্য নির্ধারণ করতে যাচ্ছ- তোমরা তাতে আমাদের কথা কি কিচু লিখেছ?” এই প্রশ্নের আমরা কি উত্তর দেব? যে মেথররা দেশকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখে, আজ আমরা শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে তাদেরকে কি আশ্বাসের বাণী শোনাচ্ছি? তাদের অভিশপ্ত জীবনকে সুখী করে তোলার মতো কতটুকু আমরা দিয়েছি, এই সংবিধানে কি প্রতিশ্রুতি আমরা দিয়েছি? কিছুই না।
আমাকে আজ বলতে হচ্ছে, বাংলাদেশের যারা সত্যিকারের শোষিত, নিপীড়িত, তাদের কথা এই সংবিধানে নাই। হ্যাঁ, তাঁদের কথা এই সংবিধানে আছে, যারা শোষিত নয়, নির্যাতিত নয়, নিপীড়িত নয়। মাননীয় স্পীকার, তাই আজকে এখানে দাঁিড়য়ে বলতে হচ্ছে, প্রশ্ন করতে হচ্ছে যে, এটা কাদের সংবিধান? যদি জনগণের সংবিধান না হয়, তাহলে আমরা দেশকে কেমন করে গড়ে তুলব, দেশের মানুষকে কেমন করে ভবিষ্যৎ সুখী জীবনের নির্ভরতা দান করব?
এরপর, বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতিসত্ত¡ার কথা বলা যেতে পারে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতি সত্ত¡ার অস্তিত্বে কথা আমি খুলে বলছি। বিভিন্ন জাতিসত্ত¡ার কথা যে এখানে স্বীকৃত হয়নি, সে কথা আমি না বলে পারছি না। আমি পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসী। আমি  সেখানকার আদিবাসীর এলাকার লোক। সেখানকার কোন কথাই এই সংবিধানে নাই। যুগে যুগে বৃটিশ শাসন থেকে আরম্ভ করে সবসময় এই এলাকা স্বীকৃত হয়েছিল, অথচ আজকে এই সংবিধানে সেই কথা নাই। খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটি কিভাবে ভুলে গেলেন আমার দেশের কথা-পার্বত্য চট্টগ্রামের কথা। এটা আমার কাছে বিস্ময়। পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি আদিবাসীর এলাকা। এই এলাকার সেই সব ইতিহাসের কথা, আইনে কথা এই সংবিধানে কোথাও কিছু নাই।
মাননীয় স্পীকার সাহেব, এই মহান পরিষদে দাঁড়িয়ে আজকে আমি আপনার মাধ্যমে একজন সরল মানুষের অভিব্যাক্তি প্রকাশ করছি। আমাদের এলাকাটা একটা আদিবাসী এলাকা। এখানে বিভিন্ন জাতি বাম করে। এখানে চাঙমা, মগ, ত্রিপুরা, লুসাই, বোম, পাংখো, খুমি, মুরুং এবং চাক এইরূপ ছোট ছোট এগারটি আদিবাসী বাস করে। এই মানুষের কথা আমি বলতে চাই।
এই আদিবাসী মানুষের কথা বৃটিশ পর্যন্ত স্বীকার করে নিয়েছিল। পাকিস্তানের মত স্বৈরাচারী গভর্ণমেন্ট আমাদের অধিকার ১৯৫৬ সালের এবং ১৯৬২ সালের সংবিধানে স্বীকার করে নিয়েছিল। জানি না আজকে যেখানে গণতন্ত্র হতে যাচ্ছে, সমাজতন্ত্র হতে যাচ্ছে, সেখানে কেন আপনারা আমাদের কথা ভুলে যাচ্ছেন?
পৃথিবীর অনেক দেশেই সমাজতন্ত্র হয়েছে। পৃথিবীর অন্যতম সমাজতান্ত্রিক দেশ সোভিয়েত ইউনিয়নেও আদিবাসীদের আধিকার আছে। পৃথিবীর আর একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারত- আমাদের প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র - আমরা সেখানে দেখি, তাদের সংবিধানে বিভিন্ন জাতিকে অধিকার দেওয়া হয়েছে জানি না, আমরা কি অপরাধ করেছি?
আমি যতদূর বুঝতে পারি, আপনার মাধ্যমে আমি মাননীয় সদস্যদের জানাচ্ছি, আমি একজন মানুষ। এমন একজন মানুষ, যারা যুগ যুগ ধরে অধিকার থেকে বঞ্চিত। সেই জাতির প্রতিনিধি আমি। আমার বুকের ভিতর কি জ¦ালা, তা আমি বুঝাতে পারবো না। সেই জ্বালা আর কারোর ভিতর নাই। সেই জ¦ালার কথা কেউই চিন্তা করেননি। অস্বীকার করা উচিৎ নয়। কিন্তু সেই সব জাতির কথা গণপ্রজাতন্ত্র¿ী বাংলাদেশের এই খসড়া সংবিধানে নাই।

 চলবে-
*জুম্ম সংবাদ বুলেটিন (১০ই নভেম্বর ৮৩ স্মরণে বিশেষ সংখ্যা) বুলেটিন নং- ২৩, ৫ম বর্ষ, ১০ই নভেম্বর ৯৫, শুক্রবার 

জুম্ম জাতির দুগর মাচ: মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা বক্তব্য -১

খসড়া সংবিধানের উপর আলোচনা করতে গিয়ে মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা ১৯৭২, ২৫ অক্টোবর গণপরিষদের অধিবেশনে বলেন:
মাননীয় স্পীকার সাহেব, আমাদের দেশেরে জন্য যে সংবিধান রচনা করতে যাচ্ছি, আপনার মাধ্যমে আজকে এই মহান গণপরিষদে দাঁড়িয়ে সেই সংবিধানের উপর আমি কিছু আলোচনা করবো। কিন্তু তার আগে আমি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই  বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষকে। আমি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই  সা¤্রাজ্যবাদী বৃটিশ শাসকের বিরুদ্ধে যারা কারকাগে তিল তিল করে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিল, যারা সা¤্রাজ্যবাদী বৃটিশ শাসককে এদেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য হাসি মুখে হাতকড়া পরেছিলেন, হাঁসিমুখে ফাঁসি কাষ্ঠকে বরণ করেছিলেন, তাদেরকে।
১৯৪৭ সালের পর সা¤্রাজ্যবাদী বৃটিশ এই দেশ থেকে চলে যাওয়ার পর পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের জন্য যে কৃত্রিম স্বাধীনতা হয়েছিল, সেই কৃত্রিম স্বাধীনতার পর থেকে যে সব বীর, যে সব দেশপ্রেমিক নিজের জীবন তিলে তিলে চারদেওয়ালের অন্ধাকার প্রকোষ্ঠে উৎসর্গ করেছিলেন স্বাধীকার আদায়ের জন্য, যাঁরা নিজেদের জীবন উপেক্ষা করে স্বাধীকার আদায়ের পথে গিয়েছিলেন, তাঁদের কথা আজকে আমি স্মরণ করছি তাঁদের প্রতি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
আজকে এখানে যাঁরা সমবেত হায়েছেন, যে মাননী সংসদ সদস্য-সদস্যাবুন্দ রয়েছেন, তাঁদেরকে আমি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। তারপর আমি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা নিবেদন করছি গত এপ্রিল মাসে যে খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটি গঠিত হয়েছিল, সেই কমিটির সদস্য বন্ধুদের। সর্বশেষ আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা নিবেদন করছি আমাদের শ্রদ্ধেয় জননেতা, জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
আজকে আমার এই গণপরিষদ ভবনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করছি। এই ইতিহাসের পেছনে রয়েচে কত করুণ কাহিনী, কত মানুষের অঝোর ধারায় কান্নার কাহিনী, বাংলাদেশের আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে রয়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষের করুণ আর্তনাদ। তাই আজকে আমরা সে সব মানুষের কথা স্মরণ করে যদি বিবেকের প্রতি এতটুকু দৃষ্টি নিক্ষেপ করে এগিয়ে যাই, তাহলে এই কথাই আমরা বলবো, আজকে এখানে দাঁড়িয়ে যে পবিত্র শপথ আমরা নিয়েছি সেই পবিত্র শপথ নিয়ে  বাংলাদেশে সাড়ে সাত কোটি মানুষের জন্য যে পবিত্র দলিল আমরা দিতে যাচ্ছি, সেই পবিত্র দলিলে বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষের মনের কথা ব্যক্ত হয়েছে কিনা, বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের মনের কথা অর্থাৎ তারা যে খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে চায়, সে কথা এই সংবিধানে ব্যক্ত হয়েছে কিনা।
তাই মাননীয় স্পীকার সাহেব, আমি আমার বক্তব্যের মধ্যে যে কথা তুলতে যাচ্চি, তাতে যদি কোন ভুলত্রæটি থাকে, তাহলে আমি তা শুধরে নিতে চাই কিন্তু আমি মনে করি, আমি আমার বিবেক থেকে ই এসব কথা বলছি। আমি কোন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে বা কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে কিছুই বলতে যাচ্ছি না। যেহেতু আমি এই বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষেরই একজন হয়ে আজকে গণপরিষদ ভবনে আমার মতামত প্রকাশ করতে যাচ্ছি, সাড়ে সাত কোটি মানুষের নিকট প্রকাশ করতে যাচ্ছি, তাই সংবিধানের উপর আমার কোন চুলচেরা ব্যাখ্যা নেই। আমার যে মত, আমার যে বক্তব্য, তার সবই দেশের প্রতি ভালোবাসার সঙ্গে সম্বন্ধযুক্ত। যেভাবে আমার দেশকে ভালবেসেছি, আমার জন্মভ’মিকে ভালোবেসেছি, যে দৃষ্টিকোণ থেকে আমি আমার দেশকে, আমার জন্মভ’মিকে, এদেশের কোটি কোটি মানুষকে দেখেছি, সেই দৃষ্টিভঙ্গী থেকেই আমি খসড়া সংবিধানকে দেখতে যাচ্ছি। .... ..... ..... ...
তাই আমি খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য বন্দুদের বলছি যে, খসড়া সংবিধান তারা গত জুন মাসে দিতে পারেননি যদিও গত জুন মাসের ১০ তারিখে দেওয়ার কথা ছিল। আজকে এই অক্টোবর মাসে আমাদের এই খসড়া সংবিদান তারা দিয়েছেন। এই খসড়া সংবিধান আমরা জুন মাসে পাইনি, সেজন্য দুঃখিত নই। অক্টোবর আর জুন মাসের মধ্যে ব্যবধান মাত্র কয়েটি মাসের। সেজন্য আমার ব্যক্তিগত অভিমত, আমার কোন আপত্তি নাই, কিন্তু এখানে আমার আপত্তি হচ্ছে এই যে, যে কমিটি আমরা এ দেশেরে কোটি কোটি মানুষের ভাগ্য নির্ধারণের ভার দিয়েছিলাম, সেই কমিটি-প্রদত্ত সংবিধান আজকে আমাদের হুবহু গ্রহণ করতে হচ্ছে।
এই পরিষদের সামনে আমার বক্তব্য হল, আজকে খসড়া সংবিধান যদি এই এই গণপরিষদ-এ এই ভাবে গৃহীত হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে আমার যে আপত্তি আছে সে আপত্তি হল, আমার বিবেক , আমার মনের অভিব্যক্তি বলছে, বাংলাদেশেরসাড়ে সাত কোটি মানুষের মনের কথা এই সংবিধানে নাই। যদি বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের মনের কথা পুরোপুরি এই খসড়া সংবিধানে থাকত, তাহলে আমার আপত্তির কোন কারণ থাকত না। কিন্তু আজ আমি দেকতে পাচ্ছি, পদ্মা, মেঘনা, ধলেশ^রী, বুড়িগঙ্গা, মাথাভাঙ্গাঁ, শঙ্খ, মাতামহুরী, কর্ণফুলী, যমুনা, কুশিয়ারা প্রভৃতি নদীতে রোদ-বৃষ্টি মাথায় করে যাঁরা দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বৎসের পর বৎসর ধরে নিজের জীবন তিলে তিলে ক্ষয় করে নৌকা বেয়ে, দাঁড় টেনে চলেছেন, রোদ-বৃষ্টি মাথায় করে, মাথায় ঘাম পায়ে ফেলে যাঁরা শক্ত মাটি চষে সোনার ফসল ফলিয়ে চলেছেন, তাঁদেরই মনের কথা এ সংবিধানে লেখা হয়নি। আমি বলছি আজকে যাঁরা রাস্তায় রাস্তায় রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নিবৃঅহ করে চলেছেন, তাদের মনের কথা এই সংবিধানে লেখা হয়নি।
আজকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে আপনারা বাংলাদেশের মেহনতী মানুষের কথা সমাজতন্ত্রের নামে, গণতন্ত্রের নামে বলেচলেছেন। আমি ক্ষুদ্র মানুষ সংসদীয় অভিজ্ঞতা আমার সেরকম নাই। তবু আমার বিবেক বলছে এই সংবিধানের কোথায় যেন গলদ রয়েছে।
মাননীয় স্পীকার সাহেব সাহেব, আজকে যারা কল-খানায় চাকা, রেলের চাকা ঘুরাচ্ছেন, যাঁদের রক্ত চুইয়ে আজকে আমাদের কাপড়, কাগজ প্রতিটি জিনিষ তৈরী হচ্ছে, সে লক্ষ লক্ষ মেহনতী মানুষের মনের কথা এখানে নাই।
তারপর আমি বলব, সবচেয়ে দুঃখজনক কথা হচ্ছে এই যে, আমাদের মা-বোনদের কথা এখানে নাই। নারীর যে অধীকার সেটা সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষিত। নারীকে যদি অধিকার দিতে হয়, তাহলে পুরুষ যে অধিকার ভোগ করে, সে অধিকার নারীকেও দিতে হবে। কারণ, তারাও সমাজের অর্ধেক অংশ।.... ... আজ পল্লীর আনাচে কানাচে আমাদের যে সমস্ত মা-বোনকে তাদের দেহ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে, তাদের কথা এই সংবিধানে লেখা হয়নি। এই সংবিধানে সেই মা-বেনদের জীবনে কোন গ্যারান্টি দেওয়া হয়নি। যদি এটা আদর্শ সংবিধান হতো, যদি এাঁ গণতান্ত্রিক, সমাজতান্ত্রিক সংবিধান হতো, তাহলে আজকে যারা নিষিদ্ধ পল্লীতে নিজেদের দেহ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে, তাদের কথা লেখা হত, তাদেরকে এই নরক যন্ত্রনা থেকে মুক্ত করে আনার কথা থাকত, কিন্তু তাদের মনের অভিব্যাক্তি প্রকাশের কথা, খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার কথা এই সংবিধানে নাই।
এই সংবিধানের মানুষের অধিকার যদি খর্ব হয়ে থাকে, তাহলে আজকে ৩০ লক্ষ শহীদের কথা স্মরণ করে অতীতের ইতিহাস স্মরন আমি বলব যে, ইহিাস কাউকে কোনদিন ক্ষমা করেনি, করবেও না-ইতিহাস বড় নিষ্ঠুর। আমরা দেখেছি, ১৯৫৬ সালের সংবিধান যে সংবিধানকে আয়ুব খানের মত একজন সৈনিক লাতি মেরে, গণতন্ত্রকে হত্যা করে পাকিস্তানের বুকে স্বৈরাচারী সরকার গঠণ করেছিল। তারপর ১৯৬২ সালে তার মনের মত একটি সংবিধান রচনা করে সেটাকে দেশের বুকে চাপিয়ে দিয়ে ভেবেছিল যে, তার এই সংবিধান এদেশের মানুষ গ্রহণ করবে। কিন্তু এ দেশের মানুষ সেটা গ্রহণ করেনি।
এই সংবিধানও যদি সে ধরণে হয়ে যায়, তাহলে ইতিহাস কি আমাদের ক্ষমা করবে? তাই ১৯৫৬ সালের সংবিধানের মত. ১৯৬২ সালের সংবিধানের মত এই সংবিধানকেও কি আমরা হতে দিব, আমার বিবেক বলছে, আমরা এমন সংবিধান চাই না। আমরা এমন সংবিধান চাই, যে সংবিধানে আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য একটা পবিত্র দলিল হয়ে থাকবে। সেরকম সংবিধানই আমরা চাই। আমার যা মনের কথা তা আমি ব্যক্ত করলাম।
                                                                                     
                                                                                                                                    চলবে-
*জুম্ম সংবাদ বুলেটিন (১০ই নভেম্বর ৮৩ স্মরণে বিশেষ সংখ্যা) বুলেটিন নং- ২৩, ৫ম বর্ষ, ১০ই নভেম্বর ৯৫, শুক্রবার




কেন আঞ্চলিক স্বায়ত্ব শাসন?

বাংলাদেশ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের শাসনতান্ত্রিক অধিকার দাবীর- আবেদন পত্র গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবী ...