শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৪

ইউপিডিএফ (প্রসীত) এর ঐক্যের ডাক বর্তমান সময়ে সর্বোচ্চ ধোঁকাবাজি

 


প্রিয় জুম্ম জনতা,

ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) পার্টির পক্ষ থেকে সংগ্রামী শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। আপনারা জানেন, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশে যে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে, সেটাকে কেউ কেউ আরব বসন্তের আদলে বাংলা বসন্ত আখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু এটা ঠিক, হাসিনা সরকার পতনের পর দেশের শাসন ব্যবস্থা আংশিক মেরুদন্ডহীন হয়ে পড়েছে। দেশের সদ্য শাসন ক্ষমতা প্রহণকারী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অরাজক পরিস্থিতি সামাল দিতে বেগ পেতে হচ্ছে। দেশের ভঙ্গুর এই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে ইউপিডিএফ (প্রসীত) পাহাড়ে পার্বত্য বসন্ত আনার চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উঠেছে। হঠাৎ করে পাহাড়ের তরুণ প্রজন্ম ছাত্র জনতাকে লেলিয়ে দিয়ে দেয়াল লিখন, প্রতিবাদী লেখা, সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী অংকনের মাধ্যমে আন্দোলনে ঠেলে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের এই উদ্দেশ্য দিবালোকের মতো পরিস্কার যে, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যাল এর শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে হত্যা করার পর দেশের আপামর জনতা যেভাবে ফুঁসে উঠেছিল, ইউপিডিএফ (প্রসীত) একই কৌশল অবলম্বন করছে, পাহাড়ে যদি প্রশাসন কর্তৃক ছাত্র জনতার উপর মারমুখী আচরণ করে, তাহলে তারা এই ফায়দা লুঠবে শতভাগ। কিন্তু জুন্ম জনগণ এটাকে নিছক অসময়ে কোকিল ডাক মনে করছে। তাই ছাত্র জনতা ও জুন্ম জনগণকে এই বিষয়ে বিশেষ সর্তক থাকতে হবে।

সংগ্রামী জুন্ম জনতা,

পাহাড়ে অধিকারের প্রশ্নে কেবল ইউপিডিএফ (প্রসীত) লড়াই করছে না, অপরাপর আরো অধিকারকামী দল লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আপনি তাদের কথা ভুলে গিয়ে কীভাবে ঐক্যের আহ্বান করেন? পার্বত্য চট্টগ্রামে এই মুহুর্তে চারটি রাজনৈতিক দল রয়েছে, তাদের রাজনৈতিক ঐক্যমত না নিয়ে নিজের মত করে আন্দোলন চালিয়ে নেওয়া মূর্খতা ছাড়া কিছুই না। পরমত, রাজনৈতিক ঐক্য সন্নিবেশনে ঘটে টেবিল বৈঠক এবং লড়াই চালিয়ে নিতে হয় মাঠে-ময়দানে, রাস্তায় এবং জনসভায়। ইউপিডিএফ তা না করে জুন্ম ছাত্র জনতাকে লেলিয়ে দিয়ে নিজেদের দলগত উদ্দেশ্য হাসিল করতে চাচ্ছে। জুন্মজনগণ, পাহাড়ে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ছাত্র সমাজ, নাগরিক সমাজ ও বুদ্ধিজীবী মহলের প্রাণের দাবী হচ্ছে একত্র হয়ে লড়াই চালিয়ে নেওয়া। কিন্তু সেটা অবলম্বন না করে নিজেদের আঁখ গোছানোর ব্যস্ত হয়ে পড়েছে ইউপিডিএফ (প্রসীত)। কেননা আমরা অতীতে তাদের সিদ্ধহস্ত ঐক্যের ডাক দেখেছি, দেখিছি তাদের অবুঝ শিশুর মতো মায়াকান্না, অথচ সকাল হলে তারা অস্ত্রভাষা প্রয়োগ করতে ভুলে না। একদিকে তারা ঐক্যের ডাক দিচ্ছে, অন্যদিকে সন্তু লারমার বাসভবন ঘেরাও এবং তার বিরুদ্ধে স্মারকলিপি কর্মসূচি দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশত্যাগ করলে ঐদিন তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইউপিডিএফ (প্রসীত) বিএনপি'র সাথে একজোট হয়ে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) এর দলীয় কার্যালয় পানছড়ি, গুইমারা, মাটিরাঙ্গা, লক্ষীছড়ি, মানিকছড়ি অফিস ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ এবং খাগড়াছড়ি জেলা সদর মহাজন পাড়াস্থ জুন্ম জাতির অবিসংবাদিত নেতার প্রতিকৃতির উপর আঘাত হানে। সম্প্রতি সন্তু লারমা জেএসএস নেতৃত্বাধীন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দুই নেত্রী কাঞ্চনা ও সুষ্টি চাকমাকে ইউপিডিএফ (প্রসীত) কর্তৃক অপহরণের মত নিন্দনীয় ঘটনা ঘঠেছে, যেটা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। তাদের এই ভন্ডামি ঐক্যের ডাকে জেএসএস (এম.এন) ও ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) দলকে হিসেবই রাখছে না, বরং তারা এই দুই দলের বিরুদ্ধে নতুন ষড়যেেন্ত্রর নীলনকশায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ইউপিডিএফ (প্রসীত) এই হীন উদ্দেশ্য প্রদর্শন জুন্ম জনগণ ও পাহাড়ের রাজনৈতক নেতৃবৃন্দ খোদ গ্রাম্য চরিত্র হিসেবে অভিহিত করছে। জুন্ম জনগণের আশা-আকাঙ্খা ও প্রাণের দাবী পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন এবং জুন্ম জনতার ঐক্যের সাথে আমরা সংহতি জানাই, কিন্তু যেই ঐক্য হওয়ার কথা টেবিলে সেটা পরিচালিত হচ্ছে জুন্ম ছাত্র জনতার বুকের উপর। আমরা এই ছলচাতুরি ঐক্য মনে প্রানে প্রত্যাখান করছি।

প্রিয় ছাত্র জনতা,

দেশের ছাত্র জনতা রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ প্রতিনিয়ত করেই যাচ্ছে। আমরা আপনাদের আবেগ, মতামত এবং ঐক্যের ডাককে প্রবলভাবে উপলদ্ধি করছি এবং আমরা মনে করি কিছু অপরিণামদর্শী নেতৃত্বকে সংস্কারের প্রয়োজন। একই সাথে ইউপিডিএফ (প্রসীত) এর মধ্যেও দলীয়গত সংস্কারের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। কেননা, ইউপিডিএফ (প্রসীত) ভূলের ফসলই হচ্ছে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক), কিন্তু যেই তারা ভুল করেছে অথচ ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) কে তারা অস্বীকার করছে। শুধু তাই নয়, যে দলের ভিতর এত স্ববিরোধীতা সে দলের মুখে ঐক্যের আহ্বান স্রেফ ধোঁকাবাজি। তাই অনাগত দিনে প্রতিটি তরুন ছাত্র সমাজ যে লড়াই সংগ্রামে, আন্দোলনে স্বাক্ষী হবে, সেই আন্দোলন যাতে বিফলে না যায়, সর্তক থাকতে হবে। তাই আসুন সবাই ইউপিডিএফ এর অপতৎপরতার বিরুদ্ধে সর্তক হই, নিজেকে ও জাতিকে নিরাপদ রাখি।

তথ্য ও প্রচার বিভাগ

ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কেন আঞ্চলিক স্বায়ত্ব শাসন?

বাংলাদেশ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের শাসনতান্ত্রিক অধিকার দাবীর- আবেদন পত্র গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবী ...